ছোট গল্প - "বৃদ্ধের জীবন সংগ্রাম " || ( ১০%লাজুক খ্যাকের জন্য)
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক
- বৃদ্ধের জীবন সংগ্রাম
- ২৭, জুন ,২০২২
- সোমবার
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি " বৃদ্ধের জীবন সংগ্রাম " গল্প শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
আমি মনে করি গল্প মানেই কোন বাস্তব চরিত্র বা ঘটনার সাথে পরিচিত হওয়া।জীবনের ইতি হয়ে যাবে কিন্তু থেকে যাবে স্মৃতি বিজরিত অতীত বা জীবনের গল্প। বেশিরভাগ মানুষ জীবনের বাস্তবতা উপলব্ধি করার চেষ্টা করে নাহ।আমি গল্প পড়তে পছন্দ করি কারণ বাস্তবতার সাথে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারি।জীবনে লুকিয়ে থাকা ঐতিহাসিক বড় ঘটনা গুলোই হলো অনেক বড় গল্প।বাস্তব জীবনের সাথে জড়িত জীবন চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হলো।
গল্প - বৃদ্ধের জীবন সংগ্রাম
একমুঠো খাবারের জন্য মানুষকে কত কিছুই না করতে হয়। প্রতিটি মানুষকেই সংগ্রামের মাধ্যমে সামনের দিকে অগ্রসর হতে হয়। কারোর ক্ষেত্রে বিলাসিতা কারোর ক্ষেত্রে অনেক কষ্টের এবং বেদনাদায়ক। পেটে যদি খাবার না জুটে প্রতিটা মানুষের জীবনে স্থিরতা লক্ষণীয় থাকে। বৃদ্ধের বয়স আনুমানিক ৭০ বছরের উর্ধ্বে হবে। তার নাম কালাম মোল্লা কিন্তু কালো হওয়ায় মানুষ তাকে কালো মোল্লা বলে ডেকে থাকে। চার সন্তানের বাবা হওয়া সত্ত্বেও তাকে কখনো এভাবে জীবন জীবিকার উদ্দেশ্যে কাজ করে খেতে হবে সেটা কখনো কল্পনাও করতে পারেনি। যাইহোক, পরিস্থিতি সবার জন্য একরকম থাকেনা পরিবেশের কারণে পরিস্থিতির শিকার হতে হয়।
অনেক বছর আগের কথা তার মেজ ছেলে একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করে। যেটা তার জীবনে খুবই কষ্ট ও হৃদয়কে আঘাতগ্রস্থ করে জীবনের গতিপথ কষ্ট করে দিয়ে যায়। তিনি এতটাই আঘাতপ্রাপ্ত হন বিছানা থেকে ওঠার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। প্রতিটি বাবা-মায়ের জীবনের প্রিয় জিনিস বা প্রিয় বিষয় হলো তার সন্তান। সন্তানের কোন কিছু হলেই একমাত্র বাবা-মা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়ে থাকে। তার ক্ষেত্রেও একই রকম একজন স্বাভাবিক মানুষ তার সন্তানকে হারিয়ে অনেক আঘাত পেয়ে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। সন্তানের শোকে অনেক বছর তিনি বিছানায় পার করেন। তার গোসল খাওয়া-দাওয়া কোনটাই ঠিক মতো চলে না এক পর্যায়ে মৃত্যুর দিকে চলে গিয়েছিল। যাইহোক, আল্লাহর ইচ্ছায় সব কিছুই সম্ভব। তিনি অনেক বছর পর সন্তান হারানোর কষ্ট কাটিয়ে ওঠেন। কয়েক মাস যাবত নিজের স্বাভাবিক চলাফেরা জন্য চেষ্টা করেন। কিছু দিন যাওয়ার পর চলাচল স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পায়।
স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পাওয়ার পর কখনো কোন ধরনের কাজের নির্ভরশীলতা ফিরতে পারবে সেটা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। তিনি স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পেলেও লাঠির উপর ভর দিয়ে চলাফেরা করতে হয়। তার অন্যান্য ছেলে মেয়ের খারাপ ব্যবহারের কারণে তাকে কর্মের দিকে ফিরে যেতে হয়। মানুষ যখন বিপদগ্রস্ত হয় তখন আর কোনো পথ খোলা না থাকলে তাকে সেই পথের বিকল্প পথের দিকে পা বাড়াতে হয়। তার ক্ষেত্রে ঠিক একই রকম পথ বেছে নিতে হয়েছিল। এমনিতেই বয়সের ভারে নিজেকে সামলিয়ে নিতে অনেক কষ্ট হয়, তবুও তিনি ছোটখাটো ব্যবসায়ী কাজে জড়িত হওয়ার চেষ্টা করেন। বিভিন্ন ধরনের সবজি জাতীয় তড়ি তরকারি বিক্রির পথ বেছে নেয়। তার ব্যবসা করার তেমন একটা পুঁজি ছিল না, সেজন্য তিনি এই ধরনের সবজি জাতীয় তরকারি বিক্রির জন্য গ্রামে গ্রামে বের হয়। গ্রাম্য পরিবেশে মানুষ তার বাড়ির আঙিনায় বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি চাষাবাদ করে থাকে। যেগুলো তারা বাজারে বিক্রির জন্য বা বাড়ি থেকে সবজি ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যায়।
এই বৃদ্ধের ব্যবসা করার মতো পুঁজি ছিল না সেজন্য গ্রামের মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের সবজি জাতীয় তরকারি বাকি করে বাজারে নিয়ে বিক্রির জন্য গ্রামে বের হয়। অনেকে তাকে ব্যবসা করতে দেখে বিভিন্ন ধরনের সবজি তার কাছে বাকি দিয়েছে, আবার অনেকে ফিরিয়ে দিয়েছে। তার এই ধরনের কাজকে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিল। অনেকে তাকে জিজ্ঞাসা করতো আপনি বিছানায় পড়ে ছিলেন ।আপনি কি পারবেন এই ধরনের সবজি বাজারে বিক্রি করতে যেটা আপনার খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। তিনি হাসি মুখে সবসময় বলতেন হ্যাঁ আমি পারবো। অনেকে একটু কম দামে তার কাছে সবজি বিক্রি করতো তার এই ধরনের উদ্যোগের কারণে গ্রাম থেকে সবজি জাতীয় তরকারি কিনে নিয়ে তিনি বাজারে বিক্রি করতে থাকলেন। সারাদিন গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি কিনে নিয়ে বিকেল বেলায় হাট এর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সেটা সত্যিই আমাকে অনেক ভাবিয়ে তুলেছে কারণ, এই বয়সে তাকে বাড়িতে বসে অবসর সময় পার করার কথা আর সে এই বয়সে কাজ করার জন্য গ্রামে বেরিয়েছে।
সে জন্য চেষ্টা কখনো বিফলে যায়না । তিনি দেখিয়েছেন বয়স কখনো জীবনের চলার পথে বাধা করেনা উদ্যম সাহস আর ভালো মন-মানসিকতা চেষ্টা থাকলে সবই সম্ভব। তিনি এখন নিজের কাজ নিজে করে চলেছেন নিজের যত খরচ তিনি বহন করে থাকেন। কারোর কাছে হাত পাততে হয় না কখনো কারো কাছে ছোট হতে হয় না। যেখান থেকে প্রত্যেকটা সন্তানের শিক্ষা নেয়া উচিত। তিনি এত পরিশ্রম করার পর তার মুখের হাসিটুকু দেখলে নিজের কাছে অনেক ভালো লাগে। তার মুখের এক টুকরো হাসি মানুষের হৃদয়ে মনকে অনেকটা ভাবিয়ে তোলে। হয়তো কতদিন এইভাবে কাজ করে চলে যেতে পারবে সেটাই এখনো অজানা। আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি বয়সের বাধা পেরিয়ে নিজের পথ চলার গতি অগ্রসর করে চলেছেন। তার হাসি টুকু বলে দেয় তিনি কতটা সুখী।
আশাকরি গল্পটি আপনারা পড়বেন। গল্প পড়তে আমি খুবই পছন্দ করি। যেটা প্রায়ই পড়া হয়ে থাকে ভালো লাগে পড়তে।গল্প পড়া মানেই নতুন কোন কিছু ঘটছে তার সাথে পরিচিত হওয়া। আমার লেখা গল্প পড়ে ভালো লাগলে নিশ্চয় মতামতের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন নাহ।
প্রথম গল্প:-গোয়েন্দা রহস্য গল্প - "এলাচির উইল"( শেষ পর্ব) |
source |
দ্বিতীয় গল্প:-ছোট গল্প - "অশ্রুর তির্থস্থানে একদিন"( শেষ পর্ব) |
source |
তৃতীয় গল্প:-ছোট গল্প - "শোনার পাহাড়ের পাখি"( পর্ব নেই ) |
source |
চতুর্থ গল্প:-ছোট গল্প - "ছায়া"( পর্ব নেই ) |
source |
পঞ্চম গল্প:-ছোট গল্প - "তীর্থ"( পর্ব নেই ) |
source |
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন
বিভাগ | ছোট গল্প । | |
---|---|---|
বিষয় | ছোট গল্প - "বৃদ্ধের জীবন সংগ্রাম ") | @ripon40 |
গল্প তৈরি করার অবস্থান | লিংক |
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।
আপনার এই মূল্যবান সাপোর্ট সবসময় আমার অনুপ্রেরণা দেয় সেজন্যই আমার খুব ভালো লাগে ধন্যবাদ।
ভাই সত্যি আপনি ইনটেলিজেন্ট পারসন না হলে কি কেউ এত সুন্দর লিখতে পারে। আপনার ছোট গল্প গুলো সব সময় আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে এবারও তার ব্যতিক্রম না। এভাবেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
তাই নাকি ভাইয়া কি যে বলেন লজ্জা পেলাম চেষ্টা করি ভাল কিছু এই কি আপনাদের মাঝে তুলে ধরার যেগুলো আপনার উপভোগ করতে পছন্দ করেন।
আসলে আপনার গল্পটি পড়ে খুবই মর্মাহত হলাম। একজন বৃদ্ধ যেই সময় পরিশ্রম করে নিজের খাবার সংগ্রহ করছে এটা জেনে খুবই ব্যথিত হয়েছি।
সামনের দিনে আরও এরকম গল্প এর আশায় থাকলাম।
হ্যাঁ সত্যিই অবাক করিয়ে দেয় এই বয়সে এইভাবে নিজের কষ্ট নিজে করে অন্যান্য টাই যেটা খুবই কষ্ট দেয়।
বেশ ভালো লাগলো আপনার আজকের ছোটো গল্পটি পড়ে। সেই সাথে একটু কষ্টও লাগলো বুকের এক পার্শ্বে। বেশ ভালই লেখেন দেখছি আপনি। এই ভাবে ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য। ভালো থাকবেন আপনি।
সবসময় চেষ্টা করি ভাল কিছু লিখে আপনাদের মাঝে তুলে ধরার যেটা পড়ে আপনাদের কাছে খুবই ভালো লাগে।
খুব ভালো লেগেছে আপনার ছোট গল্পটি। বৃদ্ধের জন্যে অনেক খারাপ লাগলো। আপনার লেখা গুলো সত্যিই অসাধারণ। এভাবেই কাজ চালিয়ে যান। খুব শীঘ্রই আপনি আপনার লক্ষ্যে পৌঁছে যাবেন। আপনার জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইলো।
আমার অনেক খারাপ লাগে আসলেই এই বয়সে তাকে অবসর টাইমে কাটানোর কথা কিন্তু তাকে পরিশ্রম করে চলতে হচ্ছে।