ছোট গল্প - "কবিরাজ" || ( ১০%লাজুক খ্যাকের জন্য)
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক
- কবিরাজ
- ০৩, জুলাই ,২০২২
- রবিবার
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি " বৃদ্ধের জীবন সংগ্রাম " গল্প শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
আমি মনে করি গল্প মানেই কোন বাস্তব চরিত্র বা ঘটনার সাথে পরিচিত হওয়া।জীবনের ইতি হয়ে যাবে কিন্তু থেকে যাবে স্মৃতি বিজরিত অতীত বা জীবনের গল্প। বেশিরভাগ মানুষ জীবনের বাস্তবতা উপলব্ধি করার চেষ্টা করে নাহ।আমি গল্প পড়তে পছন্দ করি কারণ বাস্তবতার সাথে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারি।জীবনে লুকিয়ে থাকা ঐতিহাসিক বড় ঘটনা গুলোই হলো অনেক বড় গল্প।বাস্তব জীবনের সাথে জড়িত জীবন চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হলো।
গল্প - কবিরাজ
কবিরাজ আমাদের পাড়ার শ্রেষ্ঠ কবি । জনগণ ভালোবেসে তাকে কবিরাজ বলে ডাকে । আমাদের খুব ভালো বন্ধু সে । নতুন নতুন কবিতা সৃষ্টিতে কবিরাজের তুলনা নেই ।
হঠাৎ একদিন মানিক এসে বলল , ‘ তুমি নাকি কবিতা কিছু লিখতে পার না । অন্য কবিদের কবিতার লাইন কাটিং করে নিজের বলে চালিয়ে দাও ! ' মানিকের কথা শুনে কবিরাজ রেগে গেল , ‘ যারা এসব বলে তারা তো জানে না , আমি ফুঁ দিলে এলাকায় কারফিউ জারি হয় । ওসব নিন্দুককে বলে দিস , কবিতা কারও সাফ - কবলা করা দলিল নয় । কবিতার স্থান অনেক উপরে । কবিতা সর্বজনীন । ' কবিরাজের জ্বালাময়ী
বক্তৃতা শুনে মানিক খানিকটা ঘাবড়ে গেল । পরক্ষণে সামলে নিয়ে বলল , ‘ ওপাড়ার কবি জসীম বলেছেন , তুমি নাকি একজন বটতলার কবি । তোমার কবিতা সভ্যতার আলোকে স্পর্শ করেনা । একদম যাচ্ছে তাই , ফালতু । কবিরাজ এবার আরও রেগে গেলেন , ‘ জসীম আবার কবি হল কবে থেকে ? ওটা একটা তেলাপোকা , শুধু টিকে আছে । টিকে থাকতে হবে না । আমার মত মাথা উঁচু করে বাঁচতে হবে । জসীমকে বলে দিস , তাকে আমি সভ্যতা থেকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করলাম । ' কবিরাজ তাল হারিয়ে ফেলছে দেখে , আমরা মানিককে চুপ করাই । অনেক কষ্টে তেল মেরে কবিরাজকে শান্ত করলাম । আমাদের তেল মারার সুরটা ধরতে পেরে বিভূতিও তাল মেলাতে লাগল । বলল ‘ কবিতা তোমার ধমনীতে প্রবাহিত হয় , কবিতার জন্ম হয় তোমার প্রতি নিশ্বাসে । তবু ধৃষ্ঠতার সঙ্গে জানতে চাচ্ছি একটি প্রমাণ সাইজের কবিতার জন্ম দিতে তোমার কতক্ষণ সময় লাগে , ভাই ? ’ বিভূতির কথায় তুষ্ট হয়ে কবিরাজ সমাদরে তাকে উত্তর দিল এই বলে ‘ জীবনে যতগুলো বই পড়েছি ।
সেগুলোর প্রচ্ছদ তোর মাথার উপর তুলে দিলে দশ হাত মাটির নিচে । চলে যাবি রে ব্যাটা । চোখ বন্ধ করলেই মাথায় দুই - তিনশ লাইনের কবিতা এসে যায় । এবার সে শরৎ - কে তার শেষ কবিতাটির শেষ কিছু লাইন আবৃত্তি করতে বলল । ‘ আবৃত্তি শুধু করলেই হবে না , বুঝিয়ে সবাইকে সন্তুষ্ট করতে হবে ’ মানিক বলল । শরৎ শুরু করল , ‘ আমাদের কবিরাজের সর্বশেষ কবিতা ‘ মাইকেল ফেলপ্স ’ । ফেলপ্স , তুই পাসনে ভয় , হবে হবে হতে হবে জয় - দুর্দিনে আমি হব সাথী তোর আর তুই পাবি স্বর্ণের ভোর । ' কবিরাজের কবিতা শুনে আমাদের কান চিরবির করতে লাগল । তারপরও তাকে তেল মারলাম ।
এবার সে বলল সে আরও একটি কবিতা লিখেছে যা ৫০০ লাইনের । এবার সে নিজেই আবৃত্তি করতে চাইল । আমরা ব্যাকুলভাবে বললাম ‘ শুনব , শুনব ' । কবিরাজ আবৃত্তি করলেন ‘ ঘোড়ায় চড়ে রাজা শিকারে বাহির হইলেন ... ' । আমরা বললাম ‘ আহা , কি ব্যাঞ্জনা ’ । এবার কবিরাজ বললেন ‘ শেষ লাইনটা শোন ’ আমরা তাকে আরও উৎসাহ দিলাম । আবার আবৃত্তি করলেন ‘ ঘোড়ায় চড়িয়া রাজা বনে প্রবেশ করিলেন । ' আমরা বললাম ‘ আহা , সাধু সাধু । কিন্তু মাঝখানে ৪৯৮ লাইন কোথায় গেল ? কবিরাজ আমাদের সবাইকে আরও মুগ্ধ করবে বলে বললেন ’ রাজা শিকারে বের হওয়া আর প্রবেশ করার মাঝখানের ৪৯৮ লাইন হলো শুধু ‘ টগবগ টগবগ টগবগ । '
আশাকরি গল্পটি আপনারা পড়বেন। গল্প পড়তে আমি খুবই পছন্দ করি। যেটা প্রায়ই পড়া হয়ে থাকে ভালো লাগে পড়তে।গল্প পড়া মানেই নতুন কোন কিছু ঘটছে তার সাথে পরিচিত হওয়া। আমার লেখা গল্প পড়ে ভালো লাগলে নিশ্চয় মতামতের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন নাহ।
প্রথম গল্প:-গোয়েন্দা রহস্য গল্প - "এলাচির উইল"( শেষ পর্ব) |
source |
দ্বিতীয় গল্প:-ছোট গল্প - "অশ্রুর তির্থস্থানে একদিন"( শেষ পর্ব) |
source |
তৃতীয় গল্প:-ছোট গল্প - "শোনার পাহাড়ের পাখি"( পর্ব নেই ) |
source |
চতুর্থ গল্প:-ছোট গল্প - "ছায়া"( পর্ব নেই ) |
source |
পঞ্চম গল্প:-ছোট গল্প - "তীর্থ"( পর্ব নেই ) |
source |
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন
বিভাগ | ছোট গল্প । | |
---|---|---|
বিষয় | ছোট গল্প - "কবিরাজ ") | @ripon40 |
গল্প তৈরি করার অবস্থান | লিংক |
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।
'কবিরাজ' গল্পটি ভিন্ন রকম ছিলো। গল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। সাথে আপনার লিখিত গল্পগুলোর লিংক একসাথে দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।