ছোট সোনামণির বড়ই খেতে মৃত্যু
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবার ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আমার বড় বোন রংপুর বিভাগের কামাল কাচনা এলাকায় বসবাস করে। আজ বিকেলে আমাদের বাসায় এসেছে। আর আসার পরে তার মুখ থেকে আমি একটি ঘটনা শুনেছি।সেই ঘটনা শোনার পর থেকে মনের ভিতরে ভীষণ ভয়ের উদয় হয়েছে। আর সেই ভয়ের কারণটি আজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। আমার বড় বোনের বাড়ির পাশে আরেকটি বাড়ি রয়েছে। আর সেই বাড়িতে বাবা-মার সাথে তাদের দুটি মেয়ে বসবাস করত। একজনের বয়স চার বছরের বেশি, আরেকজনের বয়স ৯ বছরের বেশি।
দুই বোন আর তাদের বাবা-মাকে নিয়ে তাদের ছিল ছোট্ট সুখী পরিবার। এইতো কিছুদিন আগে আমি যখন আমার বড় বোনের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম, তখন আমি সেই ছোট দুই বোনকে রাস্তায় খেলতে দেখেছিলাম। মেয়ে দুটি দেখতে খুবই কিউট ছিল। বিশেষ করে ছোট মেয়েটি দেখতে ভারী সুন্দর। তো আমার বড় বোন গল্প করে বলছিল, গত তিন চার দিন আগে ছোট মেয়েটি ঘুম থেকে ওঠে বাসায় খেলাধুলা করছিল, তার মা তাকে আদর করে ভাত খাইয়ে দিয়েছিল। ভাত খাওয়ার পর মেয়েটি ফল খাওয়ার জন্য বায়না করলে, তার মা তাকে কয়েকটি বরই খেতে দিয়েছিল।
মেয়েটি খেলা করছিল আর বড়ইগুলো খাচ্ছিল। যেহেতু মেয়েটির বয়স কম ছিল, তাই সে বড়ইগুলো কিভাবে খেতে হয়, তা হয়তো তেমন একটা খেয়াল করেনি। যার কারণে বড়ই খাওয়ার সময়, হঠাৎ করে একটি বড়ই তার গলায় বেঁধে যায়। ছোট মানুষ মুখ থেকে ফেলে দেয়া পরিবর্তে, সে হয়তো গিলে খাওয়ার চেষ্টা করেছিল। আর তাতেই ভয়ানক বিপত্তিটি ঘটে গিয়েছিল। গলায় বড়ই আটকে থাকার কারণে মেয়েটি তার মাকে ভালোভাবে ডাকতেও পারেনি। যখন তার মা মেয়েটিকে খেয়াল করার জন্য ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে, তখন দেখে তার মেয়ে বড়ই গলায় বেঁধে যাওয়ার কারণে নিঃশ্বাস নিতে পারছিল না।
আর এই অবস্থা দেখে একটা মায়ের কি অবস্থা হয় তা তো আপনারাও বুঝতে পারছেন। মেয়েটির মায়ের আর্ত্তচিৎকারে আশেপাশের মানুষ ছুটে এসেছিল। ততক্ষণে মেয়েটির অবস্থা আর দেখার মতো ছিল না। যখন মেয়েটিকে বাড়ি থেকে হাসপাতালে নেয়ার উদ্দেশ্যে বাইরে বের করে নিয়ে এসেছিল, ঠিক তখনই হাত পা একদম ছেড়ে দিয়েছিল। রাস্তায় থাকা সকালের ধারণা ছিল মেয়েটি হয়তো আর বেঁচে নেই। তবে কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে বাবা-মা ও আশেপাশের লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল।
হাসপাতালে নিয়ে যেতেই হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেছিল। তাই মেয়েটির লাশ নিয়ে তার বাবা-মা ও আশেপাশের লোকজন ফিরে এসেছিল। আর মেয়েটির লাশ ফিরে না আসা পর্যন্ত, আমার বোনসহ সেখানে থাকা অনেক লোকজন তাদের জন্য অপেক্ষা করেছিল। মেয়েটির লাশ যখন তাদের এলাকায় নিয়ে এসেছিল, তখন সেখানে থাকা প্রতিটি মানুষ মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা যেন মেনে নিতে পারছিল না। তাই পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছিল।
আমার বোন যখন এই ঘটনাগুলো বলছিল, তখন সে অনেকটাই আবেগ আপ্লুত হয়ে গিয়েছিল। আর আমার বড় বোনের মুখ থেকে যখন আমরা এই ঘটনা শুনছিলাম, তখন আমরাও অনেকটাই ভেঙে পড়েছিলাম। এমনিতেই অনেক ছোট, তারপরে আবার শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা গেছে। আর এমন ঘটনা শুনলে কার না ভীষণ খারাপ লাগে বলুন তো। আমার বাসাতেও ছোট্ট একটি ছেলে আছে। আমার ছেলের বয়স হচ্ছে পাঁচ বছরের বেশি। তাই যখন আমি এই ঘটনা শুনছিলাম, তখন যেন আমার নিজের ছেলের চেহারাটি বারবার চোখের সামনে ভাসতে শুরু করেছিল।
মনে হচ্ছিল আমি কখনো আর আমার ছেলেকে বড়ই খেতে দিব না। যদিও বা বড়ই ফল হিসেবে ভীষণ পুষ্টি গুণ সমৃদ্ধ, তবে বড়ই খাওয়ার সময় এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে আমার সত্যিই ভীষণ ভয় করছে। তবে যদি মেয়েটির মা আরেকটু সচেতন থাকতো, তাহলে হয়তো এমন ঘটনা নাও ঘটতে পারতো। যদি মেয়েটির মা মেয়েটিকে বরই খাওয়ার সময় বরই গুলোকে কেটে টুকরো টুকরো করে দিত, তাহলে হয়তো এই দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পেতো। তবে একটা কথা কি মহান আল্লাহতালা যার যতটুকু রিযিক রেখেছেন, ঠিক ততটুকুই সে পৃথিবীতে জীবিত থাকবে।
তারপরেও মনে হয় সতর্কতার বিকল্প কোন কিছুই নেই। তাই শুধু আমি নয় বরং প্রত্যেকটি মানুষের উচিত তার ছোট ছোট ছেলে মেয়েকে বড়ই খাওয়ার সময়, বড়ই গুলোকে কেটে ছোট ছোট টুকরো করে দিলে, হয়তো এমন দুর্ঘটনার হাত থেকে অনেকেই রক্ষা পাবে। তাই আমি বলব আপনারা সকলেই আপনাদের সন্তানদেরকে বড়ই ফল খাওয়ার সময় একটু সচেতন ও সতর্কতা অবলম্বন করে চলবেন, যাতে বড় ধরনের কোন বিপত্তি না আসে,আর এটাই আমার প্রত্যাশা। পরিশেষে ছোট্ট সেই সোনামনির জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছি, পরপারে গিয়ে যেন সে বেহেস্ত নসিব করেন।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
খুব মর্মান্তিক ঘটনা ভাইয়া। আমাদের এলাকায়ও লিচুর বিচি আটকে গিয়ে পাঁচ বছরের এক ছেলে সন্তানের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।আসলে এমন ঘটনাকে কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না।আর এমন ঘটনা ঘটলে নিজের বাচ্চার মুখটাই সামনে ভেসে আসে বার বার।আসলে আমরা কখনো বড়ুই কেটে দেই না বা দেয়ার প্রয়োজন মনে করি না।আসলে বিপদ বলে কয়ে আসে না।এর আগে একটা নিউজে জানতে পেরেছিলাম বাদাম আটকে গিয়ে শিশুর মৃত্যু।এরকম বিপদ থেকে শুধু মাত্র সৃষ্টি কর্তাই রক্ষা করতে পারে।তবে এটা ঠিক জন্ম,মৃত্যু, বিয়ে বিধির কলম দিয়ে। খারাপ লাগলো পোষ্টটি পড়ে।ধন্যবাদ পোস্ট টি করার জন্য। একটু হলেও সবার সচেতনতা কাজ করবে বাচ্চাদের কে নিয়ে সবার।
দিদি, ছোট্ট মেয়েটির মৃত্যুর কথা শুনে আমার কাছেও ভীষণ খারাপ লেগেছিল। আর তাইতো আপনাদের মাঝে আমার খারাপ লাগা টুকু শেয়ার করেছি। আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনার পোস্ট পড়ে অনেক খারাপ লাগলো। আসলে ভাইয়া এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা সত্যি মেনে নেওয়ার মতো নয়। আর আমাদের সতর্ক থাকতে হবে ঠিক কিন্তু বিপদ আসলে তখন এমনিতে অসতর্ক হয়ে যায় আমরা। তবে পৃথিবীতে যার হায়াত যতদিন আছে সে তার বেশি থাকতে পারবে না। আল্লাহ যেন মেয়েটির পরিবারকে শোক সহ্য করার ক্ষমতা দান করেন, আমিন।
হ্যাঁ আপু, মহান আল্লাহ তায়ালা যেন সেই সোনামনির বাবা ও মায়ের ধৈর্য ধারণ করার শক্তি দান করেন।
খুবই খারাপ লাগলো আপনার কাছ থেকে এই গল্পটি পড়ে৷ আসলে ছোট বাচ্চারা কিছুই মুখের মধ্যে দিয়ে দেয়৷ এর ফলে তাদের অনেক কিছুই হয়ে যেতে পারে। ছোট বাচ্চাদের মুখ এবং গলা ছোট হওয়ার কারণে সবকিছু গলা দিয়ে ভিতরে যেতেও পারে না৷ যখন তাদের গলার মধ্যে কিছু আটকে যায় এর ফলে তাদের শ্বাস আটকে যায় এবং এর ফলে অনেক শিশু মারা যায়৷ এরকম অনেকগুলো ঘটনা নিউজে অনেক দেখেছি৷ তবে যখন এই ঘটনা গুলো দেখতাম তখন অনেকটাই খারাপ লাগতো। এরকম ঘটনাগুলো যাদের সন্তানের সাথে হয় সেই মা-বাবা এতটাই কষ্ট পেতে থাকে যা বলে বোঝানো যাবে না৷ তাদের এত ভালোবাসার এবং মায়ার সন্তান যখন এরকম ভাবে মারা যায় তখন তার থেকে থেকে বড় কষ্টের বিষয় আর কিছু হতে পারে না৷
ভাই এমন ঘটনাগুলো শুনলে সত্যি ভীষণ খারাপ লাগে। আর তাইতো সোনামনির মৃত্যুর কথা শুনে আপনারও ভীষণ খারাপ লেগেছে।
আপনি কমিউনিটি রুলস ভঙ্গ করেছেন। আপনি নিজের ফটো অথবা কঁপিরাইট ফ্রী ফটো ছাড়া আপনার পোষ্টের মধ্যে ব্যবহার করতে পারবেন না।
কমিউনিটির নিয়মাবলী :
https://steemit.com/hive-129948/@rme/last-updated-rules-of-amar-bangla-blog-community-16-aug-22
যে কোন বিষয়ে জানার প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে Discord এ যোগাযোগ করুন।
Discord server link: https://discord.gg/ettSreN493
Source :
https://www.shutterstock.com/image-photo/baby-girl-eating-strewberry-home-kitchen-1164797923?irclickid=VkdVQH12WxyPReY0-ZW8v29RUkHy%3ASU%3AhXxT2o0&irgwc=1&pl=77643-108110&utm_campaign=TinEye&utm_content=108110&utm_medium=Affiliate&utm_source=77643&ut
একটি টিকিট ক্রিয়েট করুন।
ছোট বাচ্চা মেয়েটার মৃত্যু এরকম ভাবে হয়েছে, শুনেই তো আমার চোখে জল চলে এসেছে। সত্যি বাচ্চাদের মৃত্যু মেনে নেওয়া কারো জন্যই সম্ভব হয় না। বাচ্চাটার বাবা মায়ের জন্য সত্যি খুব খারাপ লাগতেছে। আর বিশেষ করে বাচ্চাটার জন্য বেশি খারাপ লাগছে। বড়ই মেয়েটার গলায় আটকে গিয়েছিল, আর এই কারণে মেয়েটা এই পৃথিবী ত্যাগ করে চলে গিয়েছে। মাঝে মাঝে মানুষের সাথে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা মেনে নেওয়া সম্ভব হয় না। তার ফ্যামিলি সহ আশেপাশের কেউই তার মৃত্যুটা মেনে নিতে পারছে না। তার মায়ের উচিত ছিল আরো একটু সচেতন থাকা। তাহলে হয়তো এত দিনে মেয়েটা বেঁচে থাকতো। তার এই নিষ্পাপ জীবনটা চলে যেত না।
আমার কাছেও ছোট সোনামনিটির মৃত্যুর কথা শুনে ভীষণ খারাপ লেগেছিল। আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক খারাপ লাগলো। ঘটনাটি আসলেই খুব মর্মান্তিক। ছোট বাচ্চাদের খাবার দিলে আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ছোট বাচ্চারা অনেক কিছুই বুঝতে পারে না। এরকম একটি ঘটনা কিছুদিন আগে ফেসবুকেও আমি দেখেছিলাম। আমার অনেক কষ্ট হচ্ছিল ঘটনাটি দেখে। আসলে বিপদ কখন আসে বলে কয়ে আসে না। তারপরও আমাদেরকে ছোটদের ব্যাপারে অনেক সাবধানে থাকতে হবে।সৃষ্টিকর্তা যেন তার পরিবারকে ধৈর্য ধারণ করার ক্ষমতা দেন।
ঠিক বলেছেন আপু, সৃষ্টি কর্তা যেন তার পরিবারকে ধৈর্য ধারণ করার ক্ষমতা প্রদান করেন। আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।