আলু-পটল দিয়ে হাঁসের ডিমের তরকারি

in আমার বাংলা ব্লগlast year
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে আমি একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। এই রেসিপিটা আলু-পটলের সাথে ডিমের তরকারি। ডিম টা মোটামুটি আমাদের বাড়িতে প্রতি সপ্তাহে মোটামুটি খাওয়া চলে, কিন্তু আমার তেমন খাওয়া হয় না, কারণ আমার হঠাৎ করে ডিম খেলেই কেন জানি এলার্জি এটাক করছে। আসলে ডিম মাঝে মাঝে খেলে কিন্তু সমস্যা হয় না, কিন্তু আমি জিম করা কালীন মাঝে এক টানা ২ টি করে ডিম খেয়ে গেছি, ফলে এখন খেলেই যেন সাথে সাথে এলার্জি কেটে ওঠে। আর হাঁসের ডিমে আরো বেশি হয় যেন। এর ফলে বিগত সপ্তাহ জুড়ে টোটালি কোনো ডিম খাইনি, তাই গত পরশুদিন ভাবলাম বেশ কিছু হাঁসের ডিম অনেকদিন ফ্রিজে রাখা আছে সেগুলো খেয়ে ফেলি, নাহলে নষ্ট হয়ে যাবে। হাঁসের ডিম এর স্বাদ আছে, মোটামুটি সব ডিমেরই স্বাদ লাগে, কিন্তু আজকাল দেশি মুরগির ডিমগুলো দেখলে মনে হয় চড়ুই পাখির ডিম হা হা, আমার কমপক্ষে ৪-৫ টা ডিম লাগে এই ছোট ছোট ডিম, নাগলে হয় না । তবে আমি এখন ডিম খেলেও কিন্তু শুধু সাদা অংশটা খাই, কারণ কুসুমে ফ্যাট প্রচুর, খেলেই সমস্যা হয়ে যাবে, কারণ ফ্যাট বার্ন করতে অনেক কষ্ট হয়েছে, তাই আর বাড়ানোর কোনো ইচ্ছা নেই। যাইহোক, এই হাঁসের ডিমের তরকারিটা করার সময় আমি টক দইও ব্যবহার করেছিলাম, টক দইটা এখন গরমের সময়ে তরকারিতে দিলে অনেকটা ভালো লাগে, আর স্বাদটাও দারুন হয়। এমনিতেও টক দই অনেকটা করে কেনা থাকে, মাঝে মধ্যে টক দইটা এমনিই খেয়ে থাকি। যাইহোক, এখন ডিমের এই রেসিপিটার মূল পর্বের দিকে চলে যাবো।


☀প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☀

❦উপকরণ
পরিমাণ❦
হাঁসের ডিম
১০ টি
পটল
৭ টি
আলু
৩ টি
পেঁয়াজ
১ টি
রসুন
১ টি
কাঁচা লঙ্কা
৭ টি
শুকনো লঙ্কা
১ টি
টক দই
১০০ গ্রাম
গোটা জিরা
১.৫ চামচ
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৪.৫ চামচ
হলুদ
৪ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১.৫ চামচ


হাঁসের ডিম, পটল, আলু, পেঁয়াজ, রসুন


টক দই, কাঁচা লঙ্কা, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


დএখন রেসিপিটি তৈরির ধাপসমূহ নিচের দিকে তুলে ধরবো---


☬প্রস্তুত প্রণালী:☬


➤হাঁসের ডিমগুলোকে প্রথমে একটি কড়াইতে দিয়ে এবং তাতে জল দিয়ে খানিক্ষন সেদ্ধ হওয়ার জন্য দিয়ে দিয়েছিলাম এবং সেদ্ধ হয়ে আসলে জল থেকে তুলে নিয়েছিলাম। এরপর ডিমের খোলা ফাটিয়ে ছাড়িয়ে নিয়েছিলাম।

➤পটলগুলোর খোসা ভালোভাবে ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে নিয়েছিলাম এবং পরে ধুয়ে রেখেছিলাম।

➤আলু তিনটির খোসাও ভালোভাবে ছালিয়ে নিয়ে কেটে নেওয়ার পরে ধুয়ে রেখেছিলাম।

➤পেঁয়াজ এবং রসুনের কোয়াগুলো থেকে খোসা প্রথমে ছাড়িয়ে নিয়েছিলাম এবং পরে পেঁয়াজ কেটে নিয়েছিলাম। এরপর লঙ্কাগুলোও কেটে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

➤১০০ গ্রামের মতো টক দই একটি বাটিতে নিয়ে ফেটিয়ে নিয়েছিলাম।

➤একটি কড়াই প্যানে বসিয়ে তাতে তেল দিয়ে একটু লবন আর হলুদ দিয়েছিলাম। এরপর তাতে ডিমগুলো দিয়ে নেড়েচেড়ে গায়ে মিশিয়ে নিয়েছিলাম এবং ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤ডিম ভাজার পরে কড়াইতে আরেকটু তেল দিয়ে আলুর পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং ভেজে নেওয়ার পরে তুলে রেখেছিলাম।

➤আলুর পরে একইভাবে পটল ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤সব ভাজা শেষ হয়ে গেলে কড়াইতে পরিমাণমতো তেল দিয়ে গোটা জিরা দিয়েছিলাম এবং সেই সাথে একটি শুকনো লঙ্কাও দিয়েছিলাম।

➤এরপরে কেটে রাখা পেঁয়াজ এবং রসুন দিয়ে দিয়েছিলাম। পেঁয়াজ-রসুনটাও ভালো করে ভেজে নিয়েছিলাম।

➤ভাজার পরে তাতে একেবারে পটল দিয়ে দিয়েছিলাম এবং সেই সাথে পরে আলুও দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤আলু দেওয়ার পরে তাতে কাঁচা লঙ্কা এবং স্বাদ মতো লবন, হলুদ দিয়ে ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম। এরপর তাতে পরিমাণমতো জল দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤জল দেওয়ার পরে ভালোভাবে কিছুক্ষন ফুটিয়ে সবজিগুলো সেদ্ধ করে নিয়েছিলাম।

➤সেদ্ধ হয়ে আসলে তাতে ভেজে রাখা ডিম সব দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ডিমগুলো নেড়েচেড়ে দিয়ে আরেকটু ফুটিয়ে নিয়েছিলাম।

➤এরপর তাতে ফেটিয়ে রাখা টক দইটুকু দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর নেড়েচেড়ে তাতে একটু জিরা গুঁড়ো দিয়ে আরো কিছুক্ষন জ্বাল দিয়ে নিয়েছিলাম ভালোভাবে হয়ে আসার জন্য।

➤ডিমের তরকারিটা আমার হয়ে গেলে নামিয়ে নিয়েছিলাম। এরপরে তাতে আরেকটু জিরা গুঁড়ো দিয়ে পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 last year 

আহা হাঁসের ডিমের কথা শুনে আমার নিজেরও খিদে পেয়ে গেল। আমি কিন্তু হাঁসের ডিম খেতে খুবই পছন্দ করি। আসলে ফার্মের ডিম গুলো খেতে খুব একটা ভালো লাগে না। আর দেশি মুরগির ডিমের কথা তো ভালোই বলেছেন চড়ুই পাখির ডিম, যেগুলো কিনা ৪-৫ টা তেও চোখে লাগেনা। তবে আপনি তো দেখছি জিম করার সময় একটু দুইটা করে ডিম খেতেন। এমনিতে হাঁসের ডিমের মধ্যে কিন্তু এলার্জির প্রবলেম আছে অনেকের। তবে আপনার আজকের রান্না দেখে আমার কাছে ভালো লেগেছে। কারণ ডিমের তরকারি খেতে ভীষণ ভালো লাগে। আমিও কিন্তু ডিমের তরকারি খুব পছন্দ করি। কিন্তু অনেকদিন হয়েছে রান্না করা হয় না। তবে আপনার রেসিপি টা দেখে একদমই খেতে ইচ্ছে করছে। আলু পটল দিয়ে বেশ দুর্দান্ত একটি রেসিপি তৈরি করেছেন।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

পটল দিয়ে হাঁসের মাংসের রেসিপি দেখে যেন সুস্বাদু মনে হচ্ছে। পটল আমার খুবই প্রিয় একটি সবজি, আমি পটল ভাজি খেতে খুবই পছন্দ করি। আর হাঁসের মাংস আমার খুবই প্রিয়। আজকে আপনার মজাদার রেসিপি দেখে যেন খেতে ইচ্ছা করছে দাদা। বিশেষ করে হাঁসের মাংস অনেক প্রিয় আমার। আর আজকে আপনি খুবই সুন্দরভাবে এই রেসিপিটি ধাপে ধাপে শেয়ার করলেন। বিশেষ করে পটল দিয়ে এই হাঁসের মাংসের রেসিপি তৈরি করার উপস্থাপন দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছে, তাই রেসিপিটি দেখে শিখে নিয়েছি পরবর্তীতে তৈরি করবে ইনশাল্লাহ।

 last year 

ভাই হাঁসের মাংসের রেসিপি না এটা। এটা হচ্ছে হাঁসের ডিমের রেসিপি। আশা করি ঠিক করে নিবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

দাদা আপনি কিন্তু অনেক বেশি ইউনিক একটা রেসিপি তৈরি করেছেন। আলু, পটল দিয়ে হাঁসের ডিমের রেসিপি টা দেখে আমার তো খুবই লোভ লেগে গিয়েছে। আলু পটল দিয়ে হাঁসের ডিমের তরকারি আমি কখনো তৈরি করে দেখিনি। যার জন্য এই রেসিপিটা টেস্ট কি রকম হবে এটাও আমার জানা নেই। তবে আপনার রেসিপির মাধ্যমে দেখে ইচ্ছে করছে এখান থেকে নিয়ে খেয়ে নিতে। ডিম খাওয়া উচিত তবে একসাথে এতগুলো খেতেও আবার ভালো লাগে না। অনেক সময় এলার্জি এটাক করে, যেমন আপনার করেছে। যেহেতু হাঁসের ডিম অনেক দিন ফ্রিতে ছিল নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা, আপনি রান্না করে ফেলেছেন এটা ভালোই করেছেন। আবার দেখছি আপনি টক দই ও ব্যবহার করেছেন এই রেসিপিটি তৈরি করতে। আমি কখনো কোন রেসিপি তৈরি করতে টক দই ব্যবহার করিনি। আমি তো ভাবছি আপনার উপস্থাপনা দেখে এই রেসিপিটা একবার তৈরি করব। কারণ আমার অনেক বেশি পছন্দ হয়েছে আপনার করা রেসিপিটা।

ভাইয়া আপনার রেসিপিটা দেখে তো আমার জিভে জল চলে এসেছে। সত্যি বলতে আপনার রেসিপিগুলো সব সময় অনেক ফেভারিট হয়।আলু-পটল দিয়ে হাঁসের ডিমের তরকারি। রেসিপির কালার টি দেখে বোঝা যাচ্ছে ভাই কতটা লোভনীয় ছিল রেসিপিটি খেতে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট উপহার দেওয়ার জন্য।

 last year 

ডিম কিন্তু আমার খুবই প্রিয়। বিশেষ করে অন্য কোন তরকারি না থাকলেও আমি কিন্তু শুধুমাত্র ডিম দিয়ে খেতে পারি। তবে ঠিক বলেছেন হাঁসের ডিমটা খেতে অনেক মজা হয়। কিন্তু চড়ুই পাখির ডিম কথাটা বেশ ভালই বলেছেন। দেশি মুরগির ডিম গুলো সত্যি খুবই ছোট হয়ে থাকে। আসলে ডিম সব সময় ঘরেই থাকে। তাই জন্য প্রয়োজন হলেই ডিম খাওয়া হয়। তবে তরকারি রান্না করলে একটু বেশি মজা হয়। আপনার আজকের আলু পটলের সাথে ডিমের রান্নাটা দেখে ভীষণ ভালো লেগেছে। যেহেতু ডিম গুলো অনেক দিন ফ্রিজে ছিল তাই ভালোই করেছেন এত সুন্দর একটা রেসিপি করে। আপনি এত সুন্দর একটা রেসিপি খেতে পারলেন, আর আমরা এত সুন্দর একটা রেসিপি দেখতে পেরেছি। আর এই রেসিপিটা তো একটু ব্যবহার করাতে নিশ্চয়ই বেশি সুস্বাদু হয়েছে।

 last year 

একদম ঠিক বলেছেন দাদা হাঁসের ডিমের মধ্যে প্রচুর এলার্জি আছে। তাছাড়া প্রতিনিয়ত যদি ডিমের সাথে কুসুম খাওয়া হয় তাহলে পেট আরো বেড়ে যাবে অনেক বেশি। তো ডিমের কুসুম না খাওয়াই ভালো। আপনি বেশ মজার করে হাঁসের ডিম দিয়ে আলু পটলের তরকারি করলেন খেতে দারুন হবে। আর ডিমের তরকারির মধ্যে যদি টক দই ব্যবহার করা হয় তাহলে কালারটা খুব ভালো দেখা যায়। আলু আর পটলের তরকারি তৈরি করলেন ডিমের অসাধারণ দেখাচ্ছে।

 last year 

দাদা অনেকেরই ডিমের মধ্যে এমনিতে এলার্জি রয়েছে। বিশেষ করে বেশিরভাগ মানুষের হাঁসের ডিমের মধ্যে এলার্জি। যেহেতু আপনি প্রতিনিয়ত দুটি করে ডিম খেতেন জিমে যাওয়ার ফলে তাই এলার্জি এটাক করেছে। আসলে এটা কিন্তু সত্যি, দেশি মুরগির ডিম গুলো দেখলে একেবারে চড়ুই পাখির ডিমের মতো লাগে, আসলে এগুলোর সাইজ অনেক বেশি ছোট। আপনি এই রেসিপিটার মধ্যে টক দই ব্যবহার করেছিলেন, যার কারণে মনে হচ্ছে এটা অনেক বেশি মজাদার হয়েছিল। আপনার রেসিপিটা দেখে আমার তো জিভে জল চলে এসেছে দাদা। এরকম মজাদার রেসিপি গুলো দেখলে একটু বেশি লোভ লেগে যায়। তবে আপনার তৈরি করা রেসিপি গুলো দেখলে আমার কাছে অন্যরকম লাগে। বুঝতেই পারছি খুবই মজা করে খেয়েছিলেন। সবার মাঝে ভাগ করে নিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো। এরকম মজাদার রেসিপিগুলো পরবর্তীতেও দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম দাদা।

 last year 

দাদা আলু এবং পটল দিয়ে হাঁসের ডিমের রেসিপিটা বেশ লোভনীয় লাগছে দেখতে। আমিও ডিমের কুসুম তেমন একটা খাই না। টক দই আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। যখন সাউথ কোরিয়াতে ছিলাম তখন প্রায় প্রতিদিনই টক দই খেতাম। যাইহোক আলু দিয়ে ডিমের রেসিপি মাঝে মধ্যে খাওয়া হয় আমার। তবে পটল দিয়ে ডিমের রেসিপি কখনো খাওয়া হয়নি। এই রেসিপিটা একদিন বাসায় ট্রাই করতে হবে। এতো মজাদার একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আলু-পটল দিয়ে হাঁসের ডিমের তরকারি দেখে খুবি সুস্বাদু মনে হচ্ছে। এতো মজাদার রেসিপি দেখে তাই খেতে ইচ্ছা করছে।ধাপে ধাপে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 66599.39
ETH 3336.69
USDT 1.00
SBD 2.70