একজন ইসমাইল ও তার জীবন যুদ্ধের বাস্তবতা নিয়ে আমার পোস্টগুলোর আর্কাইভ

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।

Picsart_22-07-19_22-48-09-359.jpg

বেশ কয়েক মাস আগে নদী তীরবর্তী এক মার্কেটে সেদিন আমার ওয়ার্ক প্লান ছিল। প্রতিদিনকার মতো নির্দিষ্ট মার্কেটে কর্মরত আমার কলিগকে সাথে নিয়ে রুটিন কাজ শেষ করি। বাইরের কাজ শেষ হলে আমি খুব দ্রুতই বাসায় ফেরার চেষ্টা করি। কারণ বাসায় ফিরেই আমি আমার ব্লগ লেখা সহ অন্যান্য কাজগুলো করার চেষ্টা করি। সেই চিন্তা থেকেই তাড়াহুড়ো করে একটা রিকশা নিয়ে রওনা দিলাম। কিছুদূর আসতেই এক ব্যক্তি দৌড়ে এসে আমার রিকশায় ওঠার জন্য অনুরোধ করলো। সেই ব্যক্তিটি ছিল ইসমাইল হোসেন। সেদিনই প্রথম তার সাথে পরিচয়। পরবর্তীতে অবশ্য বেশ কয়েকবার তার সঙ্গে কথা হয়।

শুধু যে কথাই হয়েছে তা নয় বেশ কয়েকবার তার বাড়িতেও গিয়েছিলাম। বলতে পারেন খুব ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন সময় তার বাসায় গিয়ে অনেক ধরনের গল্প গুজব করা হয়েছে। নৌকা দিয়ে নদীর চর অতিক্রম করে জীবিকা নির্বাহের জন্য তার কষ্টের দিনগুলি দেখছি। বিভিন্ন সময় নদী ভাঙ্গনের ফলে তার আবাদি অনাবাদি সমস্ত জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। যার ফলে ইসমাইল হোসেন বৃদ্ধ মা ও স্ত্রী সন্তান নিয়ে অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করেছেন। আমি নিজেও তার কষ্টের দিনগুলোর সাক্ষী থেকেছি।

বিভিন্ন সময়ে নদী ভাঙ্গনের ফলে এই নদী তাদের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আবার পরবর্তীতে এই নদীকে কেন্দ্র করেই তাদের জীবিকা নির্বাহের পথ প্রসারিত হয়। যেমন গত বছর নদী ভাঙ্গনের ফলে বন্যা পরবর্তী নদীর মাঝে প্রচুর চর জেগে উঠেছিল। আল্লাহর অশেষ রহমতে সেই চরগুলোতে প্রচুর পলিমাটি জমা হয়েছিল। এবার সেই চড়গুলোতে নানান ধরনের সবজি চাষ করেছিল। সেই সবজি বাজারে বিক্রি করেই তাদের জীবিকা নির্বাহ হয়। পাশাপাশি ইসমাইল এই অঞ্চলের সমস্ত সবজি পাইকারি দামে কিনে নিয়ে শহরের আড়তে বিক্রি করে। সব মিলিয়ে নদী ভাঙ্গনের ফলে কিছুদিন খারাপ গেলেও চরগুলোতে চাষাবাদ ও ব্যবসা করে সে এখন ভালই আছে।

ইসমাইলের আত্মকথা

5ShzsKnKF7vppGeV6VN3m3GSDcLoRruAhMmifZtFSDkYScP296FeyPU3hFnv9LtPHgnsxAu3hv2sAvief4Nde4wTLELoXw1LfCpQdiMMRWUueJwbU51H52c9m5mN8K8yZpTG48ysoujUGwc76N8Dv6M4.jpeg

নদী ভাঙ্গনের ফলে সে অঞ্চলে ঘরবাড়ি সহ সমস্ত ফসলের জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছিল। আমি যতটুকু দাঁড়িয়ে দেখলাম সেই দূরত্ব সোজাসুজি তিন থেকে চার কিলোমিটার হবে। আমার এই পোস্টে ইসমাইলের চ্যালেঞ্জিং জীবনের বাস্তব চিত্র গুলো ফুটিয়ে তুলেছি। আমার এই পোস্টটি যারা পূর্বে ভিজিট করেছিলেন তারা নিশ্চয়ই ইসমাইলের জীবন কাহিনী সম্বন্ধে জানতে পেরেছেন। আর যাদের পোস্টটি নজর এড়িয়ে গিয়েছিল তাদের সুবিধার্থে লিংকটি শেয়ার করলাম।

বাস্তবতার নিরিখে পর্ব - ১

5ShzsKnKF7vppGeV6VN3m3GSDcLoRruAhMmifZtFSDkYScwEEeJto2t79xjxcvGizDiktGLJ7drCZYvZ7ab9joWcwzJ6dKEaGUjkNMdk9FU9FFqXAirqCDjrAvJZEHZvXFWSUaZ5Lj45pY62QNFYgtWa.jpeg

প্রথম দিন ইসমাইলের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর পরবর্তীতে তার সাথে বেশ সখ্যতা কথা গড়ে ওঠে। হঠাৎ একদিন তার বাসায় যাওয়া হয়েছিল। আমাকে তার জীবন চিত্র দেখানোর জন্য নদীর চরে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে গিয়ে আমি তার সবজি বাগান থেকে মোটামুটি আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম। আমি নিজ হাতে তার সবজি ক্ষেত থেকে পটল করলা তুলেছিলাম। জমির সেই টাটকা সবজি খেতে বেশ সুস্বাদু। যাইহোক আমার এই পোস্টটি যারা ভিজিট করেছিলেন তারা নিশ্চয়ই বিস্তারিত দেখেছেন। পুনরায় পোস্টটি ভিজিট করার জন্য লিংক সহ শেয়ার করলাম।

বাস্তবতার নিরিখে পর্ব -২

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovf1nLknHcwxgjLVeVUHZqTmm9wgFRQcrKYA47e3FCV52QEDZrVnueQeiKVNBj5HbZ2hLGvyM457fAvvagHoa55Ne.jpeg

সেদিন প্রখর রোদে চরের মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে আমার প্রচন্ড ডিহাইড্রেশন হয়ে যায়। আমার মাথা ঘুরতে থাকে কি করব বুঝে পাচ্ছিলাম না। হঠাৎ চরের জমিতে কাজাই নামের এই গাছটি আমার চোখে পড়লো। ছোটবেলায় গ্রামে গিয়ে যখন বড়দের সাথে নদীতে মাছ ধরতে যেতাম। তখন এই গাছগুলো চিবিয়ে খেয়েছি আখের রসের মত অত্যন্ত সুস্বাদু। সেই কথাগুলো মনে পড়তে আজকেও ওই কাজটি করলাম। মুহূর্তের মধ্যে আমি কিছুটা সুস্থতা অনুভব করলাম এবং শরীরে অনেকটা শক্তি ফিরে পেলাম। আমার এই পোস্টটিতে পুনরায় ঘুরে আসার জন্য লিংক সহ শেয়ার করলাম।

বাস্তবতার নিরিখে - শেষ পর্ব

5ShzsKnKF7vppGeV6VN3m3GSDcLoRruAhMmifZtFSDkYScMMPqCZUPGbfZeP9rrMNcHp84GpC8Tx3u15DNi9fqd94SdC8BSCwmfXsJb7hpHgmERRaa1BB2ouFCmX3psAHKRWdQwzyxZ935qQ8tuMtpbY.jpeg

ইসমাইল হোসেন সবজি বাগান পরিদর্শন করে সেখান থেকে বেশ কিছু সবজি নিয়ে ফেরার সিদ্ধান্ত নিলাম। ইসমাইলের পরামর্শ মতে নদীপথে ঘুরে না গিয়ে সোজা নদীর কিনারা ধরে হাঁটতে শুরু করলাম। কিছুক্ষণ হাঁটতে হাঁটতে আমার অন্যরকম এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হল। বেশ কিছুক্ষণ আসার পর আমি সামনে বিশাল এক ঝাউবন দেখতে পেলাম অনেক হাটাহাটির পরেও রাস্তা খুঁজে পাচ্ছি না। গত বছর এখানে বাঘ বের হয়েছিল সেই ভীতিকর ঘটনাটি মনে পড়লো। পরবর্তীতে অবশ্য জানা গিয়েছিল সেগুলো খেকশিয়ালের দল ছিল। যাই হোক আমার রোমাঞ্চকর এই পর্বটি পুনরায় ভিজিট করার জন্য লিংকটি শেয়ার করলাম।

ইসমাইল হোসেনের জীবন ও জীবিকা নিয়ে আমার শেয়ার করা এই চারটি পোস্ট আশা করছি আপনাদের খুব ভালো লাগবে। কারণ নদী ভাঙ্গনের ফলে জীবন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া এই বাস্তব সত্য গুলো আমরা অনেকেই হয়তো জানি না। জানলেও কখনো সেরকমভাবে অনুভব করতে পারিনা। আজকে হঠাৎ করে ইসমাইলের কথা মনে পড়াতে সবগুলো পোস্ট একসঙ্গে আনার চেষ্টা করলাম।

বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।

Logo-1.png

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64689.90
ETH 3450.92
USDT 1.00
SBD 2.50