হ্যালো বন্ধুরা,
আশা করছি ভালো এবং সুস্থ আছেন। চলছে আমার বাংলা ব্লগের প্রতিযোগিতা-১৬। এবারের বিষয়টি একটু ভিন্ন ধরনের কারন আমরা চেষ্টা করছি প্রতিযোগিতা সমূহের মাঝে কিছুটা ভিন্নতা আনার এবং আমার বাংলা ব্লগের সদস্যদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়ার। সেই ক্ষেত্রে আপনি চাইলেও প্রতিযোগিতার বিষয়ে নিজের যে কোন মতামত আমাদের সাথে শেয়ার করে নিতে পারেন, আমরা অবশ্যই আপনার মতামতটি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবো। এবারের প্রতিযোগিতার বিষয় হলো সেমাই রেসিপি। আমরা নানাভাবে, নানা উপায়ে সেমাই রেসিপি তৈরী করে থাকি, যা স্বাদের মাত্রাকে দারুণভাবে বৃদ্ধি করে এবং সেমাইয়ের প্রতি আকর্ষণটা বাড়িয়ে দেয়।
আমি প্রতিযোগিতার বিষয়বস্তুতে এ বিষয়ে কিছু অনুভূতি শেয়ার করেছিলাম। আসলেই সেই অতীতগুলো এখনো হৃদয়ের মাঝে ঝলমল করছে। কারণ আমাদের পরিবার ছিলো যৌথ পরিবার, যদিও এখন খুব একটা চোখে পড়ে না যৌথ পরিবার। তো যে কোন অনুষ্ঠান কিংবা বিশেষ দিনগুলোতে দারুণ একটা উৎসবের আমেজ তৈরী হতো ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো তৈরী করার ক্ষেত্রে। আমার এখনো স্মরণে আছে, আমাদের গ্রামের বাড়ীর সব চেয়ে দক্ষিণের রুমে একটা ঢেকি ছিলো, চাল গুড়া করার। শীতের দিনগুলোতে বেশ হৈ চৈ হতো এই ঢেকির রুমকে কেন্দ্র করে, চাল ভাঙ্গানোকে কেন্দ্র করে। চাল গুড়া করা হতো এবং তার সাথে সাথে খাবারের নানা বিষয় নিয়ে বেশ আড্ডা হতো। সত্যি সেই দিনগুলো বেশ উপভোগ্য ছিলো, যা আজ শুধু অতীত।
সেমাইয়ের বিষয়টি আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি, আমি নিজেও সেই তৈরীর ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছি। তখন অবশ্য এই রকম লাচ্ছা সেমাইয়ের এতোটা প্রচলন ছিলো না, বেশীর ভাগ পরিবার নিজেদের বাড়ীতে নিজেরাই সেমাই তৈরী করতো। একটা ছোট মেশিনের মতো ছিলো, যেটাকে কলের সেমাইয়ের মেশিন বলতাম আমরা, চিকন করে সেমাই তৈরী করা হতো সেটা দিয়ে। আর বাকীগুলো হাতে তৈরী করা হতো। তারপর নানাভাবে, নানা স্বাদের করে সেই সেমাইগুলো রান্না করা হতো, বেশ আনন্দ নিয়ে সেগুলো উপভোগ করতাম। অবশ্য এখনকার মেয়েরাও অনেক অলস হয়ে গেছে, কষ্ট করে কিছু তৈরী করতে চায় না (আস্তে করে বললাম বুঝেনই তো বাড়ীতে বউ আছে, পরে আবার রান্না বন্ধ করে দিতে পারে, হি হি হি)। তাই বাধ্য হয়ে রেডিমেট সেমাই এর উপর নির্ভর করতে হয় আর পকেটের ফাঁকা হয়ে যায়।
সে যাইহোক, মজা না হয় একটু করেই নিলাম। কিন্তু সেমাইয়ের প্রতিযোগিতা আমি অংশগ্রহণ করবো না তা কি করে হয়, আমি তো চিন্তা করেছি কয়েকটি রেসিপি উপস্থাপন করবো এবার, সবাইকে একটু লোভ লাগানোর সুযোগটা কিভাবে নষ্ট করি বলুন। আচ্ছা একটা প্রশ্ন করেই ফেলি, আপনি কি লাচ্ছা না কলের সেমাই খেতে বেশী পছন্দ করেন? আমি কিন্তু দুটোই খেতে পছন্দ করি, যেটার স্বাদ বেশী থাকে সেটা একটু বেশী পরিমানে খাই এই যা। চলুন তাহলে আজকের বিশেষ রেসিপিটি দেখি, লাচ্ছা সেমাই দিয়ে স্বাদের বিস্কুট তৈরী।
প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহঃ
- লাচ্ছা সেমাই
- গুড়ো দুধ
- চিনি
- বেকিং পাউডার
- ডিম
- লবন
- এলাচগুড়ো
- তেল।
প্রস্তুত প্রণালীঃ
প্রথমে একটা বাটি নিয়েছি এবং তারপর সেটার মাঝে লাচ্ছা সেমাই ঢেলে সেগুলোকে গুড়ো গুড়ো করে নিয়েছি।
তারপর সেগুলোর সাথে গুড়ো দুধ, বেকিং পাউডার, চিনি, লবন এবং এলাচগুলো মিক্স দিয়ে করেছি।
এরপর ডিমটা ভেঙ্গে দিয়েছি এবং সবগুলো উপকরণ মিলিয়ে সুন্দর একটা মিশ্রণ তৈরী করেছি।
এখন সেই মিশ্রণ হতে অল্প অল্প করে হাতে নিয়ে সুন্দর করে গোল আকৃতির বানিয়ে একটু চ্যাপ্টা করে নিয়েছি।
এরপর একটা প্যান চুলায় দিয়ে কিছু তেল ঢেলে গরম করেছি তারপর গোল আকৃতিতে তৈরী করা মিশ্রণগুলো তেলে ছেড়েছি।
একটু অপেক্ষা করেন উল্টে পাল্টে দিয়ে উভয় পাশ বাদামী কালার করে ভেজে নিয়েছি।
বাদামী কালার হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে নামিয়ে নিয়েছি তারপর আর কি? কিসের পরিবেশন? নিজেই সবার আগে স্বাদটা চেক করেছি, তারপর চেক করতে করতে একে একে সবগুলো সাবার করে ফেলেছি হি হি হি। বেশ দারুণ হয়েছিলো সত্যি বলছি, অনেকটা সফল ছিলো ভেতরটা আর উপর দিয়ে বেশ ক্রাঞ্চির মতো লেগেছে। এটা চেক করে দেখতে পারেন নতুন কিছুর স্বাদ পাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
আপনি আজকে আমাদের সাথে খুব ইউনিক একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন। আমি কিন্তু এরকম রেসিপির নাম কিংবা এরকম রেসিপি জীবনে কখনো দেখিনি। অনেক ভালো লাগলো আপনার রেসিপিটি দেখে এবং আপনার উপস্থাপনা টা অনেক ভাল ছিল।
তাহলে নতুন কিছু দেখলেন, এখন স্বাদটা নিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন হি হি হি।
আগের দিনে ঢেকির শব্দ শুনলেই বুঝা যাইতো সে বাড়িতে পিঠা তৈরি হবে। তাও আবার প্রতি বাড়িতেই ঢেকি থাকতো না। একজন আরেক জনের ঢেকিতে চাল গুড়ো করতো। আমিও আম্মুর সাথে যাইতাম ঢেকির শব্দ আমার ভালোই লাগতো। আসলেই আগের দিনগুলো অনেক মজার ছিলো। আমি শুনছি বেল গাছের কাঠ নাকি ঢেকির জন্য বেশি ভালো।
যাইহোক, আপনার তৈরি করা লাচ্ছা সেমাই এর বিস্কুট রেসিপি দেখে খুব ভালো লাগলো। আমি ২ দিনের মধ্যেই আমার রেসিপি নিয়ে হাজির হবো। ধন্যবাদ ভাই, ভালো থাকবেন।
এই যে আপনি ঠিক ধরেছেন, দারুণ একটা আমেজ তৈরী হয়ে যেত তখন বাড়ীতে। আসে পাশের মহিলারাও আসতেন তখন বাড়ীতে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Please check my new project, STEEM.NFT. Thank you!
ভাইয়া আমি কিন্তু কলের সেমাই খেতে পছন্দ করি কারণ কলের সেমাই আমাদের নিজস্ব প্রজেক্ট আর তাছাড়া খেতেও অনেক সুস্বাদু এবং মজাদার হয়, যাই হোক ভাইয়া আপনার হাসিময় মজার পোস্টি পরে অনেক ভালো লাগলো, তার সাথে সাথে নতুন একটি রেসিপি শিখতে পেলাম, আমি কিন্তু এর আগে কখনো লাচ্ছা সেমাইয়ের বিস্কুট তৈরি খাইনি, আজই প্রথম দেখলাম, বাসায় একদিন ট্রাই করবো ভাইয়া শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
বাহ! তাহলে একজনকে পেলাম যিনি আমার মতো এটা পছন্দ করেন, সত্যি অনেকের না জানাটা আমাকে অবাক করেছে।
আপনার করা প্রশ্নের উত্তরে আমি একটি কথাই বলবো আসলে কলের তৈরি সেমাই বা হাতে তৈরি সেমাইয়ের মতো স্বাদ কোন কিছুতেই নেই। কলের তৈরি সেমাই আমার প্রিয়। বাজারে বিভিন্ন রকমের লাচ্ছা সেমাই বর্তমানে পাওয়া যায়। কিন্তু আগেকার সময়কার মা-খালাদের হাতে তৈরি সেমাইয়ের মতো স্বাদ সেগুলোর মধ্যে আর পাওয়া যায় না। আসলে রাতজেগে চাউলের গুড়া করা, সকালবেলায় পিঠা বানানো এই সময় গুলো অনেক ভালো ছিল। এছাড়া আমার মাকে দেখতাম সন্ধ্যা রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে চালের গুড়া করতেন। এরপর অনেক রাত পর্যন্ত সেমাই পিঠা তৈরি করতেন। সত্যি কথা বলতে সেই সময় গুলো এতই বেশি মনে পড়ছে যে বলে বুঝানোর মতো নয়। আপনার তৈরি করা এই ভিন্নধরনের একটি রেসিপি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।লাচ্ছা সেমাইয়ের বিস্কুট রেসিপি খুবই লোভনীয় হয়েছে ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে মজার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য। সেই সাথে আপনার জন্য ভালোবাসা রইলো। 💓💓
এটা ভাই খুব সত্য বলেছেন, আগের মতো সেই স্বাদ এখন আর পাওয়া যায় না, কারন সেমাইয়ের মাঝে সেই আবেগ কিংবা মমতা এখন আর নেই।
ভাইয়া আপনার পোস্টগুলো পড়তে আমার খুবই ভালো লাগে। কেননা আপনার পোস্টগুলো রসিকতায় ভরপুর থাকে। এরকম রসিকতায় ভরপুর পোস্ট পরতে সত্যিই আলাদা ভালো লাগা কাজ করে। আপনি একটি কথা ঠিকই বলেছেন ভাইয়া, এখনকার মেয়েরা একটু অলস প্রকৃতির হয়ে থাকে, আগের দিনে মা চাচীরা যে সমস্ত খাবার তৈরি করত তাও আবার লাকড়ির চুলা ব্যবহার করে, এখনকার মেয়েরা সেই সমস্ত রান্না তো জানেই না, উপরন্ত লাকড়ির চুলা তো দূরে থাক, কারেন্ট চলে গেলে ভাতও রান্না করতে চায়না। বাজার থেকে কিনে এনে খেতে চায়। আমিও কথাটি একটু আস্তে বললাম ভাইয়া। পরে আবার আমার বাসাতেও ভাত রান্না করা বন্ধ হয়ে যাবে হি হি হি। ভাইয়া আমার কাছেও কলের সেমাই ও লাচ্চা দুই ধরনের সেমাই খেতে খুবই ভালো লাগে। আপনার তৈরি রেসিপিটি সম্পর্কে কোন মন্তব্য করব না শুধু এটুকুই বলবো আপনার রেসিপি অনুসরণ করে আমিও এই রেসিপি তৈরি করে আমার বাংলা ব্লগে পোস্ট করব। সুন্দর একটি পোষ্ট উপহার দেওয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
একটু চেষ্টা আপনাদের বিনোদন দেয়ার এবং কনটেন্টের সাথে এনগেজমেন্ট ধরে রাখার। আসলে গতানুগতিক পোষ্টতো সবাই করে আমি একটু ভিন্ন থাকার চেস্টা করি আরকি।
লাচ্ছা সেমাই দিয়ে বিস্কুট তৈরি করা যায় এমন ধারণা তো কখনোই করিনি। আমি সাধারণত ভেবেছি আটা ময়দা দিয়ে বিস্কুট তৈরি করা যায়। আপনার দেখছি দারুন বুদ্ধি আপনি লাচ্ছা সেমাই ও ডিমের মিশ্রণে দারুন স্বাদের বিস্কুট তৈরি করে ফেলেছেন। এত ইউনিক ভাবে বিস্কুট তৈরি করতে আমি আগে কখনো দেখিনি।
আমি কলের সেমাই খেয়েছি অনেক বছর হয়েছে। আম্মু খাওয়াতো। তবে এখন লাচ্ছা সেমাই খাই তাই কলের সেমাইয়ের স্বাদ মনে নেই।
যাই হোক আপনার সেমাইয়ের বিস্কুট দেখেই বুঝা যাচ্ছে কতটা মজার হয়েছে। ভাইয়া বিস্কুট গুলো কি কিছুটা মুড়মুড়ে হয়েছে! দেখে তাই মনে হচ্ছে। ধন্যবাদ এত চমৎকার ইউনিক রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
আরো অনেক কিছুই তৈরী করা যায় আপু, সত্যি বলতে আমরা আমাদের স্বাদ অনুযায়ী যে কোন রেসিপি তৈরী করতে পারি।
ওয়াও ভাইয়া লাচ্ছা সেমাই দিয়ে আপনি খুব সুন্দর বিস্কুট তৈরি করেছেন। দেখেতো মনে হচ্ছে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। সেমাই দিয়ে বিস্কুট তৈরির রেসিপি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর বিস্কুট তৈরি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনার জন্য শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।
বিস্কুটগুলো সত্যি অনেক স্বাদের ছিলো, বেশ মজা পেয়েছে বাড়ীর সবাই।
কলের সেমাই আমি কখনো দেখিনি। আর আসলে এখনকার মেয়েরা অলস হয়ে গেছে তাই তারা এখন এগুলো তৈরিও করেনা আর আমরা নতুন প্রজন্মরা এগুলো দেখিওনা। সব দোষ আধুনিক প্রযুক্তির 🤪। যাইহোক কলের সেমাই এর স্বাদ সম্পর্কে জানিনা তাই প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারলাম নাহ। কিন্তু লাচ্ছা সেমাই খেয়েছি। ভাইয়া আপনার রেসিপিটি অনেকেই অনেক ছিল কিছু শিখতে পারলাম আজ।
শুভকামনা রইল ভাইয়া 🙂।
একদমই অলস হয়ে গেছে মোটেও কষ্ট করতে চায় না হি হি হি, হ্যা এটাই সহজ উপায় দোষটা অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া।
চলমান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অভিনন্দন ভাইয়া। আপনি খুবই চমৎকার ভাবে আমাদের মাঝে সেমাই দিয়ে বিস্কুট রেসিপি তৈরি করে শেয়ার করেছেন। আপনার এই বিস্কুট রেসিপি আমার কাছে একদম নতুন এবং ইউনিক লেগেছে। আমি এর আগে কখনোই এ ধরনের রেসিপি খাইনি। চমৎকারভাবে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে লাচ্চা সেমাইয়ের বিস্কুট রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
ভাই নতুন হলেও বেশ স্বাদের ছিলো, আরো অনেক আইডিয়া আছে মাথায় কিন্তু গরমেল জ্বালায় অস্থির হয়ে আছি।