পটল দিয়ে সর্ষে-পারশে মাছের মজাদার রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগlast year
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে আমি একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকে আমি পটল দিয়ে সর্ষে-পারশে মাছের রেসিপি তৈরি করেছিলাম। পারশে মাছ খেতে অনেক ভালো লাগে, কিন্তু এখন পারশে মাছের ধারে কাছে যাওয়া যায়না দামের জন্য। এই ছোট ছোট পারশে মাছের দাম প্রচুর আমাদের এখানে । এখন বর্তমানে এইসব মাছের বাজারদর এতো উঠেছে যে ঠিকভাবে কিনে খাওয়া যায়না সবসময়। তবে ওই হয়না, খেতে মন চাইলে তখন আর টাকার কথা মনে হয় না, খাওয়ার ইচ্ছা হলে তখন ওই খাওয়ার দিকেই মন যায়। আর আমার এমনি যেটা খাওয়ার ইচ্ছা হয় সেটা না হলে হয় না, আর সেটা সাথে সাথেই লাগে । যাইহোক এই পারশে মাছ কেনা ছিল অনেকদিন আগে, আজকে ভাবলাম কিছু পটল আছে আর তার সাথে আলু দিয়ে আর সরিষা বেটে দিয়ে রান্না করে ফেলি। সরিষা বাটা দিয়ে এমনিতেই যেকোনো তরকারি খেতে অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে, সে মাছ দিয়ে হোক বা শুধু সবজি দিয়ে নিরামিষ করলেও খেতে ভালো লাগে। এখন এই রেসিপিটির উপকরণসহ প্রধান প্রস্তুতির দিকে চলে যাবো।


☀প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☀

✦উপকরণ
পরিমাণ✦
পারশে মাছ
৬০০ গ্রাম
পটল
২৫০ গ্রাম
আলু
২ টি
কাঁচা লঙ্কা
৭ টি
সরিষা বীজ
পরিমাণমতো
লঙ্কার গুঁড়ো
১ চামচ
গোটা জিরা
১ চামচ
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৫ চামচ
হলুদ
৪ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১ চামচ


পটল, আলু, কাঁচা লঙ্কা


সরিষা বীজ, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


❣এখন রেসিপিটা যেভাবে তৈরি করলাম---


☫প্রস্তুত প্রণালী:☫


➤কেটে রাখা পারশে মাছগুলো একবার লবন মাখিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম। এরপর আলু দুটির খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে পিচ তৈরি করে নিয়েছিলাম এবং পরে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

➤পটলগুলোর খোসা ছালিয়ে নিয়েছিলাম এবং কেটে নেওয়ার পরে ধুয়ে রেখেছিলাম। এরপর লঙ্কাগুলো কেটে নেওয়ার পরে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

➤সরিষা বীজগুলো মিক্সারের বাটিতে ঢেলে দিয়ে একটি লঙ্কা সাথে দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে তাতে একটু জল দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤সরিষা বীজগুলো ভালোভাবে পেস্ট করে নিয়েছিলাম এবং তাতে জল দিয়ে একটি ছাঁকনির মাধ্যমে ছেঁকে নিয়েছিলাম।

➤পারশে মাছে ২ চামচ লবন এবং হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর প্রত্যেক পিসের গায়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।

➤প্যানে তেল দিয়ে গরম করে নেওয়ার পরে পারশে মাছের পিস অল্প করে করে দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর সব ভালোভাবে ভেজে নিয়ে তুলে রেখেছিলাম।

➤মাছ ভাজার পর্ব শেষ হলে আরেক কড়াইতে অল্প তেল দিয়ে তাতে পটল দিয়ে দিয়েছিলাম এবং ভালোভাবে ভাজা করে তুলে নিয়েছিলাম।

➤পটল ভাজার পরে কড়াইতে আরেকটু তেল দিয়ে আলুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর আলু ভালোভাবে ভাজা হয়ে আসলে তুলে রেখেছিলাম।

➤আলু ভেজে তুলে নেওয়ার পরে কড়াইতে তেল দিয়ে গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর জিরাটা একটু ভাজা হয়ে আসলে তাতে ভাজা আলুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤আলু দেওয়ার পরে তাতে ভেজে রাখা পটল আর লঙ্কা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে স্বাদ মতো আরেকটু লবন, হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে তাতে লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤মশলাগুলো ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম। এরপর তাতে ছেঁকে রাখা সরিষা দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে আরেকটু জল যোগ করে দিয়েছিলাম।

➤সরিষা বাটা দেওয়ার পরে তরকারি কিছুক্ষন ফুটিয়ে নিয়েছিলাম আলু-পটল সেদ্ধ হয়ে আসার জন্য। এরপর তাতে ভেজে রাখা পারশে মাছের পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং তরকারিটা আরো কিছুক্ষন জ্বাল দিয়ে নিয়েছিলাম।

➤তরকারিটা ঘন আর ঝোল কমিয়ে নেওয়ার পরে আমার পটলের সাথে সর্ষে পারশের মজাদার রেসিপি তৈরি হয়ে গেছিলো। এরপর নামিয়ে নেওয়ার কিছুক্ষন পরে তাতে জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়ে একটি পাত্রে পরিবেশনের জন্য তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 last year 

পটল দিয়ে সর্ষে-পারশে মাছের মজাদার রেসিপি দেখে খুবই সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আপনি খুবই মজাদার রেসিপি তৈরি করলেন দাদা। আপনার রেসিপির পরিবেশন খুবই ভালো লেগেছে। এত সুন্দর ভাবে পরিবেশন করার মাধ্যমে আমরা রেসিপি শিখে নিলাম। আসলে আমার পটল আমার খুবই প্রিয়, তবে পটল ভাজি খেতে বেশি পছন্দ করি। গরম ভাতের সাথে পটল ভাজি খেতে খুবই মজা লাগে। আপনার রেসিপি পরিবেশন দেখে খুব ভালো লাগলো। এই মজাদার পারশে মাছের রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

আসলে এখন সব জিনিসেরই দাম বেড়ে গিয়েছে। আপনি তো দেখছি খুবই মজাদার একটা রেসিপি তৈরি করে ফেলেছেন। পটল দিয়ে সর্ষে পারশে মাছের মজাদার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে খুবই সুস্বাদু এবং ইয়াম্মি হয়েছে। এই মাছগুলোর অনেক দাম যার জন্য কেউ এত বেশি কিনতে চায় না। আপনার ইচ্ছে করছিল খেতে তাই যত দামই হোক না কেন কিনে খেয়েছেন তখন মন থাকে খাবারের দিকে আপনার, এটা জেনে ভালো লাগলো। আপনি সব সময় খুবই মজাদার রেসিপি তৈরি করে থাকেন। এভাবে পটল দিয়ে সর্ষে পারশে মাছের রেসিপি তৈরি করলে খেতে কিন্তু ভীষণ ভালোই লাগে। আপনার উপস্থাপনা ও খুবই ভালো ছিল বলতে হচ্ছে। এরকম একটা মজাদার রেসিপি সবার মাঝে ভাগ করে নিলেন দেখে ভালো লাগলো।

 last year 

টাকা খরচ ছাড়াই পছন্দের খাবার খাওয়ার আলাদা টেকনিক আছে দাদা। শুধু একটা শ্বশুর বাড়ি বানালেই হবে। আমাদের বৌদির সামনে শুধু বলবেন অনেকদিন থেকে এই মাছ খাওয়া হয় না। খেতে পারলে বোধহয় ভালই হতো। একেবারে কাজ হয়ে যাবে দাদা। পকেটের টাকাও বেঁচে যাবে আর রান্নার ঝামেলাও থাকবে না 🤭। সর্ষে-পারশে দেখে তো জিভে জল চলে এসেছে। আসলে মাছের দাম দিনে দিনে অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন মাছের বাজারে গেলে ভয়ই লাগে। কয়দিন পরে এমন অবস্থা হবে প্রেসারের ওষুধ সাথে করে নিয়ে বাজার যেতে হবে। দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি হচ্ছে তাতে করে প্রেসারের ওষুধ খাওয়া ছাড়া বাজার করে বাড়ি ফেরার কোন উপায় নেই। তবে যাই বলুন না কেন দাদা পটল দিয়ে পারশে মাছের রেসিপি দারুণ হয়েছে। আর সরিষা বাটা দেওয়াতে খেতে নিশ্চয়ই আরো ভালো হয়েছে। সরিষাবাটা মানেই বাঙালি রান্নার আলাদা রকমের স্বাদ। বাঙালি রান্না মানেই যেন সরিষার কড়া ঝাঁজ। দারুন লোভনীয় একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।

 last year 

আসলেই দাদা ঠিক বলেছেন, কোন কিছু খেতে ইচ্ছে করলে তখন আর টাকার কথা মনে থাকে না। কারণ না খেলে পরে আবার আফসোস হয়। দুই দিনের দুনিয়া এতো ভেবে চিন্তে কি আর হবে। যখন যেটা খেতে ইচ্ছে করবে সেটা খেয়ে নিলেই ভালো। যাইহোক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আগুন। মাছের বাজারে গেলে এমনিতেই মাথা খারাপ হয়ে যায়। ৯০০/১০০০ টাকা মাছের কেজি,সবজি ১০০ টাকা কেজি। এগুলো নিজে নিজে ভাবলে মাঝে মধ্যে মনে হয় রুপকথার গল্প পড়ছি। যাইহোক পটল দিয়ে সর্ষে-পারশে মাছের মজাদার রেসিপিটা দেখতে বেশ লোভনীয় লাগছে দাদা। রেসিপির কালারটা এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে। সরিষা বাটা দেওয়াতে রেসিপির স্বাদ মনে হচ্ছে অনেক বেড়ে গিয়েছে। পারশে মাছ যদিও কখনও খাওয়া হয়নি,তবে দেখে মনে হচ্ছে খুব স্বাদের একটি মাছ। বরাবরের মতো এতো মজাদার একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 last year 

যে জিনিসটা খেতে ইচ্ছে করে সেই জিনিসটা যদি না খেতে পারি তাহলে পরে আফসোস লাগে। তাই যত দামই হোক না কেন খেয়ে নেওয়া উচিত আমার মনে হয়। আসলে ঠিকই বলেছেন কোন কিছু খেতে ইচ্ছে করলে তখন আর টাকার কথা মনে থাকে না। বেশ লোভনীয় একটা রেসিপি তৈরি করেছেন যা দেখে খুবই সুস্বাদু এবং ইয়াম্মি মনে হচ্ছে। সর্ষে পারশে মাছগুলো আমারও খুবই পছন্দের। আপনার প্রত্যেকটা রেসিপি আমার কাছে সব সময় ভালো লাগে। পটল দিয়ে রান্না করার কারনে মনে হচ্ছে খেতে একটু বেশি ভালো লেগেছে এবং খুবই মজা করে খেয়েছেন। এরকম মজার মজার রেসিপি তৈরি করে খেলে আর কি লাগে। সম্পূর্ণ রেসিপি টা দেখছি খুবই সুন্দরভাবেই তৈরি করলেন আপনি। সম্পূর্ণ রেসিপি টা দেখে ভালো লাগলো আমার কাছে। জিভে জল চলে আসলো দাদা আপনার রেসিপিটি দেখে। এক কথায় অসাধারণ ছিল আপনার রেসিপিটি।

 last year 

এই মাছটা আমাদের এদিকেও বোধহয় বেশ দাম কারণ পাড়ার বাজারে নাকি পাওয়া যায়না,যেহেতু বেশিরভাগ মানুষ ই কিনে না তাই।এই মাছটার টেস্ট আমার কাছে খুব একটা ভালো না লাগলেও, খারাপ লাগেনা।

 last year 

দাদা পারশে খুবই সুস্বাদু একটি মাছ। মজাদার হওয়ার কারনে বিক্রেতারা দামও চায় বেশি। কোন মাছ পছন্দ হলে দামের দিকে কেউ তাকায় না। আর সেই সুযোগটা লুফে নেয় ব্যাবসায়ীরা। পটলের সাথে সর্ষে দিয়ে পারশে মাছের মজাদার রেসিপিটা ধারুন হয়েছে। বর্তমানে সব কিছু দাম বেশি। শুধু যারা ক্রেতা তাদের পকেটে টাকা নেই। যায়হোক সর্ষে দেওয়ার কারনে রেসিপির কালারটা ধারুন এসেছে। ধন্যবাদ দাদা।

 last year 

দাদা পারশে মাছ কি জানিনা। আপনি পটল আর আলু দিয়ে পারশে মাছ রান্না করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আগেও আপনার অনেক রান্না দেখেছি। তাই জানি যে আপনি বেশ ভাল রান্না করে থাকেন। তবে আজকের রান্নাটি দেখে তো খুব খেতে মনে চাইছে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি লোভনীয় খাবার শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আপনি ঠিক বলেছেন, আসলে এখন জিনিসপত্রের যে দাম এই জন্য সব সময় আসলে কিনে খাওয়া হয় না। পারশে মাছটা এমনিতে অনেক দারুন একটা মাছ। তবে আপনি তো দেখছি খেতে ইচ্ছে করলে সেটা লাগবেই। এই অভ্যাসটা অবশ্য ভালো না। কারণ খেতে সবারই ভালো লাগে কিন্তু আসলে সবার সামর্থ্য থাকে না । তবে আপনার মতো করে পটল, সর্ষে দিয়ে কখনো এইভাবে রান্না করা হয়নি। আপনার প্রত্যেকটা রেসিপি আমার কাছে বেশ ইউনিক লাগে। তাছাড়া ঠিক বলেছেন সর্ষে দিয়ে রান্না করলে যেকোন রান্নাই বেশি ভালো লাগে খেতে। ভাবছি আপনার মত করে ট্রাই করে দেখব। আপনার রেসিপি দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। আমার কাছেও ভীষণ ভালো লেগেছে খেতে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 60767.97
ETH 2352.24
USDT 1.00
SBD 2.51