বাস্তবতার নিরিখে পর্ব -১ || 10% beneficiary to @ shy-fox.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।

Picsart_22-05-22_22-49-18-949.jpg

আমার অঞ্চলে বেশ কিছুদিন থেকে অনবরত বৃষ্টি হচ্ছিল তাই বলতে পারেন একপ্রকার সূর্য্য মামার দেখাই পাইনি। তাই আজ অনেকদিন পর সকালে রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া দেখে ভালই লাগলো। এতদিন মনে হচ্ছিল আমার চারপাশের পরিবেশ টা মুখ গোমরা করে আছে। আর আজকে সবকিছু চকচকে দেখে আমার মনটাও চনমনে হয়ে উঠল। যদিও একটা শঙ্কা থেকেই যায় রোদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই প্রচণ্ড গরমে নিজের কি অবস্থা হতে চলেছে।

তাই এতসব চিন্তা না করে যেহেতু আমাকে বাইরে যেতেই হবে। আর আমার প্রতিদিনের কাজ মার্কেটের লোকজন নিয়েই। আমার যে পাঁচ-ছয়জন কলিগ আছে তাদের ভালো-মন্দ এবং কে কি করছে এটা দেখাই আমার কাজ। সে উদ্দেশ্যেই আমি আজ গিয়েছিলাম যাত্রাপুর হাটের ওই দিকটায়। ওই মার্কেটে যাওয়ার সময় ব্রিজ পার হয়ে কিছুদূর আসতেই আমার ইসমাইল হোসেন সিরাজী নামক লোকটির সঙ্গে দেখা হলো। কে এই ইসমাইল হোসেন সিরাজী আপনাদের মনে নিশ্চয়ই কৌতুহল জেগেছে।

20220522_224057.jpg

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন আমি বেশ কিছু দিন আগে একজন ইসমাইলের আত্মকথা নামক শিরোনামে একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলাম। সেদিন এই মার্কেটে এসে হঠাৎ করে আমার ইসমাইল ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়। তার এখানকার নদীভাঙ্গনের কথা, নদীতে জেগে ওঠা চরে কষ্ট করে ফসল ফলানোর জীবন যুদ্ধের কথা জানতে পারি। এখানকার নদীতে জেগে ওঠা বিশাল চড়ে যে সবজি চাষাবাদ হয় সেই সবজিগুলো শহরে বিক্রি করা ইত্যাদি নানান কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। সেখান থেকেই পরিচয়ের শুরু তারপর কয়েকবার দেখা হয়েছিল অনেক কথাও হয়েছে। তার অনেক ইচ্ছা ছিল নদীতে জেগে ওঠা চরে তাদের ফসল ফলানোর সেই জীবন যুদ্ধের বাস্তব চিত্র গুলো আমাকে দেখানোর। তাই আমিও অত কিছু না ভেবে আজকে চলে গেলাম তার সাথে।

20220522_224021.jpg
20220522_224202.jpg

তার সঙ্গে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম ইসমাইলের বাড়িতে যাওয়ার সময় শুরুতেই অনেক বিপর্যয়। তার বাসায় যাওয়ার সময় রিক্সা ভ্যান কিছুই পাওয়া যায় না। তার মানে হচ্ছে সেই রাস্তা দিয়ে এই সব কিছু চলে না বাহন হিসেবে শুধু মোটরসাইকেল ভাড়া পাওয়া যায়। দুর্ভাগ্যবশত আমরা কোন মোটরসাইকেল না পেয়ে হাঁটতে হাঁটতেই বাড়িতে চলে গেলাম। ওই যে শুরুতেই বলেছিলাম রোদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার অবস্থা কি হবে। প্রচণ্ড গরমে ঘামতে ঘামতে আমার অবস্থা খারাপ ইসমাইল ভাইয়ের বাড়িতে পৌঁছেই আমি ঢকঢক করে দুই গ্লাস পানি খেয়ে নিলাম।

বাড়িতে আসার পর তার ইচ্ছামত নদীর চরে গিয়ে ঘুরে আসার জন্য নৌকায় উঠে বসলাম। যদিও আমার কৌতূহল ছিল নদীতে জেগে ওঠা চরে চাষাবাদ করার বাস্তব চিত্র দেখা। ইসমাইল ভাইয়ের সঙ্গে নৌকায় চেপে চলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম কিন্তু নদীতে কচুরিপানা এত বেশি ছিল কোনক্রমেই হচ্ছিল না তাই আমিও একটা লাঠি নিয়ে সামনে বসে কচুরিপানা সরিয়ে দিচ্ছিলাম। কিছুদুর যাওয়ার পর নৌকার গতি থেমে গেল। তারপর আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম নৌকার গতি কমলো কেন। পরে দেখতে পেলাম যে লগি দিয়ে নৌকা ঠেলছিল সেটা পানির গভীরতা বেশি হওয়ার কারণে মাটির স্পর্শ করছে না। তাই ধীরে ধীরে নৌকা নিয়ে এগুতে থাকলাম।

20220522_224252.jpg
20220522_224232.jpg

নৌকা থেকে নেমে যখন চরের দিকে হাঁটতে শুরু করলাম যত ভেতরে যাচ্ছি আমি অবাক হতে থাকলাম। যতদূর চোখ যাচ্ছিল শুধু সবুজ আর সবুজ। চরের মধ্যে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে প্রচুর সবজি চাষ করা হয়েছে। সেখানে গিয়ে আমার দারুন একটা উপলব্ধি হতে থাকলো। আসলে আল্লাহ তাআলা যেকোনো জায়গা থেকেই মানুষের রিজিকের ফয়সালা করে দিতে পারে। নদীতে চর গুলো সাধারণত বালুতে পরিপূর্ণ থাকে অথচ এখানে সম্পূর্ণ চর পলিমাটিতে ভরপুর। এখানে এত বেশি পটলের চাষ করা হয়েছে আমার তো মনে হয় এই পটল দিয়ে বাংলাদেশের অর্ধেক লোক খাওয়ানো যাবে হা হা হা । শুধু পটল নয় এখানে বেগুন করলা চিচিঙ্গা সব সবজি চাষ করা হয়েছে।

চলমান।

বন্ধুরা আজকের জন্য এখানেই শেষ করছি। খুব শীঘ্রই পরবর্তী পর্ব নিয়ে আবার আপনাদের সামনে হাজির হবো ইনশাল্লাহ। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি A-10
ফটো@mayedul
লোকেশনw3w location

Logo-1.png

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

Sort:  
 2 years ago 

আমার কৌতূহল ছিল নদীতে জেগে ওঠা চরে চাষাবাদ করার বাস্তব চিত্র দেখা।

নিজেও দেখলেন আমাদেরও দেখালেন। আমার খুব ভালো লাগলো আপনার পুরো পোস্ট পড়ে। যেহেতু গ্রামে ছোট বেলা কাটিয়েছি তাই এই সব দৃশ্যের সাথে পরিচিত। তবে আপনার উপস্থাপনায় আমি মুগ্ধ। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

প্রচণ্ড রোদে নদীর চরে যেতে কষ্ট হয়েছিল কিন্তু সবকিছু দেখে খুব ভালো লেগেছে।

বর্ষার সাথে বাস্তব জীবনের মিল রেখে সুন্দর করে আমাদেরকে বর্ষার রূপ ফুটিয়ে তুলে দেখালেন। সুন্দর ছিল আপনার লেখনি ।সাথে ছবিগুলোর প্রশংসা করতে হয়। ভালো ছিল।

 2 years ago 

এগুলো আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

জি ভাই, জীবনের প্রতিটি স্তরে স্তরে এসব যেন গোলাপের কাঁটার মতো ফুটে আছে।

 2 years ago 

বেশ কিছুদিন পরে রোদ্র ভাই আপনার মনটাও রোদ্রের মত চকচক হয়ে গেছে। ইসমাইলের বাড়িতে যাওয়ার মাধ্যম মোটরসাইকেল। কিন্তু সেটা না পেয়ে আপনি পায়ে হেঁটে সেখানে গেছেন এবং খুব ঘেমে গেছেন। যাই হোক পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোষ্টে এসে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

জীবন যেখানে যেমন। আমরা বাড়ি থেকে বেরোলে দু'পা হাঁটতেই বিরক্ত হয়ে যাই। মনে হয় কখন একটি যানবাহন পাবো ওঠার জন্য। আর এই জায়গায় হেঁটে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় ই নেই। ছেলেরা যদিওবা ভাড়া করা মোটরসাইকেলে উঠতে পারে মহিলারা বোধহয় হেঁটেই যাতায়াত করে।
যাইহোক নদীতে ভেসে ওঠা চরে চাষাবাদ এর দৃশ্য গুলো দেখতে খুব ভালো লাগলো। আর এভাবে কচুরিপানা সরিয়ে সরিয়ে নৌকা দিয়ে ভ্রমন এর অনুভূতি ও নিশ্চয়ই খুব ভাল ছিল। আমাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

দূর থেকে আমরা অনেক কিছুই বুঝতে পারি না। তাদের ভেতরে ঢুকে সবকিছু দেখে ও শুনে আমার মধ্যে একটা অন্যরকম অনুভূতি তৈরি হয়েছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.26
TRX 0.12
JST 0.031
BTC 61258.08
ETH 2873.80
USDT 1.00
SBD 3.56