ছোট গল্প - "বাবা তোমাকে"(পর্ব-১) || ( ১০%লাজুক খ্যাকের জন্য) by ripon40
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক
- বাবা তোমাকে
- ০৭, নভেম্বর ,২০২২
- সোমবার
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি "বাবা তোমাকে" গল্প শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
আমি মনে করি গল্প মানেই কোন বাস্তব চরিত্র বা ঘটনার সাথে পরিচিত হওয়া।জীবনের ইতি হয়ে যাবে কিন্তু থেকে যাবে স্মৃতি বিজরিত অতীত বা জীবনের গল্প। বেশিরভাগ মানুষ জীবনের বাস্তবতা উপলব্ধি করার চেষ্টা করে নাহ।আমি গল্প পড়তে পছন্দ করি কারণ বাস্তবতার সাথে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারি।জীবনে লুকিয়ে থাকা ঐতিহাসিক বড় ঘটনা গুলোই হলো অনেক বড় গল্প।বাস্তব জীবনের সাথে জড়িত জীবন চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হলো।
গল্প -বাবা তোমাকে
স্তব্ধ পরিবেশ। চারিদিক থেকে ঠান্ডা হাওয়া বইছে। চেয়ারে বসে আছি আর একটু ঘুম ঘুম ভাব আসছিল। হঠাৎ দেখি পথের ঐ দূর প্রান্তে কুয়াশার আড়ালে বাবা আমাকে ডাকছে। আর বলছে, 'কিরে গতরাতে তুই তো ঘুমাসনি, একটু ঘুমিয়ে নে। আমি বললাম, না বাবা। আমি এখন আর ঘুমাবো না । কারণ, তুমি চলে এসেছো। প্লিজ বাবা তুমি আর যেও না। বাবা বলল 'পাগল ছেলে তা আর হয় না'। আমি রেগে বললাম, তুমি চলে যাও আর এসো না। বাবা একটু হাসল ।
বাবার সাথে এভাবে কথা বলা আমার জীবনে এটাই হয়ত প্রথম ও শেষ । ছোটবেলা থেকেই মনের অজান্তে বাবাকে খুব ভয় পেতাম। আর লজ্জা তো সর্বদাই ছিল। বাবা শহরে চাকরি করত আর আমি ও মা বাড়িতে থাকতাম। বাবা কয়েক মাস পর পর বাড়িতে আসত। কিন্তু আমি বাবার কাছে ভয়ে যেতাম না। সবাই যেখানে বাবাকে ধরে চুমু খেত আমি সেখানে দূরে দূরে পালিয়ে থাকতাম। আবার সবাই যখন বাবার কাঁধে উঠত আমি তখন দৌড়ে পালিয়ে যেতাম। তাই বাবা খুব অভিমান করত। আমি বুঝাতে পেরেও লজ্জায় কিছুই বলতাম না।
এক পর্যায়ে পরিবারের সবাই ঢাকায় চলে আসলাম, সেখানে ছোট একটা রুম ভাড়া করে আমরা তিনজন থাকতাম। বাবা অফিস থেকে রাতে যখন আসত তখন আমি চুপ করে বিছানার কোনায় বসে থাকতাম। যেখানে হয়ত অন্যান্য ছেলেরা বাবার কোলে দৌড়ে যেত। কিন্তু আমি তা পারতাম না। কয়েক বছর আগে আমার নানাকে দুষ্কৃতকারী মেরে ফেলায় মামলার কাজে মাকে বারবার বাড়ি যেতে হতো। তাই স্কুল শেষ হলে আমি কখনো বাবার অফিসে বাবার সাথে, নয়তো বাবার বন্ধুর বাসায় থাকতাম। সেই দিনগুলো ছিল আমার জন্য খুব কষ্টের। বাবা-মাকে ছেড়ে অন্যের বাসা ছিল বিষাদময়। একবার আমার পায়ে ঘা হয়েছিল। মাঝরাতে খুব শিরশির করছিল। মা ছিল বাড়িতে। আমি বাবাকে লজ্জায় কিছু বলতে পারছিলাম না। কিন্তু বাবা ঠিকই বুঝতে পারলেন আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। তাই তেল গরম করে আমার পায়ে হাত বুলিয়ে নিলেন। তখন বাবাকে জড়িয়ে ধরতে খুব ইচ্ছে হচ্ছিল। কিন্তু পারলাম না লজ্জায়।
আশাকরি গল্পটি আপনারা পড়বেন। গল্প পড়তে আমি খুবই পছন্দ করি। যেটা প্রায়ই পড়া হয়ে থাকে ভালো লাগে পড়তে।গল্প পড়া মানেই নতুন কোন কিছু ঘটছে তার সাথে পরিচিত হওয়া। আমার লেখা গল্প পড়ে ভালো লাগলে নিশ্চয় মতামতের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন নাহ।
প্রথম গল্প:-গোয়েন্দা রহস্য গল্প - "এলাচির উইল"( শেষ পর্ব) |
source |
দ্বিতীয় গল্প:-ছোট গল্প - "অশ্রুর তির্থস্থানে একদিন"( শেষ পর্ব) |
source |
তৃতীয় গল্প:-ছোট গল্প - "শোনার পাহাড়ের পাখি"( পর্ব নেই ) |
source |
চতুর্থ গল্প:-ছোট গল্প - "ছায়া"( পর্ব নেই ) |
source |
পঞ্চম গল্প:-ছোট গল্প - "তীর্থ"( পর্ব নেই ) |
source |
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন
বিভাগ | ছোট গল্প । | |
---|---|---|
বিষয় | ছোট গল্প - "বাবা তোমাকে") | @ripon40 |
গল্প তৈরি করার অবস্থান | লিংক |
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।
সব বাচ্চারাই মনে হয় বাবার থেকে মার কাছে বেশি থাকতে স্বাছন্দ বোধ করে। আবার অনেকেই আছে বাবা অফিস থেকে ফেরার পথে বাবাকে জড়িয়ে ধরে সারাদিনের গল্প শেয়ার করে কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে দেখলাম সম্পূর্ণ উল্টোটা। বাবাকে দেখলে ভয় পান এটা স্বাভাবিক কিন্তু লজ্জা কেন করে সেটাই বুঝতে পারলাম না। আর এটা ঠিক বলেছেন বাবামাকে ছেড়ে অন্যের বাড়িতে থাকা আসলেই কষ্টকর। ভালো লিখেছেন ভাইয়া।
হ্যাঁ ঠিকই বলেছেন কারণ পৃথিবীর সবচেয়ে ভালোবাসার মানুষ হলো মা যিনি নিঃস্বার্থভাবে তার সন্তানকে ভালোবাসে।
আপনার এই গল্পের সাথে আমার জীবনের কাহিনির একটু হলেও মিল খুঁজে পাচ্ছি। কিন্তু আমি আমার বাবাকে অনেক ভালোবাসতাম। তবে এটা ঠিক আমি মায়ের কাছে সব শেয়ার করেছি বাবার কাছে নয়। বাবাকে ভয়ও পেতাম আবার কাছেও যেতাম কারণ বাবা আদর করার খুব আদর আর শাসনের সময় একদম কঠিন ছিল। তবে আপনার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ওল্টো মনে হচ্ছে। একটা কথা ঠিক সব বাচ্চারা তার মায়ের কাছেই সবসময় সব কথা শেয়ার করে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ পৃথিবীর সকল সন্তান তার মায়ের কাছে তার জীবনের সকল বিষয় শেয়ার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
ছোটবেলা থেকেই বাচ্চারা বাবার থেকে দূরে থাকলে পরে বাবার সঙ্গে ঘনিষ্ট হতে একটু কষ্ট হয়। এই বাচ্চাটিও সে রকম হয়েছিল যে ছোটবেলা থেকে বাবার থেকে আলাদা থাকার কারণে যখন দিন দিন বাবার সাথে তার দূরত্ব বেড়ে যাচ্ছিল। পরে যখন ইচ্ছা করছিল যে বাবার কাছে যেতে কিন্তু সে লজ্জার জন্য যেতে পারছিল না। গল্পটা খুব সুন্দর মনে হচ্ছে। তাছাড়া আপনি লিংকগুলো ও সুন্দরভাবে দিয়েছেন। খুব সহজেই পড়া যাবে এখান থেকে।
বাবা দূরে থাকলে দূরত্বটা যেটা মানুষকে মন থেকে কাছে টানে কিন্তু বাস্তবে সেটা দূরত্বটা থেকে যায়।
গল্পটা ভালো লিখেছেন ভাই। অনেক ছেলেই আছে যারা বাবাকে ভয় পাই এবং সবসময় তাদের এড়িয়ে চলে। আপনার গল্পে সেইরকম একটি দিকই ফুটে উঠেছে। যাইহোক ভালো লেগেছে আমার কাছে গল্পটা। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।।
হ্যাঁ সন্তানেরা তোর বাবাকে অনেক ভয় পায় যেটা আপনি পরিলক্ষিত করতে পেরেছেন।
বাবাকে নিয়ে খুবই সুন্দর একটি গল্প লিখেছেন। বাবার কথা মনে পড়লে খুবই কষ্ট হয়। যাদের বাবা দূরে থাকে তারা বাবাকে প্রচুর মিস করে। এই গল্পটির প্রত্যেকটি দিক খুবই সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে। সত্যি এক কথায় অসাধারণ ছিল। গল্পের মাধ্যমে মানুষের জীবনের অনেক কাহিনী জানা যায়। গল্প পড়তে আমি একটু বেশি পছন্দ করি।
হ্যাঁ অবশ্যই বাবা মায়ের ভালোবাসা যেটা পৃথিবীর বড় ছায়া হিসেবে থাকে যে ছায়া নেই সেই বুঝতে পারে।
ছোটকালে বাচ্চাগুলো মায়ের কাছ বেশি থাকে তাই মাকে বেশি পছন্দ করে। আর বাবা দূরে থাকার কারণে বেশিরভাগ বাচ্চাগুলো বাবাকে একটু দূরত্ব ভাবে বা ভয় পেয়ে থাকে। পরে কিন্তু সে বাবার কাছে আসতে লজ্জা লাগে। আপনার লেখার সাথে আমাদের এক আত্মীয়ের কাহিনীটি সম্পূর্ণ মিলে গেল। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ সন্তানের কাছে বাবা মায়ের দূরত্বটা যেটা দূরত্বের এবং নিজেদের মধ্যে ভাতৃত্ব এবং ভালোবাসাটা দূরে ঠেলিয়ে দেয়।
আসলে ছোট থেকে যদি বাচ্চারা বাবার কাছ থেকে দূরে থাকে তাহলে ওরা বাবার কাছে যেতে চায় না। এমনকি একটা দূরত্ব থাকে। সেজন্য মনে হয় আপনারও এই অবস্থা হয়েছে। তাছাড়া মায়ের কাছ থেকেও দূরে থেকেছেন এটা খুবই খারাপ লাগলো। যদিও আপনার মা কাজেই বাড়িতে আসতো। আপনার বাবা বুঝতে পেরেছে আপনি কষ্ট পাচ্ছেন। আর বাবা মাকে ছেড়ে অন্যের বাসায় থাকাটা ও ভীষণ কষ্টকর।
এরকম অনেক ঘটনায় আমাদের এখানে হয়েছে যারা বাবাকে ডাকতেও লজ্জা পায়।