মান কচু দিয়ে কাতলা মাছের সুস্বাদু রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগlast year
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। এটি কাতলা মাছের রেসিপি। কাতলা মাছ অনেকদিন খাওয়া হয় না, আর বাড়িতে মান কচু ছিল তাই এইটা দিয়ে করলাম। মান কচু দিয়ে কাতলা মাছ বা এইধরণের প্রজাতির মাছগুলো খেতে বেশ ভালো লাগে, আমার কাছে সবসময় কচু দিয়ে এইসব মাছ বেশি টেস্ট লাগে। আর মান কচু বাড়ির হলেতো আরো ভালো লাগে। মান কচু বেশ বড়ো হয়ে থাকে, আর বড়োগুলো খেতে বেশ স্বাদের, তবে এইটা বেশি একটা বড়ো হওয়ার আগেই তুলে নিয়েছিলাম, আর এখন বর্ষার সময় লাগিয়ে দিলে আবার হয়ে উঠবে। যাইহোক, তারপরেও কচুটা বেশ ভালো সেদ্ধ হয়েছিল আর স্বাদেরও ছিল। কচু সবসময় আয়রনের দিক থেকে অনেক ভালো উপকারিতা বয়ে আনে, যাদের আয়রনের ঘাটতি থাকে তাদের জন্য কচু খাওয়া উত্তম । তবে কচুর মধ্যে মানকচুটা সাধারণ রোগের ক্ষেত্রে অনেক বেশি কার্যকারী হয়ে থাকে । এছাড়া কিছু কিছু ভিটামিন আছে এই কচুতে যা চোখের দিক থেকে ভালো উপকারিতা পাওয়া যায়। এইসব বিভিন্ন ধরণের পুষ্টিগুণ সম্পন্ন বিষয়গুলো কচুর মধ্যে পাওয়া যায়, যা খুবই প্রয়োজনীয়। যাইহোক, কাতলা মাছের মাথা দিয়ে খেতে কিন্তু বেশ মজার লেগেছিলো, আর আমি মাছের মাথা থাকলে এইটা আগে নিয়ে বসি, মাথার সাথে খেতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। এখন এই রেসিপিটার মূল উপকরণের দিকে চলে যাবো।


❂প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:❂

✦উপকরণ
পরিমাণ✦
কাতলা মাছ
৭৫০ গ্রাম
মান কচু
হাফ
রসুন
২ টি
কাঁচা লঙ্কা
৯ টি
গোটা জিরা
১ চামচ
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৫ চামচ
হলুদ
৫ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১ চামচ


কাতলা মাছ, মান কচু, রসুন


কাঁচা লঙ্কা, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


✔এখন রেসিপিটা যেভাবে তৈরি করলাম তার ধাপগুলো নিচে তুলে ধরা হলো---


☬প্রস্তুত প্রণালী:☬


➤কাতলা মাছটি অনেক আগে কেটে ফ্রিজে রাখা ছিল এবং আমি পরে রান্নার আগে একবার ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে রেখেছিলাম। এরপর মান কচুটির ছাল ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে পিস পিস করে ধুয়ে রেখেছিলাম।

➤রসুনের থেকে কোয়াগুলো ছাড়িয়ে নিয়ে পরে এক এক করে খোসা ছালিয়ে রেখেছিলাম। এরপর লঙ্কাগুলো কেটে নিয়ে ধুয়ে রেখেছিলাম।

➤কাতলা মাছের পিসগুলোতে ২ চামচ করে লবন আর হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর সব মাছের পিসের গায়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।

➤প্যানে সরিষার তেল দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তেল গরম হলে মাছের পিসগুলো অল্প করে সাজিয়ে দিয়েছিলাম ভাজার জন্য এবং ভালোভাবে ভাজা হয়ে আসলে তুলে নিয়েছিলাম।

➤অন্য আরেকটি কড়াইতে তেল দিয়ে মান কচুর পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর কচু ভাজা মতো হয়ে আসলে তুলে নিয়েছিলাম।

➤কচু ভেজে তুলে নিয়ে কড়াইতে আবার তেল দিয়ে গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে রসুনের কোয়াগুলো দিয়ে হালকা ভেজে নিয়েছিলাম।

➤ভাজার পরে তাতে কচুর পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে লঙ্কাগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤লঙ্কা দেওয়ার পরে তাতে ২.৫ চামচ করে লবন আর হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর কচুর সাথে মশলা ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম।

➤মিক্স করার পরে তাতে পরিমাণমতো জল দিয়ে দিয়েছিলাম এবং ভালোভাবে ফুটিয়ে নিয়েছিলাম কিছুক্ষন। কচুর পিসগুলো ভালোভাবে সেদ্ধ হয়ে গেলে হাতা দিয়ে কড়াইয়ের গায়ে চেপে চেপে কিছুটা গলিয়ে দিয়েছিলাম তরকারিটা দ্রুত ঘন হয়ে আসার জন্য।

➤এরপর তরকারিতে ভেজে রাখা কাতলা মাছের পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং তাতে অল্প করে জিরা গুঁড়ো দিয়ে আরো কিছুক্ষন ফুটিয়ে নিয়েছিলাম।

➤কাতলা মাছের তরকারিটা ভালোভাবে হয়ে আসলে আমি নামিয়ে নিয়েছিলাম। এরপর তরকারিতে হালকা করে জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিলাম এবং সুস্বাদু মাছের তরকারিটা একটি পাত্রে অল্প করে তুলে নিয়েছিলাম পরিবেশনের জন্য।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 last year 

আসলে দাদা এটা কিন্তু সত্যি, যাদের মধ্যে আয়রনের ঘাটতি রয়েছে তাদের জন্য কচু খাওয়া অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আয়রনের ঘাটতি পূরণের জন্য কচু অনেক বেশি উপকারী। বিশেষ করে চোখের জন্য একটু বেশি উপকারী। আর আমার বেশিরভাগ সময় কচু খাওয়া হয় চোখের জন্য। আমি মনে করি কচু খেলে চোখের তেমন কোন সমস্যা হয় না। কচু খেতে খুব ভালো লাগে আমার কাছে। আর যদি হয় এরকম মান কচু কাতলা মাছ দিয়ে রান্না করা তাহলে তো কোন কথা নেই। আমি বেশিরভাগ সময় মান কচু নিয়ে আসি। আমাদের বাড়িতেও মান কচু রয়েছে সেগুলো খেতে একটু বেশি ভালো লাগে আমার কাছে। ভিন্ন রেসিপি এর মাধ্যমে এরকম মান কচু রান্না করা হয় তাহলে খেলে অনেক বেশি ভালো লাগে। জিভে জল চলে আসলো দাদা আপনার করা এই রেসিপিটা দেখে।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

দাদা এটা কিন্তু সত্যি যে মান কচুর উপকারিতা অনেক বেশি। বিভিন্ন রকম আয়রনের উপকারিতার জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর কচু চোখের জন্য ও খাওয়া বেশ ভালো। আমরা তো বেশিরভাগ সময় মানুষকে চুল রান্না করে থাকি। বিশেষ করে বিভিন্ন রকমের মাছ দিয়ে এই মান কচু রান্না করলে খেতে অনেক বেশি সুস্বাদু হয়। আপনি দেখছি কাতলা মাছ দিয়ে এই মান কচুর রেসিপি তৈরি করেছেন। মাছের মাথাটা আমার কাছে একটু বেশি মজাদার মনে হচ্ছে দেখতে। মান কচু আমার অনেক বেশি ভালো লাগে খেতে আর এটি অনেক বেশি সুস্বাদু ও হয়, আর এটি যদি হয় বাড়ির তাহলে তো কোন কথা নেই। উপস্থাপনার মাধ্যমে সম্পূর্ণ টা এত সুন্দর ভাবে ভাগ করে নিলেন দেখে, সত্যি অনেক বেশি ভালো লেগেছে দাদা। অসম্ভব ভালো ছিল দাদা আপনার তৈরি করা এই রেসিপিটা। দেখে তো খুবই খেতে ইচ্ছে করছে দাদা।

 last year 

ঠিক বলছেন কচু আয়রনে ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। সেই সাথে চোখের সমস্যাও দূর করে। দাদা আপনার আজকের রেসিপি মান কচু দিয়ে কাতলা মাছের রেসিপি দেখে খুব লোভনীয় লাগছে। কালার দেখেই বুঝতে পারছি কতটা মজাদার হয়েছিলও।তবে দাদা একটা প্রশ্ন? মান কচু কি গলায় ধরে নাই দাদা।কচু আমারও পছন্দ তবে গলায় ধরে অনেক কচু তাই ভয়ে আশেপাশে যায় না।অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা আপনার জন্য অনেক দুআ ও শুভকামনা রইল।

 last year 

দাদা কাতল মাছ আমার খুব পছন্দের মাছ।এই মাছটাই আমার বেশী খাওয়া হয়।তবে ডিপ ফ্রাই আর ভুনা করেই রেসিপি করা হয় আমার।আপনি আজ কচু দিয়ে রান্না করলেন।আপনি কচুর অনেক গুনের কথা শেয়ার করলেন। সত্যি আমাদের শরীরের জন্য কচু তরকারি খুবই উপকারী।কচু খেতে ভীষণ ভালো লাগে।মাছ দিয়ে রান্না করলেন খেতে আরো বেশী মজার হয়েছে আশাকরি। আপনার রেসিপির কালার দারুন হয়েছে।লোভনীয় এই রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

মান কচু দিয়ে কাতলা মাছের রেসিপি দেখেই সুস্বাদু মনে হয়েছে। এই মজাদার রেসিপি সুন্দরভাবে পরিবেশন করেছেন। আপনার পরিবেশন আমার খুবই ভালো লাগে দাদা। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 last year 

মান কচু দিয়ে কাতলা মাছের সুস্বাদু রেসিপি। কাতলা মাছের মাথা দেখে তো খেতে ইচ্ছা করছে। কাতলা মাছের মাথা আমার খুব পছন্দ। মান কচু দিয়ে কখনো খাইনি। নতুন একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে দাদা।

 last year 

কাতলা মাছ আমার খুব পছন্দ। আর যেকোনো ধরনের কচু খেতে খুব ভালো লাগে আমার। কারণ কচু খেলে শরীরের রক্ত পরিষ্কার হয়। এছাড়া কচু খেলে তো আয়রনের ঘাটতি অবশ্যই পূরণ হয়। যেকোনো সবজি নিজের বাসার হলে সেটার স্বাদই অন্যরকম লাগে। যাইহোক মান কচু দিয়ে কাতলা মাছের রেসিপি দেখেই তো খেতে ইচ্ছে করছে দাদা। বরাবরের মতো সবজি এবং মাছ ভেজে নেওয়ায়, রেসিপির স্বাদ মনে হচ্ছে অনেক বেড়ে গিয়েছে। যাইহোক বরাবরের মতো এতো মজাদার একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

 last year (edited)

দাদা মান কচু এবং কাতলা মাছ দুইটাই আমার ভীষণ পছন্দের। বিশেষ করে কাতলা মাছ আমারও অনেক দিন খাওয়া হয়নি। আমার কাছে কাতলা মাছের মাথা খেতে বেশি ভালো লাগে। আর অনেক বড় মান কচু রান্না করলেও ভীষণ ভালো লাগে। কিন্তু মান কচু আয়রনের জন্য উপকারিতা এটা আমার জানা ছিল না। আজকে জানতে পেরে ভালোই হলো। তবে এটা জানি কচুর শরীরের জন্য অনেক উপকারী। বর্ষার সময় কচু বেশি পরিমাণে দেখা যায়। আর তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যায়। তবে আমার মান কচু আর কাতলা মাছ একসাথে কখনো রান্না করা হয়নি। আপনি যেহেতু রান্না করেছেন তাই ভাবলাম একবার ট্রাই করে দেখব। নিশ্চয়ই সুস্বাদু রেসিপি হবে।

 last year 

ঠিক বলেছেন দাদা, মান কচু‌ একদম বড় গুলো খেতে বেশি ভালো লাগে। আমাদের এদিকে ও এখন বড় বড় মান কচু পাওয়া যাচ্ছে। কারণ যেহেতু বৃষ্টির দিন, এই দিনে কচু পাওয়া যায় বেশি। আমি আবার কচু ডাল দিয়ে রান্না করলে খেতে বেশি পছন্দ করি। তবে আবার মাছ দিয়ে রান্না করলেও পছন্দ করি। তার মধ্যে কাতলা মাছটাও আমার খুবই পছন্দ। কাতলা মাছ রান্না করলে খুবই সুস্বাদু হয়ে থাকে। বিশেষ করে কাতলা মাছের মাথাটা অনেক বড় হয়ে থাকে। অবশ্য অনেকদিন হয়েছে কাতলা মাছ খাওয়া হয় না। আপনার রেসিপিটা দেখে আমার তো কাতলা মাছ খেতে ইচ্ছে করছে। বাজারে গেলে অবশ্যই কিনে নিয়ে আসব। তবে আপনার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 55971.81
ETH 2362.70
USDT 1.00
SBD 2.32