একটি অসমাপ্ত প্রেম কাহিনী/পর্ব:-০২ ||🦊 ১০% বেনিফিশিয়ারি🦊 @shy-fox 🦊||
আজ - ০২ বৈশাখ | ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | বসন্তকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- অসমাপ্ত প্রেম কাহিনী
- আজ ০২ রা বৈশাখ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
- শুক্রবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ বিকেল সবাইকে.....!!
গত পোস্টে আমি আপনাদের মাঝে একটি অসমাপ্ত প্রেম কাহিনীর প্রথম পর্ব শেয়ার করেছিলাম আশা করছি আপনারা সকলেই প্রথম পর্বটি খুবই চমৎকার ভাবে উপভোগ করেছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। আমি এই গল্পটি কয়েকটি পর্বে উপস্থাপন করব আপনাদের মাঝে প্রতিটি পর্ব আপনাদের দেখার আমন্ত্রণ রইল। এই দ্বিতীয় পর্ব শেষে আমি আপনাদের মাঝে প্রথম পর্বের লিংক দিয়ে দিব। আপনারা চাইলে সেখান থেকে গিয়ে প্রথম পর্বের গল্পটি পড়ে আসতে পারেন।
মিরা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছে সে নিজেই বুঝতে পারেনি। যখন ঘুম থেকে উঠেছে ততক্ষণে সকাল হয়ে গিয়েছে প্রায়। সে খুব তড়িঘড়ি করে কলেজে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। কেন জানি আজ সকাল বেলা থেকেই তার কলেজে যাওয়ার আগ্রহ টা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। যাই হোক সে কলেজে গিয়ে সবার আগে উপস্থিত হয়েছে। এদিকে রাশেদ এখন পর্যন্ত কলেজে আসেনি। সে রাশেদের অপেক্ষায় কলেজ গেটে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু রাশেদের কোন খোঁজ নেই। অনেকটা সময় দাঁড়িয়ে থাকার পরেও সে যখন রাশেদের দেখা পেল না তখন সে মনটা খারাপ করেই কলেজের ভেতরে প্রবেশ করল। বেশ কিছুক্ষণ পরে দেখতে পেল সাদা একটা শার্ট, নীল প্যান্ট আর সেই ছোট্ট লাল সাইকেল নিয়ে রাশেদ আসছে। রাশেদকে দেখে তার যেন আনন্দের শেষ নেই। রাশেদ প্রথমেই তার ক্লাসে না গিয়ে মীরার ক্লাসে গিয়ে মিরা সঙ্গে দেখা করে। যদিও তারা দুজন দুজনের সঙ্গে এখন পর্যন্ত কথা বলেনি কিন্তু চোখে চোখে তাদের অনেক কথাই হয়ে গিয়েছে।ওই যে একটা কথা আছে না...!! চোখের ভাষায় যদি ভালোবাসা প্রকাশ করা যায় তাহলে মুখের কেন দরকার...!! চোখে চোখেই তাদের ভালোবাসা একে অপরের প্রতি প্রকাশ পেয়েছে তাই তারা নিচ থেকে কখনোই কেউ কাউকে ভালবাসি এ কথা বলেনি। এভাবেই দেখতে দেখতে অনেকটা দিন পেরিয়ে যায়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এটাই যে তারা এখন পর্যন্ত দুজন দুজনের সামনে গিয়ে দুজনের ভালোবাসার কথা প্রকাশ করেনি। এদিকে তাদের প্রেমকাহিনী কলেজের প্রায় সকলেই জেনে গিয়েছে। অনেক সুন্দর দিন অতিবাহিত করছিল তারা। একটা সময়, রাশেদ ভাবল আজকে মিরা-কে গিয়ে তার মনের সব কথা খুলে বলবে। যেমন ভাবা ঠিক তেমনি কাজ রাশেদ গিয়ে মীরাকে সব কথা বলে। রাশেদের কথা শুনে মীরা ও হ্যাঁ সূচক মন্তব্য প্রকাশ করে। এদিকে বিকেল করার সাথে সাথেই দুজন একটা মাঠের মধ্যে গিয়ে একে অপরের সঙ্গে দেখা করে। বসে থাকে গল্প করে তাদের এই সুন্দর মুহূর্তটা যেন তারা কখনোই হারাতে যাচ্ছিল না।
দেখতে দেখতে রাশেদ কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে অনার্সে ভর্তির জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছেন। আর মিরা তখন ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে। দুজনে দুজনার লেখাপড়া নিয়ে খুবই ব্যস্ত থাকত। এই লেখাপড়ার মাঝে যতটুকু সময় পেত তারা সেই মাঠের মধ্যে দিয়ে একে অপরের সঙ্গে সময় কাটাতে। কিন্তু একটা কথা আছে, লুকিয়ে লুকিয়ে কোন কিছুই বেশিদিন টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়না, আজ হোক কাল হোক সেটা প্রকাশ পাবেই। ঠিক তেমনি ভাবে তাদের এই ভালোবাসা তাদের পরিবারের কাছে প্রকাশ পেয়ে গেল। যেহেতু মীরা একজন বিত্তশালী পরিবারের মেয়ে ছিল আর অন্যদিকে রাশেদ ছিল মধ্যবিত্ত। তাদের এই দুই পরিবার অনেকটা তেল আর জলের মতো। তেল আর জল যেমন কখনো একসঙ্গে মিশিয়ে না ঠিক তেমনি ভাবে তাদের দুই পরিবারের একত্রে কোনদিন মিশবে না। এদিকে মীরার বাবা-মা তার কলেজে যাওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে, প্রায় সময়ই রুমের মধ্যে পাখির মতো বন্ধ করে রাখে। রাশেদের সঙ্গে তার সব রকম যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। এদিকে রাশেদ লেখাপড়া করার তাগিদে শহরের উদ্দেশ্যে রওনা করেছে। ছোট্ট একটি চাকরির পাশাপাশি সে তার লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে কোন রকম ভাবে। কিন্তু মনের মধ্যে সেই অজানা এক ভালোবাসা মাঝেমধ্যেই মাথা গজিয়ে ওঠে। যার কারণে সে তার কাজকর্ম এবং লেখাপড়াতে মন স্থির করতে পারছিল না। এদিকে মিরা নাছোড়বান্দা...!! সে প্রায় খাওয়া-দাওয়া লেখাপড়া ঘুম বন্ধ করে দিয়েছে। প্রেমে পড়লে যে মানুষের বুদ্ধি লোপ পায় সেটা মিরা এবং রাশেদ এই দুজনকে দেখলেই বোঝা যায়। সত্যি বলতে প্রেম মানুষকে অন্ধ করে দেয়, কোনটা ভালো কোনটা খারাপ, কোনটাই তার মাথার মধ্যে কাজ করে না। সে নিজর মধ্য থেকে হারিয়ে যায়। সে হারিয়ে যায় কোন এক অজানা রহস্য, যে রহস্যটা শুধুমাত্র তার প্রিয় মানুষকে কাছে পাওয়ার ধান্দা মাত্র।
এদিকে রাশেদ তার লেখাপড়া এবং কাজকর্মে মনোনিবেশ করতে পারছিল না। যার কারনে সে শহর থেকে ছুটে আসে গ্রামে শুধুমাত্র মীরার সঙ্গে একটিবার দেখা করার জন্য। তারা অনেক প্রক্রিয়া অবলম্বন করে অনেক ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করে দুজন দেখা করে। যদিও তারা দুজন দুজনার সাথে বেশি একটা সময় কথা বলতে পারেনি দুজনেই অঝরে কান্না করছিল। হয়তো এই কান্না খুবই হৃদয়বিদারক। প্রিয় মানুষকে কাছে পেয়েও তাকে হারানোর যন্ত্রণা টা অনেক বেশি। রাশেদ হয়তো বুঝে গিয়েছিল যে আমি মীরাকে চিরদিনের জন্য হারাতে চলেছি। যদিও মীরা চেয়েছিল তারা দুজনে দূরে কোথাও চলে যেতে, কিন্তু পরিবার কে না জানিয়ে কোন কিছু করা মানেই নিজের কে আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করা এটা রাশেদ ভালো করেই জানত। তারা দুজন দুজনকে অনেক আলিঙ্গন করে যে যার মত বাসায় চলে যায়। কিন্তু এদিকে ততক্ষণে দুজনের পরিবারে জেনে গিয়েছে যে তারা একে অপরের সঙ্গে দেখা করেছেন। যার কারণে তাদের দু'জনকেই ফ্যামিলি থেকে অনেক চাপ প্রয়োগ করা হয়। মীরার ফ্যামিলি বুঝে গিয়েছিল যে তাকে এভাবে আর রেখে দেওয়া যাবেনা। তাকে বিয়ের জন্য প্রস্তুত করতে হবে। এদিকে রাশেদ আবার শহরের উদ্দেশ্যে রওনা করেছে। যদিও এই গ্রাম ছেড়ে তার শহরের উদ্দেশ্যে যেতে মন চাইছিলো না তবুও যেতে হবে জীবনের তাগিদে। যেহেতু মিরা রাশেদকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবে না তাই মীরার পরিবার মীরাকে না জানি তার বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেলে। কাউকে কিছু না জানিয়ে রাতের অন্ধকারে মীরার পরিবার মিরাকে অন্য আরেকটি ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেয়। ছেলেটি ছিল তার বাবার বন্ধু। যেহেতু মিরা অনেক রকম পাগলামি করেছিল সেহেতু তাদের হাতে সময় ছিল না ভালো কোন ছেলে খোঁজ করার। যার কারণে মীরার বাবা কিছু সম্পত্তির লোভে মীরাকে তার বন্ধুর হাতে তুলে দেয়। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে মিরা বাধ্য হয়ে তার বাবার বন্ধুর সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসে। এদিকে রাশেদের সব কিছুই অজানা। সে এখন পর্যন্ত কোন কিছু জানতে পারেনি। সে জানতে পারেনি যে তার প্রিয় মানুষটি এখন আর তার নেই। তার প্রিয় মানুষটি এখন অন্য কারো। এটা জেনে কি রাশেদ স্থির থাকতে পারবে.......?? আপনাদের কি মনে হয়....??
প্রথম পর্বের লিংক:- |
https://steemit.com/hive-129948/@jibon47/6awj9t-or-or-shy-fox-or-or |
আজ আর নয় আজকের মত এখানেই আমি আমার এই অসমাপ্ত প্রেম কাহিনী দ্বিতীয় পর্ব শেষ করছি। খুব শীঘ্রই আমি আপনাদের মাঝে তৃতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হব। কেউ ধৈর্য হারাবেন না, গল্পটা আমি একদম শেষ পর্যন্ত আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। আশা করছি যতটুকু আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি আপনারা খুবই চমৎকার ভাবে উপভোগ করেছেন। সামনের দিনগুলোতে আরো ভালোভাবে উপভোগ করবেন এই কামনা করি। সবাই যে যার জায়গা থেকে সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন পরিবারের সাথেই থাকুন। সেই সাথে প্রিয় মানুষকে সবসময় হ্যাপি থাকার চেষ্টা করুন। সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। ধন্যবাদ সকলকে....!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন
বিভাগ | ছোট গল্প । |
---|---|
বিষয় | অসমাপ্ত প্রেম কাহিনী পর্বঃ-০২ |
গল্পের কারিগর | @jibon47 |
গল্প তৈরি করার অবস্থান | লিংক |
তাই নাকি ভাইয়া? চোখের ভাষা বোঝার ক্ষমতা কি সবার থাকে বলেন তো ।যাইহোক মজা করলাম। আপনার আজকের এই গল্পটি খুব দারুন হয়েছে। যদিও প্রথম পর্ব আমার পড়া হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয় পর্ব পড়ে কিছুটা হলেও বুঝলাম ।তৃতীয় পর্ব পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
জি আপু খুব শীঘ্রই আমি আপনাদের মাঝে তৃতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হব। তৃতীয় পর্ব পড়ার জন্য আপনাকে আমন্ত্রণ জানালাম। গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
এই সময়টা তার জন্য অনেক কষ্টের ছিল। এখানে বোঝা যায় মেয়েরা কতটা অসহায় তারা বলতে ও পারে না সইতে ও পারে না।এমন সময়ে এসে আপনার কলমের কালি ফুরিয়ে গেলো ভাইয়া। সুন্দর একটি মহত্ত্বে এসে শেষ করে দিলেন তৃতীয় পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া। গল্প টি পড়ে আমার কাছে দারুণ লেগেছে ভাইয়া।আশা করি খুব তাড়াতাড়ি তৃতীয় পর্ব পড়তে পারবো।শুভকামনা রইল।
আপনি আমার এই ছোটগল্পটি খুবই চমৎকার ভাবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো। খুব শীঘ্রই তৃতীয় পর্বের দেখা পাবেন আশা করি। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
গল্প টা খুব ভাল ভাবে লিখতেছেন ভাই। ভাল লাগতেছে। চালিয়ে যান। পর্ব গুলো তাড়াতাড়ি পোস্ট করলে ভাল হয় আমাদের জন্য। আগের পর্ব মাথায় থাকতে থাকতেই নতুন পর্ব পড়তে ভাল লাগে। ধন্যবাদ
যে আমি চেষ্টা করব খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে তৃতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হওয়ার জন্য। গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
সত্যি ভাইয়া গল্পটা বেশ ছিল। আমি প্রথম গল্পটি দেখি নাই তবে এই গল্পটা পরে প্রথম গল্প পড়ার আগ্রহ বেরে গেছে। মেয়েরা সব কিছু শয্য করে থাকে মেয়েরা খুব ধৈর্যশিল। ধন্যবাদ ভাইয়া
এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য