ছোট গল্প - "হারিয়ে ফেলা দিন" || ( ১০%লাজুক খ্যাকের জন্য) by ripon40
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক
- হারিয়ে ফেলা দিন
- ০৫, ফেব্রুয়ারি ,২০২২
- রবিবার
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি " হারিয়ে ফেলা দিন " গল্প শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
গল্প - হারিয়ে ফেলা দিন
পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে সর্বদা চঞ্চল আর হাস্যজ্জ্বল হুমায়রা । তার বাবা তাঁকে অনেক ভালোবাসে । জীবনের সবটুকু দিয়ে ভালোবাসতে চায় । কিন্তু হুমায়রার ভালোবাসা ছিল একটু ভিন্ন । জন্মের পরে যখন তার সবকিছু বোঝার জ্ঞান হয় তখন থেকেই বাবার প্রতিটি কাজ আর কথাই ছিল তার জীবনের স্বপ্ন । অন্তরের গভীরে একটু একটু করে জমিয়ে রাখে বাবার স্বপ্নগুলো । জমিয়ে রাখা এই স্বপ্নগুলোর মধ্যে হুমায়রা কিছুটা পূরণ করতে পারে কখনো ব্যর্থ হয় ।
কিন্তু এই ব্যর্থ হওয়ার মাঝেও সে বাবার আরও একটা স্বপ্ন পূরণ করে আর তা হলো সে কখনো হতাশ হয়না । বাবা তাকে বলেছে আত্মবিশ্বাস আর পরিশ্রম মানুষকে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে অবশ্যই পৌঁছাবে । এভাবেই কেটে যায় হুমায়রার ষোলটি বছর । কিন্তু যখন হুমায়রা কেবল inter 1st year এ ভর্তি হয় তারপর থেকে বাবা ( বক্ষব্যাধি ) রোগে আক্রান্ত হন । প্রথমে তার এই রোগ ধরা পড়ে না কিন্তু বাবার কষ্টও কমেনা । বাবার এই কষ্ট হুমায়রার জমিয়ে রাখা স্বপ্নগুলো একে একে কাঁচের টুকরোর মতো ভেঙে যেতে থাকে । কিন্তু এখানেই শেষ নয় , বাবার এই অসুস্থতা আর কষ্ট হুমায়রাকে অনেক কিছুই শিখিয়ে দেয় ।
এভাবেই কেটে যায় আরও একটি বছর । সালটা ছিল ২১ শে এপ্রিল ২০১৬ ... । এর মাঝে না ঘটে যাওয়া অনেক কিছুই ঘটে যায় । কিন্তু এই দিনটি ছিল হুমায়রার জীবন থেকে কেঁড়ে নেওয়া সব স্বপ্ন , সুখ আর চাঞ্চল্যকর হাসি । চোখের সামনে নীরবে ঘুমিয়ে যাওয়া বাবাকে আর জাগাতে পারেনা হুমায়রা । বাবার সেই পরিশ্রমী চোখ আর প্রতিটি নিঃশ্বাসে সফলতা এক নিমিষে শেষ রেখা টেনে চলে যেতে দেখে হুমায়রা । আর তখনই হুমায়রার অন্তরের দরজা বন্ধ হয়ে যায় । বন্ধ হয়ে যায় তার হৃদস্পন্দন । সে শুধু কোথা থেকে যেন ভেসে আসা এক ধ্বনি শুনতে পায় । বলে , ‘ হুমায়রা আজ থেকে তোমার জীবনের পথ পাল্টে গেল । এখন তুমি একা , তোমার লড়াই একার ’ । হুমায়রা এক পলকে শুধু চাদরে আবৃত বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে ।
কিছুক্ষণ পর দু'চোখ বেয়ে তার জীবনের একাকীত্বকে বরণ করে নেওয়ার অশ্রু বেয়ে পড়ে । সেদিনের পর থেকে এভাবেই কখনও সকাল , কখনো দুপুর , কখনো বা রাতে হুমায়রা তার বন্ধ হওয়া অন্তরের দরজায় কড়া নাড়তে থাকে বাবার ফেরার অপেক্ষায় , উত্তরের অপেক্ষায় ...। আজও হুমায়রা অপেক্ষায় থাকে বাবা আসবে তার স্বপ্নের মাঝে , বলবে মা আমার দরজা খুলো আর হুমায়রা তার জীবনকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে , বাবাকে একপলক দেখার প্রত্যাশায় দৌড়ে যাবে ।
সেদিনের নীরবে ঘুমিয়ে যাওয়া বাবা যে না ফেরার দেশে চলে গেছে , আর কখনোই যে তাকে জড়িয়ে ধরে হাসবে না , হুমায়রা তা আজও মানতে পারে না । বাবা চলে যাওয়ার ৮ টি মাস হয়ে গেলেও তার রেখে যাওয়া স্মৃতি , ধ্বনি আর ভালোবাসা হুমায়রাকে বাবার অভাব বুঝতে দেয়না । তাই সে আজও মানতে পারেনা বাবা আর নেই । কিন্তু মাঝে মাঝেই বাড়ির মেইন গেটের কাছে , কখনও বাবার বিছানার দিকে , কখনো আম গাছটার নিচে ফাঁকা চেয়ারটার দিকে অপলক তাকিয়ে চোখের অশ্রু ফেলে । কেউ জানেনা হয়ত বুঝতেও পারেনা হুমায়রার এই হঠাৎ অশ্রু তাদের কি বোঝাতে চায় ?
আশাকরি গল্পটি আপনারা পড়বেন। গল্প পড়তে আমি খুবই পছন্দ করি। যেটা প্রায়ই পড়া হয়ে থাকে ভালো লাগে পড়তে।গল্প পড়া মানেই নতুন কোন কিছু ঘটছে তার সাথে পরিচিত হওয়া। আমার লেখা গল্প পড়ে ভালো লাগলে নিশ্চয় মতামতের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন নাহ।
প্রথম গল্প:-গোয়েন্দা রহস্য গল্প - "এলাচির উইল"( শেষ পর্ব) |
source |
দ্বিতীয় গল্প:-ছোট গল্প - "অশ্রুর তির্থস্থানে একদিন"( শেষ পর্ব) |
source |
তৃতীয় গল্প:-ছোট গল্প - "শোনার পাহাড়ের পাখি"( পর্ব নেই ) |
source |
চতুর্থ গল্প:-ছোট গল্প - "ছায়া"( পর্ব নেই ) |
source |
পঞ্চম গল্প:-ছোট গল্প - "তীর্থ"( পর্ব নেই ) |
source |
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন
বিভাগ | ছোট গল্প । | |
---|---|---|
বিষয় | ছোট গল্প - "হারিয়ে ফেলা দিন") | @ripon40 |
গল্প তৈরি করার অবস্থান | লিংক |
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।
আপনার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগল। আসলে মানুষের জীবন এমনি কখন কিভাবে হারিয়ে যাবে বুঝার উপায় নেই। হুমায়রার জন্য আসলে অনেক খারাপ লাগল। সত্যি তার বাবার ভালোবাসা তাকে এখনো কিছুই বুঝতে দেয়নি।আজ ও সে মনে করে তার বাবা ফিরে আসবে তার কাছে।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ মানুষের জীবন এরকমই কখন কে হারিয়ে যাবে জীবন থেকে কেউই জানে না গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আমি স্বীকার করি যে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা বাবাকে বেশি ভালোবাসে। যেমন ধরুন আপনার এই গল্পে হুমায়রা তার বাবাকে হারানোর আট মাস পরেও যেন তার বাবার অপেক্ষায় রয়েছে। যাই হোক গল্পটা বেশ ভালো লিখেছেন একটু বেদনাদায়ক হলেও অনেক মজা পেয়েছি।
হ্যাঁ মেয়েরা বাবা মাকে বেশি ভালোবাসে বেশি কেয়ার করে এটা আমিও মেনে নিয়েছি কারণ এটাই স্বাভাবিক মায়েদের মন যেটা অনেক বড় শিক্ষা।
হুমায়রা তার বাবার এভাবে চলে যাওয়ার ব্যাপারটি সহজে মেনে নিতে পারেনি। তাইতো তার বাবা চলে যাওয়ার আট মাস পরেও সে তার বাবার অপেক্ষায় আছে। তার বাবার সাথে কাটানো স্মৃতিগুলো সে কখনোই ভুলতে পারবেনা। ভুলারও এটা বিষয় নয় কারণ তার বাবার সাথে ভালোবাসার চেয়ে স্মৃতিগুলো রয়েছে সেগুলো ভাবতেই কষ্ট লাগবে। এরকম বেদনাদায়ক একটি গল্প পড়ে খুবই খারাপ লেগেছে। সবার মাঝে এই বিষয়টি ভাগ করে নিয়েছেন দেখে একটু বেশি ভালো লেগেছে।
হ্যাঁ এরকম কেউই মেনে নিতে চাইবে না যেটাই গল্পে হয়েছে বাস্তবতাকে মেনে নিতেই হবে তবুও।