বাইক ট্যুর (Bike Tour) : পর্ব - ১২... || ১০% বেনিফিশিয়ারি shy-fox এর জন্য
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আমি আমার বাইক ট্যুর (Bike Tour) : পর্ব - ১২... উপস্থাপন করব। আজ আমি লঞ্চে করে পটুয়াখালী যাওয়ার যাত্রা পথের কথা শেয়ার করব। আমাদের গন্তব্যস্থ হল কুয়াকাটা, তবে কুয়াকাটা যেতে হলে আগে পটুয়াখালী ঘাটে নামতে হবে। তাই আমরা সদরঘাট লঞ্চে উঠে পটুয়াখালীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলাম। যেহেতু আমি আগে কখনো এত বড় লঞ্চে করে যাত্রা করিনি, তাই যখন লঞ্চে উঠেছিলাম তখন আমার ভালো লাগাটা অনেক অনেক বেশি ছিল। এত বড় লঞ্চে এত লোকজনের সমাগম তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। এই লঞ্চে উঠে যাত্রা না করলে হয়তো কখনো উপলব্ধি করতে পারতাম না, এত লোকজন নিয়ে এত বড় একটি লঞ্চ পদ্মা ও মেঘনা নদী বয়ে পটুয়াখালী গিয়ে পৌঁছে। আমাদের কাজল-৭ নামের লঞ্চটি সন্ধ্যার সময় সদরঘাট থেকে পটুয়াখালীর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল।
আমাদের লঞ্চ যখন যাত্রা শুরু করলো তখন লঞ্চের ভিতরে গিয়ে পুরো লঞ্চের ভেতরের দৃশ্য দেখার জন্য লঞ্চটিতে আমরা ঘোরাফেরা শুরু করেছিলাম। লঞ্চের ভিতরের দৃশ্য রীতিমতো আমাকে অবাক করে দিয়েছে। আমরা যেহেতু তিন তালার ভিআইপি কেবিনে টিকিট কেটেছিলাম, তাই নিচ তলার পরিবেশ কেমন তা প্রথমে বুঝে উঠতে পারিনি। যখন লঞ্চটি ঘুরেফিরে দেখছিলাম, তখন দেখতে পেলাম নিচ তলায় অনেক অনেক লোক টিকিট কেটেছে মাত্র পাঁচশত টাকা দিয়ে। তাই এখানে ভিড়ের পরিমাণ অনেক বেশি। ভিড়ের কারণে লঞ্চের ভেতর দিয়ে এক পাশ থেকে আরেক পাশে হেঁটে যেতে খুবই অসুবিধে হচ্ছিল। এরই মাঝে দেখতে পেলাম বিভিন্ন ধরনের হকার বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য সামগ্রী ফেরি করে বেড়াচ্ছে। আর লঞ্চে ওঠার সকল যাত্রীগণ সেই খাবার গুলো মনের আনন্দে কিনে খাচ্ছে। ব্যাপারটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে।
এরপর আমরা সিঁড়ি বেয়ে সোজা দোতলায় উঠে গেলাম। দোতালায় লঞ্চের সামনে অনেক দূর জায়গা রেলিং করে দেয়া আছে। সেখানে দাঁড়িয়ে বুড়িগঙ্গা নদী ও তার চারপাশে সদরঘাটে অবস্থিত অসংখ্য বড় বড় বিল্ডিং গুলোর সৌন্দর্য অপলক দৃষ্টিতে দেখেছিলাম। সন্ধ্যার সময় লঞ্চে মুক্ত হাওয়ায় দাঁড়িয়ে খুবই মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সাথে আলোকিত সদরঘাট, কি যে সুন্দর দৃশ্য তা হয়তো চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। এত সুন্দর পরিবেশে দাঁড়িয়ে আমার খুবই গান গাওয়ার ইচ্ছে করছিল, কিন্তু মাগরিবের নামাজের সময় ছিল জন্য আমার আর গান গাওয়া হয়ে ওঠেনি। তাই গান গাওয়ার পর্বটি রেখে দিলাম, লঞ্চ চলাকালীন কোন এক সময়ে গান গেয়ে আমার অর্ধাঙ্গিনীকে শুনিয়ে দিব।
সদরঘাট থেকে যখন আমাদের লঞ্চটি সামনে এগিয়ে চলছিল, তখন লক্ষ্য করেছিলাম মানামি নামের অন্য একটি বরিশালগামী লঞ্চ প্রচুর আলোকসজ্জা সজ্জিত হয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি সেখানকার একজনের কাছ থেকে জানতে পেরেছিলাম, এই মানামি লঞ্চটিও সন্ধ্যার পর পরই বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। এই মানামি নামের আলোকিত লঞ্চটি আমার চোখের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছিল, তাই মন স্থির করলাম যখন আমরা কুয়াকাটা থেকে ফিরে আসবো, তখন আমরা এই মানামি লঞ্চটি করেই আবারো সদরঘাটে ফিরে আসবো। আর সে বিষয়ে পোস্ট আমি পরে উপস্থাপন করব।
দেখতে দেখতে যখন ঘন সন্ধ্যা নেমে আসছিল তখন আমাদের লঞ্চটি ধীরে ধীরে বুড়িগঙ্গা নদী পার হয়ে পদ্মা মেঘনার দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। সন্ধ্যেবেলার এই মনমুগ্ধকর পরিবেশ আমি কখনোই ভুলতে পারবো না। এরকম দৃশ্য আমি আগে কখনো দেখিনি। লঞ্চটি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আর তখন আমি লঞ্চ থেকে আলোকিত সদরঘাটের ছবি তুলে নেই আমার মোবাইল ফোনে। বুড়িগঙ্গা নদীর পানিতে আলোকিত সদরঘাটের প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছিল, আর সেই দৃশ্য দেখে আমার চোখ যেন জুড়িয়ে যাচ্ছিল।
অনেক তো সন্ধ্যা বেলার গল্প হল এখন সন্ধ্যাবেলায় চা পান করার পালা। সারাদিন আমার প্রচুর চায়ের প্রয়োজন হয়। চা ছাড়া যেন আমার চলেই না। আর তাইতো লঞ্চের ভেতরেই ছোট্ট একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে গেলাম। তবে এই চা পান করার সময় আমার নতুন একজন অতিথির সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল, আর তাই তার সঙ্গে আমি ও আমার অর্ধাঙ্গিনী মিলে একত্রে চা পান করেছি। লঞ্চে উঠে চা খাওয়ার মজাটাই আলাদা। আর চায়ের স্বাদ খুবই ভালো লেগেছিল। সব মিলিয়ে আমাদের লঞ্চে করে পটুয়াখালী যাত্রা বেশ ভালোই জমে উঠেছিল। আজ আর নয়, আবারো দেখা হবে পরবর্তী পর্বে। সে পর্যন্ত আপনারা সবাই ভাল থাকুন ও সুস্থ থাকুন এই কামনা করছি।
আশা করি আমার বাইক ট্যুর (Bike Tour) : পর্ব - ১২... পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাইয়া আপনার বাইক ট্যুর দেখে মনে হচ্ছে আপনার মতো এত সুখি আর কেউ নেই। কয়েক দিন পর পর কি সুন্দর বাইক নিয়ে চলে যান ঘুরাঘুরি করতে। এবার পটুয়াখালী যাত্রা পথে খুব সুন্দর কিছু মুহূর্ত শেয়ার করেছেন। রাতের বেলা নদীর এমন সুন্দর দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আমি যখন প্রথম বার লঞ্চে ওঠি তখন আমি অনেক ভয় পেতাম কিন্তু এখন ঠিক হয়ে গিয়েছে। ভাইয়া আপনার সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
সবকিছুই আল্লাহর রহমত আপু। আল্লাহর রহমত আছে বলেই আমি বিভিন্ন জায়গায় বাইকে করে ঘুরে বেড়াতে পারি। আমার জন্য দোয়া করবেন আপু, আমি এভাবেই যেন বিভিন্ন জায়গা বাইকে করে ভ্রমণ করতে পারি। ধন্যবাদ
ঠিক বলেছেন ভাই, বাইক ট্যুর পোস্ট পড়ে আপনি কোন বাইকের দেখা পাননি, দেখা পেয়েছেন লঞ্চের। বাইকের দেখা পাননি এজন্যই যে, বাইক ট্যুরের ১২ তম পর্ব চলছে, পিছনের পোস্ট পড়লে অবশ্যই বাইক খুঁজে পাবেন। আমি কুড়িগ্রাম থেকে আমার অর্ধাঙ্গিনীকে সাথে নিয়ে বাইকে করে ঢাকা পদ্মা সেতু দেখে, তারপর লঞ্চে করে কুয়াকাটা পর্যন্ত ঘুরে এসেছি। এজন্যই আমার পোষ্টের নাম বাইক ট্যুর। ধন্যবাদ
আপনি তো বাইক ট্যুরের অনেক পর্ব শেয়ার করেছেন ভাইয়া।তবে আপনার লঞ্চের যাত্রা টা দেখে অনেক ভালো লাগলো।সেখানে তো অনেক খাওয়া-দাওয়া আর হকারদের উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে।এত রাতে আপনার চা খাওয়া দেখে আমার চা খেতে ইচ্ছে করতেছে।সত্যি আপনার ব্লগটি অনেক সুন্দর হয়েছে।
আপু জীবনে এই প্রথমবার লঞ্চে উঠেছিলাম, তাই ভালো লাগাটা একটু বেশিই ছিল। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
পটুয়াখালীতে অনেক চমৎকার একটি সময় অতিবাহিত করেছেন। আমার দেখা অনেক মানুষ রয়েছে যারা এরকম চা খেতে ভালোবাসে। তাদের যেন চলে না। যাই হোক আপনার অভিজ্ঞতা পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
আপু আপনার সুন্দর মন্তব্য পেয়ে ভীষণ ভালো লাগলো। আর চা ছাড়া আমার সত্যিই চলেই না। আমার পোষ্ট পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
পটুয়াখালীর নাম আগেও অনেকবার শুনেছি। আপনার বাইক ট্যুর দেখে মনে কিন্তু হিংসে এবং লোভ জাগছে দাদা। বাইকে করে ঘুরতে যে কি আনন্দ হয় বলে বোঝাতে পারব না। আমি আবার ২ হুইলারে বেশী কমফোর্টেবল। নদীর পারে সন্ধ্যে রাতের দৃশ্যগুলো বেশ মনোরম।
বাইকে করে ঘুরে বেড়ানো আমার একপ্রকার শখ বলতে পারেন আপু। আর তাইতো মাঝে মাঝে বাইকে করে বিভিন্ন জায়গায় ট্যুর করে বেড়াই। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আপনার বাইক ট্যুরের আগের পর্বগুলো আমি দেখেছিলাম। আমি নিজেও বাইক ট্যুর করতে ভীষণ পছন্দ করি। এমনকি প্রতিনিয়ত বাইকে করে অনেক জায়গায় যাওয়া হয়। একেবারে লঞ্চের দোতলায় উঠে গেলেন। সেখান থেকে তো অনেক কিছুই দেখা যায়। বিশেষ করে বুড়িগঙ্গা নদীর পানিতে যখন বিল্ডিং এর আলো গুলো পড়েছে দেখতে অসাধারণ লাগছে। এই বিষয়গুলো আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। আবার দেখছি লঞ্চে উঠে দুজনে মিলে চা খেয়েছেন। সবকিছুই অসাধারণ হয়েছে।
আপু,আমার মত আপনিও বাইক ট্যুর করতে ভালোবাসেন জেনে খুবই ভালো লাগলো। আমার পোস্টে এসে খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ইশ ভাই ১১ টা পর্ব কিভাবে মিস করলাম আফসোস। অনেক দারুন হয়েছে বাইক আমার কাছে সব থেকে দারুন যানবাহন যদিও রিস্কি। দারুন উপস্থপনা করেছেন শুভ কামনা রইলো।
ভাই আমার বাইক ট্যুর পর্ব আগামীতে আরো অনেক পাবেন আফসোস করার কিছুই নেই। সবেমাত্র ১২ তম পর্ব হয়েছে আরো বেশ কয়েকটি পর্ব হবে, আমার এই বাইক ট্যুর নিয়ে। আর যদি সময় সুযোগ হয় তাহলে পেছনের পর্বগুলো এক নজর দেখে আসবেন। ধন্যবাদ