মুভি রিভিউ: গল্প হলেও সত্যি
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে আমি একটা মুভি রিভিউ শেয়ার করে নেবো। এই মুভিটির নাম হলো "গল্প হলেও সত্যি"। এই মুভিটি একটি হরর কাহিনী সম্বলিত। অনেকদিন হরর বা কোনো মুভি তেমন দেখার সময় হচ্ছিলো না, তো গতকাল মাঝ রাতের দিকে এই মুভিটি একটু দেখতে বসেছিলাম। গল্পটা বেশ ভালো লেগেছিলো।
✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠
❂মূল কাহিনী:❂
রুদ্র আর অনুরাধা এরা দুইজন ছোটবেলা থেকে ভালো বন্ধু। আর কলকাতায় এক সাথে থাকতো আর কাজ করে নিজেদের চলাটা চালাতো। রুদ্র সাধারণত পিজ্জা ডেলিভারির কাজ করতো আর অনুরাধা একটা গল্পের স্ক্রিপ্ট লিখতো,সাধারণত সেটা হরর সম্বন্ধিত। আর এর জন্য সে প্রতি রাতেই হরর দৃশ্য টিভিতে দেখতো, আর এদিকে রুদ্রর আবার এইসব বিষয়ে খুব ভয় করতো। যাইহোক, এরপর রুদ্র একদিন পিজ্জা ডেলিভারি করতে যায়, সাধারণত তাদের ওখান থেকে যত ডেলিভারি আসতো তার সবটাই রুদ্র একা ডেলিভারি করতে যেত। এইভাবে বেশ কিছুদিন চলতে থাকে। একদিন রুদ্রকে পিজ্জা ডেলিভারির সময়ে তার মালিক রাতুল একটা ফাইল নিয়ে তার বাড়িতে পাঠায় এবং মালকিনের কাছে দিতে বলে। কিন্তু সেখানে গিয়ে রাতুল সাহেবের মেয়েকে দেখে ভীষণ ভয় পেয়ে যায়, কারণ বেল বাজাতেই মেয়েটি ছুটে এসে পাগলের মতো করতে লাগে। সাধারণত ওই মেয়েটির শরীরে কোনো অশুভ আত্মা ভর করে আছে বলে তাদের ধারণা আর তার জন্য একজন জ্যোতিষীকেও সারাক্ষন বাড়িতে রেখে দিতো যাতে বাড়াবাড়ি হলে থামাতে পারে।
এর মধ্যে আবারো একদিন পিজ্জা ডেলিভারির সময়ে রাতুল সাহেব রুদ্রকে বলে একটা বক্স মতো সেইটা যেন বাড়িতে গিয়ে রেখে আসে, কিন্তু তার মেয়ের ওই আচরণ দেখে ভয় পেতে থাকে। এরপর মালিকের কথা শুনতেও হবে, তাই বাড়িতে যায় ভয়ে ভয়ে কিন্তু যখন ওই জ্যোতিষী মেয়েটিকে বলে মানে তার ভিতরের আত্মাকে বলে,তখন মৃণালিনী নাম বলে আর রুদ্রর দিকে রাগ ভরা চাহনি নিয়ে তাকায়। এতে আরো বেশি ভয় পেয়ে যায়। এই পর্ব তো গেলো, কিন্তু এইবার কলকাতার এমন একটা জায়গা মানে শান্তিনগর নামের একটি জায়গা থেকে অর্ডার আসে, আর সেটা ডেলিভারি দেওয়ার জন্য রাতের দিকেই রওনা দেয়। সেখানে যায়েও, দরজা খোলে স্মিথা নামের একটি মেয়ে। পিজ্জার দাম ৪৩৫ টাকা কিন্তু তার কাছে আবার খুচরো নেই, তাই উপরে যায় আনতে। কিন্তু সেখান থেকে আর ফিরে আসে না, একটা শব্দ হতেই উপরে যেতে থাকে, তার উপর আবার বিদ্যুৎ চলে যায়। একে তো শুনশান জায়গা আর তার উপর এই অবস্থা। উপরে রুদ্র গিয়ে দেখে কে যেন মেয়েটিকে মেরে দেয়ালে পেরেক দিয়ে সাটিয়ে দিয়েছে। এইটা দেখে রুদ্রর তো দম বন্ধ হয়ে আসার মতো।
সে হামতিতামতি করতে থাকে সেখান থেকে বেরোনোর কিন্তু দরজা লক হয়ে যায় যেটা চাবি ছাড়া আর খোলা সম্ভব না। এরপর বাইরে ওই মেয়েটির স্বামী আসে, এরপর কিছুক্ষন কথা বলার পরে লোকটাকে আর বাইরে দেখতে পায় না। ফোন করলে সেই ফোন ঘরের এক কোনে বাজতে থাকে। এরপর তার তো ভয়ে মাথা খারাপ হয়ে যাওয়ার মতো। তার ফোনে ব্যালান্সও নেই যে যোগাযোগ করবে। হঠাৎ অনুরাধার ফোন আসে, কিন্তু সেই ফোন সেখানকার টেলিফোনে বাজতে থাকে। সেটা দেখে আরো ভয় পেয়ে যায়, কারণ সেই টেলিফোনের তো তার কাটা, তাহলে ফোন আসছে কিভাবে আর কথা বলছে কিভাবে! যাইহোক,তাও কথা বলে পুলিশকে আসতে বলে। পুলিশ আসেও, কিন্তু সেখানে পুলিশ এসে বলে অন্য কথা, কারণ ওই বাড়িতে চারজন মানুষ খুন হয়েছে কিছুদিন আগে আর তার ইনভেস্টিগেশন চলছে। এই নিয়ে কথা কাটাকাটি করে আর পুলিশের সাথেও ঝামেলা করে সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। এই কাহিনীটা রাতুল সাহেবকে বলে, কারণ রুদ্র আর তার দুই সহকর্মীকে আহত অবস্থায় দেখে। এই ছিল মূল গল্পের থিম।
❂ব্যক্তিগত মতামত:❂
এই যে কাহিনীটা এতক্ষণে হলো, এই হরর কাহিনীটা মূলত বাস্তবে কিছুই তাদের সাথে ঘটেনি। এইটা সম্পূর্ণ সত্যি ঘটনার মতো করে রুদ্রর বানানো প্ল্যান। এই প্ল্যানটা কেন করেছিল!? তার কারণ হলো, যখন রাতুল সাহেব একটা বক্স নিয়ে তার বাড়িতে পাঠিয়েছিল, তখন রোডের একটি মোড়ে এসে একটা বাইক ধাক্কা দিয়ে তাকে ফেলে দেয় আর এতে তার শার্ট দুর্গন্ধ হয়ে যায়। তাই সে আবার নিজের বাড়িতে এসে অনুরাধাকে ধুয়ে দিতে বলে। অনুরাধা তার পিজ্জার ব্যাগ খুলতেই সেই বক্সটা দেখে আর তার ভিতর থেকে কাপড় মোড়ানো কিছু একটা দেখে, খুলে দেখে তাতে অনেকগুলো হিরে আছে। আর এইটা দিয়েই তাদের জীবনকে চেঞ্জ করার চিন্তা করে। ফলে তারা দুইজন প্ল্যান তৈরি করে। এই হিরে বিক্রি করে তারা বাইরে কোথাও সেটেল হয়ে যাবে। তাই অনুরাধা আগে শিলিগুড়ি থেকেই সিঙ্গাপুরে চলে যায়। আর এদিকে রুদ্র এই হরর কাহিনীটা সত্যি ঘটনার মতো তাদের সামনে উপস্থাপনা করে আর তারা বিশ্বাসও করে নেয়। আর অনুরাধাকে তারা কেউ দেখেনি, ফলে তাকে মিসিং বলে ঘটনা চালিয়ে দেয়। আর পুলিশের কাছে মৃত বলে রিপোর্ট তৈরি করা। তবে এখানে লাস্ট একদিন সত্যিকারের পিজ্জা ডেলিভারি দিতে একটা বাড়িতে যায় আর সেই বাড়িতে যে মেয়েটি ছিল তার নাম মৃনিলানি আর সবাই জানে অনেক বছর আগেই মারা গিয়েছে, ফলে রুদ্র এখানেই যেন ফেঁসে যায়, তাই এই বিষয়টা গল্প হলেও এখানে সত্যি।
❂ব্যক্তিগত রেটিং:❂
৮.৭/১০
❂ট্রেইলার লিঙ্ক:❂
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সোহমের সিনেমা গুলো আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। খুবই ভালো লাগলো সুন্দরভাবে আপনি এই সিনেমাটা রিভিউ করে আমাদের দেখানোর সুযোগ করে দিয়েছেন দেখে। সত্যি ভারত বাংলার সিনেমাগুলো খুবই মনোমুগ্ধকর হয়ে থাকে এবং এর মধ্যে আমি সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করে থাকি ধর্মীয় অনুভূতি বেশি থাকে।
দাদা, গল্প হলেও সত্যি মুভিটা আমি দেখেছি, আর গল্পটি দেখে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিল। কেননা হরর মুভি সব সময় আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। আর এই মুভিতে যখন শেষে এসে রুদ্র যখন ফেঁসে যায় তখন গল্পটি সত্যি হয়ে যায়। আর তখনই মুভির আসল মজা পাওয়া যায়। দাদা আপনি খুব সুন্দর করে পুরো মুভিটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রিভিউ দিয়েছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। এত সুন্দর একটি মুভির রিভিউ দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
দাদা আপনি দেখছি আজকে বেশ রোমান্টিক একটি মুভির রিভিউ করেছেন। সম এর মুভি গুলো দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। তার অভিনয় বরাবরই ভালো লাগে। গল্প হলেও সত্যি মুভিটির গল্প ছিলো অসাধারন। চমৎকার ভাবে রিভিউ করেছেন। নতুন করে আবারো মুভিটি দেখে ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।
একসময় কলকাতার মুভিগুলো প্রায়ই দেখা হতো, কিন্তু এখন মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না তেমন। সোহম এবং মিমি চক্রবর্তী দুর্দান্ত অভিনয় করে। হরর মুভিগুলো দেখতে একটু বেশিই ভালো লাগে। এই মুভিটা আমার দেখা হয়নি, তবে আপনার রিভিউ পড়ে বেশ উপভোগ করলাম। সময় পেলে অবশ্যই এই মুভিটা দেখার চেষ্টা করবো। যাইহোক এতো চমৎকার একটি মুভির রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
দাদা আজকে আপনি যে মুভির হরর কাহিনীটা বর্ণনা করেছেন, এই হরর কাহিনীটা মূলত বাস্তবে কিছুই তাদের সাথে ঘটেনি। এইটা সম্পূর্ণ সত্যি ঘটনার মতো করে রুদ্রর বানানো প্ল্যান। এই মুভিটা আমি বেশ কয়েক বছর আগে টিভিতে দেখিছিলাম। এই প্ল্যানটা করার পিছনে বিশাল বড় একটি কারন আছে। আর সেটা হলো রাতুল সাহেবের একটা বক্স নিয়ে কাহিনীটা ঘটে। রুদ্র কিন্তুু জানতো না এই বক্সের মধ্যে কি আছে। তার বউ বক্সের মধ্যে হীরা গুলো দেখে ফেলে। আর সেই হীরা দিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ উজ্জল করার স্বপ্ন দেখে। রুদ্র কাহিনীটা এমন ভাবে সাজিয়েছে সবাই সেটা বিশ্বাস করেছে। মাঝখানে একদিন মোবাইলের সিম চেইন্জ করে তার বউয়ের সাথে কথা বলেছিল। তখন মূল কাহিনীটা দর্শকের সামনে আসে। তবে একটা কথা আছে পাপ তার বাপকেও ছাড়ে না। যেটা আমরা মুভির লাষ্টে গিয়ে দেখেছি। একদিন সত্যিকারের পিজ্জা ডেলিভারি দিতে একটা বাড়িতে যায় আর সেই বাড়িতে যে মেয়েটি ছিল তার নাম মৃনিলানি আর সবাই জানে অনেক বছর আগেই মারা গিয়েছে, ফলে রুদ্র এখানেই যেন ফেঁসে যায়। এই হলো মুভির মূল কাহিনী। ধন্যবাদ দাদা।
"গল্প হলেও সত্যি" মুভিটি যদিও দেখা হয়নি। তবে মিমি চক্রবর্তী এবং সোহম চক্রবর্তী বেশ ভালো অভিনয় করেছে বুঝতে পারছি। আসলে এই ধরনের মুভি গুলো দেখতে অনেক ভালো লাগে। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম কোন হরর মুভি হবে। এরপর যখন ধীরে ধীরে মুভিটা সম্পূর্ণ পড়লাম তখন বুঝতে পারলাম আসলে এটা একটা সাজানো গল্প। মুভিটা যদিও শুরুর দিক থেকে অনেকটা হরফ টাইপের মনে হয়েছে। তবে শেষে বোঝা গেল সবটাই আসলে সাজানো ছিল। রুদ্র আর অনুরাধা এরা দুজনে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছিল। সেই বক্সের ভেতরে পাওয়া হীরে নিজেদের করে পেতে চেয়েছিল। আর এজন্যই অনেক নাটক সাজিয়েছে। রুদ্র অনেক প্লান করে সবটা সাজিয়েছিল। যাতে করে সবটা সত্যি মনে হয়।রাতুল যে বক্সটি তার কাছে দিয়েছিল সেই বক্সটিতে যেহেতু হীরে ছিল তাই তো তারা দুজনে মিলে অনেক বড় প্ল্যান করেছিল। যেহেতু অনুরাধা সেখান থেকে চলে যেতে সক্ষম হয়েছিল তাই তো বিভিন্ন মাধ্যমে পুলিশকে বোঝানো হয়েছিল অনুরাধা মিসিং। এরপর পুলিশ তাকে মৃত ঘোষণা করেছিল। অন্যদিকে পিজ্জা ডেলিভারি দিতে গিয়ে মৃনিলানিকে দেখতে পায় রুদ্র। আর সে জানতে পারে এই মেয়েটি সবার কাছেই মৃত। আসলে সবটাই তখন গোলমেলে হয়ে যায়। যাই হোক দাদা দারুন একটি মুভি রিভিউ শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
দাদা আপনি অনেক সুন্দর করে মুভির রিভিউ পোস্ট করেছেন, যেটা পড়তে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। এই মুভিটার সম্পূর্ণ কাহিনী অনেক সুন্দর ছিল, বিশেষ করে হরর টাইপের হওয়ার কারণে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। গল্প হলেও সত্যি এই মুভিটা আমার এখনো পর্যন্ত দেখা হয়নি। আমি আগে এরকম মুভি গুলো প্রচুর পরিমাণে দেখতাম, তবে এখন সময়ের কারণে মুভি দেখা হয় না একেবারে। আপনি অনেক সুন্দর সুন্দর মুভির রিভিউ করেন, আমি সব সময় চেষ্টা করি আপনার মুভিগুলোর রিভিউ পড়ার। এখানে তারা হরর বিষয়টা যদিও প্ল্যান করেছিল তবে একদিন তো সত্যি কারের এরকম ঘটনা হয়েছিল পিজ্জা ডেলিভারি দিতে গিয়ে। আর ওই বিষয়টা গল্প হলেও এখানে কিন্তু সত্যি ছিল। আর এই বিষয়টা পড়ে আমার কাছে অনেক বেশি ভয় লেগেছে। হরর টাইপের মুভি অথবা অন্য যে কোন কিছু দেখতে আমি খুব পছন্দ করি। আর এই জন্যই আমার কাছে রিভিউটা পড়তে ভালো লেগেছে। আমি সময় পেলে অবশ্যই চেষ্টা করব এই মুভিটা দেখে নেওয়ার।
দাদা গল্প হলেও সত্যি মুভিটার রিভিউ বেশ ভালোই উপভোগ করে পড়া হয়েছে। আসলে মুভির রিভিউ যত পড়ি আমার কাছে ততই খুব ভালো লাগে। আমি মুভি দেখতে অনেক বেশি পছন্দ করি, আর মুভির রিভিউ পড়তেও তেমনি খুব ভালোবাসি। সোহম এবং মিমি এই মুভিতে অনেক ভালো অভিনয় করেছে। ভুতুড়ে কোন কিছু দেখতে যদি ও ভয় করে, কিন্তু আমি দেখার চেষ্টা করি। এই মুভিটার কিছু অ্যাড দেখেছিলাম আমি। তবে এখনো পর্যন্ত মুভিটা সম্পূর্ণ দেখা হয়নি আমার। এখানে তো দেখছি বাস্তবে কিছুই তাদের সাথে ঘটেনি, সবকিছু তাদের কল্পনা ছিল অর্থাৎ প্ল্যান ছিল। আর দেখছি রুদ্র পড়ার কাহিনীটা সত্যি ঘটনার মতো উপস্থাপন করেছিল আর সবাই এটা বিশ্বাস করে নিয়েছিল। কিন্তু শেষে দেখলাম একটা বাস্তব ঘটনা ঘটেছিল। গল্প হলে ও ওইটা ছিল একেবারে সত্য। দাদা আমার কাছে কিন্তু বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে এই মুভিটার রিভিউ। সময় পেলে আমি তোর সাথে সাথে মুভিটা দেখে নেব ভাবছি।