গল্প: ভৌতিক পাহাড় শিলডং (পর্ব: ০৫) || Story : The ghostly mountain Shildong
(পর্ব: ০৫) |
---|
অদ্ভুত দেখতে সে বিশালাকার ভয়ংকর দানব ছুটে আসছে মংগুলাদের দিকে আর ওরা দম বন্ধ করে রাখার চরম খেলাটা খেলছে। মংগুলা আগেই ওদের সতর্ক করে দিয়েছে যাই ঘটুক দানব সামনে আসলে চোখ এবং নিঃশ্বাস বন্ধ রাখতেই হবে। কারন মংগুলা জানে ঐ ভয়ংকর দানব দেখলে আতংকে আর দম বন্ধ করে রাখা যাবেনা, এতে বিপদ ঘনিয়ে আসবে। ক্রমশ ভয়ংকর গর্জন ছড়িয়ে দানব এগিয়ে আসছে আর বোঝাই যাচ্ছে তার খাওয়ার সময় হয়ে গেছে। দানবটা জীবন্ত প্রাণী খেতে বেশি পছন্দ করে তাই প্রথমেই ছুটে এসেছে মংগুলাদের দিকে, অথচ কিছু শস্য আর ফলমূল থাকলেও তার সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই।
প্রথমেই মংগুলাকে সজোরে ধাক্কা মারলো এবং বিশালাকার নাক দিয়ে তাকে পর্যবেক্ষণ করতে থাকলো খাবারটা তাজা কিনা। মংগুলা তার পূর্বের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে মৃত মানুষ হয়ে রয়েছে। প্রানীটা কিছুক্ষণ দেখার পর গর্জন আর হুংকার ছাড়তে লাগলো, এরপর আদ্রিমের কাছে ছুটে গেলো কিন্তু এবারো সে হতাশ হয়ে হুংকার ছাড়ছিল। এই হুংকার বেশ তীব্র এবার শেষে রোবেজের কাছে আসলো পরিক্ষা করতে। যখন তার নাক কাছে আনলো, রোবেজ ভয়কে আর জয় করতে পারলো না। মুহূর্তের মধ্যে সে ভয়ে চিৎকার করে উঠলো। দানবটা এক নিমিষেই তাকে তার তীক্ষ্ণ নখ দিয়ে মাঝ বরাবর ছিঁড়ে রক্ত খাওয়া শুরু করলো। মুহূর্তের মধ্যে নীরব হয়ে গেছে রোবেজের কন্ঠ। মংগুলা জানে রোবেজের ভাগ্যে কি ঘটছে, সে এখন মৃত। বন্ধুর এই মৃত্যুর বদলা সে নেবেই তাই সে তার মৃত্যুর শীতল অভিনয় জারি রাখলো।
মনে মনে আদ্রিমকে ধন্যবাদ দিয়েছে মংগুলা কারন সে তার কথা রাখতে সক্ষম হয়েছে। রোবেজের শরীরের প্রতিটি অংশ খেয়ে ধীরে ধীরে প্রানীটা শান্ত হয়ে এসেছে। এবার সে কোথাও একটা যাচ্ছে মনে হলো তার কাছে। মংগুলা কান খাড়া করে তার পায়ের ধাপ গুনে চলেছে। কারন সে এখন চোখ খুলতে পারবেনা, তাহলে খেলা শেষ। বিশ কদম এগিয়ে যাওয়ার পর সে পানিতে ডুব দেয়ার মতো আওয়াজ পেলো। মংগুলার তৃতীয় চোখ বলছে সে হয়তো রোবেজের রক্তে ভেসে যাওয়ার পর হয়তো পানিতে নিজেকে পরিষ্কার করত গিয়েছে। আবার এমনও হতে পারে যেখানে প্রান রয়েছে সেখানে সবকিছু নিরাপদ রয়েছে কিনা দেখতে গেছে।
মংগুলার অনুমান সঠিক, সেখানে একটি গুপ্ত কুয়া রয়েছে আর তার ৪০ ফুট নিচে একটি বড় ঝিনুকের মধ্যে রয়েছে প্রানীটার হৃদপিন্ড। ঝিনুকটার উপর রত্ন খচিত ছুড়ির আকৃতির জায়গা রয়েছে যখন দানবটা তার সেই ছুড়ি রেখেছে তখনই তা খুলে কিছুটা আলো ছড়িয়ে তার হৃদপিন্ড দেখিয়ে দিল। মূলত এই ঝিনুকের দুটি চাবি বা ছুড়ি ছিল। রগুলা এবং মংগুলার বাবা যখন এই দানবের সাথে যুদ্ধ করছিল তখন একটি চাবি তার কাছ থেকে পরে যায় এবং এটি রগুলা উদ্ধার করে তার সাথে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল। আর এই চাবিটি এখন মংগুলার সাথে রয়েছে।
দানবটি তার হৃদপিন্ড ভালো এবং অক্ষত দেখতে পেয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে ছুড়িটি ঝিনুকের উপর থেকে সরিয়ে নিলো। মুহূর্তের মধ্যে ঝিনুকটি বন্ধ হয়ে গেল। এরপর সে আবার পানি থেকে উঠে আসলো এবং তার ঘুমানোর জায়গায় এসে ঘুমিয়ে পরলো। মংগুলার মস্তিস্কে তার গতিবিধির অংক চলছেই। তার অংকের ফলাফল হচ্ছে ঐ পানির মধ্যে রয়েছে সমস্ত রহস্যের সমাধান। অনেকক্ষণ ঐ দানবের জোড়ে নাক ডাকার শব্দ ছাড়া আর কোন শব্দ আসছে না। সে বুঝতে পারলো গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পরেছে সে কিন্তু তবুও সে নড়বে না সেখান থেকে কারন জানে এখনো বিপদ কাটেনি কারন রাত যতক্ষন রয়েছে দানবের হাতে ক্ষমতা রয়েছে। অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে হয়তো মংগুলার ঘুম আসেনি এক মুহুর্তও তার ভেতরে শুধুমাত্র প্রতিশোধের আগুন জ্বলছে। হঠাৎ তার চোখে আলোর ঝলকানি দেখতে পেল, এবার সে ধীরে ধীরে চোখ খুলেছে। দেখলো এটা সরাসরি কোন আলো নয়, আলোটা দূরে কোথাও পরেছে কিন্তু দেয়ালের স্বচ্চ পাথরের উপর এমন কিছু রয়েছে যা প্রতিবিম্ব তৈরি করে আলো ছড়িয়েছে পুরো গুহায়। একমাত্র যেখানে দানবটা রয়েছে সেই জায়গা আবছা অন্ধকারে ঢেঁকে রয়েছে।
এবার দুফোঁটা গরম অশ্রু তার চোখ গড়িয়ে পড়লো তার সামনে কিছুটা দুরে রক্তাক্ত জায়গা দেখতে পেল। এটাই রোবেজের শেষ স্মৃতি। চোখ তার রক্তিম হয়ে উঠছে, এই বুঝি চোখ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পরবে। না আজকেই হবে এই দানবের শেষ দিন। সে আদ্রিমের মুখ চেপে ধরে জাগিয়ে দিল। আদ্রিম বুদ্ধিমান মানুষ সে ধীরে ধীরে চোখ খুলেছে। আর তাকিয়ে মংগুলার লাল মুখটা দেখালো, তাকিয়ে আছে সে রক্তাক্ত জায়গাটার দিকে। তার চোখে জল গড়িয়ে পড়ছে বন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য। এবার মংগুলা আদ্রিমের হাত ধরে একটা চাপ দিয়ে ইশারায় বোঝালো ঐ দানবের আজ
শেষ দিন। মংগুলার ইশারা এবার খুব সাবধানে চলতে হবে কোন আওয়াজ করা যাবেনা এবং তাকে অনুসরণ করে চলতে বললো। তার অংকটা ঠিক ছিল, দানবকে ছেড়ে কিছুটা সামনে এগিয়ে আসতেই দেখা পেলো সেই গভীর কুয়ার। অবাক করা ব্যাপার কুয়াটা অন্ধকার থাকার কথা কিন্তু ভেতর থেকে কেমন নীলাভ আলো আলোকিত করে রেখেছে পুরোটা। এবার আদ্রিমকে ইশারায় বোঝানো হলো সে এখানে পাহাড়ায় থাকবে এবং তার কোমরে দড়ি বেঁধে দিয়েছে যদি দড়িতে টান পরে তাহলে তাকে টেনে তুলতে হবে দ্রুত। আর তাকে জানিয়ে দেয়া হলো যাই ঘটুক দড়ি শুধুমাত্র জোরে টানতে হবে কোনদিকে তাকানো যাবেনা। ধীরে ধীরে মংগুলা সেই নীলাভ ঠান্ডা পানিতে নেমে গেলো।।।
https://steemitwallet.com/~witnesses
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আপনার গল্পটি কিন্তু এমনিতেই খুবই ভালো ছিল। আমি পড়ার জন্য অধীর আগ্রহে বসে ছিলাম। এটা শুনে একটু বেশি খারাপ লাগলো যে মংগুলার বন্ধু আর নেই। মঙ্গলা কি পারবে সেই দানব টিকে হারিয়ে দিতে। যাই হোক আমি কিন্তু পরের পর্ব দেখার অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করছি খুবই তাড়াতাড়ি পরের পর্ব নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হবেন। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই গল্পটি পড়ার জন্য।
জি খুব তাড়াতাড়ি শেষ পর্ব নিয়ে হাজির হবো।
ভালো থাকুন ভাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
https://twitter.com/emranhasan1989/status/1604382807228178432?t=vafxOIy-SxO08pfqlyBFAg&s=19
ভেবেছিলাম এই পর্বে গল্পটা শেষ হবে। কিন্তু দেখছি এখনো শেষ হলো না। রোবেজের মৃত্যুটা ভীষণই খারাপ লাগলো।সে মংগুলার কথা শুনে নিঃশ্বাস বন্ধ করে থাকতে পারলো না। আর নিজের প্রাণ হারালো। কিন্তু আদ্রিম মংগুলার কথা অনুসরণ করে ঠিক মতোই থাকতে পেরেছে।রোবেজের রক্তাক্ত শরীর থেকে মংগুলা আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারল না। কিন্তু এবার কি ওই দানবকে মারতে পারবে? আবারো সেই প্রশ্নটা থেকে গেল।
অনেক ধন্যবাদ আপু আমার গল্পটি পড়ার জন্য। হ্যা রোবেজের ভুলের মাশুল তাকে দিতে হয়েছে। সে দানবের হাতে প্রান দিয়েছে। সামনের পর্বে সবকিছু পরিষ্কার হবে।
ভাইয়া ভয়ংকর ভৌতিক গল্পের পাচঁ নাম্বার পর্বে এসে রোবজ শেষ হয়ে গেল। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত বাকি দুইজন দানবকে মেরে তারা জীবিত ফিরে যেতে পারে কি না। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ ভাই।
সামনের পর্ব আসছে খুব তাড়াতাড়ি।