গল্পে গল্পে জীবনের শিক্ষাঃ পর্ব ১০ || আমি স্মার্টফোন হতে চাই (I want to be a smartphone)[১০% স্বত্ত্বভোগী @shy-fox]
ভূমিকাঃ
গল্পে গল্পে যখন আমরা কোনো কিছু শিখি তখন সেটা আমাদের মনে অনেকদিনের জন্য গেঁথে যায়। তাই গল্পে গল্পে কোন কিছু শিখার আনন্দ অন্যরকম। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি
-তে আমি কয়েকটি সিরিজ লিখছি। তার মধ্যে গল্পে গল্পে জীবনের শিক্ষা
সিরিজটি অন্যতম যেখানে একটি গল্প এবং এই গল্প থেকে আমাদের বাস্তব জীবনের শিক্ষামূলক কিছু দিক শেয়ার করে থাকি। গল্পগুলো মূলত ঈশপের গল্প বা অন্য কোন ছোট আকারের গল্প। আশা করি গল্পগুলো ও এর অন্তনিহিত শিক্ষা আপনার ভাল লাগবে।
Thumbnail Background Source: Image by Clker-Free-Vector-Images from Pixabay
পর্ব ১০: বাচ্চাঃ আমি স্মার্টফোন হতে চাই
প্রথমে গল্পটিঃ
কোন এক অনুষ্টানে এক বাচ্চাকে প্রশ্ন করা হল যে সে কি হতে চায়। বাচ্চাটির অকপট উত্তরঃ আমি স্মার্টফোন হতে চাই।
বাচ্চার এরকম ইচ্ছায় সবাই তো খুব অবাক। কেন তার এই রকম অবান্তর ইচ্ছে এবং চিন্তা। পরবর্তীতে বাচ্চাটিকে প্রশ্ন করা হলো কেন তুমি এত কিছু থাকতে স্মার্টফোন হতে চাও। তখন আস্তে আস্তে উত্তর দিতে থাকলোঃ আমি যখন বাসায় থাকি তখন আমার বাবা মা আমার দিকে নজর দেয় খুব কম। বরং স্মার্টফোনের দিকে বেশি নজর দেয়। তাদের চোখ সবসময় স্মার্টফোনের মধ্যে লেগে থাকে। তাই আমি স্মার্টফোন হলে খুব ভালো থাকতাম কারন আমার বাবা-মায়ের নজর সব সময় আমার উপর থাকতো। আমার বাবা-মা এর যেখানে আমাকে সময় দেওয়ার কথা সেটা না করে তারা স্মার্টফোনকে খুব বেশি সময় দিচ্ছে এবং দিনের বেশিরভাগ সময়ে তারা স্মার্টফোনকে সাথে সাথে রাখছে। আমি যদি স্মার্টফোন হতাম তাহলে আমি সব সময় আমার বাবা ও মা-কে সামনে পেতাম কারণ তারা অন্তত আমাকে সবসময় সাথে সাথে রাখত এখন তারা স্মার্টফোন কে যেভাবে রাখছে।
উৎসঃ Image by 愚木混株 Cdd20 from Pixabay
আমার যখন ক্ষুধা লাগে তখন আমার বাবা-মায়ের অত বেশি অনুভূতি জাগে না বরং দেখি যখন স্মার্ট ফোনের চার্জ কিছুটা কমে আসে তখন তারা ঠিকই তাদের স্মার্টফোনকে চার্জ দিতে নিয়ে যায়। কিন্তু আমার খাবারের ক্ষেত্রে অতটা গুরুত্ব বা জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজন মনে করে না। কিন্তু এ রকম আমি কখনো দেখিনি যে স্মার্ট ফোনের চার্জ ফুরিয়ে গেছে কিন্তু চার্জ দিতে ভুলে গিয়েছে। এরকম কখনোই হয়নি। তার মানে সব কিছু মিলিয়ে ভালোবাসাটা যেহেতু স্মার্টফোন কেন্দ্রিক তাই আমি যদি স্মার্টফোন হতে পারতাম তাহলে বোধহয় ভালোবাসা অনেক বেশি পেতাম এবং সব সময় সঙ্গে সঙ্গে থাকতে পারতাম। পাশাপাশি চোখে চোখে থাকতাম ও আদর আপ্যায়ন অনেক বেশি পেতাম।
এই গল্পটি স্যোসাল মিডিয়ার কোন প্লাটফর্মে কোন একদিন পড়েছিলাম যা সঠিক মনে করতে পারছিনা এখন।
গল্পের শিক্ষাঃ
গল্পের অন্তর্গত শিক্ষাটি কিন্তু অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ আমরা যদি বর্তমান সময়ে খুব ভালভাবে খেয়াল করি তাহলে দেখতে পারবো আমাদের চারপাশে অনেক মানুষ রয়েছে যারা আসলে স্মার্টফোনে আসক্ত। এখানে শব্দটি আসক্তি প্রয়োগ করতে হচ্ছে কারন সত্যিকার অর্থেই তারা এটির প্রতি এমন ভাবে আসক্ত যে দশ মিনিট পর পরই তাদেরকে স্মার্ট ফোনের স্ক্রিন চেক করতে হয়। অর্থাৎ ১০ মিনিটের ব্যবধানে যদি একবার করে স্মার্টফোনের দিকে নজর দিতে হয় তাহলে বুঝতেই পারছেন যে, স্মার্টফোনটা তার জীবনের সাথে কতটা বেশি জড়িয়ে গিয়েছে।
অনেক দেশের অনেক কোম্পানীতে এখন স্মার্টফোন নিয়ে অফিস করতে দেয়া হয় না বা মোবাইল ফোন সঙ্গে রাখা যায়না কাজ করার সময় অফিসে। আমার মনে হয় সময়টা এখন এরকম এসেছে বাংলাদেশের অফিসগুলোতে বা বিভিন্ন অফিসগুলোতে যেখানে স্মার্টফোনের প্রয়োজন নেই সেখানে স্মার্টফোন গুলোকে এক জায়গায় রেখে তারপর কর্মক্ষেত্রে যেতে দেওয়া উচিত। কারণ এভাবে করে তারা কর্মক্ষেত্রে অনেক সময় অপচয় করে দিচ্ছেন যে সময়টাতে কাজ করলে অনেক বেশি পরিমাণে কাজ করতে পারতেন। তাছাড়া এতে কাজের মধ্যে অনেক বেশি একাগ্রতা থাকত ও কাজে বিঘ্ন কম ঘটত।
উৎসঃ Image by Jonathan Sautter from Pixabay
এই যে স্মার্টফোনের মধ্যে ডুবে থাকা এবং পরিবারকে সময় কম দেওয়া এটা একটা সাধারণ এবং নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার এ পরিণত হতে চলেছে। ভার্চুয়াল জগতে বন্ধুদের সাথে চ্যাটিং করতে এবং কথাবার্তা বলতে খুব ভালো লাগে কিন্তু পরিবারের সাথে কিছুক্ষণ সময় দিতে আমাদের ভালো লাগে না এটা হয়ে যাচ্ছে আমাদের স্বাভাবিক অবস্থা। আর এই অবস্থা যদি দীর্ঘদিন চলতে থাকে তাহলে আমরা ভবিষ্যতে এরকমই দেখতে পারবো যেখানে বাচ্চারাও বলবে যে আমরা স্মার্টফোন হতে চাই। কারণ স্মার্টফোন হলেই বেশি আদর, ভালোবাসা পাওয়া সম্ভব যেমনটি তারা প্রত্যক্ষ করছে ঠিক তেমনভাবে চিন্তা করবে কারণ বাচ্চারা সব সময় সহজ-সরল ও কোমল হয়।
ধন্যবাদ।
উৎসঃ Image by Pexels from Pixabay
চলুন স্মার্টফোন আর ভার্চুয়াল জগতের অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত ব্যবহার কমিয়ে ফেলি।
শেষকথাঃ
আশা করি গল্পের মাধ্যমে আপনি নতুন জিনিস শিখতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। আমার লিখা অন্য গল্পগুলোর লিঙ্ক নিচে দিয়ে দিলাম। ভাল লাগলে সেগুলোও পড়ে আসতে পারেন। আমার লেখাটি এ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই সিরিজে আমার লিখা পূর্বের গল্পগুলোর তালিকাঃ
পর্ব | প্রকাশের তারিখ | গল্পের বিষয়বস্তু |
---|---|---|
০১ | ১৯/০৭/২০২১ | ব্যাঙ ও ক্যারিয়ারে মানিয়ে নেয়ার গল্প |
০২ | ২৬/০৭/২০২১ | টিয়া পাখির কৌশল |
০৩ | ২৭/০৭/২০২১ | গর্তের ব্যাঙ ও সফলতার দুই চাবিকাঠি |
০৪ | ০২/০৮/২০২১ | কৃষকের ছেলের ছাগলছানা ও অনুশীলনে অভ্যাস পরিবর্তন |
০৫ | ০৯/০৮/২০২১ | দৈত্য কর্ত্রিক তিন ইচ্ছা পূরণ ও অন্যের সম্পদে ঈর্ষা |
০৬ | ১৩/০৮/২০২১ | হরিণের শিং ও পা এর গল্পে রূপকে নয় কাজকে মূল্যায়নের শিক্ষা |
০৭ | ২১/০৮/২০২১ | প্রফেসর ক্লাশে জার নিয়ে প্রবেশ ও প্রায়রিটির গুরুত্ব |
০৮ | ২২/০৮/২০২১ | শিংহ, বাঘ ও শিয়াল এর গল্পে বাঘের চালাকীর সাজা |
০৯ | ২৩/০৮/২০২১ | বাবা ছেলে ও গাদার গল্প, অন্যের কথায় প্রভাবিত হওয়া |
আমি কেঃ
ভোট দিন, মতামত থাকতে মন্তব্য করুন, পোস্টটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন এবং আমাকে ফলো করুন @engrsayful
অন্যান্য মিডিয়াতে আমার সাথে যুক্ত হতে পারেনঃ
Youtube | ThreeSpeak | DTube |
ভূমিকাঃ
গল্পে গল্পে যখন আমরা কোনো কিছু শিখি তখন সেটা আমাদের মনে অনেকদিনের জন্য গেঁথে যায়। তাই গল্পে গল্পে কোন কিছু শিখার আনন্দ অন্যরকম। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি
-তে আমি কয়েকটি সিরিজ লিখছি। তার মধ্যে গল্পে গল্পে জীবনের শিক্ষা
সিরিজটি অন্যতম যেখানে একটি গল্প এবং এই গল্প থেকে আমাদের বাস্তব জীবনের শিক্ষামূলক কিছু দিক শেয়ার করে থাকি। গল্পগুলো মূলত ঈশপের গল্প বা অন্য কোন ছোট আকারের গল্প। আশা করি গল্পগুলো ও এর অন্তনিহিত শিক্ষা আপনার ভাল লাগবে।
![poorbo
Thumbnail Background Source: Image by Clker-Free-Vector-Images from Pixabay
পর্ব ০১: ব্যাঙ ও ক্যারিয়ারের গল্প
প্রথমে গল্পটিঃ
গল্পের শিক্ষাঃ
শেষকথাঃ
আশা করি গল্পের মাধ্যমে আপনি নতুন জিনিস শিখতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। আমার লিখা অন্য গল্পগুলোর লিঙ্ক নিচে দিয়ে দিলাম। ভাল লাগলে সেগুলোও পড়ে আসতে পারেন। আমার লেখাটি এ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই সিরিজে আমার লিখা পূর্বের গল্পগুলোর তালিকাঃ
পর্ব | প্রকাশের তারিখ | গল্পের বিষয়বস্তু |
---|---|---|
০১ | ১৯/০৭/২০২১ | ব্যাঙ ও ক্যারিয়ারে মানিয়ে নেয়ার গল্প |
০২ | ২৬/০৭/২০২১ | টিয়া পাখির কৌশল |
০৩ | ২৭/০৭/২০২১ | গর্তের ব্যাঙ ও সফলতার দুই চাবিকাঠি |
০৪ | ০২/০৮/২০২১ | কৃষকের ছেলের ছাগলছানা ও অনুশীলনে অভ্যাস পরিবর্তন |
০৫ | ০৯/০৮/২০২১ | দৈত্য কর্ত্রিক তিন ইচ্ছা পূরণ ও অন্যের সম্পদে ঈর্ষা |
০৬ | ১৩/০৮/২০২১ | হরিণের শিং ও পা এর গল্পে রূপকে নয় কাজকে মূল্যায়নের শিক্ষা |
০৭ | ২১/০৮/২০২১ | প্রফেসর ক্লাশে জার নিয়ে প্রবেশ ও প্রায়রিটির গুরুত্ব |
০৮ | ২২/০৮/২০২১ | শিংহ, বাঘ ও শিয়াল এর গল্পে বাঘের চালাকীর সাজা |
০৯ | ২৩/০৮/২০২১ | বাবা ছেলে ও গাদার গল্প, অন্যের কথায় প্রভাবিত হওয়া |
আমি কেঃ
ভোট দিন, মতামত থাকতে মন্তব্য করুন, পোস্টটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন এবং আমাকে ফলো করুন @engrsayful
অন্যান্য মিডিয়াতে আমার সাথে যুক্ত হতে পারেনঃ
Youtube | ThreeSpeak | DTube |
ভাইয়া আপনি সত্যিই একজন আদর্শ মানুষ এবং শিক্ষক।সমাজের এই ঘটনাটা একদম সবার সামনে,সবসময় খুব স্বাভাবিক ভাবেই ঘটছে যা প্রতিনিয়ত আমাদের চোখের সামনেই ঘটছে কিন্তু আমরা ওইভাবে গুরুত্ব দিচ্ছিনা। আপনার আজকের লেখাটি যাদের চোখেই পড়বে তাদের ভেতরটাই একটু হলেও নাড়া দিবে কারণ এই ঘটনাটি হচ্ছে তিক্ত সত্য। আমাদের এখনই সচেতন হতে হবে তা না হলে ভবিষ্যৎ ভয়ংকর।
সুন্দর লেখনি।❤️
অনেক ধন্যবাদ আপু। আশা করছি আপনি আপনার আশেপাশের মানুষদের এ ব্যাপারে সচেতন করার চেষ্টা করবেন।
অবশ্যই ভাইয়া। ❤️❤️
ভাইয়া আপনি ঠিক বলেছেন স্মার্টফোনের গল্প পরে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। স্মার্টফোন ব্যবহারের কারনে সন্তানরা বাবা মায়ের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এটা আসলেই খারাপ তাই আমাদের সবার উচিত সচেতন হওয়া। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনার জন্য শুভকামনা রইলো
ধন্যবাদ আপনাকেও
অসাধারন লিখুনি এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে লিখেছেন।ডিজিটাল টেকনোলজির দৌলতে আমরা অনেক কাজ কে হেলা করে ফেলে দেয় এমনকি সন্তান্দের প্রতিও সঠিক যত্ন নেয় না।খুব সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য