গল্প: ভৌতিক পাহাড় শিলডং (পর্ব: ০৪) || Story : The ghostly mountain Shildong

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
গল্প: ভৌতিক পাহাড় শিলডং
(পর্ব: ০৪)

slavic-gods-4522890_640.jpg

সংগ্রহশালা

প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
তৃতীয় পর্ব

অবশেষে ঐ ভৌতিক শিলডং পাহাড়ের সেই দানবের খাবার হয়ে মংগুলাদের যাওয়ার সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ওখানে যাওয়ার আগে মংগুলা রোবেজ আর আদ্রিম তিনজন নিজেদের মধ্যে একটি ছোট্ট আলোচনা সেরে নিল। এই তিনজন রক্তের কেউ না হলেও একে অপরের রগ রেষা সব জানে। মংগুলার চোখ ভীষণ লাল হয়ে আছে। আসলে তার মানসিক অবস্থা বাকী দুইজন বুঝতে পারছে । তার বাবাকে ঐ দানব মেরে ফেলেছে তাই তার ভেতরটা হয়তো ফেটে যাচ্ছে তবে কাউকে বলতে পারছেনা। মংগুলা বলা শুরু করলো দেখ তোদের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে, আমি জানি আমরা কোন একটা বুদ্ধি বের করে ঐ দানবকে মারবোই। এতো দিন আমরা শুধুমাত্র দুষ্টুমি আর আনন্দের জন্য যা করেছি এখন ঠিক সেই বুদ্ধিগুলো সেখানে ফলাবো।

শোন আমরা ওখানে কখনও মুখে কথা বলবো না, একমাত্র ইসারা আর ইঙ্গিতে কথা হবে আমাদের। যেভাবে আমরা এলাকার মানুষকে আমাদের ছলচাতুরির মাধ্যমে বিভ্রান্ত করতাম, ঠিক তেমনি সেই দানবকে বিভ্রান্ত করে শেষ করে দেবো। বুঝেছিস তোরা? চেঁচিয়ে উঠলো মংগুলা। অবাক হয়ে তাকিয়ে বাকী দুজন সায় দিল। দেখ দানবটা প্রতি দশদিন পর পর খাবার খায়। আমাদের সাথে কিছুটা খাবার পাঠানো হবে, প্রথম ধাক্কাতেই যাতে আমরা তার খাবার হয়ে না যাই শুধু মাত্র মরার মতো পরে থাকতে হবে। আমি তোদের শিখিয়েছি কিভাবে এই অভিনয়টা করতে হয়, তাই এটাই হবে আমাদের প্রথম অস্ত্র। জানিস তো তোরা ও মরা খাবার খায় না। এরপর ভোরের আলো ফোটার পর আমাদের অভিযান শুরু হবে নিঃশব্দে। ওর প্রান কোথায় লুকোনো রয়েছে সেটাই বের করতে হবে।

মংগুলাদের আলোচনা শেষ হয়েছে। এদিকে মোহম ওদের যাওয়ার সব বন্দোবস্ত করে ফেলেছি। শেষবারের মতো গ্রামের মানুষের কাছে সবাই বিদায় নিয়েছে এই সাহসী যুবকের দল। আর মোমহ শুধু বলেছে তোমাদের উপর আমার বিশ্বাস রয়েছে। ওদের অজানা আর ভয়ংকর পথচলা শুরু হলো যেখানে রয়েছে একমাত্র বন্ধুত্বের শক্তি আর বিশ্বাস। সন্ধ্যার আগেই ধীরে ধীরে এগিয়ে গিয়ে শিলডং পাহাড়ের ঐ গুহার সামনে হাজির হলো মংগুলারা আর মোহমের কয়েকজন লোক। তবে এবারের পথচলা শুধুমাত্র মংগুলাদের। ধীরে ধীরে আলোক মশলা আর খাবার নিয়ে যতই ভীতরের দিকে যাচ্ছে ততই হিম শীতল অনুভূতি পেতে শুরু করেছে তারা। কেমন একটা স্যাঁত স্যাঁতে এবং ভয়ানক একটি পরিবেশ। মনে হচ্ছে এই বুঝি ভৌতিক কিছু তাদের উপর আছড়ে পড়বে।

dinosaur-2548365_640.jpg

সংগ্রহশালা

হঠাৎ যেন বেশ জোরে সোরে গোঙানির মত আওয়াজ পেতে শুরু করেছে তারা। মনে হচ্ছে বিশাল কোন এক দৈত্য বেশ ঘুমের ঘোরে রয়েছে। মংগুলারা বুঝতে পারলো ওরা খুব কাছাকাছি রয়েছে ঐ দানবের। মংগুলা ইশারা দিল ধীর গতিতে এগিয়ে যেতে হবে, আর দুটো মশাল নিভিয়ে দিতে বললো। ও বুদ্ধি করে একদমই কম আলো ছড়ায় এরকম একটি মশাল হাতে নিয়ে এসেছে। দুটো মশাল নেভানোর পর আলো অনেক কমে গেছে। এবার ওরা একদমই দানবের কাছাকাছি চলে এসেছে। এ কি দেখছে ওরা এক ভয়ংকর প্রানী ঠিক সামনে রয়েছে। অর্ধেক শরীর তার মানুষের মতো কিন্তু ভীষণ ভয়ংকর মুখের আকৃতি, দুটো দাঁত বেশ বড় যা বেরিয়ে আছে মুখের পাশ দিয়ে। আরো অবাক হলো ঈগলের মতো তার তীক্ষ্ণ নখ রয়েছে যা দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে খাবার ছিঁড়ে দুভাগ করে খেয়ে ফেলতে পারবে। এককথায় ছোটখাটো পাহাড় আকৃতির দানব আর ভীষণ ভয়ংকর দেখতে।

মংগুলা আগেই বুঝেছিল তাকে শক্তি দিয়ে হারাতে পারবে না কিন্তু বুদ্ধি দিয়ে ঘায়েল করতে হবে। বাকি দুজনকে ইসারায় বুঝালো সাহস রাখতে হবে। এই ঘন অন্ধকারে তারা কিছুই করতে পারবেনা দানবের। তাদের মরার মতো অভিনয় শুরু করতে হবে এখনি না হয় যেকোন সময় এই দানব ঘুম থেকে উঠে যেতে পারে। এবার দানবের থেকে বেশ কিছুটা দূরে সামনের দিকে ফলমূল আর শস্য রেখে তারা আলো নিভিয়ে মরার ভান করে পরে রইলো। এখানে মূল ঘটনা যা ঘটবে তা হলো যখন দানব কাছে আসবে যে যার মতো লম্বা সময় দম বন্ধ করে পরে থাকবে, তবে এখানকার আবহাওয়া ঠান্ডা হওয়াতে তাদের শরীর এমনিতেই ঠান্ড হয়ে যাবে। এখন শুধু মাত্র দম বন্ধ রাখার খেলাটা খেলতে হবে। অবাক হলো মংগুলারা আলো নেভানোর পরপর কেমন যেন নীলাভ আলো ছড়িয়ে পরেছে সবদিকে, না গুহাটা পুরো অন্ধকার না বেশ বোঝা যাচ্ছে। আর এই আলোতেই তাদের মানিয়ে নিতে হবে। হঠাৎ গোঙানির আওয়াজ বন্ধ হয়ে গর্জনের মতো শুরু হয়েছে। মংগুলারা তার বন্ধুদের দিকে ইঙ্গিত দম বন্ধ করো। ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে সেই বিশাল দানব ওদের দিকে।

" চলবে "

Black and White Modern Company Presentation.gif

banner-abbVD.png


আমাদের উইটনেসকে সাপোর্ট করুন

"Please support Bangla Witness"

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png

https://steemitwallet.com/~witnesses



VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 2 years ago 

টানটান উত্তেজনা। মংগুলার চোখে প্রতিহিংসার আগুন জ্বলছে। ওর বাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ কি ও নিতে পারবে? ও যা চালাক চতুর মনে তো হচ্ছে এই দৈত্যকে মেরেই দম ফেলবে।এবার দেখার বাকি দুজন কতটা মরার মত ভান করে পড়ে থাকতে পারে। আবার অপেক্ষা পরের পর্বের।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপু। আসলে মংগুলার দম আছে আর বাকি দুজনের রয়েছে মংগুলার প্রতি বিশ্বাস। দেখা যাক সব জট খুলবে সামনের পর্বে।

 2 years ago 

ওরে ভাই একেবারে হরর মুভির মতো অনূভুতি ছিল শেষদিকে পড়ার সময়। কী হয় কী হয় এমন একটা অনূভুতি। ওরা দানবা টাকে হত‍্যা করতে গেছে পরিকল্পনা অনুযায়ী। জানি না কী হবে। এবং অনেকটা রুপকথা ভিওিক গল্প এটা।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই গল্পটি পড়ার জন্য। সামনের পর্ব পড়লে আশাকরি আরো মজা পাবেন।

 2 years ago 

অর্ধেক শরীর তার মানুষের মতো কিন্তু ভীষণ ভয়ংকর মুখের আকৃতি, দুটো দাঁত বেশ বড় যা বেরিয়ে আছে মুখের পাশ দিয়ে

পাহাড়ের মধ্যে এধরনের ভয়ংকর জিনিস থাকে। সবাই দানবের ভয়ে মরার অভিনয় করেছে জেনে কেমন যেনো ভয় ভয় কাজ করছে। দেখা যাক পরের পর্বে কি হয়। আপনার গল্প ভালো ছিলো। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

ধন্যবাদ লিমন পরের পর্ব আরো দারুন হতে যাচ্ছে।
গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই।

 2 years ago 

দানবের শরীরের আকৃতির কথা শুনেই তো ভীষণ ভয় লাগলো। কিন্তু মংগুলা ঠিকই বলেছে, এরকম দানবদের শক্তি দিয়ে আঘাত করতে না পারলেও বুদ্ধি দিয়ে আঘাত করতে হবে। বেশিরভাগ সময় বুদ্ধিটাই কাজে লাগে। কিন্তু এত বড় পাহাড় আকৃতির দানবকে কিভাবে কি করবে বুঝতে পারছি না। যেহেতু দানব আস্তে আস্তে তাদের দিকে এগিয়ে আসছে। এমন সময় মংগুলা কি করবে বুঝতে পারছি না। আমার তো ভয় লাগতেছে আদৌ কি দানবকে কিছু করতে পারবে। পরের পর্ব দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপু গল্পটি পড়ার জন্য।
পরের পর্বে সবকিছুর উত্তর পাওয়া যাবে।
খুব তাড়াতাড়ি পরের পর্ব আসছে।

 2 years ago 

খুবই ভয় লাগলো যখন আপনি এরকম একটি ভয়ংকর দানবের কথা বললেন। আমি এই গল্পটি যেভাবে মনোযোগ দিয়ে পড়ছিলাম আমার তো মনে হচ্ছিল দানব টি আমার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। এরকম ভয়ংকর গল্প গুলো পড়তে ভীষণ ভয় লাগে। মংগুলার ভেতর যে রকম প্রতিশোধের আগুন জ্বলছে মনে হচ্ছে সে দানব টিকে ধ্বংস করতে সফল হবে। পরের পর্বে কি আসবে তারই অপেক্ষায় আছি। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে পড়ার পর্ব নিয়ে হাজির হবেন।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই গল্পটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য।
পরের পর্ব আসছে খুব তাড়াতাড়ি।

 2 years ago 

আরেকটু বলে শেষ করলে ভাল হতো। এখন তো আর ঘুমাতে পারবো না কি হবে মংগুলারা আর তার বন্ধুদের। যায় হোক অপেক্ষা করতেই হবে। আশা করি খুব তারাতারি পরের পর্ব শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 76491.72
ETH 3050.14
USDT 1.00
SBD 2.62