একটি অসমাপ্ত প্রেম কাহিনী/পর্ব:-০৪ ||🦊 ১০% বেনিফিশিয়ারি🦊 @shy-fox 🦊||
আজ - ০৯ বৈশাখ | ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | গ্রীষ্মকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- অসমাপ্ত প্রেম কাহিনীঃ-০৪
- আজ ০৯ ম বৈশাখ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
- শুক্রবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ সন্ধ্যা সবাইকে.....!!
গত পোস্টে আমি আপনাদের মাঝে একটি অসমাপ্ত প্রেম কাহিনীর তৃতীয় পর্ব শেয়ার করেছিলাম আশা করছি আপনারা সকলেই তৃতীয় পর্বটি খুবই চমৎকার ভাবে উপভোগ করেছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে চতুর্থ পর্ব নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। আমি এই গল্পটি কয়েকটি পর্বে উপস্থাপন করব আপনাদের মাঝে প্রতিটি পর্ব আপনাদের দেখার আমন্ত্রণ রইল। এই চতুর্থ পর্ব শেষে আমি আপনাদের মাঝে প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বের লিংক দিয়ে দিব। আপনারা চাইলে সেখান থেকে গিয়ে প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বের গল্পটি পড়ে আসতে পারেন।
প্রিয় মানুষটিকে হারিয়ে রাশেদ নিঃস্ব হয়ে যায়। আর নিঃস্ব হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। আপনি নিজে থেকে এটা অনুভব করেন যে আপনি কাউকে অনেক অনেক বেশি ভালোবেসেছেন। আপনি তাকে এতটাই ভালোবেসেছেন যে তাকে ছাড়া আপনি একটি মুহূর্ত কল্পনা করতে পারেন না। আপনি তাকে নিয়ে সাজাতে চেয়েছেন আপনার এই পৃথিবী। আপনি তাকে নিয়ে দেখতে চেয়েছেন সূর্যাস্ত, আপনি তাকে নিয়ে দেখতে চেয়েছেন সূর্য উদয়, আপনি তাকে নিয়ে দেখতে চেয়েছেন পাহাড় ঝরনা সমুদ্র। আপনি এরকম অনেক অনেক কল্পনা জল্পনা মনের মধ্যে করে রেখেছেন আপনার সেই প্রিয় মানুষটাকে নিয়ে। হঠাৎ একদিন শুনতে পেলেন যে আপনার সেই প্রিয় মানুষটা এখন আর আপনার নেই ।তখন আপনার মনের মধ্যে কেমন অনুভূতি হবে নিজ থেকে একবার ভাবুন।
ঠিক তেমনিভাবেই রাশেদ তার প্রিয় মানুষটাকে নিয়ে অনেক জল্পনা কল্পনা করে রেখেছিল। দুজন একসঙ্গে সূর্য উদয়, সূর্যাস্ত, পাহাড়, ঝরনা, সমুদ্র দেখতে চেয়েছিল। কিন্তু কোন এক ঝড় এসে তার সেই স্বপ্ন গুলো ভেঙ্গে চুরমার করে দিল। সে তার প্রিয় মানুষটিকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেললো। এর থেকে বড় দুঃখ কষ্ট এই পৃথিবীতে আর কিছু আছে কি...?? সে কষ্ট সহ্য করতে না পেরে হঠাৎ রাত্রে হাতে রশি নিয়ে বের হয়ে পড়ে সেই মাঠের মধ্যে শিমুল গাছের উদ্দেশ্যে। পূর্ণিমার রাত, চারিদিকে চাঁদের আলোয় ঝলমল করছে। রাশেদ একা একা ছুটে চলেছে সেই মাঠের মধ্যে শিমুল গাছের নিচে। মনে তার বড়ই কষ্ট এবং দুঃখ। ভেবেছে যে আজ আত্মহত্যা করে নিজেকে শেষ করে দিয়ে আমি এই দুঃখ-কষ্ট থেকে চিরদিনের জন্য বিদায় নিতে চাই। হঠাৎ সে শিমুল গাছের নিচে এসে পৌঁছালো। শিমুল গাছের কাছে আসার পরে তার অতীত জীবনের সকল স্মৃতির কথা মনে পড়ছিল। বার মনে পড়ছিল যে, এটাই সেই জায়গা যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা দুজন অনেক গল্প করেছি, কত স্বপ্ন দেখেছি। আজ কিনা সেই গাছের ডালেই আমি মৃত্যুবরণ করবো। সমস্ত রকমের ভাবনা চিন্তা শেষ করে এসে গাছে উঠে বসলো। এবং গাছের ডালের সাথে রশি বাঁধলো। যখনই সে নিজের গলায় রশি পেচিয়ে ঝুলে পড়বে ঠিক তখনই তার চোখের সামনে ভেসে উঠলো তার মায়ের কান্না ভরা মুখ। সে কিছুটা সময় অন্যমনষ্ক হয়ে গিয়েছে। সে গাছের ডালের সাথে হেলান দিয়ে বসে চোখ বন্ধ করে ভাবছে, এটা ভাবছি যে আমি মরে গেলে কি হবে...!!
সে প্রথমে ভাবে তার মায়ের কথা। সে চোখ বন্ধ করে এটা ভাবে যে আমি মারা গেলে আমার মা প্রচুর কান্না করবে। আমার লাশ ধরে কান্না করতে করতে সে হয়তো একটা সময় নিঃস্ব হয়ে যাবে। তারপরে সে ভাবে তার বোনের কথা। তার ছোট্ট একটি বোন যার বাবা নেই, সে কিভাবে থাকবে একা একা তার ভাইকে ছাড়া। তার পরিবারের কে দেখাশোনা করবে তার শূন্যতায়। সে এটা ভাবে যে আমি মৃত্যুবরণ করলে হয়তো আমি এই কষ্ট থেকে মুক্তি পাব কিন্তু আমার পরিবারের মানুষ কোন ভাবেই বেঁচে থাকতে পারবে না আমাকে ছাড়া। কারণ আমি তাদের একমাত্র বেঁচে থাকার শক্তি। আর এই শক্তি যদি না থাকে তাহলে তারা হয়তো বেঁচে থাকবে কারো করুণার পাত্র হয়ে। এরপরে সে অনেক ভাবনা চিন্তা করার পরে তার প্রিয় প্রেমিকা মীরার কথা ভাবে। সেটা ভাবে যে মীরার বিয়ে হয়ে গিয়েছে অন্য কারো সঙ্গে। মিরা এখন অন্য কারো স্ত্রী। আমি মৃত্যুর পরে সে হয়তো আমার মৃত্যুর কথা শুনে খুব কান্না করবে। অনেকটা পাগলামি করবে। কিন্তু এই পাগলামি টা বেশি দিন আর থাকবে না। কারণ মেয়ে মানুষ এমন একটা জাতি যে তারা যখন যার সংস্পর্শে থাকে তারা তাকে নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়ে কোন একটা সময়। এদের মধ্যে আর কোন গুন থাকুক বা না থাকুক, এই বিষয়টা তারা অনেক ভালো ভাবেই মানিয়ে নিতে পারে বলে আমি মনে করি। সবার জীবনই ঠিকঠাক ভাবেই চলবে। একটা সময় হয়তো মিরা আমাকে ভুলে যাবে। শুধুমাত্র আমাকে ভেবে আমার পরিবারের মানুষগুলোই দুঃখ কষ্টের মধ্যে জীবন অতিবাহিত করবে। সমস্ত রকম ভাবনা চিন্তা করার পর সে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলো যে, সে মৃত্যুবরণ করবে না। জীবনটা নতুনভাবে নতুন রূপে সাজাবে। আর তার এই জীবনটা নতুনভাবে নতুন রূপে সাজাবে শুধুমাত্র তার পরিবারের মানুষের কথা চিন্তা করে। সে অনেকটা রাত পর্যন্ত গাছের নিচে বসে কাটিয়ে দিয়েছে। এদিকে রাশেদের মা রাশেদকে রুমের মধ্যে না পেয়ে মরিয়া হয়ে গিয়েছে। সে তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করছে কিন্তু রাশেদ কোথাও নেই। তার মা ভেবেছে রাশেদ হয়তো মনের দুঃখে কষ্টে অন্য কোথাও চলে গিয়েছে। কিন্তু মায়ের মন কি আর এত সহজে শান্ত হয় আপনারাই বলুন...?? এক এক সময় তার মায়ের মনের মধ্যে এক এক রকম কথা জাগ্রত হচ্ছে। রাশেদের মা তার বাড়ির বাইরে পথের ধারে বসে কান্না করছে এমন এক সময় রাশেদ তার বাড়িতে পৌঁছায়। ততক্ষনে ভোর হয়ে গিয়েছে প্রায়। রাশেদ তার মাকে রাস্তার কোণে বসে কান্না করতে দেখে কিছুটা হতচকিয়ে পরে। এদিকে রাশেদের মা রাশেদকে দেখে আরো বেশি কান্নায় ভেঙে পড়ে। যদিও এই কান্নাটা সুখের ছিল, তবে এই সুখের কান্না অনেকেই করতে পারে না। পৃথিবীতে দুই রকমের কান্না রয়েছে, এক রকমের কান্না হচ্ছে দুঃখ পাওয়ার পরে যে অশ্রুধারা বের হয় সেটা দুঃখের কান্না। আর এক রকমের কান্না আছে সেই কান্নাটি হচ্ছে, প্রচন্ড রকমের খুশি হয়ে চোখ দিয়ে যে অশ্রুধারা প্রবাহিত হয় সেটা সুখের কান্না। সুখের কান্নাটা সবসময়ই অনেক সুন্দর হয়। আপনারা এখন হয়তো ভাববেন যে কান্না সুন্দর হয় কিভাবে। কান্নাও সুন্দর হয় যদি সেটা আপনি সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারেন।
রাশেদ আর রাশেদের মা দুজন দুজনের হাত ধরে কান্না করতে করতে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করেছে। এদিকে মীরা তার স্বামীর বাড়িতে রাশেদের সঙ্গে তার কোনো রকম ভাবে যোগাযোগ হয়নি। তবে মিরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনেক রকম ভাবেই চেষ্টা চালাচ্ছে কিন্তু কোনোভাবেই সফল হতে পারছে না। যদিও রাশেদ মীরার স্বামীর বাড়িতে গিয়েছিল মীরার সঙ্গে দেখা করার জন্য কিন্তু মীরার স্বামী কোনভাবেই রাশেদকে মীরা সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। মিরা এটা জানেই না যে রাশেদ তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। তবে সত্যি কথা হলো এটাই যে, বিয়ের পর থেকে মিরা একটুও ভালো নেই তার স্বামীর সংসারে। ভালো থাকবেই বা কি করে আপনারাই বলুন..! নিজের বাবার বন্ধুর সঙ্গে বিয়ে হয়েছে মীরার। কি করে ভালো থাকা যায়। সেইসাথে মীরার শাশুড়ি এবং ননদ খোটা দিতে শুরু করেছে যে, তোমার বাবা টাকার লোভে তোমাকে আমার ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছে। খুব লোভী এবং স্বার্থপর তোমার পরিবার। মিরা এখন পর্যন্ত বিয়ের জন্য উপযুক্ত নয়। এসব কথা শুনে সে খুব দুঃখে কষ্টে কাউকে কিছু না বলে সকলের অগোচরে লুকিয়ে লুকিয়ে কান্না করে। এই কান্না টা কিসের কান্না...?? এই কান্না টা কি তার শ্বাশুড়ীর এই কথার জন্য...? নাকি এখন পর্যন্ত তার প্রেমিক রাশেদকে তার কাছে না পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। তবে আমি মনে করি এটা হয়তো সেই না পাওয়া আকাঙ্ক্ষা। ভালোবাসা যে মানুষকে কতটা নিঃস্ব করে দেয় সেটা একমাত্র মিরা আর রাশেদকে দেখলেই বোঝা যায়। দেখতে দেখতে অনেকটা বছর পেরিয়ে গেল। মিরা অনেক দুঃখ কষ্ট সহ্য করে তার স্বামীর সংসার এই দিব্যি রয়ে গেল। হঠাৎ একদিন রাস্তার ধারে.......!!!
প্রথম পর্বের লিংক:- |
source |
দ্বিতীয় পর্বের লিংকঃ- |
source |
তৃতীয় পর্বের লিংকঃ- |
source |
আজ আর নয় আজকের মত এখানেই আমি আমার এই অসমাপ্ত প্রেম কাহিনী চতুর্থ পর্ব শেষ করছি। খুব শীঘ্রই আমি আপনাদের মাঝে পঞ্চম পর্ব নিয়ে হাজির হব। কেউ ধৈর্য হারাবেন না, গল্পটা আমি একদম শেষ পর্যন্ত আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। আশা করছি যতটুকু আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি আপনারা খুবই চমৎকার ভাবে উপভোগ করেছেন। সামনের দিনগুলোতে আরো ভালোভাবে উপভোগ করবেন এই কামনা করি। সবাই যে যার জায়গা থেকে সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন,পরিবারের সাথেই থাকুন। সেই সাথে প্রিয় মানুষকে সবসময় হ্যাপি থাকার চেষ্টা করুন। সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। ধন্যবাদ সকলকে....!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন
বিভাগ | ছোট গল্প । |
---|---|
বিষয় | অসমাপ্ত প্রেম কাহিনী পর্বঃ-০৪ |
গল্পের কারিগর | @jibon47 |
গল্প তৈরি করার অবস্থান | লিংক |
এমন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনি অনেক বুদ্ধিমান একজন মানুষ। সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। আমার পড়ার সময় হচ্ছিল না তারপরও একটু পড়তে পড়তে খুব ভালো লাগতেছিল। তাই কটাই পড়েছিলাম এবং অনেক ধারণা হয়েছে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল ।
সম্পূর্ণ গল্পটুকু পড়লে আপনি আরো ভালোভাবে বুঝতে পারতেন ভাইয়া যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার এই পোস্টটি পড়ে আমার কিছুটা স্মরণ হয়ে গেল হারানো স্মৃতি গুলো। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস যা হয়। হাসি-কান্না নিয়েই দুনিয়া হাসি কান্নার মাঝেই জীবন। তবে আপনার পোস্টের মধ্যে যথেষ্ট শিক্ষণীয় দিক রয়েছে, নতুনদের জন্য অনেক কাজে লাগবে।
প্রিয় মানুষকে হারানোর কষ্ট সত্যিই অনেক দুঃখের যা বলে প্রকাশ করার মতো না। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।