আরেকটি জাতীয় দিবস ও শিশুদের নিয়ে কিছু কথা (Another National Day) [10% @shy-fox]
১৮ অক্টোবর বাংলাদেশের জন্য আজকের পর থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন কারণ সরকারীভাবে এই দিনটিকে প্রথম শ্রেণীর দিবসের মর্যাদায় ভূষিত করে শেখ রাসেল দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছর ১৮ তারিখ এটি প্রথম উদযাপিত শেখ রাসেল দিবস। শেখ রাসেল হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ সন্তান এবং তিনি ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের অন্যান্যদের সাথে খুন হয়েছিলেন। এরপর থেকে এই দিবসটি প্রতিবছর বাংলাদেশ উদযাপিত হবে। আজকে আমি এই দিবসের প্রতিপাদ্য, তাৎপর্য এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে কথা বলবো।
পৃথিবীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন যুদ্ধ বিগ্রহ সংঘটিত হয়েছে। অনেক যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে রাজনৈতিক কারণে আবার অনেকক্ষেত্রে সেগুলো হচ্ছে সম্পদ আহরণের জন্য কিংবা বিভিন্ন রকম কারণে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে হত্যাকান্ড এবং যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যেখানে যত ধরনের হত্যাকাণ্ড কিংবা যুদ্ধ হোক না কেন সব জায়গায় নারী এবং শিশুদেরকে এর আওতার বাইরে রাখাটা ছিল গুরুত্বপূর্ন একটি ব্যাপার। বর্তমান সময়ের মানুষজনের কাছে এটা অনেক বড় একটা উপলব্ধি কারণ বর্তমান সভ্যতায় নারী এবং শিশুদেরকে এ জাতীয় ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হয় যাতে করে তাদেরকে আমরা নিরাপদ রাখতে পারি।
বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডে দেখা যায় বড়দের কে হত্যা করা হয় কারণ বড়দের সাথে বিভিন্ন রকম আক্রোশ বা শত্রুতা থাকতে পারে কিন্তু আমি মনে করি, শিশুদের সাথে কোন ধরনের আক্রোশ থাকার কোনো কারণ নেই। ১৯৭৫ সালে যারা শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে তাদের শত্রুতা হয়তোবা শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ছিল কিন্তু সেদিন ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেলকে তারা হত্যা করেছিল যা ছিল একটি অমানবিক এবং বর্বর ঘটনা। যত কিছুই হোক না কেন ওই শিশুর কোন ধরনের অন্যায় ছিল না। তার সামনে তার পরিবারের সবাইকে হত্যা করে পরবর্তীতে তাকে হত্যা করা হয়েছিল যা ছিল এক ধরনের মানসিক কষ্ট দিয়ে হত্যা করার মত ব্যাপার। একটা নিষ্পাপ এবং নিরপরাধ শিশুকে এভাবে করে হত্যা করা নিশ্চই এক সীমাহীন বর্বরতা। এই ধরনের শিশুদের উপর যাতে অত্যাচার নির্যাতন না করা হয় তা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ এই দিবসটি চালু করা হয়েছে।
এই শেখ রাসেল দিবসের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে যাতে করে আজকের পর থেকে কিংবা ভবিষ্যতে কোনো এরকম নির্যাতনের শিকার কোণ শিশু না হয় । আমরা যেন প্রত্যেকটি শিশুর ভবিষ্যৎ কে নিরাপদ এবং সমৃদ্ধ করতে পারি সেই দিকে আমাদেরকে অনেক বেশি যত্নবান হওয়ার কথা মনে করিয়ে দেয়। আমাদের প্রত্যেকেরই আমাদের জায়গা থেকে শিশুদের জন্য কিছু করার অনেক দায়িত্ব এবং দায়বদ্ধতা রয়েছে।
যদি আমরা বিশ্বের দিকে তাকাই তাহলে দেখব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে উন্নত বিশ্বে শিশুদের জন্য সব ধরনের অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করা হয় এবং শিশুশ্রম, শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করা হয়ে থাকে। আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে যদিও আমরা এখনও ঐ অবস্থায় পৌঁছাতে পারিনি তারপরও আমাদের চেষ্টা, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সেই দিকেই থাকা উচিত যাতে করে আমরা প্রত্যেকটি শিশুর ভবিষ্যৎ সুন্দর ও নিশ্চিত করতে পারি। আমরা যাতে শিশুদের উপর সব ধরনের দমন-পীড়ন, নিপীড়ন-নির্যাতন, হত্যা ইত্যাদি প্রতিরোধ করতে পারি সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই এই দিবসটি কে চালু করা হয়েছে এবং এটি ভবিষ্যতে চলমান থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
প্রত্যেক বছরই কোনো না কোনো নতুন প্রতিপাদ্য নিয়ে এই বছরটি আমাদের মাঝে হাজির হবে। এই দিবসের ২০২১ সালের প্রতিপাদ্য ছিল দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্ববিশ্বাস। শিশুরা যদি খুব সহজ, সুন্দর ও সাবলীল ভাবে বেড়ে উঠতে পারে তাহলে সেটা হবে আমাদের জাতির জন্য অনেক বেশি কল্যাণকর ব্যাপার। শিশুরা যদি ভালোভাবে বেড়ে ওঠে তাহলেই কেবলমাত্র আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ ভালো করতে পারব আর সেজন্যই শিশুদের জন্য আমাদের সবসময় সজাগ দৃষ্টি এবং চেষ্টা থাকা জরুরি।
আমার কর্মস্থলে এই দিবসটি খুব ভালো ভাবে উদযাপন করা হয়েছে এবং এই বিষয়ে মূল প্রতিপাদ্য আলোচনা করা হয়েছে যাতে করে সবাই এই দিনটিকে ঘিরে শিশুদের জন্য আরও বেশি সংবেদনশীল এবং মায়া-মমতা লালন করতে পারে। আমরা চাই আগামীর বিশ্ব অনেক ভালো একটি বিশ্ব হোক যেখানে শিশুরা থাকবে নিরাপদ। আসুন আমরা সবাই মিলে শিশুদের জন্য সহানুভূতি এবং তাদের সমৃদ্ধির জন্য কাজ করার চেষ্টা করি।
এই সিরিজে পূর্বের পোস্টগুলোর তালিকাঃ
পর্ব | ০১ | সবার সম্মিলিত খুদ্র প্রয়াসে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ | ০২ | একজন ফুটবল কিংবদন্তী ও ইতিহাস | ০৩ | পড়ন্ত বিকেলে ছুটি খা দিঘীর পাড়ে | ০৪ | করোনার অসুবিধাকে সুবিধায় রুপান্তর | ০৫ | গ্রামে গ্রামে মোবাইল আসক্তি | ০৬ | মরে গিয়েও বেঁচে থাকা | ০৭ | প্রতিযোগিতা নাকি প্রতিদ্বন্দ্বিতা | ০৮ | প্রতিকার নাকি প্রতিরোধ | ০৯ | অনলাইন পরীক্ষা রস | ১০ | পরিবার নাকি গ্যাজেট | ১১ | শান্ত সমুদ্রে দক্ষ নাবিক তৈরি হয় না | ১২ | বরশি দিয়ে মাছ ধরার অভিজ্ঞতা | ১৩ | আসল স্বাদ এর রসমলাই | ১৪ | শিক্ষক দিবস ও শিক্ষা নিয়ে কিছু কথা | ১৫ | ব্যাটসম্যান পরিবর্তন হয়ে এখন ব্যাটার | ১৬ | ইন্টারনেট ছাড়া আমাদের জীবন (ইন্টারনেটের কুফল) |
|
---|
আপনার পোস্টগুলো আমি নিয়মিত দেখি ভাই, আপনার পোস্টের মধ্যে প্রতিনিয়ত সৃজনশীলতা ছোঁয়া পায়। আজকের পোস্টটি থেকে অনেক শিক্ষা এবং সৃজনশীল বস্তু দেখলাম। অনেক গুছিয়ে লিখেছেন ভাই শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য
ধন্যবাদ।
আপনার পোষ্টের মাধ্যমে অনেক কিছুই জানতে পারলাম।তবে অনেক জায়গায় শিশুরা এখনো বর্তমান সমাজে নির্যাতনের শিকার।এটি খুবই দুঃখজনক ও লাঞ্ছনাজনক।এক্ষেত্রে সরকারের কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।ধন্যবাদ ভাইয়া।
একদম বাস্তব কথা বলেছেন। অন্যদের অপরাধ আছে কিনা জানিনা তবে শেখ রাসেল সহ পরিবারের অন্যান্য মহিলাদের হত্যাকান্ডকে আমি কোনো ভাবে মেনে নিতে পারিনা। আমাদের অবশ্যই নারী ও শিশুদের রক্ষা করতে হবে যে কোনো ধরনের যুদ্ধ বিগ্রহ থেকে। আজকের টপিক টা অনেক বেদনার ছিল। তবে সুন্দর একটি বিষয় তুলে ধরেছেন ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
!invest_vote
@umuk denkt du hast ein Vote durch @investinthefutur verdient!
@umuk thinks you have earned a vote of @investinthefutur !