প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গঃ পর্ব ২২ || পরিশ্রম কখনো বৃথা যায় না || Hard work never in vain [10% @shy-fox]
ভূমিকাঃ
মাঝে মাঝে আমাদের চারপাশের জীবন, প্রকৃতি, পরিবেশ, সৌন্দর্য্য ও নানাবিধ বিষয় নিয়ে লিখতে ইচ্ছে হয় যেসব লিখার বিষয়বস্তুকে কোন নির্দিষ্ট গন্ডীর মধ্যে ফেলা যায় না। এরকম বিষয়বস্তুগুলোকে নিয়ে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি
-তে আমি একটি সিরিজ লিখছি যার নাম দিয়েছি প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ
যেখানে কোন বিষয় বা প্রসঙ্গ নিয়ে ব্যাক্তিগত মতামত ও পর্যালোচনা করে থাকি। এই লিখার বিষয়গুলো হচ্ছে ব্যাক্তিগত শিক্ষা, অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির সমন্বয়। পড়ে দেখুন, আশা করি ভাল লাগবে।
পর্ব ২২ : পরিশ্রম কি বৃথা যায় || পন্ডশ্রম নিয়ে কিছু কথা
পরিশ্রম কখনো বৃথা যায় না। এটি এক ধরনের প্রবাদের মত কিন্তু আসলে এটা কতটুকু সত্য সেই বিষয়টা নিয়ে একটু আলোকপাত করা দরকার। আমরা আমাদের জীবনের দৌড়ে অনেক সময় অনেক ধরনের পরিশ্রম করে থাকি কিন্তু সব পরিশ্রম আমাদের কাজে আসে না কিন্তু সত্যিই কি তাই। আমি মনে করি এটি ঠিক নয় কারণ পরিশ্রম কোনো-না-কোনোভাবে আমাকে কোনো না কোনো সুবিধা দিবেই এটা আমি বিশ্বাস করি। একথা ঠিক যে আমরা অনেক সময় পন্ডশ্রম করে থাকি কিন্তু সেই পরিশ্রমের মধ্যেও কিছু না কিছু বেনিফিট বা সুবিধা আমরা পেতে পারি বা পেয়ে যাচ্ছি। কিন্তু সেটা কিভাবে চলুন একটু বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক।
যখন আমরা কোনো পরিশ্রম করি তখন আমাদের সেই পরিশ্রম অন্যটা নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে উদ্দেশ্য করে হয়ে থাকে। কিন্তু যখন আমরা সেই লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য অর্জন করতে পারি না তখনই সেই পরিশ্রম থাকে অনেকের পন্ডশ্রম বলতে চায়। আমরা যদি কোন একটা কাজ করার ক্ষেত্রে উপযুক্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করার মাধ্যমে কাজ শুরু করি এবং কাজের সম্ভাব্য যেসব সমাধানের পদ্ধতি আছে সেগুলো থেকে যেকোন একটাকে বাছাই করে কাজ করার চেষ্টা করি তাহলে সেই কাজে যদি আমরা ব্যর্থ হয়ে যাই তারপরও সেটা পন্ডশ্রম নয়। এর প্রধান কারণ হচ্ছে এই কাজ করার মাধ্যমে আমি আমার শারীরিক সক্ষমতা কে প্রমাণ করছি বা আমার নিজের যোগ্যতাকে যাচাই করার চেষ্টা করছে। দিনশেষে যদি আমি ব্যর্থ হয়ে যায় তারপরও এই কথা বলা যাবে যে আমরা ব্যর্থ নই কারণ আমরা ব্যর্থতার একটা পথ খুজে পেয়েছি। এমন একটা রাস্তা আমরা খুঁজে পেয়েছি যে রাস্তায় চলে আমাদের কাজ হবে না অথবা এই কাজটি কোন পথে সমাধান হওয়ার মতো নয় সেই বিষয়ে আমরা একটা সম্যক ধারণা পেয়েছি যেটা কিনা আগে পাওয়া সম্ভব ছিল না।
ছবির উৎসঃ Image by joffi from Pixabay
এছাড়া যখন আমরা কোন কাজে মশগুল থাকে তখন সেই কাজ নিয়ে যেত ব্যস্ত থাকি তাই অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় অর্থাৎ আনপ্রডাক্টিভ কাজ করার মত সময় আমার হাতে থাকে না। তাই কোন কাজের চেষ্টা করার দ্বারা আমরা নিজেদেরকে কোন একটা কাজে ব্যস্ত রাখছি যেটা আমাদের শারীরিক সক্ষমতা অভিজ্ঞতা অর্জন এবং কিছু নতুন নতুন আবিষ্কার পদ্ধতির ক্ষেত্রে আমাদেরকে এগিয়ে দেয়। যেমন কোনো একটা ব্যক্তি একটা কাজ করে ব্যর্থ হল তাহলে সে যদি ব্যর্থ হন হত বা এই কাজে অন্তত চেষ্টাই না করতো তাহলে সে অবশ্যই অন্য একটা এমন কাজে ব্যস্ত থাকত ওই সময়টাতে যেটার কোনো ফলাফলই আসতো না অর্থাৎ সে হয়তো বাবা যেভাবে সম্মান টাকে নষ্ট করে দিলো বিভিন্ন আড্ডার মাধ্যমে। তাই এদিক থেকে চিন্তা করলেও আমরা বুঝতে পারে পরিশ্রম আসলে কখনো বৃথা যায় না।
এই বিষয়টাকে আমরা আরেকটা উদাহরণ দিয়ে বোঝার চেষ্টা করি। অনেক সময় আমরা দেখি ছাত্ররা কেবলমাত্র সেই সমস্ত বিষয়গুলি অধ্যায়ন করে থাকে যেগুলো পরীক্ষায় আসার মত। এমন বিষয় গুলোকে তারা এড়িয়ে যায় যেগুলো তাদের পরীক্ষায় আসবে না এবং ওই বিষয়গুলোকে আয়ত্ত করা বা অধ্যায়ন করাকে তারা পন্ডশ্রম মনে করে। এই উদাহরণের মাধ্যমে আপনারা বুঝতে পারছেন যে আসলে এটা পরীক্ষায় আসবে সেটা অধ্যায়ন করা হচ্ছে শ্রম বাকিটা পন্ডশ্রম। এমন ধারনা পোষন করে থাকে কিছু সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী বা শিক্ষার্থী। কিন্তু আসলে যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা এভাবে চিন্তা না করে বরং সবকিছুকেই অধ্যায়ন করার পেছনে পরিশ্রম করে তাদের পরিশ্রমটা কখনোই পন্ডশ্রম নয়। কারণ দিন শেষে তারা পড়াশোনা করার মত একটা ধৈর্য মেধা পরিশ্রমের মন মানসিকতা এবং একটু বেশি পরিমাণ জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নিজেদের প্রজ্ঞাকে যেমন বৃদ্ধি করতে পারছে তেমনি দক্ষতা ও জ্ঞান বৃদ্ধির মাধ্যমে জীবনের দৌঁড়েও অন্যদের চেয়ে অবশ্যই এগিয়ে যাচ্ছে।
ছবির উতসঃ Image by StockSnap from Pixabay
তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, কোন কাজ পরিকল্পনা হাতে নিয়ে যদি একটা লক্ষ্য বাছাই করে কোন একটা পদ্ধতিতে করা হয়ে থাকে তাহলে সেই কাজে ব্যর্থ হলেও সেটা কখনোই পন্ডশ্রম নয় বরং দিনশেষে আমাদেরকে এভাবে করে চিন্তা করা উচিত যে, পরিশ্রম কোনভাবেই কখনো বৃথা যায় না। কারণ আমি আমার ব্যক্তিগত জীবনে অনেক অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি এমন অনেক বিষয় যখন আমি পরিশ্রম করেছি বা পন্ডশ্রম করেছি এবং মনে করতাম এগুলোর কোনো প্রয়োগ জীবনে ঘটবে না কিন্তু একটা সময়ে গিয়ে ঠিকই বুঝতে পেরেছি যে বিষয়গুলো কেন আমার প্রয়োজন ছিল এবং ওই কাজগুলো করার মাধ্যমে আমি নিজেকে কতটা সামনের দিকে এগিয়ে আনতে পেরেছে। এবং যেগুলো ছেড়ে দিয়েছি পন্ডশ্রম মনে করে সেগুলোও কারণে কতটা পিছিয়ে পড়েছি। আশা করি আজকের আলোচ্য বিষয়টি আপনি বুঝতে পেরেছেন এবং ধন্যবাদ সবাইকে।
এই সিরিজে পূর্বের পোস্টগুলোর তালিকাঃ
আমি কেঃ
কথাগুলো একদম যথার্থ বলেছেন ভাইয়া। বিশেষকরে আমরা ছাত্ররাও পরীক্ষার আগে শুধু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো পড়ে থাকি। আমাদের উচিত একটু কষ্ট করে হলেও ভালো করে পড়ে যাওয়া।
আরেকটি বিষয় বলেছেন এটা হচ্ছে পরিকল্পনা করে কাজ করা। পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করলে আসলেই সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আমাদের সাথে কথাগুলো শেয়ার করার জন্য।
"পরীক্ষায় আসবে সেটা অধ্যায়ন করা হচ্ছে শ্রম বাকিটা পন্ডশ্রম", এবং "পরিশ্রম কোনভাবেই কখনো বৃথা যায় না"।যথার্থ বলেছেন ভাইয়া৷ আপনার পোস্ট গুলো থেকে অনেক শিক্ষা পাই। অসংখ্য ধন্যবাদ এর জন্য।
ধন্যবাদ
আমিও আপনার এই কথাটির সাথে একদম একমত ভাইয়া। পরিশ্রম কখনো বৃথা যায় না। কারণ পরিশ্রম যে আমরা করি তা আমাদের সৃষ্টিকর্তা দেখেন এবং সৃষ্টিকর্তা যোগ্য কেই সবসময় তার প্রাপ্য টা দেন। যখন কেউ কোনো পরিশ্রম করেও হেরে যায় তার মানে সে নতুন কিছু শিখেছে এবং সেই শিক্ষাটাকে এখন সে সামনের দিকে কাজে লাগাবে। আপনার লেখাটি আমার কাছে খুবই সুন্দর লেগেছে। আপনার লেখাগুলো সব সময় খুব সুন্দর হয়।
এই ব্যাপারটা লেখার মধ্যে লিখার কথা ছিল কিন্তু লেখার সময় মনে ছিলনা। অনেক চমৎকার বললেন। ধন্যবাদ।
পরিশ্রম কখনোই বিফলে যায় না। পরিশ্রম করে কোনো কাজ করলে হয় আপনি সফল হবেন না হলে আপনি শিখবেন। সেটা কখনোই ব্যর্থ হবে না।
এবং পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। এটা তো আমাদের সবারই জানা। অনেক ভালো আলোচনা করেছেন ভাই। অনেক কিছু যেন নতুন করে শিখলাম।