আবোল-তাবোল জীবনের গল্প [ ব্যবহার যখন অসংযত ]
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। এই একটা বিষয়ে নিজের আশাটা সর্বদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করি। সত্যি বলতে চারপাশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং আমাদের ভিন্ন ধরনের আচরণ মাঝে মাঝে খুব বেশী হতাশ করে দেয়। আমরা আসলেই কত কিছু করছি এবং কত কিছু বলার চেষ্টা করছি কিন্তু দিন শেষে আমরা কি সত্যি নিজের অবস্থানে থাকতে পারছি? এটা শুধুই প্রশ্ন না বরং নিজের অস্তিত্ব প্রমাণের একটা চ্যালেঞ্জও বটে। দেখুন দিন শেষে নিজেকে যদি মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারি তাহলে সকল প্রচেষ্টাই আমাদের ব্যর্থ, হ্যা আপনার দৃষ্টিতে হয়তো ভিন্ন কিছু থাকতে পারে কিন্তু সেখানে নিজের অবস্থানটা আর মানুষ হিসেবে টিকে থাকবে না।
কয়েক দিন আগেই একটা লেখা লিখেছিলাম, মানে যে রকম আমি লিখে থাকি। নিজের মনের ভেতরের কথা, জমানো ব্যথা কিংবা তিক্ত অভিজ্ঞতা। যেখানে আপনারা নিজেদের মতামতগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেন। আসলে ব্যক্তি হিসেবে আমি সকলের নিকট পছন্দনীয় থাকবো, সেটা আমি কোনদিনও কল্পনা করি না। ব্যক্তি হিসেবে আমি সকলের কাছে সমান মর্যাদা পাবো সেটাও আমি কোন দিনও চিন্তা করি না। তবে মানুষ হিসেবে মানুষের মতো সহমর্মিতা পাবো সেটা কিন্তু সর্বদাই প্রত্যাশা করি। কারন আমি যেহেতু আপনাকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করছি, সেহেতু আপনার নিকট হতে মানুষের সঙ্গত আচরণই প্রত্যাশা করবো, এটাই তো হওয়ার কথা নাকি?
সেখানে একজন লিখেছিলেন, দিন শেষে মানুষ হতে পারলাম কিনা সেটাই বিবেচ্য হওয়া উচিত, সফলতা কিংবা স্বার্থকতা না। আসলেই কথাটা দারুণ ছিলো এবং সঙ্গত কারনেই আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সত্যি বলতে আমরা প্রতিনিয়ত শিখছি এবং চারপাশের ঘটনাবলী হতে অভিজ্ঞতা অর্জন করছি। কিন্তু সেগুলোর সঠিক ব্যবহার কি আমরা আমাদের জীবনে বাস্তবায়ন ঘটাতে পারছি? সেটা হয়তো কোন দিনও জানতে পারবো না কারন আমরা ভেতরের কথাগুলো কিংবা নিজের দুর্বলতাগুলো কখনো প্রকাশ করার চেষ্টা করি না বরং নানা অজুহাতে সেগুলোকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করি। কারন দুর্বলতা প্রকাশ করা মানে নিজের অবস্থান নিচের দিকে নিয়ে যাওয়া, এটা আমাদের সকলের চিন্তা। আর এই কারনেই আমরা কেউ নিজেদের দুর্বলতাগুলো প্রকাশ করার চেষ্টা করি না বরং মিথ্যে দ্বারা হলেও সেটাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করি।
যা বলতে ছিলাম, দিন শেষে নিজেকে মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলাম কিনা? দেখুন আপনি কোথায় চাকুরী করেন, সেটা হতে পারে দীর্ঘ পনের বছর, দশ বছর অথবা আরো বেশী সময়ের জন্য। এই দীর্ঘ চাকুরী জীবনে আপনি যথাযথ সম্মান এবং মর্যাদা নিয়ে সার্ভিস দিয়ে গেছেন, কোথায় কোন ধরনের ভুল করেন নাই। সবাই আপনার ব্যবহার এবং কাজে যথেষ্ট খুশি। তারা সবাই নানা ভাবে আপনার এবং আপনার কাজের প্রংশসা করে থাকেন। এতটুকু কিন্তিু স্বাভাবিক ছিলো। কিন্তু এই বিষয়টি অস্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে, শেষ মুহুর্তে আপনার যে কোন ধরনের অনাকাংখিত ভুলের কারনে। যেটা আমরা সবাই করে থাকি, সারাদিন যাই করি না কেন দিনের শেষে এসে নিজের আসল চরিত্রটাকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি এবং সারাদিনের কর্মফল শূণ্য হয়ে যায়।
এই দীর্ঘ সময়ে কাজের ক্ষেত্রে যতটা সচেতন ছিলেন এবং নিজের অবস্থান নিয়ে যতটা সতর্ক ছিলেন ঠিক ততোটাই অসতর্ক হয়ে গেলেন চাকুরী ছেড়ে যাওয়ার সময়। দীর্ঘ সময়ের পর আপনি চাকুরী ছেড়ে দিলেন এবং অফিস কর্তৃক আপনাকে সংবর্ধনা দেয়ার চেষ্টা করা হলো। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানের কোন একটা বিষয় আপনার পছন্দ হলো না এবং আপনি নিজেকে সংযত রাখতে পারলেন না, তাহলে বিষয়টি কি হবে? সকলের উপস্থিতিতে আপনি যখন অসংযত কোন আচরণ করলেন, সবাই যেটার স্বাক্ষী হয়ে রইল, তাদের নিকট দিনশেষে আপনার অবস্থান কোথায় দাঁড়াবে? আপনার দীর্ঘ কর্ম জীবনের কোন সুনাম কি আর অক্ষুন্ন থাকবে? দীর্ঘ কর্মজীবনে সংযত অবস্থানে থেকে নিজের অবস্থান যতটা উপরে নিয়ে গিয়েছিলেন শেষের দিনের সামান্য একটু অসংযত আচরণের কারনে সব নিমিষেই বিনাশ হয়ে গেলো, এটাই নিমর্ম বাস্তবতা।
সুতরাং একটু চিন্তা করুন, দিনের শুরুটা যতটা সুন্দর ও সতর্কতার সাথে শুরু করছেন দিনের শেষটা কি ততোটা সুন্দর ও সচেতনতার সাথে শেষ করতে পারছেন? দিন শেষে আপনি কি নিজেকে মানুষের কাতারে দাঁড় করাতে পারছেন? নিজের ব্যবহার, আচরণ কিংবা কর্ম ফলের সঠিক মূল্যায়নের জন্য বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত বলে আমি মনে করছি। আমরা মানুষ, রক্তে মাংসে মানুষ, কিন্তু তার সাথে সাথে আমাদের মাঝে বিবেক নামক একটা বস্তুর উপস্থিতি রয়েছে, সেটার কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে না পারলে দিন শেষে ফলাফলটা কখনো আমাদের অনুকূলে থাকবে না।
Image Taken from Pixabay 1 and 2
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার আবোল তাবোল জীবনের গল্প গুলোর মাঝে কিছু সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন থাকে, হয়তো সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি না। কিন্তু আপনি যে কথাগুলো বলে গেছেন চাকরি জীবনে দৈর্ঘ্য ১০-১৫ বছর সর্তকতা থাকার পরেও একটা ভুল ই সব ধ্বংসের মূল হতে পারে। আবার এটাও ঠিক বলেছেন দিনশেষে আমরা কি আসলে মানুষের কাতারে দাঁড়াতে পারছি। তবে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত সংযত এবং বিনয় হওয়া। সবচেয়ে বড় পরিচয় আমি একজন মানুষ, আর আমাকে দেখতে হবে আমি মানুষকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করছি কিনা। আমি মনে করি চাকরি জীবনটা হচ্ছে দাঁড়িপাল্লার মত, আপনি যত ভালো কাজে এই করেন না কেন আপনার ভালো কাজের পাল্লাটা ভারী হবে না। আর একটা ভুল করবেন সেই পাল্লাটাই এতটাই ভারী হবে যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য ভাইয়া।
ব্যক্তি হিসেবে আমি কেমন সেটা আমার ব্যবহারের উপর নির্ভর করবে সেটা ঠিক বলেছেন আপনি।কিন্তু আমি তো একজন মানুষ আমার ভালো লাগা থাকতে পারে, আমার খারাপ লাগে থাকতে পারে। সব সময় কি আমার ব্যবহার যে ভালো হবে এমন কথা আছে।আমি এমন অনেক ঘটনা দেখেছি যারা চাকরি জীবনে অনেক ভালো ব্যবহার করেন।অনেক ভালো পজিশনে থাকেন কিন্তু দিন শেষে দেখবেন আপনার বিরুদ্ধে অনেকে আঙ্গুল তুলে দাঁড়ায়।এই দুনিয়াতে সবাই স্বার্থপর এবং সবাই তেলবাজ।ভাইয়া আপনার সব কথাগুলো পজেটিভ কিন্তু অনেক কথা বলার ছিল অনেক লম্বা হয়ে যাচ্ছে তাই আর বলতেছি না।ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাইয়া, আপনার লেখা আবোল- তাবোল জীবনের গল্পে সব সময় ই কিছু না কিছু শিক্ষনীয় কিছু থাকে। আজও ছিল। সত্যি কথা বলতে কোন অবস্থাতেই নিজের ব্যবহারকে অ সং যত করা যাবে না। যতকিছু হোক, নিজেকে সংযত রেখে পথ চলতে হবে। যাতে করে দিনশেষে নিজের বিবেকের কাছে অন্তত নিজে পরিস্কার থাকা যায়। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমি হয়তো বুঝতে পেরেছি এই লেখাটার মূল কারণটা।আসলেই তাই,এতোদিন এর অর্জন করা সুনামটা মানুষ নিমিষেই হারিয়ে ফেলে সামান্য কিছু অভদ্রতার কারণেই।আমাদের এ দিকটায় নজর দেওয়া উচিত সবার ই।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
হাফিজ ভাই খুব সুন্দর একটি টপিক তুলে ধরেছেন ৷ আসলে একটা কথা বলে না শেষ ভালো যার সব ভালো তারা আসলে শুরুটা যেমনি হোক না শেষ টা হতে মনের মতো ৷ তাহলেই জয় হোক বা অন্য কিছু তার সফলতা ভালোই হবে ৷
আর ভাই আমি মনে করি একটি মানুষ যতই ভালো কিছু করুক না কেন ৷ তার সামান্য একটু ভুলের কারনে সে তখন খারাপের জায়গায় চলে যায় ৷ম
তবে দিনশেষে যাই হোক মানুষ হিসেবে মানুষ কে তার প্রাপ সম্মান টা দেওয়া উচিত ৷
আপনি কথাগুলো একদমই যথাযথ বলেছেন। দিনের শেষে মানুষ হওয়াটা অবশ্যই জরুরি।তবে একটা কথা বলুন তো আমি যদি কোথাও দীর্ঘ সময় ধরে নির্ভুল ভাবে কাজ করে, নিজের ভালো রেপুটেশন ধরে রেখে চলি, তবে কর্মজীবনের শেষে এসে কী একটা ভুল কখনও আমার গুড রেপুটেশন কে নষ্ট করতে পারে? পারা উচিত কি? আরে আমরা মানুষই তো। ঈশ্বর তো না। ভুল আমাদের হবে না তো কার হবে? তবে এটা ঠিক একই জিনিস বার বার রিপিটেশনকে ভুলের পর্যায়ে ফেলা যাবে না। তবে আমি মনে করি দিনের শেষ দোষগুলোকেই শুধু হাইলাইট না করে দোষগুণ দুটোকেই একসাথে বিচার করা উচিত। কারণ দুটো নিয়েই একটা মানুষ। ধন্যবাদ এত সুন্দর ফলপ্রসূ চিন্তামূলক লেখা পোস্ট করার জন্য।
প্রশ্নটা যথার্থ, এটা নিয়ে কোন দ্বিমত নেই। কিন্তু কি জানেন তো, আমরা সমাজে বসবাস করি আর সেই সমাজের রীতিনীতিগুলোকে উপেক্ষা করতে পারি না। যার কারনে সামান্য ভুলের অজুহাতে অতীতের সকল কন্ট্রিবিউশন নিমিষেই সবাই অস্বীকার করে ফেলে।
তাহলে মনে করতে হবে সেই মানুষগুলো স্বার্থসিদ্ধির জন্যই রয়েছে। টার্গেট ফুলফিল করাটাই তাদের আসল উদ্দেশ্য। মানুষ কে মানুষের বদলে যন্ত্র হিসেবে দেখলে মানবিকতা, বিবেক সবই বিসর্জন দিতে হয় তাহলে।