ছোটো গল্প #২ – মদনবাবুর কিপ্টেমি

in Incredible India8 months ago (edited)

title.png

কৃপণ হিসেবে মদনবাবুর ভালই সুনাম আছে দত্তপুকুরে। হ্যাঁ,মদনবাবু নিজের কিপ্টেমিকে দুর্নাম না সুনামের চোখেই দেখেন এবং এ নিয়ে তার ঈষৎ গর্ববোধও আছে বৈকি। দত্তপুকুরের স্টেশন রোড লাগোয়া এই পাড়ায় তিনজন মদন রয়েছেন। একজন উকিল মদন যার ভালো নাম মদন বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে যে ওকালতি ওনার পেশা। একজন সব্জী মদন যিনি স্টেশন রোডে সব্জী বিক্রি করেন, ভালো নাম মদন সাহা। আর রয়েছেন আমাদের কিপটে মদন যার পুরো নাম মদন কুমার সরকার। মদনবাবু বারাসাত পোস্ট অফিসে হেড ক্লার্ক পদে কর্মরত ছিলেন। এক বছরও হয়নি তিনি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন।

তা আমাদের এই কিপটে মদনবাবু যিনি পাড়ায় মদনদা নামেই অধিক পরিচিত নিজের ঘরে চিনির বংশ পর্যন্ত ঢুকতে দেন না। তিনি তার গিন্নীকে বুঝিয়েছেন যে চিনির কোনো উপকার নেই, সমস্তটাই অপকার আর দুজনেরই তো বয়স হচ্ছে তাই চিনি খেলে সুগার হবে। তার স্ত্রী রমলা বৌদি সবই বোঝেন, প্রায় ২৫ বছর ধরে তো ওনার সাথে সংসার করছেন, কিন্তু মুখে কিছু বলেন না। রমলা বৌদি কিন্তু মদনদার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। প্রথম পক্ষের স্ত্রী ওনাকে বিয়ের ছয় মাসের মধ্যেই ডিভোর্স দিয়ে দেয়। লোকমুখে শোনা যায় বিয়ের রাতে উনি ওনার প্রথম পক্ষের স্ত্রীকে যে আংটিটা পড়িয়েছিলেন সেটা লোহার তার বা গুণার উপর সোনার জল করা ছিল।

মদনদা নিজের ঘরে চিনি ছাড়া লিকার চা খেলেও বাপ্পার চায়ের দোকানে কিন্তু উনি বরাবর চিনি দিয়ে দুধ চা খান। তা একদিন বাপ্পা ওনাকে ভুল করে বলে ফেলেছিল যে মদনদা বয়স তো হচ্ছে, এবার চিনি দেওয়া দুধ চা ছেড়ে লিকার চা খাওয়া শুরু করুন। জবাবে মদনদা তখন বলেন তোর দোকানে দুধ চা আর লিকার চা দুটোরই দাম ৫ টাকা, দুধ আর চিনি কি মাগনায় আসে, পয়সা দিয়ে কিনতে হয় না? এরপর বাপ্পা আর ওনাকে কোনদিনও ঘাটায়নি। মদনদা অবশ্য চায়ের দাম ৪ টাকার বেশি দেন না। এর পিছনে কারণও রয়েছে। উনি লোকের ফেলে দেওয়া চায়ের ভাঁড় কুড়িয়ে নিয়ে ওই ভাঁড়ে চা খান। এই জন্য উনি বাপ্পাকে চায়ের দাম ১ টাকা কম দেন। তাই বলে ভাববেন না যে মদনদা স্বাস্থ্য সচেতন নন। উনি প্রথমে এঁটো চায়ের ভাঁড় কুড়িয়ে নিয়ে পরিষ্কার জল দিয়ে ধোন, তারপর চায়ের দোকানের গরম জল দিয়ে ওই চায়ের ভাঁড়টাকে আরেকবার ধোন। এরপর উনি ওই ভাঁড়ে করে চা খান।

তা এই মদনদা নিজের মনে দীর্ঘদিন ধরে একটা স্বপ্ন পুষে রেখেছেন সেটা হলো রিটায়ারমেন্টের পর তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে এক মাসের জন্য ইউরোপ ট্যুরে যাবেন। তার এই স্বপ্নের কথা শুধু তার স্ত্রী মানে আমাদের রমলা বৌদি জানেন। মদনদা এখনো ঠিক করে উঠতে পারছেন না কিভাবে ইউরোপ ভ্রমণের বন্দোবস্ত করবেন। অনেকগুলো টাকা খরচ হয়ে যাবে ভাবলেই তার মাথা ঘুরতে থাকে আর হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসে।

2.jpgPhoto Credit: Pixabay

একদিন মদনদা প্রতিদিনের মতো বাজারে গেছেন বেলা বারোটা নাগাদ সস্তায় কিছু চুনা মাছ আর সব্জী কিনবেন বলে। কেনাকাটি হবার পর বাড়ী ফিরে তিনি শুনলেন মেয়ে, জামাই নাতিকে নিয়ে আগামীকাল তাদের বাড়ী আসছে। ক্রিসমাস উপলক্ষে নাতির প্র্রি-নার্সারি স্কুল ৭ দিন ছুটি, তার সাথে জামাইও অফিস থেকে সাত দিনের ছুটি ম্যানেজ করতে পেরেছে। শুনে তো তিনি মনে মনে প্রমাদ গুনলেন। এত খরচের ধাক্কা সামলাবে কে? এমনিতেই তার পেনশন এখনো চালু হয়নি। তাছাড়া তিনি জামাই এর উপর মনে মনে বেজায় খাপ্পা হয়ে আছেন। তিনি বাড়ীর এক তলায় একটা গ্যারেজ বানিয়ে ছিলেন যে ভাড়া দিয়ে মাস গেলে কিছু এক্সট্রা টাকা রোজগার করবেন। তা জামাই বাবাজীবন একটা গাড়ি কিনে নিয়ে শ্বশুরমশায়ের গ্যারেজে রেখে দিয়েছে। কি না কর্মের খাতিরে তাকে বারবার এক শহর থেকে অন্য শহরে যেতে হয়, সেই কারণে গাড়ি আপাতত শ্বশুরমশায়ের গ্যারেজেই থাক। তা জামাই এর কাছ থেকে তো আর ভাড়া চাওয়া যায় না।

দেখতে দেখতে মেয়ে, জামাই আর নাতি সকলে চলে আসলো। নাতি তো দিদুনকে পেয়ে আর ছাড়তেই চায় না। রোজ মাছ, মাংস এবং আরো অনেক রকমের পদ রান্না হতে লাগলো। এমনকি রমলা বৌদি একদিন হরেক রকমের পিঠা বানিয়ে সকলকে খাওয়ালেন কেননা তার জামাই পিঠা খেতে বড় ভালোবাসে। মদনদা শুধু গোমড়া মুখে দিন গুণতে লাগলেন যে কবে এরা সব বিদায় হয়। দেখতে দেখতে মেয়ে জামাইয়ের ফিরে যাওয়ার দিন চলে এলো। রওনা হওয়ার ঠিক আগে মামনি মানে মদনদার মেয়ে বাবার হাতে একটা খাম দিয়ে বললো এটা তোমাদের জন্য, নিউ ইয়ার গিফট, আমরা যাবার পর খুলে দেখো।

1.jpgPhoto Credit: Pixabay

মেয়ে, জামাই আর নাতি চলে যাওয়ার পর মদনদা ওই খামটা খুলে দেখলেন তাতে তার এবং রমলা বৌদির জন্য এক মাসের ইউরোপ ভ্রমণের প্যাকেজ রয়েছে। নামী সংস্থার ওই প্যাকেজে প্লেনের টিকিট তো দেওয়া রয়েছেই, তার সাথে সমস্ত হোটেল বুকিং এবং অন্যান্য ডিটেলসও দেওয়া আছে। দেখে মদনদার চোখে জল চলে আসলো। তিনি বুঝতে পারলেন যে তিনি তার জামাই প্রবীরকে চিনতে ভুল করেছেন। তার এই মুহূর্তে মেয়ে, জামাই এবং নাতি পুকাইকে খুব কাছে পেতে ইচ্ছে করলো। তিনি মনে মনে মেয়ে আর জামাইয়ের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করলেন এবং প্রতিজ্ঞা করলেন যে জীবনের যে কটা দিন আর বাকি আছে তিনি আর কিপ্টেমি করে কাটাবেন না।

তো বন্ধুরা কেমন লাগলো আমার গল্পটা, কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

10% beneficiary to @meraindia

25% beneficiary to @null

The official accounts of the Incredible India community

Discord | Twitter | Telegram | Instagram

Sort:  
Loading...
 8 months ago (edited)
  • প্রথমে আপনাকে নববর্ষের শুভেচ্ছা। হাড় কিপটে মদন বাবুর গল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। ও নিজের বাসায় কোনোদিন চিনি নিয়ে আসে না, বরং বাপ্পার দোকানে যে সে দিব্যি দুধ চা খায়। দু চোখে এক টাকা কম দেয় তাহলে সে অন্যের ব্যবহারে কাপের মধ্যেই চা খায়। তার প্রথম স্ত্রী পালিয়ে চলে যায় তাঁর হার কিপ্টেমির জন্য । বিয়ের রাতে যে আংটিটা দিয়েছিল তা গুনার তৈরি। ওরে গোল্ডপ্লেট করা।

  • মেয়ে ও মেয়ে জামাইরা আসার কথা শুনে তার মাথায় ভাজ। সাত দিন থাকবে এত টাকা সে কোথায় পাবে সে তো চার আনা পয়সা খরচ
    করতে নারাজ।

  • কিন্তু তার মেয়ে যাওয়ার সময় একটি গিফট দিয়ে গেল । ইউরোপ ঘুরার টিকেট এবং খাওয়া-দাওয়া সব ফ্রি। তা দিয়ে কিপটে মদন কেঁদে দিল।

  • তো এই গল্পের সারমর্ম হল। মৃত ব্যয় হওয়া
    ভালো। তবে মাত্র অতিরিক্ত নয়। জীবনকে উপভোগ করতে হবে। হাড় কিপ্টেমি করে থাকার কোন যৌক্তিকতা নেই।
    খুব ভালো লাগলো, আপনি ঠিকই বলেছেন। আধুনিকতার ছোঁয়ায় আমরা সবাই কৃত্রিম হয়ে গিয়েছে হাসি আনন্দ ভুলেই গিয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আমরা হাড় কিপটে মদন
    চাই না। চাই হাজী মোহাম্মদ মহসিন এর মতো উদার মনের মানুষ।

মিতব্যয়ী হওয়া এবং সঞ্চয় করা প্রতিটি মানুষের জন্যই ভালো। তবে এই গল্পের প্রধান চরিত্র মদনবাবুর মতো হাড় কিপটে হওয়া কখনোই কাম্য নয়। আমাদের জীবন একটাই, সারাজীবন এরকম ভাবে কিপ্টেমি করে কাটালে জীবনটাকে আর উপভোগ করা হয়ে উঠবে না। ধন্যবাদ আমার পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 8 months ago 
  • আমি আপনার সাথে সহমত পোষণ করছি ‌। জীবনকে উপভোগ করা শিখতে হবে ‌। জীবনের মানে বুঝতে হবে। মনের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিতে হবে। আমরা মদন বাবু হতে চাই না। জীবন যেহেতু একটাই তে উপভোগ করতে চাই। এতো হিসেব করে কি হবে রে ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

লোকমুখে শোনা যায় বিয়ের রাতে উনি ওনার প্রথম পক্ষের স্ত্রীকে যে আংটিটা পড়িয়েছিলেন সেটা লোহার তার বা গুণার উপর সোনার জল করা ছিল।

প্রথম গল্পটা পড়ে, এটাকে বাদ দিতে পারলাম না। 🤣
কৃপণতার চরম উদাহরণ।

তার চা খাওয়ার ধরন আর ১টাকা কম দেওয়ার যে ব্যবস্থা করেছিলেন না হেসে পারলাম না!
তবে মানুষটির কৃপণতার সাথে বিবেক আছে সেটা লেখার শেষ পর্যায় বোঝা গেলো।

শেষ ভালো যার, সব ভালো। এই মানুষটির কাহিনী বোধহয় এই বার্তাই দেয় আমাদের।
জীবনের বিভিন্ন পর্যায় দিয়ে আমাদের যেতে হয়, তবে সেই পর্যায় দিয়ে যেতে গিয়ে যে শিক্ষা আমরা পাই, সেটাকে সঠিকভাবে কাজে যারা ব্যবহার করতে পারেন তারাই আসল মানুষ।

ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে। কৌতুক এর পাশাপশি একটা বড়ো শিক্ষা লুকিয়ে আছে গল্পটির আড়ালে।

মদনবাবুর বিবেকবোধ গল্পের শেষে এসে জাগ্রত হলো মেয়ে-জামাইয়ের পাওয়া উপহার পাওয়ার পর, না হলে তিনি হয়তো আজীবন হাড় কিপটেই থেকে যেতেন। এই গল্পের প্রধান চরিত্র যাকে কেন্দ্র করে লেখা সেই একই নাম এবং চরিত্রের ব্যক্তি আমার কয়েকটা বাড়ি পরেই থাকে। ধন্যবাদ আমার পোস্ট পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশের জন্য। ভালো থাকবেন।

 8 months ago 

মদনবাবু একজন হাড়কিপ্টে লোক। চিনি চাহড়া বাসায় চা না খেলেও দোকানে গিয়ে ঠিকই খাচ্ছেন। মদন বাবুকে নিয়ে একটা নাটক বানালে কিন্তু দারুণ হতো, আর যদি এই ক্যারেক্টার টা মোশাররফ করিম কে দিয়ে করানো হয় তাহলে জম্পেশ হবে। ধন্যবাদ ভাই, এরকম গল্প আরো চাই

সঠিক বলেছেন মদনবাবুকে নিয়ে নাটক বানালে মোশাররফ করিম ওনার চরিত্রে অভিনয় করে একদম ফাটিয়ে দিতেন। ওনার বেশ কিছু ওয়েব সিরিজ আমি দেখেছি। একজন দারুণ অভিনেতা উনি। ধন্যবাদ আমার গল্পটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 8 months ago 

যে মানুষ বিয়ের আংটিতে পর্যন্ত এমন দুই নাম্বার কাজ কারবার করতে পারেন তার বৌ ডিভোর্স দিয়ে চলে যাবে এটাই স্বাভাবিক । আর চায়ের দোকানে ১টাকা কমানোর পদ্ধতিটাও সুন্দর।
তবে কৃপন হলেও অতটা যে খারাপ না সেটা বুঝা যাচ্ছিলো এটাাতেই যে,জামাইকে গ্যারেজে গাড়ি রাখতে দিয়েছিলেন সেই সাথে বৌকে নিয়ে ইউরোপ ভ্রমণ এর ইচ্ছে। এটা গল্প কিন্তু বাস্তবে মধ্যবিত্তদের জীবন আসলে অনেকটা এমনই। বড় একটা সপ্ন পূরণের জন্য জীবন থেকে এতটা না হলেও অনেক কিছুই ছেটে ফেলতে হয়।আর তাদের সবার এমন মেয়ে আর মেয়ের জামাই থাকে না যারা সপ্ন পূরন করবে।
ভালো লাগলো গল্পটা পড়ে। আরো গল্প পড়ার প্র‍ত্যাশায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

আপনি সঠিক বলেছেন, মধ্যবিত্তের অনেক স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায় বাস্তবতার কারণে। তবে মদনবাবুর মত এতটা কিপটে হওয়া ঠিক নয়। মিতব্যয়ী হওয়া ভুল কিছু নয় কিন্তু ওনার মত হাড়কিপটে হওয়া মোটেও উচিত নয়। আধুনিক যুগের পরিপ্রেক্ষিতে নিজের বাবা বা শ্বশুরমশায়ের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য কেউ থাকে না। নিজের স্বপ্ন নিজেকেই পূরণ করতে হয়। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার গল্পটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 8 months ago 

ভাইরে ভাই ,,, মদনবাবু মত হাড় কিপটে মানুষ যেন এই সমাজে আর না হয়।
যে কিনা এক কাপ চা খেয়ে,, তার থেকে আবার এক টাকা কমিয়ে রাখতে বলছে ।আর অন্যের ব্যবহারিত চা খাওয়া কাপে থেকে চা টুকু খেয়ে নিচ্ছে। টাকা উসুল করার জন্য। উনাকে দিয়ে নাটক তৈরি করলে অনেক ভিউ হবে।

মদনবাবু যে কত কষ্ট করে এঁটো চায়ের ভাঁড় কুড়িয়ে নিয়ে ধুয়ে তারপর চা খাচ্ছেন সেটা দেখবেন না! এইজন্যই তো উনি এক টাকা করে কম দেন। এই গল্পটা নিয়ে নাটক তৈরি হলে সত্যিই জমে যাবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার গল্পটা পড়ে মন্তব্য প্রকাশের জন্য। ভালো থাকবেন।

 8 months ago 

আসলে আমরা এই ধরনের মানুষগুলোকে একটু আড় চোখে দেখে থাকি। এবং মনে মনে চিন্তা করি হয়তোবা তারা একটু কিপ্টামি স্বভাবের। কিন্তু আমরা যদি একটু ভালোভাবে দেখি তাহলে আমরা বুঝতে পারবো। তারা আসলে অতিরিক্ত খরচ করতে চায় না। সেই টাকাটা ভালো কাজে এবং নিজেদের দুঃসময় ব্যবহার করতে চায়।

প্রথমত আমি আপনার গল্পটা যখন পড়ছিলাম তখন নিজে নিজেই হাসছিলাম। আর ভাবছিলাম একটা মানুষ কিভাবে এত কিপ্টামি করে থাকে
কিন্তু পরবর্তীতে যখন উনার মেয়ে এবং মেয়ের জামাই বাসায় আসলো এরপর ওনার গোমড়া মুখো চরিত্রটা দেখে আরো বেশি খারাপ লাগলো। কেননা মেয়ে জামাই আসলে সব সময় শ্বশুর-শাশুড়ি অনেক বেশি খুশি হয়ে থাকে। কিন্তু উনার অনেক বেশি টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে, এটা ভেবে উনি মন খারাপ করে বসে আছেন।

পরবর্তীতে যখন উনি খাম খুলে জানতে পারলেন, উনাদের দুইজনের জন্য ইউরোপ ভ্রমণ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে উনার জামাই সেটা নিজেই এরেঞ্জ করেছে। ওটা জানতে পেরে উনি অনেক বেশি খুশি হয়েছেন। এবং নিজের মেয়ে এবং জামাইকে কাছে পাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। আসলে শেষ বয়সে বাবা-মা যদি তাদের মেয়ে কিংবা ছেলের কাছ থেকে এরকম একটা গিফট পেয়ে থাকে। তাহলে আমার কাছে মনে হয় অনেক বেশি মূল্যবান। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন।

মিতব্যায়ী হওয়া ভালো কিন্তু মদনবাবুর মত হাড়কিপটে হওয়া কখনোই ভালো নয়। তাও ভালো যে গল্পের শেষে এসে উনি নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং মেয়ে ও জামাইয়ের কাছে মনে মনে ক্ষমা চান। আমার গল্প পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

 8 months ago 

আপনার এই ছোট গল্পটি পড়ে বেশ মজা পেলাম।সব থেকে বেশি মজা পেয়েছি তার চা খাওয়ার অংশটি পড়ে।🤣🤣
আপনার এই গল্পটি হাসির গল্প হলেও এই গল্পটি আমাদের অনেক বড় একটি শিক্ষা দেয়।
আসলে সংসারের জন্য হোক বা ভবিষ্যতে সঞ্চয়ের জন্য হোক কিছু কিছু মানুষ অনেকটা হিসেবি হয়ে চলতে গিয়ে নিজেদের আত্নীয় স্বজনের থেকে দূরে সরে থাকেন কিছুটা খরচের ভয়ে। কিন্তু টাকা পয়সার পাশাপাশি সম্পর্ক ও আমাদের জীবনে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি ছোট গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

প্রত্যেক মানুষেরই টাকা সঞ্চয় করা উচিত কিন্তু মদনবাবুর মত হাড়কিপটে হওয়া অবশ্যই উচিত নয়। উনি একটু অতিরিক্ত কৃপণ ছিলেন যদিও গল্পের শেষে এসে ওনার মনোবৃত্তি পাল্টায়। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার গল্পটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.032
BTC 59185.02
ETH 2522.04
USDT 1.00
SBD 2.47