পিয়ার মিডাস টাচে আজ দক্ষিণ ভারতীয় ইডলি রান্না হয়েছে, আপনাদের আমন্ত্রণ জানাই।। রেসিপি পোস্ট
☘️ নমস্কার বন্ধুরা☘️
নীলমের লেখামিতে আপনাদের স্বাগত
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, কেমন আছেন? আশা করি আপনারা ভালই আছেন। আমিও বেশ ভালো আছি। আপনাদের সুস্থতা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।
আমি চেষ্টা করি প্রতি বৃহস্পতিবার একটা করে রেসিপি পোস্ট করবার। কোনোটা পুরনো চেনা রেসিপি হয়, আবার কোনটাই আপনাদের কাছে নতুন লাগে। নতুন হোক বা পুরনো আপনারা যে আমার রেসিপি গুলো দেখেন, পড়েন এবং আপনাদের ভালো লাগে সেটাই আমার কাছে একটা বড় প্রাপ্তি। তো চলুন দেরি না করে শুরু করি আজকের রেসিপি দক্ষিণ ভারতীয় ইডলি।
ইডলি এতই সহজ রান্না, তাই আমি কখনো ভাবিনি ইডলির রেসিপি আমাকে লিখতে হবে। কিন্তু একদিন ডিসকর্ডে চ্যাটের মধ্যে জানলাম আমার বাংলাদেশী বন্ধুরা ইডলি সম্পর্কে খুব একটা অবগত নন। অথচ আমাদের এদিকে ইডলি খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার। আপনারা ইডলি জানেন না অথচ চিতই পিঠে জানেন। ইডলি চিতই পিঠেরই রকমফের৷ আমরা চিতই পিঠে যেমন মাটির খোলায় একটা একটা করে বানাই, ইডলি সেরকম না। ইডলি বানানোর জন্য এক ধরনের বাসন কিনতেই পাওয়া যায়। তো সেই বাসনে একসাথে অনেকগুলো ইডলি হয়। আমার চিঠি রয়েছে তাতে ন'টা ইডলি একবারে হয়।
আমি যেহেতু ভিডিও করেছি এবারেও প্রতিটা ধাপের ছবি সেইভাবে গুছিয়ে তোলা হয়নি। মানে ভিডিও করতে করতে ভুলে গেছি। তাও কিছু ছবি আছে সেগুলো দিয়ে রেসিপি লিখে দিচ্ছি, বাকি বিস্তারিতভাবে জানার জন্য আপনাদের অনুরোধ করবো ভিডিওটি দেখতে।
প্রথমেই তিন কাপ ইডলির চাল এবং এক কাপ বিউলির ডাল সাথে এক চা চামচ মেথি ভালো করে ধুয়ে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখেছি।
মিক্সচার গ্রাইন্ডারে ভালো করে বেটে নিয়েছি। ভালো করে মানে খুব মিহি করে কিন্তু নয়। ইডলি এই ব্যাটারটি সামান্য দানা দানা মত থাকবে। খুব বেশি না, আবার একেবারে মিহিও না।
আমি আজ সকালে ইডলি বানিয়েছি, কিন্তু উপরে উল্লেখিত কাজগুলি গতকাল সম্পন্ন করেছি। অর্থাৎ গতকাল দুপুরে ইডলির চাল ডাল ভিজিয়েছি রাতে বেটে নিয়েছি। কারণ ব্যাটারটি প্রায় আট থেকে নয় ঘণ্টা কোন গরম জায়গায় রেখে দিতে হবে। যাতে করে ফার্মেন্টেশনটা খুব ভালো হয়। সোজা বাংলায় যাকে বলে খানিকটা পচিয়ে নিতে হবে। আর এই কাজটাই করে মেথির দানা। যত ভালো ফার্মেন্টেশন হয় তত সুন্দর ইডলি তৈরি হয়। তাই বাটার রেডি করতে মেথি গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।
সারারাত রেখে দেওয়ার পর আমার ব্যাটারটি দেখুন কি সুন্দর ফুলে উঠেছে। এবার বুঝতেই পারছেন ব্যাটারটা একটু বড় পাত্রে রাখতে হবে, নইলে উপছে নিচে পড়ে যেতে পারে।
ভিডিওটি দেখলে ভাল করে বুঝতে পারবেন আমার ইডলি মেকারটি কেমন দেখতে। তার মধ্যে ছোট্ট ছোট্ট বাটি আকারের যে প্লেট গুলি রয়েছে তাতে ওই ব্যাটারটি সামান্য পরিমাণ জল ও নুন দিয়ে গুলে একটু তরল করে দিয়ে দিয়েছি। ব্যাটারটির ঢালার আগে তেল ব্রাশ করেছি। এবার প্রায় দশ মিনিট আঁচ বাড়িয়ে বাষ্পে রাখলেই ইডলি তৈরি। এই প্রসেসটি আপনারা ভিডিওতে খুব ভালো করে দেখতে পাবেন।
ইডলি বানানোর প্লেট থেকে গরম গরম ইডলি তুললেই ইডলি কিন্তু ভেঙে যাবে। তাই কিছুক্ষণ ফ্যানের নিচে রেখে তারপর ভালো জল ওপর থেকে ঢেলে দিয়েছিলাম। ধার থেকে চামচে করে চেঁছে তুলে নেওয়ার পরেই রেডি হয়ে গেল আমার ইডলি। এই ইডলি অনেকেই সস বা মেয়োনিজ দিয়ে খায়৷ তবে দক্ষিণ ভারতীয়রা টমেটো, কিংবা নারকেল কিংবা ধনেপাতার ঝাল ঝাল চাটনি দিয়ে খায়।
আমি আপনাদের নারকেলের চারটি বানানোর রেসিপিও আজ দিয়ে দিচ্ছি। কারণ এটি ভীষণই সহজ একটি রেসিপি।
অর্ধেক নারকেলের মালা থেকে কিছুটা নারকেল কেটে নিয়ে কুচি কুচি করে নিয়েছি। এরপর একটা চাটুতে করে একসাথে কুচি করে কাটা অর্ধেক পেঁয়াজ তিনটে রসুনের কোয়া এক চামচ জিরে দশ থেকে বারোটা কারি পাতা, এক মুঠো চিনেবাদাম এবং এক টেবিল চামচ তেল দিয়ে ভালো করে ভেজে নিয়েছি। এই ভাজা মসলাটা মিক্সির গ্লাসে করে নিয়ে তাতে কুচানো নারকেল দিয়ে পরিমাণ মতো নুন দিয়ে বেটে নিয়েছি। ব্যাস হয়ে গেল নারকেলের চাটনি।
বন্ধুরা কেমন লাগলো আজকের রেসিপি? এ নিচেই দিয়ে দিচ্ছি ভিডিওটির লিঙ্ক। আপনারা দেখুন কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন।
আবার আগামীকাল আসবো নতুন কোন পোস্ট নিয়ে। ততক্ষণ আপনারা খুব ভালো থাকুন। আর আমার পোস্ট পড়ে কমেন্ট করে আমার পাশে থাকুন।
টা টা
বিষয় | ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফি | ভিডিও এডিটিং |
---|
রেসিপি | মোবাইল-স্যামসাং F54 | ইনশট অ্যাপ |
~লেখক পরিচিতি~
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। তবে বর্তমানে বেশ কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ বর্তমানে ভারতবর্ষের পুনে তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ইডলি আমাদের বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। তাই এই বিষয়ে খুব একটা ধারণা নেই। তবে নতুন ধরনের একটি রেসিপি শিখতে পেরে ভালো লেগেছে আপু। আপনার রেসিপি দারুণ হয়েছে। নতুন একটি রেসিপি আমিও শিখে নিলাম আপু।
হ্যাঁ দাদা, সেদিন জেনারেলে কথা হতে হতেই জানলাম আপনাদের ওখানে ইডলি পাওয়া যায় না৷ তাই ভাবলাম এমন সহজপাচ্য রান্নাটি একবার আপনাদের সাথে শেয়ার করি। অনেকটাই আমাদের বাঙালিদের চিতই পিঠের মতো।
পিয়ার মিডাস টাচে আজ দক্ষিণ ভারতীয় ইডলি রান্না হয়েছে,দেখে ঝটপটে দেখতে এলাম প্রস্তুত প্রণালী। এবং খুবই মনোযোগ সহকারে ভিডিওটি দেখছিলাম। সব মিলিয়ে আমার কাছে মনে হল আমাদের চিতই পিঠার মতোই কিছুটা। এবং মিশ্রণে তুমি যা বললে শুধু নুন ব্যবহার করেছ মরিচ ব্যবহার করনি। তার মানে এটা শুধু সাদা সিদে।
তবে চাটনি টাও আমার কাছে দুর্দান্ত মনে হয়েছে। নারকেল বাদাম ধনেপাতা আরো সব উপকরণ গুলো মিলে একখানে দারুন একটা ফ্লেভার হয়েছে নিশ্চয়ই। এত সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 💞
ঠিক বলেছ, একেবারে চিতই পিঠে৷ শুধু এরা ডালটা মিশিয়ে নেয়৷ আর সারারাত রেখে দেওয়ার কারণে জিনিসটা ফোলা ফোলা হয়। খুব সাদাসিদে রান্না৷ বাচ্চা বুড়ো সবার জন্যই সহজ পাচ্য৷
দক্ষিণভারতীয় রান্নাগুলো এরমই হয়। কারণ ওদিকে তো খুব গরম তাই অনেক মশালাদার বা তেল ঝাল দেওয়া খাবার খেয়ে ওদের হজম করতে সুবিধে৷ ঠিক যে কারণে গ্রীষ্মকালে আমরা হাল্কা খাবার খাই৷
আমি পরে পরে আরও দক্ষিণের রান্না করে দেখাব৷ এই যে ব্যাটারটা রয়েছে, এটা দিয়েই ধোসা হয়, উথাপ্পাম হয়, আপ্পেও হয়।
কি দারুণ বানিয়েছেন দিদি দেখেই আমার লোভ লেগে গেলো।বাংলাদেশে চিতই পিঠা জনপ্রিয় কিন্তুু ইডলি একদমই অজানা এক রেসিপি।আপনার ইডলি রেসিপিটি যে অনেক সুস্বাদু তার রেসিপি তৈরি পদ্ধতি দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ধাপে ধাপে চমৎকার সুন্দরভাবে ইডলি তৈরি পদ্ধতি আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। শিখে রাখলাম আপনার রেসিপিটি তবে ইডলি তৈরির জন্য এই পাত্রটি হয়তো বা বাংলাদেশে পাওয়া যাবে না তাই পরে খাওয়াও সম্ভব হবে না। ভাপা পিঠের মত লাগছে দেখতে আপনার ইডলি গুলো। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
অনলাইন দেখুন, যদি না পাওয়া যায় তখন দেশ থেকে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেব৷
এই রেসিপিটি এতো সাদাসিদে আর প্রচুর পেট ভারি করে৷ তাই বাচ্চাদের টিফিন থেকে বড়দের খাবার হিসেবে খুব প্রচলিত৷
ইডলি নামটি অনেক শুনেছি। তবে এই খাবারটি কিভাবে তৈরি করে জানতাম না আপু। আজকে আপনার এই রেসিপি দেখে জানতে পারলাম। আমাদের দেশে তো এই ধরনের খাবার পাওয়া যায় না। দারুন একটি রেসিপি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
খুব সহজ বানাতেও তবে সময় লাগে৷ আজ বানানোর হলে গতকাল থেকে লাগতে হবে৷ নইলে খেতেও ভালো হয়৷ আর সহজ পাচ্যও৷ জানেন বাচ্চারা যখন সবে সবে বাইরের খাবার খেতে শুরু করে তখন ইডলি খুব উপকারি খাবার হয় ওদের জন্য৷
আপনি রেসিপিটি পড়লেন ও দেখলেন, তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই৷ ভালো থাকবেন৷
খুব ভালো ব্লগ। দক্ষিণ ভারতীয় সব খাবারের মধ্যে ইডলি হয়তো কলকাতায় সব থেকে প্রচলিত একটি পদ। প্রতিদিন লাখো লাখো মানুষ এই পদে সকালের নাস্তা সেরে পাড়ি দেয় গন্তব্যে। ঘরে রান্নার মাধ্যমে যে ইডলি তৈরি হয়েছে তা একদম দক্ষিণ ভারতীয় রূপে সাজানো। ছবি এবং ভিডিও খুব ভালো।
হ্যাঁ। কলকাতায় এখন খুব পাওয়া যায়। আমাদের গ্রামের দিকেও বিক্রি হয়৷ এর সাথে সম্বর ডাল খায়৷ আমি আবার ওইটে বানাতে পারি না৷ তাই শুধু চাটনিই সহায়৷ আসলে সম্বরটা খেতে ভালো লাগে না৷ তাই বানানোর তাগিদও নেই।
ভালো থেকো৷