গল্প: ভৌতিক পাহাড় শিলডং (পর্ব: ০২) || Story : The ghostly mountain Shildong

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
গল্প: ভৌতিক পাহাড় শিলডং (পর্ব: ০২)

mountains-4549402_640.jpg

সংগ্রহশালা

👉 প্রথম পর্ব এখানে


আজোরা গ্রামে সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল কিন্তু হঠাৎ কি থেকে কি হলো সোংজোয়া নদী ফুলে ফেঁপে ওঠেছে। সমস্ত গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে, আর এতটাই তাড়াতাড়ি পানি ঢুকেছে কোন মতে মংগুলারা শিলডং পাহাড়ের পাদদেশে কিছুটা উঁচু জায়গায় অবস্থান নিতে সক্ষম হয়। তবে বন্যার পানি এতো দ্রুত প্রবেশ করেছে যে এতো গবাদি পশু সাথে আনা কোন মতেই সম্ভব হয়নি, শুধুমাত্র হাতে গোনা কয়েকটি আনতে সক্ষম হয়েছে তারা। মাঠের ফসল, গোলার ধান সহ বাড়িঘর সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে বন্যার জল। তারা কখনোই সোংজোয়া নদীর এই বিরুপ আচরণ দেখেনি, সবাই বলছিল দেবতা তাদের উপর রুষ্ট হয়েছেন। সেজন্য এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পরেছে তারা। সবকিছু মিলিয়ে সবার মধ্যে হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে। কিছু মানুষ তো সব হারিয়ে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে।

গ্রামের মোহম রগুলা সবাইকে এই বিপদে শান্ত থাকতে বলেন। তার অনুমান বলছে যেহেতু হঠাৎ পানি এসেছে তাহলে হঠাৎ পানি চলেও যাবে। সত্যিই তাই হলো পানি হঠাৎ নেমে গেছে তবে তাদের সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। গবাদিপশু ফসল শস্য কিংবা খাবার কিছুই নেই তাদের কাছে। কিন্তু আজোরা গ্রামের মানুষ হাল ছেড়ে দেওয়ার পাত্র না। সবাই মিলে প্রথমেই খাবার আর থাকার আশ্রয় ঠিক করতে লাগলো। এখানে মোহম রগুলা পুরো গ্রামের মানুষকে তিনটি ভাগে ভাগ করে দিলেন। একটি দল ঘরবাড়ি তৈরির কাজ করবে, একটি দল খাবার সংগ্রহ করবে এবং আরেকটি দল যেখানে রয়েছে স্ত্রী গন তারা বড় বড় পাত্রে সবার জন্য একসাথে খাবার রান্না করবে। এই তিনটি দলকে পরিচালনা করার জন্য মংগুলা, আদ্রিম আর রোবেজকে দায়িত্ব দেয়া হলো।

slavic-gods-4522890_640.jpg

সংগ্রহশালা

ওদের খুব দ্রুত কাজ করতে হবে কারন সন্ধ্যা হতে আর দেরি নেই। তিনটি দল মংগুলাদের নেতৃত্বে সন্ধ্যার আগেই মোটামুটি সবকিছুই গুছিয়ে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে এখন। এদিকে সন্ধ্যার পর শিলডং পাহাড় থেকে বেশ গর্জন আর হুংকার ছাড়ছিল কোন অদৃশ্য কিছু যা কেউ কখনো দেখিনি কিন্তু ভয়ংকর কিছু। আর সে জানান দিচ্ছিল অমাবস্যা হতে দেরি নেই আমার খাবার চাই। মোহম রগুলার চোখে মুখে চিন্তার ভাঁজ কারন কি খাবার পাঠাবে ঐ ভৌতিক পাহাড়ের ভৌতিক দানবের জন্য? ওদের তো সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে সংজোয়া নদী। মোহম রগুলা রাতে তার সমস্ত গ্রামের মানুষকে নিয়ে আলোচনায় বসলেন। তিনি জানালেন অমাবস্যা আসতে আর মাত্র দু'দিন বাকি, আর এদিকে শিলডং পাহাড়ে খাবার পাঠাতে হবে। তাদের কাছে মাত্র কয়েকটি গবাদি পশু রয়েছে, যা দিয়ে দিলে পুরো গ্রামের মানুষ চাষাবাদ করতে পারবেনা এবং না খেয়ে থাকতে হবে। তাই তিনি একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এবার ভৌতিক পাহাড়ে খাবার হিসেবে তিনি নিজে এবং ছোট্ট একটি কমজোরি প্রানী যাবে। যাতে গ্রামের মানুষ কারোর কোন ক্ষতি না হয়। এই শুনে সবাই একসাথে হায় হায় করে উঠলো, কারন এই মানুষটি বৃদ্ধ হতে পারে কিন্তু বিচক্ষণ মানুষ। তিনি আজীবন আজোরা গ্রামের মানুষকে আগলে রেখেছেন। কেউ এই প্রস্তাব মেনে নিতে পারছেনা।

এবার মংগুলা, আদ্রিম আর রোবেজ তিনজনের মধ্যে চোখাচোখি শুরু হয়ে হয়েছে। এরমধ্যে মংগুলা মাথা নাড়িয়েছে, এরপর আদ্রিম, তার মানে রোবেজ বুঝে গেছে মংগুলা কি বোঝাতে চাইছে। সে মংগুলাকে বললো বাঁচি আর মরি তোদের সাথে আছি। হঠাৎ মংগুলা উঠে দাঁড়িয়ে বললো মোহম কথা বলার অনুমতি চাইছি। মোহম রগুলার বললো বলো কি বলতে চাও? মংগুলা হেসে বলো উঠলো এবার খাবার দুটো নয় তিনটি যাবে। সবাই তো অবাক কি বলছে এই ছেলে। এবার খাবার হিসেবে আমরা তিন বন্ধু যাবো, কারোর আপত্তি আছে? সবার একে অপরের সাথে কানা ঘোসা করতে লাগলো। এবার রগুলা বলে উঠলো তোমরা গ্রামের শক্তিশালী যুবক আমি তোমাদের হারাতে চাইনা, আর আমার অবর্তমানে তোমরাই তো এগিয়ে নিয়ে যাবে এই আজোরাকে।

এবার মংগুলা বলে উঠলো মোহম আমাদের অনুমতি দিন আর আমাদের উপর আস্থা রাখুন। আমরাও দেখতে চাই ঐ শিলডং পাহাড়ের কি এমন আছে যা আমাদের বছরের পর বছর কষ্ট দিয়ে যাচ্ছে। এবার এর অবসান চাই, হয় জীবন দেবো না হয় আজোরাকে মুক্ত করবো ঐ ভৌতিক পাহাড়ের অভিশাপ থেকে। পুরো গ্রামের মানুষ দেখছিল এই যুবকের চোখের আগুন।

"চলবে"

banner-abbVD.png


আমাদের উইটনেসকে সাপোর্ট করুন

"Please support Bangla Witness"

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png

https://steemitwallet.com/~witnesses



VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 2 years ago 

টানটান উত্তেজনাতে দ্বিতীয় পর্ব শেষ হল। অপেক্ষা করছি পরের পর্বে। ওরা খাবার রূপে গিয়ে তারপর কী খেল দেখাবে? নতুন কিছু আবিষ্কার করবে নাকি কোন বিপদের সম্মুখীন হবে! কত প্রশ্ন ঘুরছে মাথায়।

 2 years ago (edited)

ধন্যবাদ আপু চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
সামনের পর্বে বড় চমক রয়েছে।

তিন বন্ধু মিলে কিভাবে বিপদ থেকে রক্ষা করবে সবাইকে সেটা দেখারই অপেক্ষা। গল্পের প্রথম দিকটাতে পড়ে মনে হচ্ছিল বন্যা কবলিত মানুষের জীবনের গল্প পড়ছি। তবে শেষের দিকটা বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে। খুব সম্ভবত এরকম একটা গল্প আমি আগে কোথাও পড়েছি। বেশ ভালো লিখেছেন আপনি।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই আমার গল্পটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভীষণ খুশি হলাম।

 2 years ago 

আজোরা গ্রামে তাহলে বিপদ সব দিক দিয়েই আসলো। একে তো বন্যা সব ধংস করে দিয়েছে আবার ভৌতিক শিলডং পাহাড় ও খাবার চাচ্ছে। তবে মংগুলা, আদ্রিম আর রোবেজ তিনজন মিলে যে সিধান্ত নিতে যাচ্ছে কিছু একটা রহস্য বের করেই ছাড়বে। দেখি পরের পর্বে কি আসে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 76383.30
ETH 3039.98
USDT 1.00
SBD 2.62