একটি অসমাপ্ত প্রেম কাহিনী/শেষপর্ব||🦊 ১০% বেনিফিশিয়ারি🦊 @shy-fox 🦊||

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আজ - ১২ বৈশাখ | ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | সোমবার | গ্রীষ্মকাল |



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে বাস্তবধর্মী একটি ঘটনা উপস্থাপন করবো । যে বাস্তবতা এখন আমাদের সমাজ থেকে ঘিরে রেখেছে। সেই বাস্তবতা আমাদের সমাজকে এমনভাবে ঘিরে রেখেছে যে এখান থেকে ইচ্ছে করলেই আর বের হয়ে আসা সম্ভব নয়।আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • অসমাপ্ত প্রেম কাহিনীঃ-(শেষ পর্ব)
  • আজ ১২ বৈশাখ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
  • সোমবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ সন্ধ্যা সবাইকে.....!!



গত পোস্টে আমি আপনাদের মাঝে একটি অসমাপ্ত প্রেম কাহিনীর চতুর্থ পর্ব শেয়ার করেছিলাম আশা করছি আপনারা সকলেই চতুর্থ পর্বটি খুবই চমৎকার ভাবে উপভোগ করেছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে শেষ পর্ব নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। আমি এই গল্পটি কয়েকটি পর্বে উপস্থাপন করেছিলাম। আপনাদের প্রতিটি পর্ব দেখার আমন্ত্রণ রইল। এই শেষ পর্বের শেষে আমি আপনাদের মাঝে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় এবং চতুর্থ পর্বের লিংক দিয়ে দিব। আপনারা চাইলে সেখান থেকে গিয়ে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় ও চতুর্থ পর্বের গল্পটি পড়ে আসতে পারেন।



man-1845814_640.jpg

source

হঠাৎ একদিন রাস্তার ধারে রাশেদ আর মীরার দেখা হয়ে যায়। দুজন দুজনের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল যেন দুজন দুজনকে দেখে চোখের পলক সরাতে পারছিল না। চোখের পলক সরাতে পারবেন না কেন, যে মানুষকে আজ তারা দুজনই দেখছে সেই মানুষ দুটো এক সময় খুবই কাছে ছিল খুবই আপন ছিল। এতটাই আপন ছিল যে তারা কখনোই ভাবেনি তাদের এভাবে কখনো রাস্তা থেকে দেখতে হবে। মিরা রাশেদকে দেখে অঝোরে চোখের পানি ফেলতে, এদিকে রাশেদ মিরার দিকে তাকিয়ে আছে কোন অজানা শূন্যতায়। বুকের ভেতরটা হু হু করে কান্না করে দিতে মন চাইছে কিন্তু রাশেদ তো ছেলেমানুষ, আর ছেলে মানুষের চোখের পানি মানায় না। তারা শত দুঃখ কষ্টের মাঝেও চোখ দিয়ে পানি সহজে বের করে না। বুকের ভিতর চাপা কান্না ওভাবেই রেখে দেয়। এভাবে সৃষ্টির জন্মগতভাবেই তৈরি করা হয়েছে। আমাদের সমাজ এটাই আমাদের শিখিয়েছে যে ছেলেরা যত দুঃখ কষ্টের মধ্যে জীবন যাপন করুক না কেন তাদের চোখ দিয়ে এক ফোটা পানি বের করা যাবে না। যে ছেলের চোখ দিয়ে পানি বের হয় সমাজ সেই ছেলেকে নাম দিয়েছে কাপুরুষ। একটা সময় দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে থেকে চোখের পলক ফেলল কোন এক ছোট বাচ্চার মা ডাকে। রাশেদ চোখ ফিরিয়ে দেখতে পারলো যে মীরার ছোট্ট একটি মেয়ে বাবু হয়েছে। মেয়েটা দেখতে খুবই কিউট। সেই মেয়েটি মীরাকে মা,মা বলে ডাকছে। রাশেদ ততক্ষণে বুঝে নিয়েছে যে মিরা এখন এক বাচ্চার মা। রাশেদ একটু আগ পর্যন্ত জানত যে মীরা শুধুমাত্র একজনের স্ত্রী কিন্তু সে এটা কখনোই জানতো না যে, মিরা কারো স্ত্রী থেকে কখন মা হয়ে গিয়েছে। মীরাকে এরূপ অবস্থায় দেখে রাশেদ নিজে কে আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না। সে হু হু করে কান্না জুড়ে দিল যেমন ছোট বাচ্চারা কান্না করে। রাশেদের কান্না দেখে মিরা যেন আর সহ্য করতে পারছিল না সে হাটি হাটি পা করে রাশেদের সামনে এসে দাড়ালো। মীরার কোলে ছোট্ট মেয়ে কে দেখে রাশেদ মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। দুজন জানো কোন কথাই বলছে না শুধু মাত্র দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে অঝোরে কান্না করছেন। মনে হচ্ছে যেন এ এক দুঃখের দিন,এ এক কষ্টের দিন, এ এক প্রিয়জন হারানোর বেদনার দিন।

mountains-5796973_640.webp

source

এদিকে রাশেদও এখন আর সেই আগের মতো জীবন যাপন করে না। সেও এখন একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জব করে। অনেক টাকা বেতন। সেই আগের ছোট্ট ঘর এখন আর নেই সেই ছোট্ট ঘরের জায়গায় এখন দোতলা বিল্ডিং ঘর হয়েছে। রাশেদ সেই এখন আর আগের মতো সাইকেল চালায় না। সে এখন শহরের দামি গাড়ি করে চলাফেরা করে। বলতে পারেন এ যেন এক রাজা বাদশার মত চলাফেরার অবস্থা রাশেদ এর। দুজন দুজনের সঙ্গে কথোপকথন শেষ করে চলে গেল দুজন দুজনের রাস্তায়।
কেউ আর কারো দিকে ফিরেও তাকাল না। ফিরে তাকাবে ই বা কেন ফিরে তাকানোর কোন প্রশ্নই আসে না। কারণ এখন তাদের দুজনের পথ আলাদা। কেউ কারো পথে ভুল করেও পা বাড়াবে না। কেউ কারো দিকে কখনোই হাঁটবে না। এদিকে রাশেদ এখন পর্যন্ত বিয়ে করেনি। যেহেতু মীরা বিয়ে করে এক বাচ্চার মা হয়ে গিয়েছে সেহেতু এখন রাশেদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশেদ বিয়ে করবে ‌‌‌। ধুমধাম করে রাশেদ বিয়ে করে কোন এক উচ্চবংশীয় মেয়েকে। দুজনের সংসার এভাবেই চলতে লাগলো কেউ কারো দিকে কখনোই আর পা বাড়ায় নি। সব সময়ই তারা চেয়েছে দুজন দুজনের মতো ভালো থাকতে। কেউ কখনোই কারো পথের কাঁটা হতে চায়নি, কেউ কারো কখনো দুঃখ কষ্টের কারণ হতে চাই নি। যার কারণে তারা তাদের প্রেমকে বিসর্জন দিয়ে কোন এক অজানা জুটেছে। একটা এতই অজানা ছিল যে তারা কখনোই ভাবেনি যে পথের শেষে গিয়ে থাকবে বড় এক সমুদ্র। সমুদ্রের মাঝে তারা খুব সহজেই অতল গহবরে হারিয়ে যাবে। চাইলে তারা সাঁতার কাটতে পারে কিন্তু এই সমুদ্রের কোন কূল কিনারা নেই। সমুদ্রে সাঁতার কেটে কোন লাভ হবে না এটা তারা অনেক আগেই বুঝে গিয়েছিল। যার কারণে তারা দুজন দুজনকে অনেকটা ভালোবাসার পরেও দুজন দুজনকে কখনোই কাছে পাইনি, কখনো একই সাথে বসে সূর্য উদয় এবং সূর্যাস্ত দেখতে পারেনি। এক কাপ চায়ে দুজন দুজনকে কখনোই ওই চাঁদনী রাতের আলো দেখতে পাইনি। ভালোবাসা এভাবেই হারিয়ে যায়। তবে যেটা সত্যি কারের ভালোবাসা সেটা কখনোই নষ্ট হয় না। রাস্তার ধারে 100 বছর পরে দেখা হলেও দুজনে দুজনার দিকে তাকিয়ে হাসতে পারার মতো ভালোবাসা কজনই বা বাঁচতে পারে। এখনকার ভালবাসার মধ্যে আমি কোনো ভালোবাসা দেখি না, বর্তমান সময়ে যে ভালোবাসা এই ভালোবাসার মধ্যে আমি শুধু দেখি লোভ আর লালশা। যে লালসার কারণে বিচ্ছেদের একদিন পরেই দুজন দুজনের আর দেখতে পারে না। কেউ কারো দিকে ভুলেও তাকাতে চায়না কেমন যেন তাদের মধ্যে একটা ঘৃণা ভাব এর সৃষ্টি হয়। আর এই ঘৃণাটা এতটাই বেশি যে কেউ কাউকে এক বিন্দু পরিমাণ সহ্য করতে পারেনা। কিন্তু রাশেদ আর মীরার ভালোবাসার ক্ষেত্রে দুটোই ব্যতিক্রম। অনেকটা বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও তারা দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে কান্না করতে পেরেছে হয়তোবা কিছু সময় আসতে পেরেছে। এরকম ভালোবাসা কজন পায় আপনারাই বলুন....!!!

তাই আমি সব সময় একটা কথা বলি যে, ভালোবাসলেই যে তাকে পেতে হবে এমন কোন কথা নেই। থাকনা কিছু অপূর্ণতা জীবনের সাথে মিশে। জীবনের সবাই যদি সব কিছু পেয়ে যায় তাহলে হারানোর কষ্ট টা বোঝা যায় না। তাই মাঝে মাঝে সবথেকে পছন্দের কিছু না পাওয়া অনেক ভালো।

এখানেই আমি আমার এই অসমাপ্ত প্রেম কাহিনী গল্পটি শেষ করলাম

প্রথম পর্বের লিংক:-
source
দ্বিতীয় পর্বের লিংকঃ-
source
তৃতীয় পর্বের লিংকঃ-
source
চতুর্থ পর্বের লিংকঃ-
source
চাইলে আপনারা এখানে ক্লিক করে গল্পগুলো পড়ে আসতে পারেন, আগের গল্প গুলো পড়লে আপনারা ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।

আজ আর নয় আজকের মত এখানেই আমি আমার এই অসমাপ্ত প্রেম কাহিনী গল্পটি শেষ করছি। আবার হয়তো কোন একটি গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে নতুন ভাবে হাজির হবে।এরকম ভাবেই সেই গল্পটি পর্ব আকারে উপস্থাপন করব আপনাদের মাঝে। ততক্ষণ পর্যন্ত, সবাই যে যার জায়গা থেকে সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন,পরিবারের সাথেই থাকুন। সেই সাথে প্রিয় মানুষকে সবসময় হ্যাপি থাকার চেষ্টা করুন। সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। ধন্যবাদ সকলকে....!!



আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন

বিবরণ
বিভাগছোট গল্প ।
বিষয়অসমাপ্ত প্রেম কাহিনীর শেষ পর্ব
গল্পের কারিগর@jibon47
গল্প তৈরি করার অবস্থানলিংক

Sort:  
 2 years ago 

আসলে সর্বশেষ আপনি যেটা বলেছেন আমাদের সবাইকে প্রিয় কিছু হারিয়ে না পাওয়ার কষ্টটা উপলব্ধি করতে হবে। তাহলে আমরা বুঝতে পারব কোন কিছু না পাওয়ার কষ্ট কতটা গভীর হয়ে থাকে। আর এতে করে আরেকজনের কষ্টের কিছুটা আন্দাজ করতে পারব। আপনি ঠিকই বলেছেন আরও একটি কথা যেটা হচ্ছে বর্তমানে ভালোবাসা বলে আমার চোখে তেমন কিছু দেখা যায় না। রাশেদ ও মীরার ভালোবাসাটা ছিলো প্রকৃত ভালোবাসা সেখানে কোন লোভ লালসা ছিল না, যার কারণে তারা একজন আরেকজনকে দেখে দুজনে চোখের পানি দিয়ে গোসল করে নিল। যাইহোক ভাই আপনার অসমাপ্ত প্রেমের কাহিনীটি এর আগের আমি পড়েছিলাম সেই পর্ব গুলো আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। শেষ পর্বটাও আপনি চমৎকার ভাবে অনেক গুছিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন, সত্যিই অসাধারণ ছিল। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

এমন অনেক ভালোবাসা আছে যারা শুধুমাত্র নিজের পরিবারের দিকে তাকিয়ে ভালোবাসাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। সত্যি এ রকম ভালোবাসা পাওয়া খুবই দুষ্কর। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

 2 years ago 

আপনার এই গল্পটির শেসে এসে হাজির হয়েছি ভাই। আগের গুলো পড়লে হয়তো অনেক মজা পাব। অনেক ভাল লিখেন আপনি। আগের এপিসোড গুলো পড়তে হবে আমার। ধন্যবাদ ভাই। ভালবাসা রইল। প্রেমের কাহিনীর নতুন এপিসোড চালু করেন।

 2 years ago 

চাইলে আপনি আগের এপিসোড গুলো পড়ে আসতে পারেন আপনার অনেক বেশী ভালো লাগবে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56477.82
ETH 2390.38
USDT 1.00
SBD 2.33