মুভি রিভিউ: লিও

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটা মুভি রিভিউ শেয়ার করে নেবো। এই মুভিটির নাম হলো "লিও"। এই মুভিটি সাধারণত একটি তামিল ভাষার মুভি আর অরিজিনালি। যদিও এখন অনেক ভাষায় ডাবিং হয়ে গিয়েছে। মুভিটির কাহিনী থ্রিলার বেস। কাহিনীটা কিভাবে কি হয় সেটা দেখা যাক এখন।


স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠

মুভির নাম
লিও
প্লাটফর্ম
নেটফ্লিক্স
পরিচালকের নাম
লোকেশ কানাগরাজ
অভিনয়
বিজয়, ত্রিশা কৃষ্ণান, সঞ্জয় দত্ত, অর্জুন সারজা, জর্জ মেরিয়ান ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
১৯ অক্টোবর ২০২৩( ইন্ডিয়া )
সময়
২ ঘন্টা ৪৪ মিনিট
ভাষা
হিন্দি
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


☬মূল কাহিনী:☬


স্ক্রিনশর্ট: NETFLIX

গল্পটা মূলত শুরু হয় হিমাচল প্রদেশের একটি ছোট শহর থেকে। ওখানে একটি স্কুলের ভিতরে মূলত হিংস্র হায়না ঢুকে পড়ে আর অনেকেই সেই হায়নাকে আটকানোর চেষ্টা করতে থাকে আর তাতে অনেকের প্রাণও চলে যায়। অবশেষে হায়নাকে আটকাতে না পেরে ফরেস্ট অফিসার আর জীবজন্তুদের রেসকিউ করার টিমকে খবর দেয়,কারণ এই হায়না যেভাবে রক্তপিপাসু হয়ে উঠেছে তাতে স্কুল ভর্তি বাচ্চাদের প্রাণহানি হতে পারে অনেক। এক্ষেত্রে লিও দাস নামের একজন এনিম্যাল রেসকিউ হিসেবে এসে অনেক কষ্ট করে অজ্ঞান করার ডাঁট লাগিয়ে থামায়। তবে পরে তার সাথেই এই হায়নার একটা বন্ধুত্ব হয়ে যায় আর তাকে একটি চিড়িয়াখানায় রেখে আসে। সাধারণত এই লিও দাস এনিম্যাল রেসকিউ হিসেবে কাজ করলেও এই শহরে তার একটা ছোট্ট কফি শপ ছিল, মূলত একটা সাধারণ জীবনযাপন করতো পরিবার নিয়ে।


স্ক্রিনশর্ট: NETFLIX

এদিকে কিছু গুন্ডা হিমাচল প্রদেশেরই ওই শহরে একটি বাড়িতে খুন করে পালিয়ে বেড়ায় সারা রাত, কারণ সমস্ত চেক পোস্ট কড়া পাহারা দিয়ে রেখেছে, ফলে তাদের সেখান থেকে বেরোনোর কোনো পথ নেই। এখন ওই রাতে লিও আর তার ছোট মেয়ে দোকানে ছিল আর তাদের মধ্যে একটা সাইকো সেই দোকানে যায় আর গিয়ে কফি দিতে বলে, কিন্তু তখন সেই দোকান বন্ধ করে দেওয়ায় আর দিতে চায় না। কিন্তু ওই দোকানের একজন লেডি স্টাফকে মারার হুমকি দিলে দিতে বাধ্য হয় আর দোকানের সব টাকা পয়সাও হাতিয়ে নেয়। তবে লিও দাস তাতে কিছু বলেনি, কিন্তু তার মেয়ের দিকে হাত বাড়ালে তাদের সব কয়টাকে ওখানেই মেরে দেয়। এখন এতগুলো খুন করার অপরাধে তার জেল হয় আর কেস কোর্টে উঠলে সাধারণত যেটা সত্যি সেটাই বলে, কিন্তু সে সেলফ ডিফেন্স হিসেবে নিজেকে এবং তার মেয়েকে বাঁচিয়েছে তাই এই কেস খারিজ করে তাকে রেহাই দিয়ে দেয়।


স্ক্রিনশর্ট: NETFLIX

কিন্তু তাও তার উপর থেকে বিপদ কাটেনা, কারণ সেই গ্যাং এর অন্যান্য টিমও তেলেঙ্গা, বেঙ্গালুরু এইরকম বিভিন্ন রাজ্য থেকে তাকে মারার জন্য হিমাচল প্রদেশে আসে, কিন্তু লিও তাদেরকেও মেরে দেয় এবং পরে থানায় গিয়ে তাদের প্রটেকশন এর জন্য পুলিশ চায়, কিন্তু ওভাবে আসলে কাউকে পুলিশ প্রটেকশন দিতে চায় না, কারণ তার উপর যে হামলা হয়েছে তার প্রমান কোথায়। তাই পরে তার নিজের শরীরে আঘাত করে সেই প্রমান দেখালে জজ একজন পুলিশকে তাদের প্রটেকশন হিসেবে দেয় , কিন্তু তাকে দেখে সে নিজেই অবাক, কারণ তাকে দেখে মনে হচ্ছিলো না যে সে আগে কোনোদিন কোনো মাছিও মেরেছে হা হা । যাইহোক, তাও তাকে রেখে দিয়েছে গার্ড হিসেবে, কিন্তু সে আবার বসে বসে ঘুমায় পাহারা দেওয়া বাদ দিয়ে। এদিকে তাদের বাড়িতে আবার প্রায় ২০০ জন গুন্ডা একটা গাড়ি করে তেলেঙ্গা থেকে আসে আর তাদের এন্টোনি দাস নামের একজন তাকে দেখে দাবি করে যে সে তার ছেলে।


স্ক্রিনশর্ট: NETFLIX

কিন্তু লিও কোনো মতেই সেটা স্বীকার করতে চায় না, কিন্তু তার ওয়াইফ পরে সন্দেহ করতে লাগে আর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ লাগাতে লাগে সত্যিটা কি। আসলে এই লিওর মতো একই চেহারা তার ছেলেরই ছিল, ফলে এইটা দেখে তাকে ছেলে বলে দাবি করে বসে। এখন লিও অস্বীকার করলেও এন্টোনি তার পিছু ছাড়তে চায় না। ফলে তার ছেলেকে তুলে নিয়ে যায় অবশেষে, যাতে সেখানে গিয়ে স্বীকার করে যে সেই তার ছেলে। এই নিয়ে রাস্তায় তাদের সাথে লড়াই হয় এবং লিও একাই সবাইকে সেখানে মেরে ফেলে। কিন্তু তার ছেলে অন্য আরেকজনের মাধ্যমে তাদের ডেরায় চলে যায়। এরপর সেখানেও তাদের সাথে কথা কাটাকাটি আর মারামারিতে সবাইকে মেরে তার ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে আসে।


☬ব্যক্তিগত মতামত:☬

এই মুভিটাতে মূলত যে লিও দাস এর অভিনয় করেছে এ আসলেই এন্টোনির ছেলে ছিল। মূলত কাহিনী হচ্ছে এই এন্টোনি আর তার ভাই মিলে ড্রাগ এর ব্যবসা করতো আর তার সাথে হাত মিলিয়ে কাজ করতো এই লিও আর তার বোন। এখন এই এন্টোনি অন্ধ বিশ্বাসী ছিল বেশি, ফলে সে মনে করতো কোনো পশু বা প্রাণীকে বলি দিলে ব্যবসার উন্নতি হবে। এখন কে একজন তাকে বুঝিয়ে দিয়েছে সে যদি তার ছেলেকে বা মেয়েকে বলি দেয় তাহলে তাদের ব্যবসার আরো উন্নতি বেশি হবে। এক্ষেত্রে লিও এবং তার বোনকে বন্ধি করে রাখে আর তার বোনকে বলি দিতে গেলে লিও তাদের উপর আক্রমণ করে দেয়। তাদের সাথে লড়াই করলেও তার বোনকে বাঁচাতে পারেনা, নিজের কাকাই তাকে হত্যা করে দেয় আর পরে লিও কেও গুলি করে দেয়। আর তার পরের থেকেই সবাই মনে করতো সে মারা গিয়েছে। কিন্তু লিও সেখান থেকে পালিয়ে নিজেকে কোনো মতে বাঁচায় আর হিমাচল প্রদেশের একটি শহরে এসে নিজের পরিচয় গোপন করে জীবন চালাতো।


☬ব্যক্তিগত রেটিং:☬
৮.৭/১০


☬ট্রেইলার লিঙ্ক:☬



শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 10 months ago 

বিজয় এর মুভি গুলো আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। চমৎকার অভিনয় করে থাকেন। তবে এই মুভিটা এখনো দেখা হয়নি। তবে দাদা আপনার লেখা পরে বুঝতে পারলাম ভিন্ন রকম একটি মুভি। সময় করে অবশ্যই দেখতে হবে। চমৎকার মুভিটি রিভিউ করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে দাদা।

 10 months ago 

দাদা আপনি অনেক সুন্দর করে আজকেও নতুন একটা মুভির রিভিউ পোস্ট করেছেন এবং আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন, যেটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। লিও মুভিটা না দেখা হলেও, আমার কাছে মুভিটার রিভিউ পোস্ট পড়তে পেরে অনেক ভালো লাগলো। এই ধরনের মুভিগুলোর রিভিউ পোস্ট আমি প্রতিনিয়ত পড়ার চেষ্টা করি আপনার পোষ্টের মাধ্যমে। বিজয় আমার খুবই পছন্দের একজন অভিনেতা। এই মুভিটার মধ্যেও বিজয় অনেক সুন্দর অভিনয় করেছে। নিজের বোনকে বাঁচানোর জন্য লিও লড়াই করেছিল ঠিকই, কিন্তু সে তার বোনকে আর বাঁচাতে পারেনি। তাকে গুলি করলেও সে বেঁচে গিয়েছিল, আর এই কথাটা কিন্তু কেউই জানতো না। সে ওই জায়গা থেকে পালিয়ে নিজেকে বাঁচিয়েছে কোনরকম বেঁচে আছে। আমি তো ভাবছি এই মুভিটা একবার দেখব। কারণ মুভিটার সম্পূর্ণ কাহিনী আমার কাছে অসম্ভব ভালো লেগেছে দাদা। আপনার পরবর্তী মুভির রিভিউ পোস্ট পড়ার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করছি খুব শীঘ্রই এটা আমাদের সবার মাঝে ভাগ করে নিবেন।

 10 months ago 

বাহ অসাধারণ একটি মুভি রিভিউ দিলেন দাদা অনেক ভালো লাগলো। যদিও বসে দেখার সুযোগ হয় না মুভি গুলো। কিন্তু এক সময় খুব বেশি মুভি দেখতাম যখন সিঙ্গেল ছিলাম। এখন তো মুভির দেখার কথা বাদ দিলাম কিন্তু টিভির পাশেও যেতে পারি না অনেক ব্যস্ত থাকি সারাদিন। তো মাঝেমধ্যে আপনি মুভি রিভিউ শেয়ার করেন। রিভিউ গুলো দেখলে বুঝা যায় পুরো মুভিতে কি ঘটলো। তাছাড়া খুব সুন্দর করে স্ক্রিনশর্ট এর মাধ্যমে আপনি দেখালেন। এই নায়কের মুভি গুলো আমার খুব ভালো লাগে। লিও মুভি অসাধারণ ছিল। অনেক ধন্যবাদ দাদা আপনাকে এত সুন্দর একটি মুভি দেখলেন। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

 10 months ago 

বেশ ভালই নাম কামিয়েছে এই মুভিটা, যদিও এখন ও আমার দেখা হয়নি। আমি এখনো ভালো প্রিন্ট পাইনি, তবে খুব শীঘ্রই দেখার চেষ্টা করব কারণ রিভিউটা পরে বেশি এই মুভিটার প্রতি আগ্রহ বেড়ে গেল।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

দাদা গত অক্টবরে লিও মুভিটি মুক্তি পাওয়ার পরে প্রত্রিকায় দেখেছিলাম। বিজয় তো সবসময় একশন মুভি করে। তার অভিনয়ও খুব ভালো লাগে। লিও মুভিটা দেখা হয়নি এখনো। ভুলেই গেছিলাম মুভিটার কথা। আপনার রিভিউ পরে কিছুটা বুঝেছি। মুভির মূল এন্টোনি নামের এক ভদ্রলোক আর তার ভাই মিলে ড্রাগ এর ব্যবসা করতো। আর তাদের সাথে কাজ করতো এই লিও দাশ আর তার বোন। এই এন্টোনিও আবার অন্ধ বিশ্বাসী ছিল। সে মনে করতো কোনো পশু বা প্রাণীকে বলি দিলে ব্যবসার উন্নতি হয়। এখন কেউ একজন তাকে আবার বুদ্ধি দিলো যে সে যদি তার ছেলেকে বা মেয়েকে বলি দিতে পারে, তাহলে তাদের ব্যবসার আরো উন্নতি বেশি হবে। চিন্তা করেন মানুষ কতটা মূর্খ । যায়হোক এন্টোনিও লিও এবং তার বোনকে বন্ধি করে আর তার বোনকে বলি দিতে যায়। আর তখনই লিও তাদের উপর আক্রমণ করে বসে। তাদের সাথে লড়াই করলেও তার বোনকে সে বাঁচাতে পারেনি, নিজের কাকাই তার ভাতিজিকে হত্যা করে। আর পরে লিও কেও গুলি করে দেয়। আর তার পরের থেকেই সবাই মনে করতো সে মারা গিয়েছে। কিন্তু লিও দাশ সেখান থেকে পালিয়ে নিজেকে কোনো মতে হিমাচল প্রদেশে চলে যায়। আর সে শহরে এসে নিজের পরিচয় গোপন করে জীবন শুরু করে। তবে বিপদ তার পিছু ছাড়ে না। দোকানে কাস্টমার হয়ে বিপদ আসে। যদিও সে প্রথমে জামেলা করতে চাই না। তবে জামেলা থাকে ছাড়ে না। ধন্যবাদ দাদা।

 10 months ago 

দাদা আপনি অনেক সুন্দর করে লিও মুভিটার পুরো রিভিউ করেছেন এবং আমাদের সবার মাঝে সম্পূর্ণটা তুলে ধরেছেন। যেটা সম্পূর্ণভাবে পড়তে পেরে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। এরকম মুভি গুলোর রিভিউ পোস্ট আমার অনেক ভালো লাগে পড়তে। তাই তো চেষ্টা করি আপনার প্রত্যেকটা মুভি রিভিউ পোস্ট পড়ার। বিজয়ের মুভি গুলো আমি বেশিরভাগ সময় দেখে থাকি। কয়েকদিন আগেও তার একটা মুভি দেখেছিলাম। ব্যস্ততার কারণে খুব একটা মুভি না দেখা হলেও, মাঝে মাঝে সময় পেলে চেষ্টা করি মুভিগুলো দেখার। এই মুভিটার কয়েকটা শর্ট ভিডিও দেখেছিলাম আমি। আর তখন ভেবেছিলাম মুভিটা দেখব। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সময়ের কারণে দেখিনি। তবে এখন ভাবছি সময় পেলে এই মুভিটা দেখে নেব। কারণ মুভিটার সম্পূর্ণ কাহিনী রিভিউর মাধ্যমে পড়তে পেরেছি, আশা করছি পুরোটা পড়লে ভালোই লাগবে। লিওর বোনকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল, সেই সাথে লিও কেউ বন্দী করে রাখা হয়েছিল, যেন তার বোনকে বলি দিতে পারে। লিও কিন্তু যথাযথভাবে চেষ্টা করেছে তাদের আক্রমণ করে নিজের বোনকে বাঁচাতে। এত সব কিছু করার পরেও সে নিজের বোনকে বাঁচাতে পারেনি। এখন কি তাকেও গুলি করে দেওয়া হয়েছিল। তার ভাগ্য ভাল ছিল, যার কারণে সে মারা যায়নি। সময় পেলে দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব দাদা এই মুভিটা।

 10 months ago 

সাউথের প্রত্যেকটি মুভি-ই আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।কারন তার মধ্যে বাস্তব এবং সামাজিকভাব থাকে।বিজয় খুবই ভালো একজন অভিনেতা তবে এই মুভিটা আমার দেখা হয়নি।ভবিষ্যতে অবশ্যই দেখবো।দাদা, আপনার সুন্দর রিভিউ পড়ে ভালো লাগলো, ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 60857.34
ETH 2383.21
USDT 1.00
SBD 2.68