গল্পে গল্পে জীবনের শিক্ষাঃ পর্ব ১৯ || কুঠার ও কাঠ || স্বার্থপরতা ও বিশ্বাসঘাতকতা || Story of Ax and Wood [10% for @shy-fox]
ভূমিকাঃ
ভূমিকাঃ
গল্পে গল্পে যখন আমরা কোনো কিছু শিখি তখন সেটা আমাদের মনে অনেকদিনের জন্য গেঁথে যায়। তাই গল্পে গল্পে কোন কিছু শিখার আনন্দ অন্যরকম। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি-তে আমি কয়েকটি সিরিজ লিখছি।
তার মধ্যে গল্পে গল্পে জীবনের শিক্ষা
সিরিজটি অন্যতম যেখানে একটি গল্প এবং এই গল্প থেকে আমাদের বাস্তব জীবনের শিক্ষামূলক কিছু দিক শেয়ার করে থাকি। গল্পগুলো মূলত ঈশপের গল্প বা অন্য কোন ছোট আকারের গল্প। আশা করি গল্পগুলো ও এর অন্তনিহিত শিক্ষা আপনার ভাল লাগবে।
Thumbnail Background Source: Image by Clker-Free-Vector-Images from Pixabay
পর্ব ১৯: কুঠার ও কাঠ এর গল্প
প্রথমে গল্পটিঃ
প্রথমে গল্পটিঃ
কুঠার এবং কাঠের মধ্যে কোন শত্রুতা নেই। তারপরও দেখা যায় কুঠার কাঠ কাটে। এই ব্যাপার নিয়ে কাঠ একটু বেশি অসুস্থ কারণ কুঠার এর জন্যই তাকে কেটে চৌচির করা হয়। গাছ এবার কুঠার কে জিজ্ঞেস করল ভাই তোমার সাথে আমার কোন শত্রুতা নেই তারপরও তুমি আমাকে কেন কাট? কুঠার উত্তর দিলঃ আমার কোন সাধ্য নেই তোমাকে কাটার যদি তোমার স্বজাতি আমার পেছনে না থাকতো।
গল্পের শিক্ষাঃ
গল্পের শিক্ষাঃ
আজকের গল্পটি অনেক ছোট একটি গল্প কিন্তু এই গল্পের মাধ্যমে আমরা আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি। আমরা যখন আমাদের চারপাশে তাকাই তখন দেখতে পাই কোন একটা দেশের কিংবা একটা সমাজের অথবা একটা পরিবারের পতন এর পিছনে মূলত ওই দেশ, পরিবার কিংবা সমাজের কিছু সংখ্যক মানুষের স্বার্থপরতা এবং বিশ্বাসঘাতকতা রয়েছে। আপনারা জানেন কোন একটা জাতির পক্ষে কখনো অন্য একটা জাতির কাছে গিয়ে যুদ্ধ করে অথবা অন্য কোন ভাবে জয় লাভ করা সম্ভবপর হবে না যদিনা ওই জাতি থেকে কিছু লোক সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে।
যেমনটি আপনারা গল্পে দেখতে পেলেন, কুঠার দিয়ে কখনই কোন ব্যক্তি কাঠ কাটতে পারবে না যদি কুঠার এর পিছনে হাতল লাগানো থাকে। হাতল কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয় এবং সেই হাতল লাগানোর কারণেই কুঠার দিয়ে কাঠ সহজে কাটা যায়। অনেকটা একই রকম ঘটনা আমাদের চারপাশে আমরা পর্যবেক্ষণ করতে পারি।
আমরা অনেক ক্ষেত্রে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য মীরজাফর উপাধি দিয়ে থাকি অর্থাৎ মীরজাফর মানেই বোঝানো হয় বিশ্বাসঘাতক হিসেবে। বিশ্বাসঘাতকতার অনন্য এবং অনেক নজির রয়েছে সারা বিশ্বে আর এই কারণেই মূলত একটি সমাজ, দেশ বা জাতি ধ্বংস হয়ে যায়।
Source: Image by Markus Spiske from Pixabay
আমরা আমাদের কর্মক্ষেত্রে এই ব্যাপারটি খুব ভালোভাবে দেখতে পারি যে, যখন কোন একজন সহকর্মী কোন একটা কাজ করতে ভুল করেন কিংবা ব্যর্থ হন তখন তার পাশের আরেকজন সেই কথাটি উপরের মহলে কিংবা অন্যদের কাছে প্রচার করে বেড়ান। যে ভুলটি করা হয়েছে সেটি হয়তোবা অত্যন্ত সাধারণ এবং শুধরে নেওয়ার মতো সুযোগ রয়েছে কিন্তু তারপরও এই ব্যাপারটিকে অন্য মানুষের কাছে প্রচার করা এবং নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একেবারে কাছের মানুষটি ভূমিকা রাখে যার সাথে সারাক্ষণ বসে কাজ করা হয়।
নিজেরা নিজেদের জন্য যখন ক্ষতির কারণ হয় তখন সেই ক্ষতিটা সবথেকে বড় একটা ক্ষতি হয়। বাইরের কারও দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেই ক্ষতিটা হয়তোবা পুষিয়ে ওঠা যাবে কিন্তু কাছাকাছি মানুষজন দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয় কারণ কাছের মানুষগুলো ভালো জানে কোথায় সবচেয়ে বেশি দুর্বলতা রয়েছে। তাই এই ব্যাপারটা আমাদের জন্য খুবই সেনসিটিভ।
আমাদের সমাজের অনেক মানুষকে দেখা যায় যারা কিনা পাশের মানুষগুলোর সুখে সুখী হতে পারে না বরং তাদেরকে বিপদে ফেলার জন্য সবসময় চেষ্টা করে। আর এরাই হচ্ছে সেই সকল বিশ্বাসঘাতকতা যারা প্রতিবেশিকে বা পাশের মানুষগুলো বড় করার পরিবর্তে ছোট করার জন্য চেষ্টা করে এবং সাহায্য করার বদলে ক্ষতি বেশি করে। এই ধরনের আচরণ আমাদের সমাজের জন্য একটি ব্যাধি এবং বিষফোঁড়ার মতো। আমরা যখনই এরকম আচরণ এবং চিন্তাভাবনা থেকে উত্তোরন করতে পারব তখন সমাজ, দেশ এবং পৃথিবীটা সুন্দর হবে।
শেষকথাঃ
শেষকথাঃ
আশা করি গল্পের মাধ্যমে আপনি নতুন জিনিস শিখতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। আমার লিখা অন্য গল্পগুলোর লিঙ্ক নিচে দিয়ে দিলাম। ভাল লাগলে সেগুলোও পড়ে আসতে পারেন। আমার লেখাটি এ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই সিরিজে আমার লিখা পূর্বের গল্পগুলোর তালিকাঃ
আমি কেঃ
আমি সাইফুল বাংলাদেশ থেকে। পেশায় শিক্ষক। পড়াশুনা করেছি প্রকৌশলবিদ্যায়। আমি আমার চিন্তাভাবনা এবং ধারণাগুলি ব্লগে শেয়ার করতে ভালবাসি। আমি বিশ্বাস করি, আমার জ্ঞান ও লেখা থেকে একজনও যদি উপকৃত হতে পারেন বা নতুন কিছু শিখতে পারেন তবেই ব্লগে আমার লেখালেখি সার্থক |
---|
অন্যান্য মিডিয়াতে আমার সাথে যুক্ত হতে পারেনঃ
অন্যান্য মিডিয়াতে আমার সাথে যুক্ত হতে পারেনঃ
Youtube | ThreeSpeak | DTube |
ভাই আসলেই গল্প টা ছোট হলেও আপনার শিক্ষা মূলক কথা গুলি অসাধারন ছিল। আসলে দেখা যায় আমরা সবাই বলি যে দেশের এই অবস্থা কেন পরিবর্তন নেই। কিন্তু দিন শেষে দেখা যায় যে আমি নিজেই ঠিক নাই। নিজেই অন্যায় করে চলি।
হ্যাঁ এটা ঠিক বিশ্বাস ঘাতক এর কারণে অনেক দেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আর আসলেই সমাজে অনেক অশ্লীলতা এবং অনেক মারামারি ধ্বংসের পথে চলে যাচ্ছে মানুষের কারণে।এটা একদম বাস্তব কথা। একটা মানুষ যদি ভুল করে আমরা চাই আরো তাকে নিচে নামানোর জন্য তার ভুলটা শুধরানোর প্রয়োজন মনে করি না। এটাই আমাদের একমাত্র দোষ।আসলেই যেদিন আমাদের চিন্তাভাবনা ভালো করতে পারব সেদিন আমাদের সমাজ ও পৃথিবী আরো সুন্দর হবে।
ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ।