শেষ ওয়ানডেতে বড়ো রানে সিরিজ জিতলো ভারত

আজকে একটি খেলাধুলা বিষয়ক পোস্ট শেয়ার করবো। গত দিন ভারত আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচ খেলা হয়েছে। কিছুদিন আগে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ উভয় পক্ষের থেকে তেমন কোনো বড় রান এর দেখা না পাওয়া গেলেও গতদিনের ম্যাচে বিশাল রানের দেখা পাওয়া গেছে, সেটি অবশ্যই ইন্ডিয়ার দিক থেকে, কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিমের এখন যা অবস্থা তাদের কাছ থেকে বড় রানের আশা করা যায় না। তবে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচটিতে ইন্ডিয়ার সাথে কোনোরকম ভাবে জিতেছে তাও মাত্র ১৮০ রানের টার্গেটে। মোটামুটি ওটার জন্য সম্মান রক্ষা করতে পারলো, নাহলে নীল খেয়ে যেত। এই তৃতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ টসে জিতে পরে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। আসলে তাদের এই সিদ্ধান্তের একটা কারণ আছে, কারণ দ্বিতীয় ম্যাচে টার্গেটে জিতেছে ফলে তারা ভেবেছিলো আগের দুটি ম্যাচের মতো ভারত এবারও বেশি একটা রানের টার্গেট দিতে পারবে না। কিন্তু গতদিন আসলেই ইন্ডিয়া এতো ভালো ব্যাট করেছে যেটা ভাবা যায় না, আর এই ম্যাচে সিনিয়র কেউ খেলিনি, নতুন সবাইকে খেলার চাঞ্জ দিয়েছে। ঈশান আর গিল প্রথমে এসে অসাধারণ খেলেছে ১০০+ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দুইজনে।

তবে ঈশান আর গিল যেভাবে সেট হয়ে গেছিলো আজকে তাতে দুইজনেই আরো অনেক রানের পার্টনারশিপ গড়তে পারতো। তবে ঈশান একটু মারপিটো হয়ে যায় হাফ সেঞ্চুরির পরে, তবে খেলছিল ঠিকই, কিন্তু বুঝতেই পারিনি অফের বল অতটা ঘুরে যাবে, ফলে স্টাম্পিং হয়ে যায়। ঈশান পড়ে গেলেও গিল খুবই বুঝে শুনে খেলতে খেলতে সামনে এগিয়ে যায়। আর সাথে সঞ্জু আসে, কিন্তু সঞ্জু হলো ফুল টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটের প্লেয়ার,মানে কোনো বলেই ছাড় নেই, এসেই ছয় মারা শুরু করেছে। তবে যদিও তার এইটা ৫০ ওভারের খেলায় এইভাবে খেললে একটা আউট হওয়ার রিস্ক থাকে,আর আউটও হয়ে যায় কিন্তু মেরে ৫০ রান করেও যায়, এটা একটা ভালো করেছিল। মোটামুটি ভারতীয় যারা যারা ব্যাটসম্যান আজকে এসেছে সবাই যথেষ্ট ভালো খেলে গেছে। তবে লাস্ট পাওয়ার-প্লে ওভারে গিলের মতো একজন সেট ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যাওয়া মানে অনেকটা চাপের নতুন ব্যাটসম্যানের পক্ষে রানটাকে বাড়ানো। তবে হার্দিক ফিনিসিং টা দারুন দিয়েছে। ২৮০ রানের থেকে একদম ৩৫০ রানের ঘরে নিয়ে যায়। বলা যায় এই ম্যাচের সেরা ফিনিসিং ব্যাটসম্যান হার্দিক।

৩৫০ রানের টার্গেট মানে একটা হিউজ চাপ ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে। ওদের অবস্থাটাই আজকে কাহিল অবস্থার মতো হয়েছে, ব্যাটে নামতে নামতেই প্রথম পাওয়ার-প্লে ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে আর রানও খুবই সামান্য, প্রথমে ভেবেছিলাম না ৫০ রানে অলআউট হয়ে যায়। তবে বল আর ফিল্ডিংও যথেষ্ট কড়া করেছে এটা বলতে হবে। এই করতে করতে মোটামুটি ৮ উইকেটে গিয়ে ৮০ রান করে, কিন্তু লাস্টে দুইজন বলার যেন আঠার মতো লেগে গেলো,আর আউটই হয় না। মাঝে মাঝে আসলে বলাররাও সেট হয়ে গেলে সমস্যা হয়ে যায়। আসলে ক্রিকেট খেলায় একটা ব্যাপার হলো, সে অরিজিনাল ব্যাটসম্যান হোক বা একজন বলার হোক না কেন যদি অনেক্ষন ব্যাটে খেলতে থাকে, তখন কিন্তু একটা, দুটো করে মারতে মারতে সেট হয়ে যায় আর সেট হয়ে গেলে আউট করা অনেকটা মুশকিল হয়ে যায় বিপক্ষ বোলারদের কাছে। আর সেটাই হলো,লাস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুইজন বলারই রান ১৫০ রানে টেনে নিয়ে গেলো। ইন্ডিয়া ২০০ রান মানে একটা হিউজ রানের ব্যবধানে জিতলো।

এই ম্যাচে প্লেয়ার অফ দ্যা ম্যাচ আর সিরিজ কে হতে পারে আমি মোটামুটি খেলা দেখে আন্দাজ করতে পেরেছিলাম যে যদি ইন্ডিয়া আজকে জিততে পারে তাহলে গিল আর ঈশানকেই দেওয়া উচিত এই সম্মানটা , কারণ মেইন রানের ভিতটা তারাই গড়ে দিয়ে গেছে। আর আসলেই তারা পেয়েছে এই সম্মানটা। ওয়ানডেতে অনেক রানের ব্যবধানে জিতলে পয়েন্টটাও বেশি হয়ে যায় সেই টিমের। যাইহোক, এই নিয়ে তিনটি ম্যাচের মধ্যে দিয়ে ওয়ানডে খেলা শেষ হলো এবং ইন্ডিয়া সিরিজ জিতে নিলো।