প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গঃ পর্ব ০৫ || মোবাইল আসক্তি
ভূমিকাঃ
মাঝে মাঝে আমাদের চারপাশের জীবন, প্রকৃতি, পরিবেশ, সৌন্দর্য ও নানাবিধ বিষয় নিয়ে লিখতে ইচ্ছে হয় যেসব লিখার বিষয়বস্তুকে কোন নির্দিষ্ট গন্ডীর মধ্যে ফেলা যায় না। এরকম বিষয়বস্তুগুলোকে নিয়ে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি
-তে আমি একটি সিরিজ লিখছি যার নাম দিয়েছি প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ
যেখানে কোন বিষয় বা প্রসঙ্গ নিয়ে ব্যাক্তিগত মতামত ও পর্যালোচনা করে থাকি। এই লিখার বিষয়গুলো হচ্ছে ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির সমন্বয়। পড়ে দেখুন, আশা করি ভাল লাগবে।
পর্ব ০৫: মোবাইল আসক্তি গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে
প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গটিঃ
সারা বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতি চলছে। এমতাবস্থায় বেশিরভাগ দেশেই স্কুল-কলেজ বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশে প্রায় দেড় বছর হয়ে যাচ্ছে স্কুল-কলেজ বন্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের পক্ষে অনলাইনে ক্লাস করে কিছুটা এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে কিন্তু প্রাথমিক ও মাধ্যমিক ক্লাশের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ থেকে যাচ্ছে অন্ধকারে কারণ তারা প্রযুক্তির সাথে অতটা খাপ খাওয়াতে পারছে না যতটা বড় বড় ছেলেমেয়েরা পাচ্ছে। অর্থাৎ ছোট বাচ্চাদের পক্ষে জুম কিংবা গুগোল মিটে ক্লাস করার অভ্যাস অনেক কম। এ অবস্থায় ঘর থেকে বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই তাই ঘরে বসেই ক্লাশ করা বা শেখাটাই একমাত্র পথ। যেসব পরিবারের অভিভাবকরা সচেতন তারা বিভিন্নভাবে অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে কনটেন্ট ডাউনলোড করে কিংবা জুম এপে অভ্যস্থ করে নিতে পারছেন কিন্তু যেসব ছেলেমেয়েদের মোবাইল ফোনের সামর্থ্য নেই কিংবা প্রযুক্তির সাথে অভ্যস্ত নয় (কারণ নেটওয়ার্ক সমস্যা রয়েছে গ্রামে) তাদের জন্য এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠাটা অনেকটাই কঠিন।
Source: Image by Andi Graf from Pixabay
গ্রামের ছেলে মেয়েরা যেখানে পড়াশোনা করতে কষ্ট হচ্ছে সেখানে আশেপাশে দেখা যাচ্ছে অনেক ছেলেমেয়ে স্মার্টফোন নিয়ে শুধুমাত্র গেম খেলছে। এটা এক ধরনের আসক্তি যেটা প্রায় সারা দেশে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু পত্রিকায় এই বিষয়ে লেখালেখি হয়েছে এবং দেখানো হয়েছে গ্রামের ছেলে মেয়েরা কতটা মোবাইল ফোনে আসক্ত। যেসব ছেলেমেয়েদেরকে এভাবে মোবাইল ফোনে গেমস খেলতে দেখা যায় তাদের বেশিরভাগই হচ্ছে এরকম যারা আসলে পড়াশুনা তেমন একটা বুঝেনা কিন্তু শুধুমাত্র গেমস খেলা এবং ফেসবুক, ইউটিউব চালাতে পারদর্শী। তারা সারাদিন ব্যাপী কেবলমাত্র facebook-youtube এবং গেমস খেলে সময় কাটিয়ে দিচ্ছে।
যে সময় ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করার কথা, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করার কথা, সামনে কিভাবে এগিয়ে যাবে, নিজেকে কিভাবে আরো দক্ষ এবং যোগ্য হিসেবে ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তুলবে এ বিষয়ে চিন্তা করার কথা সেখানে তারা ফেসবুক ইউটিউব এবং গেমসের মত বিষয় নিয়ে সারাদিন পড়ে থাকছে। আমার জানা মতে গ্রামে এমন কিছু ছেলে আছে যারা শুধু মাত্র দশ পনেরো দিন কাজ করে মোবাইল ফোন কেনার টাকাটা সংগ্রহ করে তারপর কাজ বন্ধ করে দেয় এবং সারা দিনরাত এগুলো নিয়ে পড়ে থাকে। অনেকে আছে যারা এরকম দিনমজুরের কাজ করতে পারে না অর্থাৎ আরো ছোট তারা ফ্যামিলিকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে একটা স্মার্ট ফোন কিনে নেয় এবং ইন্টারনেট কানেকশন নিয়ে নেয়। এই হচ্ছে মোটামুটি স্বাভাবিক অবস্থা আর এভাবে করেই একটা বড় অংশের যুবসমাজের দিন কেটে যাচ্ছে।
Source: Image by 愚木混株 Cdd20 from Pixabay
যেই যুবসমাজ ভবিষ্যতে দেশকে নেতৃত্ব দিবে এবং দেশের হাল ধরবে তাদের যদি আজকে এই অবস্থা হয় তাহলে ভবিষ্যতে আমরা কি দেখতে পাবো বা আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে তা সহজেই অনুমান করা যায়। কিছু গ্রুপ আছে টিকটক নিয়ে ব্যস্ত আবার কিছু গ্রুপে গেমস, ইউটিউব, কার্টুন নিয়ে দিন রাত কাটিয়ে দিচ্ছে অবলীলায়। ভবিষ্যতে কোন কাজ করতে হবে, নিজের হাল ধরতে হবে কিংবা সংসারের হাল ধরতে হবে এই বিষয় নিয়ে তাদের কোনো চিন্তাই নাই। বর্তমান সময়ে ভালো কাটছে প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় এতেই তারা খুশি।
আশেপাশের এসব বিষয়ে দেখলে হঠাৎ মনে হয় যেন আমাদের কাছে মোবাইল ফোন না আসলেই ভাল হত কারন যতটা সুফলের জন্য এসেছে তার চেয়ে বেশি কুফল আমরা এটা থেকে আদায় করে নিচ্ছি। সবশেষে আমার লিখাটি একটা জোকস দিয়ে শেষ করতে চাই। জোকসটি হলঃ
মোবাইল ফোন আবিষ্কার করা হয়েছে মানুষের সময় বাঁচানোর জন্য
শেষকথাঃ
লিখাটি পড়ে যদি কেউ উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে কমেন্টে জানাবেন। কারো ভাললাগা বা উপকৃত হওয়ার মাঝেই এই লিখার সার্থকতা। প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ সিরিজে আমার লিখা অন্য বিষয়গুলোর লিঙ্ক নিচে দিয়ে দিলাম। ভাল লাগলে সেগুলোও চোখ বুলিয়ে আসতে পারেন। ধন্যবাদ।
এই সিরিজে আমার লিখা পূর্বের পোস্টগুলোর তালিকাঃ
পর্ব প্রসঙ্গ
০১ সবার সম্মিলিত খুদ্র প্রয়াসে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ
০২ একজন ফুটবল কিংবদন্তী ও ইতিহাস
০৩ পড়ন্ত বিকেলে ছুটি খা দিঘীর পাড়ে
০৪ করোনার অসুবিধাকে সুবিধায় রুপান্তর
এই পোস্টের লিখা কোথাও থেকে কপি করা হয়নি। কোন তথ্য বা ছবি অন্য কোন উৎস হতে নিয়ে থাকলে সোর্স দেয়া হয়েছে
আমি কেঃ
আমি সাইফুল বাংলাদেশ থেকে। পেশায় শিক্ষক এবং সাবেক ব্যাংকার। পড়াশুনা করেছি প্রকৌশলবিদ্যায়। আমি আমার চিন্তাভাবনা এবং ধারণাগুলি ব্লগে শেয়ার করতে ভালবাসি। স্টিম এ ২০১৯ সাল থেকে নিয়মিত লিখালিখি করে আসছি। আমি টেক্সটাইল, অনলাইন অর্থ উপার্জন, কৃষি, প্রযুক্তি, রান্না, ও জীবন্ঘটিত অন্যান্য আরো কিছু বিষয় নিয়ে লিখি। প্রকৃতির পাশাপাশি যাওয়ার জন্য ঘুরে বেড়ানো এবং ক্রিকেট খেলা আমার শখ। আমি সর্বদা একজন শিক্ষানবিস এবং সবার থেকে শিখতে চাই। আমি বিশ্বাস করি, আমার জ্ঞান ও লিখা থেকে একজনও যদি উপকৃত হল বা নতুন কিছু শিখতে পারে তবেই আমার ব্লগে লিখালিখি সার্থক
ভোট দিন, মতামত থাকতে মন্তব্য করুন, পোস্টটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন এবং আমাকে ফলো করুন @engrsayful
অন্যান্য মিডিয়াতে আমার সাথে যুক্ত হতে পারেনঃ
Facebook Twitter Instagram
Youtube ThreeSpeak DTube
শেষকথাঃ
লিখাটি পড়ে যদি কেউ উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে কমেন্টে জানাবেন। কারো ভাললাগা বা উপকৃত হওয়ার মাঝেই এই লিখার সার্থকতা। প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ সিরিজে আমার লিখা অন্য বিষয়গুলোর লিঙ্ক নিচে দিয়ে দিলাম। ভাল লাগলে সেগুলোও চোখ বুলিয়ে আসতে পারেন। ধন্যবাদ।
এই সিরিজে আমার লিখা পূর্বের পোস্টগুলোর তালিকাঃ
পর্ব | প্রসঙ্গ |
---|---|
০১ | সবার সম্মিলিত খুদ্র প্রয়াসে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ |
০২ | একজন ফুটবল কিংবদন্তী ও ইতিহাস |
০৩ | পড়ন্ত বিকেলে ছুটি খা দিঘীর পাড়ে |
০৪ | করোনার অসুবিধাকে সুবিধায় রুপান্তর |
এই পোস্টের লিখা কোথাও থেকে কপি করা হয়নি। কোন তথ্য বা ছবি অন্য কোন উৎস হতে নিয়ে থাকলে সোর্স দেয়া হয়েছে
আমি কেঃ
ভোট দিন, মতামত থাকতে মন্তব্য করুন, পোস্টটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন এবং আমাকে ফলো করুন @engrsayful
অন্যান্য মিডিয়াতে আমার সাথে যুক্ত হতে পারেনঃ
Youtube | ThreeSpeak | DTube |
আধুনিকতার ছোঁয়া যেমন শুভকর তেমনি আবার অশুভদায়ক।খুব সুন্দর বিষয় তুলে ধরেছেন ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও ধন্যবাদ
!invest_vote
@umuk denkt du hast ein Vote durch @investinthefutur verdient!
@umuk thinks you have earned a vote of @investinthefutur !