প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গঃ পর্ব ০৮ || প্রতিকার নাকি প্রতিরোধ (Prevention or cure)[10% beneficiary @shy-fox]
ভূমিকাঃ
মাঝে মাঝে আমাদের চারপাশের জীবন, প্রকৃতি, পরিবেশ, সৌন্দর্য ও নানাবিধ বিষয় নিয়ে লিখতে ইচ্ছে হয় যেসব লিখার বিষয়বস্তুকে কোন নির্দিষ্ট গন্ডীর মধ্যে ফেলা যায় না। এরকম বিষয়বস্তুগুলোকে নিয়ে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি
-তে আমি একটি সিরিজ লিখছি যার নাম দিয়েছি প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ
যেখানে কোন বিষয় বা প্রসঙ্গ নিয়ে ব্যাক্তিগত মতামত ও পর্যালোচনা করে থাকি। এই লিখার বিষয়গুলো হচ্ছে ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির সমন্বয়। পড়ে দেখুন, আশা করি ভাল লাগবে।
পর্ব ০৮: প্রসঙ্গের বিষয়ঃ প্রতিকার নাকি প্রতিরোধ
প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গটিঃ
বাংলা ইংরেজি অনেক ভাষায় একটি কথা প্রচলিত আছে যে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। অর্থাৎ কোন কিছু আমরা প্রতিকার করতে চাইলে তার চেয়ে ভালো হচ্ছে সেটা আগে থেকে প্রতিরোধ করা। প্রতিকার ও প্রতিরোধ বিষয়ে কারো যদি কোন সংশয় থেকে থাকে তাহলে আপনি ঠিক জায়গাতে চলে এসেছেন। আজকে আমি প্রতিকার এবং প্রতিরোধ সম্বন্ধে বিস্তারিত ভাবে ব্যাখ্যা করতে চলেছি।
প্রতিকার হচ্ছে যখন আমাদের সামনে কোন সমস্যা হয়ে যায় সেই সমস্যাটাকে সমাধান করা। যেমনঃ উদাহরণস্বরূপ আমার কম্পিউটারে কোন একটা সমস্যা দেখা দিল। আমি সাথে সাথে সেই সমস্যাটা সমাধান করলাম। তার মানে হচ্ছে আমি সমস্যাটি প্রতিকার করলাম। অথবা আমার জ্বর হলো আর সেই জ্বরকে সারিয়ে তোলার জন্য আমি কোন ব্যবস্থা নিলাম। সেই ব্যবস্থাটা হচ্ছে প্রতিকার করা।
প্রতিরোধ হচ্ছে আগে থেকে কোন কিছু ঘটার পূর্বেই সেই ব্যাপারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা। যেমন আমরা যদি কিছু খুঁটিনাটি সাবধানতা অবলম্বন করি তাহলে অনেক বিষয়ে সমস্যা তৈরি হবেনা বা তৈরি হওয়ার প্রবণতা অনেক কম থাকে। উপরের উদাহরণে আমি যদি কম্পিউটারে এন্টিভাইরাস ব্যবহার করতাম বা কোন প্রোগ্রাম ব্যবহার করতাম বা সতর্কতামূলক কাজ করতাম তাহলে হয়তোবা এই সমস্যাটি হতো না। এরকম ব্যবস্থা আগে থেকে গ্রহণ করাটাই হচ্ছে প্রতিরোধ। দ্বিতীয় ব্যাপারে আমরা জানি যে স্বাভাবিক ভাবে আমরা যদি বৃষ্টিতে ভিজে যাই কিংবা প্রবল রোদে অনেকক্ষণ থাকি বা আমাদের শরীরের কোথায় ব্যথা হয় তাহলে আমাদের জ্বর আসতে পারে। তাই আমি যদি এই বিষয়গুলো মেনে চলি এবং জ্বর না আসার জন্য আগে থেকেই ব্যবস্থা নেই তাহলে সেটাই হচ্ছে প্রতিরোধ।
প্রতিকার এবং প্রতিরোধ বিষয়টি সম্বন্ধে ধারণা হয়ে গেল। এবার আসা যাক কোনটি ভালো। যদি আমাদের কোন কিছু হয়ে যায় তাহলে তো দ্রুত আপনার এটা সামগ্রিকভাবে প্রতিকার করা জরুরি অন্যথায় আমরা এটা নিয়ে ভুগতে থাকবেন। আর যদি আমাদের কাছে প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা থাকে তাহলে অবশ্যই আমরা প্রতিরোধের দিকে ধাবিত হওয়াটাই উত্তম। অর্থাৎ কোন কিছু ঘটে যাওয়ার আগেই সেই বিষয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া। আমরা যদি কাউকে তার পথ থেকে বিচ্যুত হতে দেখি তাহলে আগে থেকেই তাকে সাবধান করে দেওয়া যাতে করে সে সেই বিচ্যুতির পথের দিকে আর না আগাতে পারে। আর যদি বিচ্যুতির পথ বেছে নেয় তাহলে যেটা করতে হবে সেটা হচ্ছে প্রতিকার।
ছবির উৎসঃ Image by Miguel Á. Padriñán from Pixabay
যেহেতু প্রতিকার করলে সমস্যার সমাধান হয়ে যায় সেক্ষেত্রে কোন সমস্যা তৈরি হলে প্রতিকার অবশ্যই ভালো কিন্তু যদি আমাদের হাতে সুযোগ থাকে তাহলে আমাদের জন্য প্রতিরোধ করাটা অনেক বেশি উত্তম কারণ প্রতিরোধ করতে পারলে সেই সমস্যাটা আর তৈরি হবে না। যেমন যদি আমি জ্বর প্রতিরোধ করতে পারি তাহলে জ্বরের জন্য আমার ভোগান্তি হবে না কিংবা ওষুধের প্রয়োজন হবে না। এরকম প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে যদি আমরা প্রতিরোধ করতে পারি তাহলে প্রতিকারের চেয়ে এটা অনেক অনেক ভাল ফলাফল এনে দেয়।
বিশেষ করে আমাদের জীবনযাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি খাবার-দাবার এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তন না করি তাহলে আমাদের নানাবিধ সমস্যা তৈরি হবে। আরামের জীবনযাপন করলে শরীরে রোগ ব্যাধি বাসা বাঁধবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু এরপরেও যদি আমরা আমাদের জীবনযাত্রার মান ঠিক রেখে একটা ভালো লাইফস্টাইল অনুসরণ করি তাহলেই আমাদের জন্য রোগ ব্যাধি থেকে দূরে থাকা সম্ভব। আর এই ব্যবস্থাটাই হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম যদিও আমাদেরকে প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু কষ্ট করতে হবে। তবে যত কষ্ট হোক না কেন সেটা অসুস্থ হয়ে দীর্ঘ সময় ভোগান্তির চেয়ে অনেক ভালো।
এজন্য সব সময় বলা হয় যেখানে সম্ভব সেখানে অবশ্যই প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ অনেক ভালো। ইংরেজিতে এটাকে বলা হয় Prevention is better than cure.
শেষকথাঃ
লিখাটি পড়ে যদি কেউ উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে কমেন্টে জানাবেন। কারো ভাললাগা বা উপকৃত হওয়ার মাঝেই এই লিখার সার্থকতা। প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ সিরিজে আমার লিখা অন্য বিষয়গুলোর লিঙ্ক নিচে দিয়ে দিলাম। ভাল লাগলে সেগুলোও চোখ বুলিয়ে আসতে পারেন। ধন্যবাদ।
এই সিরিজে আমার লিখা পূর্বের পোস্টগুলোর তালিকাঃ
এই পোস্টের লিখা কোথাও থেকে কপি করা হয়নি। কোন তথ্য বা ছবি অন্য কোন উৎস হতে নিয়ে থাকলে সোর্স দেয়া হয়েছে
আমি কেঃ
ভোট দিন, মতামত থাকতে মন্তব্য করুন, পোস্টটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন এবং আমাকে ফলো করুন @engrsayful
অন্যান্য মিডিয়াতে আমার সাথে যুক্ত হতে পারেনঃ
Youtube | ThreeSpeak | DTube |
আপনার লেখা পড়লে অনেক কিছু শিখতে পারি। অনেক কিছু জানতে পারি। আপনার পোস্ট নিঃসন্দেহে শিক্ষনীয় পোস্ট। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য ভাইয়া
আপনার ভালো লেগেছে এটা জেনেই অনেক ভালো লাগছে। শিক্ষনীয় বিষয় গুলো শেয়ার করতে আমি পছন্দ করি
আপনি অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই,আপনার লেখা পড়লে অনেক কিছু শিখতে পারি। অনেক কিছু জানতে পারি। আপনার পোস্ট নিঃসন্দেহে শিক্ষনীয় পোস্ট। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো 🥀
আমার পোস্ট থেকে আপনি নতুন নতুন বিষয় শিখতে পেরেছেন এটা জেনে ভালো লাগছে এবং আশা করছি ভবিষ্যতে আরও এরকম শিক্ষামূলক পোস্ট শেয়ার করতে পারব যাতে করে উপকৃত হতে পারেন। অসংখ্য ধন্যবাদ
প্রত্যেকবারের মতো এবারও আপনার গল্পে ছিল শিক্ষনীয় কিছু ব্যাপার। আমরা কীভাবে কোনো সমস্যার প্রতিকার করব বা কোনো জটিল সমস্যার প্রতিরোধ করব সেটা সুন্দর ভাবে আপনি উপস্থাপন করেছেন।
জীবনের বেশ কিছু সমস্যা আমাদেরকে প্রতিকার করতে হয় আবার অনেক ক্ষেত্রে আমরা কিছু সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারি। ধন্যবাদ বিষয়টি অনুধাবন করার জন্য
🙂🙂
"এটার তো প্রতিকার আছেই"- এই মনোভাব অনেক সময় আমাদেরকে প্রতিরোধ করার বিষয়টা আমাদের মন থেকে দূর করে দেয়। যেমন ধরুন আমার ক্ষেত্রেই একটা উদাহরণ দেই।
অনেক আগে কম্পিউটারে এন্টিভাইরাস ব্যবহার করলেও এখন আর করি না। যখন দেখি যে কম্পিউটার বেশী স্ল হয় গেছে সরাসরি আবার উন্ডোজ সেট আপ দিয়ে ফেলি (প্রতিকার)। এজন্য প্রতিরোধের কোন ব্যবস্থা (এন্টিভাইরাস) না থাকায় কয়েক মাস পর পরই আমার সেট আপ দেয়া লাগে ।
ভাল সিরিজ চালাচ্ছেন ভাই। চালিয়ে যান।
ঠিক বলেছেন ভাই। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে এন্টিভাইরাসের পক্ষে না কারণ এন্টিভাইরাস গুলো অনেক ভালো সফটওয়্যার কেউ আটকে দেয়। তাই আমি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে অযাচিত কোন সাইটে একটি ল্যাপটপ থেকে কখনোই প্রবেশ করি না শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় এবং বিশ্বস্ত সাইট গুলোতে প্রবেশ করি। আর আমি নিজেই ল্যাপটপ কম্পিউটার সবসময় ব্যবহার করি সেটিতে কখনোই পেনড্রাইভ মেমোরি কার্ড মোবাইল ফোন সংযুক্ত করি না।
আর এভাবে করে আলহামদুলিল্লাহ কত 2/3 বছর ধরে ভালো আছি