ঘাস খায়িয়ে মাছ চাষ || Innovative technique of fish cultivation [10% for @shy-fox]
ঘাস দিয়ে মাছ চাষ। ব্যাপারটি শুনতে অনেকের কাছে হয়তো অদ্ভুত মনে হতে পারে কিন্তু এটা হচ্ছে এই প্রযুক্তির যুগে এক নব উদ্ভাবিত মাছ চাষ পদ্ধতি। আপনারা ইন্টারনেটে গেলে এরকম অনেক ভিডিও দেখতে পারবেন যেখানে ঘাস দিয়ে মাছ চাষ করার অভিনব পদ্ধতি শেখানো হয় এবং দেখানো হয়। এই পদ্ধতিটি বটম ক্লিন মাছ চাষ পদ্ধতি নামে পরিচিত। এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য অবশ্য অনেক বেশি পরিমাণ ইনভেস্টমেন্টের দরকার হয় কারণ কুকুরটাকে তলানি খালি করার মতো অবস্থায় নিয়ে গিয়ে প্রস্তুত করতে হয়। তবে সাধারণ যে কোন মাছ চাষী চাইলে তাদের পুকুরে এই ঘাস এর মাধ্যমে মাছ চাষ করতে পারে। আজকে আমি আপনাদের মাঝে ঘাস দিয়ে মাছ চাষ করার কিছু ছবি এবং সংক্ষিপ্ত বর্ণনা শেয়ার করব।
আমার বড় ভাই গ্রামে বাস করে এবং সেখানে আমাদের একটি পুকুর রয়েছে যেখানে তিনি মাছ চাষ করে থাকেন। তবে বর্তমান সময়ে ঘাস দিয়ে মাছ চাষ করার পদ্ধতি খুব ভালোভাবে রপ্ত করে নিয়েছেন। মাঝে মাঝেই ইউটিউব ঘাটাঘাটি করে অনেক উদ্ভাবনী বিষয়ে তিনি দেখে থাকেন বিশেষ করে মাছ চাষ সংক্রান্ত। মাছ চাষের এই পদ্ধতি ইউটিউবে দেখার পর আশেপাশে বেশ কয়েক ধরনের কচুরিপানা জাতীয় ঘাস মাছকে দিয়ে পরীক্ষা করেন এবং একটি ঘাস মাছগুলো খুব আনন্দের সাথে গ্রহণ করে। এরপর থেকে এই ঘাসগুলো দিয়ে মাছ চাষ করে যাচ্ছেন এবং ভালো সফলতা পাচ্ছেন কারণ এখানে খরচ অনেক কম। তবে সব প্রজাতির মাছ এই ঘাস খায় না মাত্র অল্প কয়েক প্রজাতির মাছের প্রিয় খাদ্য এই ঘাস।
কোন খাবারের ক্ষেত্রে অবশ্যই গুণগতমান থাকাটা অনেক বেশি জরুরী এবং মাছের খাবারের ক্ষেত্রে প্রোটিনের পরিমাণ এবং মান অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ অন্যথায় মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পাবে না। বাজারে যেসব প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার পাওয়া যায় সেসব খাবারের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ প্রোটিন থাকে এই ঘাসগুলোতে। মূলত ৪০% (শতাংশের)ও বেশি প্রোটিন উপাদান থাকে এই ঘাসে যা মাছের বৃদ্ধির জন্য অনেক বেশি উপযোগী এবং অনেক আনন্দের সাথে মাছেরা এই খাবারগুলো গ্রহণ করে থাকে। তাই এই ঘাস যেকোনো ভাবে চাষ করতে পারলে সেই চাষকৃত ঘাস দিয়ে অনেক সহজেই মাছ চাষ করা যায়। খাবারের খরচ বেঁচে যাওয়া মানেই অনেক বেশি লাভ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কারণ মাছ চাষের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি খরচ হয় খাবার ক্রয় করার মাধ্যমে।
উপরের সব ছবিগুলোতে দেখতে পাচ্ছেন ঘাস দেয়ার সাথে সাথে মাছেরা কেমন ছুটে এসেছে ঘাসগুলো খাওয়ার জন্য। এ দৃশ্য দেখে যেকোনো মানুষের কাছে খুব ভালো লাগবে কারণ এটি অনেক অভিনব একটি পদ্ধতি যেটা সত্যিই অনেক ইনোভেটিভ। গ্রামে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে খাল-বিল পুকুর নদী রয়েছে এবং অনেক অংশই পরিত্যক্ত পড়ে থাকে তাই সেই সকল অংশে খুব অল্প খরচে ঘাস চাষ করা যেতে পারে এবং সেই ঘাস মাছকে খাওয়ানো যাবে। আর এতে করে খুব অল্প ইনভেস্টমেন্টে অনেক বেশি লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।
তেলাপিয়া মাছের অনেক প্রিয় হচ্ছে এই ঘাস এবং নিমিষেই দেখবেন এই ঘাস খেয়ে শেষ করে ফেলবে। আমরা গ্রাস কার্প মাছের নাম শুনেছি যেটা পুকুরে এবং নদীতে থাকা কচি ঘাস খেয়ে ফেলে কিন্তু এখানে মাছের খাবার হিসেবে ঘাস প্রদান করা হয় এবং এটা প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যা মাছের বৃদ্ধিতে অনেকাংশে ভূমিকা রাখছে যা এক অভিনব পদ্ধতি হিসেবে আগামী সময়ে মাছ চাষে বিপ্লব নিয়ে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি তাই আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। আশা করি ভালো লেগেছে।
এই পোস্টের সম্পূর্ন লিখা আমার নিজস্ব ও কোথায় থেকে কপি করা হয়নি। কোথাও হতে কোন তথ্য বা ছবি নিয়ে থাকলে সোর্স দেয়া হয়েছে
আমি কে
আমি সাইফুল বাংলাদেশ থেকে। পেশায় শিক্ষক, সাবেক ব্যাংকার। আমি আমার চিন্তাভাবনা এবং ধারণাগুলি ব্লগে শেয়ার করতে ভালবাসি। প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়ানো এবং ক্রিকেট খেলা আমার শখ। আমি সর্বদা একজন শিক্ষানবিস এবং সবার থেকে শিখতে চাই। আমি বিশ্বাস করি, আমার লেখা থেকে কেউ যদি উপকৃত হয় বা নতুন কিছু শিখতে পারে তবেই আমার লেখালেখি সার্থক। |
---|
খুবই সুন্দর পদ্ধতির মাধ্যমে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিটা দেখে আমার খুবই ভালো লাগলো। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে এই পদ্ধতিটি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আমাদের দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন। আপনার জন্য রইল অনেক অনেক ভালোবাসা।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য
ওগুলো ঘাস জাতীয় এক প্রকারের সবুজ শ্যাওলা। আর এজাতীয় শ্যামলা কোন মাছের জন্য উৎকৃষ্ট মানের খাবার। বিশেষ করে গ্লাস কার্প, রুই মাছ, মৃগেল মাছ এবং সরপুঁটি সবুজ শ্যাওলা বেশি করে খেয়ে থাকে। আমিও মাছ চাষে এই সবুজ শ্যাওলা ব্যবহার করি।
দারুন। ধন্যবাদ
#steemit #blog #bangla #fishing
Tweet share
https://twitter.com/MDSAYFU28745859/status/1473257813640024065?t=Uo5iDYo9f27W7ig831F91w&s=19