প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গঃ পর্ব ৪৪ || জানা ও মানা [10% @shy-fox]
ভূমিকাঃ
মাঝে মাঝে আমাদের চারপাশের জীবন, প্রকৃতি, পরিবেশ, সৌন্দর্য্য ও নানাবিধ বিষয় নিয়ে লিখতে ইচ্ছে হয় যেসব লিখার বিষয়বস্তুকে কোন নির্দিষ্ট গন্ডীর মধ্যে ফেলা যায় না। এরকম বিষয়বস্তুগুলোকে নিয়ে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি
-তে আমি একটি সিরিজ লিখছি যার নাম দিয়েছি প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ
যেখানে কোন বিষয় বা প্রসঙ্গ নিয়ে ব্যাক্তিগত মতামত ও পর্যালোচনা করে থাকি। এই লিখার বিষয়গুলো হচ্ছে ব্যাক্তিগত শিক্ষা, অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির সমন্বয়। পড়ে দেখুন, আশা করি ভাল লাগবে।
বর্তমান সময়টা হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তির যুগ আর এই সময় আমাদের হাতে হাতে রয়েছে অনেক তথ্য। আমরা ঘরে বসে চাইলে মুহূর্তে যে কোন তথ্য পেয়ে যেতে পারি। আর এ কারণে সব ধরনের তথ্য সবার কাছে এখন সহজলভ্য।
আমরা যেমন ঘরে বসে এখন দেখতে পারবো আমেরিকার কোন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা কি, ঠিক তেমনি আমরা আমাদের পাশের কোন দোকানের ওয়েবসাইটে ঢুকে তাদের দোকান সম্বন্ধে বেশকিছু তথ্য পেয়ে যেতে পারি। তাইতো তথ্যের অবাধ প্রবাহ সব দিকে বিরাজ করছে যার সুফল আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে সব সময় পেয়ে যাচ্ছি কারণ খুব অল্প সময় ও শ্রম ব্যয়ে আমাদের স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটারে চলে আসছে আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্য।
এসব কারণে এখন মোটিভেশনাল কথাবার্তা থেকে শুরু করে যেকোনো ধরনের জীবন ঘনিষ্ঠ ও প্রয়োজনীয় বিষয় আমরা অনলাইনে খুব সহজেই পেয়ে যাই। আমরা যদি ইউটিউবে কোন মোটিভেশনাল বিষয় বা কোন বিষয়ে জানতে চাই তাহলে সেগুলো খুব সহজেই পেয়ে যাচ্ছি এবং আমাদের চারপাশে রয়েছে অনেক অনেক কনটেন্ট যেগুলো আমাদের নির্দিষ্ট প্রয়োজনকে পূরণ করে।
কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে এত তথ্যের অবাধ প্রবাহ এর মধ্যেও আমাদের মানার ক্ষেত্রে অনেক ঘাটতি দেখা যায়। ভালো মন্দ বিচার করার বুঝ প্রায় সব মানুষেরই রয়েছে এবং মানুষ চাইলে সব কিছুর ভাল এবং মন্দ দিক নিজেরা বিচার করে নিতে পারে। আমাদের চারপাশে যেসব তথ্য রয়েছে সেগুলো থেকে আমরা সহজেই বুঝতে পারি কোনটি আমাদের জন্য ভালো এবং কোনটি আমাদের জন্য ভালো নয়। কিছু যত সমস্যা সব দেখা যায় মূলত মানার ক্ষেত্রে।
উদাহরণস্বরূপঃ আমরা যদি খেয়াল করি তাহলে দেখব সকালে ঘুম থেকে ওঠা আমাদের জন্য ভালো এবং দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা আমাদের জন্য ক্ষতিকর। অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকা আমাদের জন্য ক্ষতিকর এবং সকাল সকাল ঘুমিয়ে যাওয়াটা আমাদের জন্য ভাল। কিন্তু এত কিছুর পরেও আমরা কতজন এটা মানছি এটাই হচ্ছে দেখার বিষয়। মাদক আমাদের জন্য ক্ষতিকর কিন্তু অনেককে দেখা যায় মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছেন। আমাদের জন্য আউটডোর অ্যাক্টিভিটি এবং খেলাধুলাও করাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু অনেককে দেখা যায় অলস সময় কাটাতে। ফেসবুক কিংবা ভার্চুয়াল জগতে সময় খুব বেশি না দেওয়াটা হচ্ছে আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী কিন্তু তারপরও কতজন সেটা মানছেন।
এখানে বিষয়টা এমন না যে, আমরা জানিনা। এখানে বিষয়টা ঠিক উল্টো অর্থাৎ আমরা সবাই জানি কি আমাদের জন্য ক্ষতিকর এবং কি আমাদের জন্য ভালো তারপরও আমরা ভালোটা কে বাদ দিয়ে ক্ষতির দিকে বেশি ধাবিত হচ্ছি। আর এ কারণে আমাদের সামনে এখন অনেক বেশি তথ্য থাকার পরও আমরা ঠিক পথে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারছিনা।
পরিশেষে একটা কথা আমাদেরকে জেনে রাখা উচিতঃ আমরা যদি কম জানি সেটা আমাদের জন্য হয়ত ভালো যদি আমরা সেই কম জানার মধ্যে থেকে নিজেদের জীবনকে ভালোভাবে সাজাতে পারে। কিন্তু বর্তমান সময়ে আমাদের কাছে অনেক বেশি তথ্য রয়েছে এবং আমরা অনেক বেশি জানি কিন্তু সেই জানার প্রতিফলন ঘটাতে পারিনা।
আমাদের যে ফিলিংস রয়েছে সেটি আসলে দিনে দিনে কমে যাচ্ছে আর যে কারণে আমরা ভার্চুয়াল জগতে এক প্রকার আকৃষ্ট হয়ে পড়ছি যেটা আমাদের স্বাভাবিক কাজকর্মকে অর্থাৎ আবেগ অনুভূতি জায়গাগুলোকে অনেক বেশি ভঙ্গুর করে দিচ্ছে। আসুন আমরা যেটাকে ভালো জানি সেটা করার চেষ্টা করি এবং যতটুকু জানি ততটুকু ভালোভাবে জেনে সেটাকে মারার চেষ্টা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাই।
প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ সিরিজে পূর্বের পোস্টগুলোর তালিকাঃ
প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ সিরিজে পূর্বের পোস্টগুলোর তালিকাঃ
আমি কেঃ
আমি সাইফুল বাংলাদেশ থেকে। পেশায় শিক্ষক ও সাবেক ব্যাংকার। পড়াশুনা করেছি প্রকৌশলবিদ্যায়। আমি আমার চিন্তাভাবনা এবং ধারণাগুলি ব্লগে শেয়ার করতে ভালবাসি। প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়ানো এবং ক্রিকেট খেলা আমার শখ। আমি বিশ্বাস করি, আমার পোস্ট হতে একজনও যদি উপকৃত হতে পারেন বা নতুন কিছু শিখতে পারেন তাহলেই এই লেখালেখি সার্থক
প্রতিটি কথার যৌক্তিকতা আছে। সত্যিই আমরা আমাদের এই ভার্চুয়াল জগত এমন ভাবে আঁকড়ে ধরেছি যে নিজের মানবিকতা মনুষ্যত্ব বুদ্ধি জ্ঞান সব লোপ পেয়ে যাচ্ছে। সুন্দর একটি লেখা উপহার দেয়ার জন্য ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।
ভাইয়া আপনার জানা ও মানা পোস্টটি পড়ে আমি সত্যিই অভিভূত হয়ে গেলাম।আপনার শিক্ষনীয় পোস্ট গুলো সত্যি আমাদেরকে আরো বেশি সমৃদ্ধশীল করছে।আপনার পোস্ট পড়ে নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করা যায় আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,দোয়া এবং ভালোবাসা ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন নিরাপদে থাকবেন সব সময়♥♥
সাইফুল ভাই আমাদের এই কমিউনিটির সদস্যদের মধ্যে জেনারেল রাইটিং গুলো না পড়ার যে একটা প্রবণতা তৈরি হয়েছে আপনার এই পোস্টটিও তার একটি উদাহরণ। এত সুন্দর একটি পোষ্ট কিন্তু তেমন কেউই পড়েনি। এর কারণ হতে পারে পোস্টগুলো পড়তে বেশি সময় লাগে। এরমধ্যে অন্য পোস্টগুলোতে আট-দশটি কমেন্টস করে ফেলা সম্ভব।যাই হোক এটাকে আমি তেমন দোষের কিছু বলি না কারণ সবার সময়েরই দাম আছে। জানা ও মানার ক্ষেত্রে আপনি যে উদাহরণগুলো দিয়েছেন আমিও তার ব্যতিক্রম নই। জানি তাড়াতাড়ি ঘুমানো এবং সকালে ঘুম থেকে উঠার উপকারিতা কিন্তু মানিনা। বিষয়গুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
লিখাগুলোকে আমি সাজিয়ে রাখছি। একসময় চাইলে লেখাগুলো যাতে সংকলন করে ফেলতে পারি। ধন্যবাদ আপনাকে।