ছোট গল্প - "ঝিনুক " || ( ১০%লাজুক খ্যাকের জন্য)
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক
- ঝিনুক
- ১৯, জুন ,২০২২
- রবিবার
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি " ঝিনুক " গল্প শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
আমি মনে করি গল্প মানেই কোন বাস্তব চরিত্র বা ঘটনার সাথে পরিচিত হওয়া।জীবনের ইতি হয়ে যাবে কিন্তু থেকে যাবে স্মৃতি বিজরিত অতীত বা জীবনের গল্প। বেশিরভাগ মানুষ জীবনের বাস্তবতা উপলব্ধি করার চেষ্টা করে নাহ।আমি গল্প পড়তে পছন্দ করি কারণ বাস্তবতার সাথে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারি।জীবনে লুকিয়ে থাকা ঐতিহাসিক বড় ঘটনা গুলোই হলো অনেক বড় গল্প।বাস্তব জীবনের সাথে জড়িত জীবন চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হলো।
গল্প - ঝিনুক
ভোর হলো , ঊষার আভায় পূর্ব আকাশ এখনও লাল হয়ে আছে । সমুদ্রের তীর হতে এ দৃশ্য দেখতে খুব মনোরম লাগে । প্রতিদিন এমন সময় কক্সবাজার সমুদ্র পাড়ের বাসিন্দা সুরুজ আলী ও তার একমাত্র মেয়ে ঝিনুক তার আর সব বন্ধুদের সাথে খেলতে খেলতে আর নাচতে নাচতে আসে সমুদ্রের তীরে । সমুদ্র তীরে পড়ে থাকা ঝিনুকের খোলশ গুলি কুঁড়িয়ে নেয় আনন্দের সাথে । হামিদ মিয়ার মতই এখানকার অনেক লোক এই খোল দিয়ে নানা রকম শিল্পকর্ম তৈরি করে এবং তা বিক্রি করে জীবিকা চালায় । সুরুজ আলীর মেয়ে ঝিনুককে হামিদ মিয়া খুব আদর করে । ঝিনুকের অন্য বন্ধুরা দু'একটা খোল কুঁড়িয়ে নিয়ে সেগুলো দিয়ে খেলা করে , আর ঝিনুক যথাসাধ্য খোল কুঁড়িয়ে সেগুলো হামিদ মিয়াকে এনে দেয় । হামিদ মিয়া বিনিময়ে ঝিনুক কে দশ - বিশ টাকা দেয় ।
ঝিনুকের বাবা সমুদ্রের একটি বড় মাছ - ধরার জাহাজে কাজ করে । দক্ষতার সাথে সমুদ্রে জাল ফেলা ও জাল টেনে তোলা তার কাজ । সারাদিনের কাজ শেষে তাকে কিছু পরিমানে মাছ দেওয়া হয় । মাছ বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে তাদের পরিবার চলে । ঝিনুকের বয়স ৮ কী ৯ বছর । তার দেড় বছর বয়সী ছোট্ট ভাই আছে , আর আছে মা - বাবা , সকলে মিলে মিশে সুখ - স্বাচ্ছন্দেই কাটে তাদের দিন । কিন্তু হঠাৎ একদিন তাদের এই সুখী পরিবারে নেমে এলো দুঃখের ছায়া । রোজকার মতই ঝিনুক গেছে সমুদ্রতীরে ঝিনুকের খোল টোকাতে । আর তার বাবা গেছে জাহাজে মাছ ধরতে । জাহাজ থেকে সুরুজ আলী যখন সাগরের বুকে বিশাল জালখানা ছুঁড়ে দিল , তখনই জালের এক অংশ গিয়ে পরল কি একটা শক্ত বস্তুর উপর । সেখান খেকে জাল টেনে তোলার সময় তা
আরও বেশি জড়িয়ে যায় । অনেক কষ্টে সে জালখানা উদ্ধার করলেও দেখতে পায় জালের বেশ খানিকটা অংশ ছিঁড়ে গেছে । জাহাজের অন্য সকলে তাকে অকর্মের ঢেঁকি বলে বকাঝকা করে , আর বলে জালের ক্ষতিপূরণ দিতে । সুরুজ আলী বাড়িতে এসে বউকে সব খুলে বলে আর অপমান ও দুশ্চিন্তায় কাঁদতে থাকে । আর এদিকে ঝিনুক আজ ঝিনুকের খোল কুঁড়াতে গিয়ে খোল এর সাথে কয়েকটা মুক্তা পায় , এগুলো যখন হামিদ মিয়া কে দেয় , তখন হামিদ মিয়া খুশি হয়ে তাকে পঞ্চাশ টাকা দেয় , ঝিনুক পঞ্চাশ টাকার নোট নিয়ে খুশি মনে বাড়ি ফেরে । তার হাসিমাখা মুখ দেখে সুরুজ আলীর মেজাজ আরও খারাপ হয় । সে ঝিনুককে বকাঝকা করতে শুরু করে । ঝিনুকের মা তাকে থামায় । ঝিনুক তার মাকে জিজ্ঞেস করে ‘ মা , বাবার হঠাৎ কি হলো ? ’ তার মা তাকে সব
কিছু বুঝিয়ে বলে , এবং কাঁদে । ঝিনুক জিজ্ঞেস করে , ‘ ঐ রকম একটা জাল কিনতে কত টাকা লাগবে মা ’ ? তার মা বলে মা - রে সে তো অনেক টাকা , এই ধর চার - পাঁচ হাজার ’ । ঝিনুক ছুটে গিয়ে তার মাটির ব্যাংকটা নিয়ে আসে । তার মা - বাবা তার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে , ঝিনুক ব্যাংকটা ভাঙে । এতদিন ঝিনুকের খোল বিক্রি করে সে এই ব্যাংকে সব টাকা জমিয়েছে । সে তার বাবাকে বলে টাকাগুলো হিসাব করতে , তার বাবা সব টাকা গুনে আশ্চর্য হয়ে বলে ‘ চার হাজার সাতশত দশ টাকা ’ । ঝিনুক বলে বাবা এই টাকা দিয়ে তুমি নতুন একটা জাল কিনে নিও , তাহলে আবার আগের মত করেই আমরা চলব । আর কেঁদনা বাবা । তারপর তার বাবার চোখের পানি মুছে দেয় , সুরুজ আলী বলেন , ‘ মা - রে এবার যে আমি দুঃখে কাঁদছি না , কাঁদছি গর্বে , তোর মতো এমন লক্ষী মেয়ে ক’জনের থাকেরে ‘ মা ’ । দোয়া করি তুই অনেক বড় হবি । তারপর আদর করে ঝিনুককে কোলে তুলে নিয়ে চুমু খায় ।
আশাকরি গল্পটি আপনারা পড়বেন। গল্প পড়তে আমি খুবই পছন্দ করি। যেটা প্রায়ই পড়া হয়ে থাকে ভালো লাগে পড়তে।গল্প পড়া মানেই নতুন কোন কিছু ঘটছে তার সাথে পরিচিত হওয়া। আমার লেখা গল্প পড়ে ভালো লাগলে নিশ্চয় মতামতের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন নাহ।
প্রথম গল্প:-গোয়েন্দা রহস্য গল্প - "এলাচির উইল"( শেষ পর্ব) |
source |
দ্বিতীয় গল্প:-ছোট গল্প - "অশ্রুর তির্থস্থানে একদিন"( শেষ পর্ব) |
source |
তৃতীয় গল্প:-ছোট গল্প - "শোনার পাহাড়ের পাখি"( পর্ব নেই ) |
source |
চতুর্থ গল্প:-ছোট গল্প - "ছায়া"( পর্ব নেই ) |
source |
পঞ্চম গল্প:-ছোট গল্প - "তীর্থ"( পর্ব নেই ) |
source |
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন
বিভাগ | ছোট গল্প । | |
---|---|---|
বিষয় | ছোট গল্প - "ঝিনুক") | @ripon40 |
গল্প তৈরি করার অবস্থান | লিংক |
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।
আপনি প্রতিনিয়ত ক্ষুদ্রতম সাপোর্ট দিয়ে চলেছেন যেটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া।
বাহ দারুন লাগল আপনার গল্পটি। ছোট্ট মেয়েটি কত লক্ষ্মী। মাটির ব্যাংকে ঝিনুকের খোল বৃক্রি করে যা পেত তার সবই জমিয়ে রাখতো। সুরুজ আলী ঠিক কথাই বলেছে মেয়েই অনেক বড় হবে জীবনে। অনেক ভাল লাগল আপনার ছোট গল্পটি পড়ে।
মেয়েরা খুবই লক্ষ্মী হয় সবসময় সংসারী হয় সেই উপলব্ধি থেকে গল্পটি লেখা।
আপনি কিন্তু অসম্ভব সুন্দর কবিতা ও ছোট গল্প লিখেন ভাই। রবীন্দ্রনাথ ছোটগল্পের জনক আর আপনি বর্তমান সময়ে এত সুন্দর সুন্দর ছোট গল্প আমার বাংলা ব্লগে উপহার দিচ্ছেন তা দেখে খুবই ভালো লাগছে ।
চেষ্টা করছি ভাইয়া সুন্দর কিছু গল্প আপনাদের মাঝে উপহার দেওয়ার যেটা আপনারা উপভোগ করে থাকেন।
দারুন ছিল আপনার ছোটগল্প খানি খুব উপভোগ করলাম। নদীর বুকে ঝিনুক ঝিনুক খোঁজা এমনকি ১০/২০ টাকা করে টাকা জমা হলো। তার বাবার প্রতিদিনকার কাজ জাহাজে মাছধরা। কিন্তু বিপদ যখন আসে তখন বড় হয়ে আসে। যেখানে জালের ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যর্থ সেখানেই জিনুকের জমাকৃত টাকা গুলো তার বাবার হাতে দেওয়াতে কান্নায় ভেঙে পড়ল। প্রতিটি সন্তান চায় তার বাবার জন্য কিছু না কিছু করতে হবে। কারো সাধ্য হয় না এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা অবিরাম।
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধূলিকণার সমন্বয়ে পাহাড়ের সৃষ্টি ঠিক তেমনি গল্পের সাদৃশ্য রয়েছে গল্পটি পড়ে সুন্দর মতামত করে অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
প্রতিনিয়তঃ আপনি খুবই সুন্দর সুন্দর গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেন। আপনার গল্পটা পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার কাছে আমার লেখা গল্পগুলো অনেক ভালো লাগে জেনে খুশি হলাম ভাই আসলে গল্প লিখতে খুবই ভালো লাগে।
খুব ভালো লিখেছেন ভাই, আপনার পুরো গল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। জিনুকে কেন্দ্র করে বাবা মেয়েকে নিয়ে খুব চমৎকার গল্প আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন, ধন্যবাদ আপনাকে।