প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গঃ পর্ব ১৪ || শিক্মাষক দিবসের স্বরূপ ও কিছু কথা (Teachers Day) [10% beneficiary @shy-fox]
ভূমিকাঃ
মাঝে মাঝে আমাদের চারপাশের জীবন, প্রকৃতি, পরিবেশ, সৌন্দর্য্য ও নানাবিধ বিষয় নিয়ে লিখতে ইচ্ছে হয় যেসব লিখার বিষয়বস্তুকে কোন নির্দিষ্ট গন্ডীর মধ্যে ফেলা যায় না। এরকম বিষয়বস্তুগুলোকে নিয়ে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি
-তে আমি একটি সিরিজ লিখছি যার নাম দিয়েছি প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ
যেখানে কোন বিষয় বা প্রসঙ্গ নিয়ে ব্যাক্তিগত মতামত ও পর্যালোচনা করে থাকি। এই লিখার বিষয়গুলো হচ্ছে ব্যাক্তিগত শিক্ষা, অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির সমন্বয়। পড়ে দেখুন, আশা করি ভাল লাগবে।
পর্ব ১৪ : শিক্ষক দিবসে শিক্ষক ও শিক্ষা নিয়ে কিছু কথা
বিশ্ব শিক্ষক দিবস। ১৯৯৪ সালের পর থেকে ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়। এটি ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত একটি দিবস। এই দিবসের কিছু প্রতিপাদ্য ও তাৎপর্য রয়েছে। প্রথমতঃ এই দিবসের তাৎপর্য হচ্ছে শিক্ষকদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য সম্পর্কে আলোকপাত ও স্মরণ করা। দ্বিতীয়তঃ বিশ্বে শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে এবং কোয়ালিটি শিক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে শিক্ষকতা পেশাজীবীদের যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেগুলো থেকে উত্তরণের জন্য কাজ করা বা স্বরন করিয়ে দেওয়া।
ছবিঃ আমার প্রিয় একজন শিক্ষক
শিক্ষাকে জাতির মেরুদন্ড বলা হয়ে থাকে। তাই কোন জাতির মেরুদন্ড যতটা মজবুত হবে সে জাতি তত উন্নত হবে এটাই স্বাভাবিক। মেরুদন্ড শক্তিশালী করার জন্য যেমন শিক্ষা দরকার তেমনি মেরুদন্ড শক্তিশালী করতে গেলে কোয়ালিটি শিক্ষা অথবা যুগোপযোগী শিক্ষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম সিলেবাস পরানো হয় এবং পরীক্ষা পদ্ধতি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম। এটা এক ধরনের অসম শিক্ষাব্যবস্থা যেটা কিনা উন্নত ও উন্নয়নশীল এবং অন্যান্য দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উপর অনেকাংশে নির্ভর করে। যদিও কিছু ব্যতিক্রমী দেশ রয়েছে তারপরও সামগ্রিকভাবে ব্যাপারটি আসলে অর্থনীতির সাথে জড়িত। একদিকে যেমন ভাল অর্থনীতি না হলে কোয়ালিটি শিক্ষা নিশ্চিত করা কষ্টকর হচ্ছে আবার অন্যদিকে কোয়ালিটি শিক্ষা না হলে অর্থনৈতিক উন্নতিও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ যেন এক দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র মত অবস্থা।
আমরা আমাদের জীবনে একটা ভালো অবস্থায় আসতে গিয়ে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে হয়েছে এবং অনেক সময়ই আমরা বিভিন্ন শিক্ষকের কাছ থেকে বিভিন্ন রকম সহযোগিতা পেয়েছি যা আমাদের জীবন চলার পথকে অনেক সুষম ও মসৃণ করেছে। আসলে শিক্ষকতা হচ্ছে এমন একটা পেশা যারা নিজেরা রাত জেগে এবং পরিশ্রম করে অন্যদের ছেলেমেয়েদেরকে জীবনের পথ দেখাতে সহযোগিতা করে। শিক্ষকদের ছত্রছায়ায় এবং দিকনির্দেশনা একটা ছাত্র জীবনের গতি এবং সঠিক পথ খুজে পায় আর এই অবস্থায় পৌঁছাতে শিক্ষক এর পেছনের ভূমিকা অনবদ্য।
আমি আজকে যে বর্তমান অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছি সেটি কোন লোকেশনে আমার শিক্ষকদের অবদান ছিল অনেক অনেক বেশি এবং সে কারণে আজকে আমি এই শিক্ষক দিবসে আমার শিক্ষকদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা পোষণ করছি। আমার সকল শিক্ষকদের প্রতি অনেক বেশি দোয়া করছি যেন তারা অনেক বেশী ভাল থাকেন এবং সুস্থ থাকেন। আসলে শিক্ষকের হাত ধরে এই পর্যায়ে এসেছে কিন্তু তাদের জন্য তেমন কিছুই করতে পারেনি। অন্তত শিক্ষক দিবসে তাদের জন্য অনেক বেশি শ্রদ্ধা ভালোবাসা ও দোয়া নিবেদন করছে যেন মহান সৃষ্টিকর্তার তাদেরকে অনেক ভালো রাখেন এবং সুস্থ রাখেন।
ছবিঃ ক্লাশে পাঠদান করছি
শিক্ষকতা মাহাত্ম্য এবং তাৎপর্য ছাত্র অবস্থায় খুব বেশি বুঝতে পারতাম না। তখন ব্যাপারটি আমার কাছে এক রকম ছিল কিন্তু যখন আমি শিক্ষকতা পেশায় আসলাম তখন এই বিষয়টিকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে চেষ্টা করলাম। কারণ যখন শিক্ষকতায় বাসায় এসেছি তখন সব সময় একটা চিন্তা আমার মতে কাজ করে সেটা হচ্ছে আমার ছাত্র যেন আমাকেও ছাড়িয়ে যায়। এরকম চিন্তা কেবল বাবা এবং শিক্ষকরাই করতে পারেন কারণ আমাদের ভালো অনেকেই চান না কেবল শিক্ষকরা চান আমরা যেন তাদের কেও ছাড়িয়ে যাই এবং বাবারা সবসময় চান আমরা যেন তাদেরকে ছাড়িয়ে যাই। এটাই হচ্ছে শিক্ষকতা মহাত্ত যেটা কিনা আমি শিক্ষকতা পেশায় আসার পরে বুঝতে পারলাম এবং নিশ্চয়ই আমার শিক্ষকেরাও এভাবে করে আমাকে নার্সিং করার চেষ্টা করেছেন যাতে করে আমি সফলতার দিক থেকে তাদের কেও ছাড়িয়ে যেতে পারি আর এতেই তারা নিজেদেরকে সফল ভাবতেন পাশাপাশি এই কাজ ও চিন্তা ছিল নিঃস্বার্থ।
বর্তমান সময়ে সামাজিক নানা প্রতিকূলতা এবং এক ধরনের অসুস্থ আর্থিক প্রতিযোগিতার জন্য অনেক সময় শিক্ষকদেরকে নৈতিক মানদন্ড থেকে সরে আসতে দেখা যায় যে এটি আসলে সমস্যা এবং সমাজের জন্য খুবই ক্ষতিকর। শিক্ষকরা যদি আর্থিক দিককে খুব বেশি প্রাধান্য দেন এবং বাণিজ্যিকভাবে সবকিছু চিন্তা করেন তাহলে সমাজের যে মেরুদন্ড সেটা আস্তে আস্তে ধ্বংস হয়ে যাবে কারণ শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং আস্থা কমে যাবে যেমনটি বর্তমান সময়ে কিছুটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ছবিঃ এই পেশায় কাজ করে খুব উপভোগ করি
ছাত্রদেরকে যেমন তাদের জায়গা থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব খুব ভালোভাবে পালন করতে হবে তেমনি শিক্ষকদেরকেও তাদের জায়গায় সৎ, যোগ্য, আস্থাশীল এবং দক্ষ হতে হবে। আর শিক্ষকদের যে কোনো সুযোগ-সুবিধা এবং আর্থিক দিকগুলো সমাজের বা রাষ্ট্রের যারা নীতিনির্ধারক রয়েছেন তাদেরকে চিন্তা করতে হবে যাতে করে শিক্ষকদের অন্যদিকে চিন্তা করতে না হয়। আর এভাবে করে সবকিছু চলতে পারলেই আমাদের শিক্ষকরা ভালো থাকবেন আর এর ফলে আমরা সুশিক্ষা পাবো আর সেই সুবাদে জাতি হিসেবে ভালো কিছু করতে পারবো। অনেক ধন্যবাদ।
এই সিরিজে পূর্বের পোস্টগুলোর তালিকাঃ
পর্ব | ০১ | সবার সম্মিলিত খুদ্র প্রয়াসে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ | ০২ | একজন ফুটবল কিংবদন্তী ও ইতিহাস | ০৩ | পড়ন্ত বিকেলে ছুটি খা দিঘীর পাড়ে | ০৪ | করোনার অসুবিধাকে সুবিধায় রুপান্তর | ০৫ | গ্রামে গ্রামে মোবাইল আসক্তি | ০৬ | মরে গিয়েও বেঁচে থাকা | ০৭ | প্রতিযোগিতা নাকি প্রতিদ্বন্দ্বিতা | ০৮ | প্রতিকার নাকি প্রতিরোধ | ০৯ | অনলাইন পরীক্ষা রস | ১০ | পরিবার নাকি গ্যাজেট | ১১ | শান্ত সমুদ্রে দক্ষ নাবিক তৈরি হয় না | ১২ | বরশি দিয়ে মাছ ধরার অভিজ্ঞতা | ১৩ | আসল স্বাদ এর রসমলাই |
|
---|
আপনাকে জানাই শিক্ষক দিবসের শুভেচ্ছা।
প্রথমেই বলবো, এই দিনটি আপনাদের মতো যোদ্ধাদের জন্যই যারা প্রতিনিয়ত আমাদের মানুষ বানিয়ে যাচ্ছেন।
শুধু দোয়া করবেন যেনো সবসময় শিক্ষকদের সম্মান করতে পারি আর আমাদের পাশে থাকবেন। ❤️❤️
জি অবশ্যই। ধন্যবাদ আপনাকে
শিক্ষক দিবসের শুভেচ্ছা রইলো। শিক্ষকরাই জাতি গঠনের মূল কারিগর। আর শিক্ষকদের সম্মান অবশ্যই সবার চেয়ে বেশি। কারণ, গুরুজনেরা হাজারো ফুল ফোটায় শিক্ষাঙ্গনে।আর বিশেষ করে, শিক্ষক দিবস নিয়ে আপনার মূল্যবান আলোচনাটি আমাকে বেশ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
শিক্ষক দিবসের শুভেচ্ছা রইলো। শিক্ষকরাই জাতি গঠনের মূল কারিগর। আর শিক্ষকদের সম্মান অবশ্যই সবচেয়ে বেশি 🌹🌹🌹🌹।
শিক্ষক দিবস নিয়ে আপনার অনেক সুন্দর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। আসলে শিক্ষকরা হলেন দেশ গঠনের কারিগর এবং সম্মানের পাত্র। আর আপনি দেশ গঠনের এই মহৎ কাজের একজন অংশীদার। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
শিক্ষকরাই জাতি গঠনের মূল কারিগর। আর শিক্ষকদের সম্মান অবশ্যই সবার চেয়ে বেশি। কারণ, গুরুজনেরা হাজারো ফুল ফোটায় শিক্ষাঙ্গনে।আর বিশেষ করে, শিক্ষক দিবস নিয়ে আপনার মূল্যবান আলোচনাটি আমাকে বেশ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
শিক্ষক দিবসের শুভেচ্ছা রইলো ভাইয়া।আপনি অনেক মূল্যবান কথা তুলে ধরেছেন ভাইয়া।আমাদের জীবনে চলার পথে শিক্ষকরাই আমাদেরকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে চলার পথকে মসৃন করে।শিক্ষকরা আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক।সকল শিক্ষকদেরকে জানাই আমার বিনম্র শ্রদ্ধা ও শতকোটি প্রণাম।ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আপু।
শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড যদি হয় সুশিক্ষা। আপনার স্যার এর ছবি দেখে আমার পুরানো দিন এর কথা খুব মনে পরে যাচ্ছে। সেই দিন গুলি সত্যি খুব মিস করি ভাই। একজন শিক্ষক একটু নতুন জাতী তৈরি করে আমি মনে করি। সকল শিক্ষক এর প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা রইল।
ঠিক বলেছেন। আপনার জন্যও ভালবাসা