বাইম মাছের সুস্বাদু ভুনা রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটা রেসিপি পোস্ট শেয়ার করবো। এই রেসিপিটা করা এক সপ্তাহ হয়ে গেছে, কিন্তু করার সময় হয়নি। যাইহোক, এই রেসিপিটা ছিল বাইম মাছের। এই মাছকে তোড়া মাছও বলে, আমি সবসময় তোড়া বলে থাকি । এই বাইম বা তোড়া মাছ খেতে খুবই সুস্বাদু হয়ে থাকে। এই মাছগুলো সাইজে ছোট হলেও যেমন উপকারিতা আছে আবার তেমনি স্বাদের দিক থেকে সবসময় অতুলনীয়। বাইম মাছ যেকোনো তরকারীতেও মোটামুটি ভালো লাগে, তবে এই মাছের সবথেকে ভালো লাগে আলু দিয়ে ভুনা টাইপ এর করলে। আমি নরমালি কোনো কিছুই তেমন ভুনা টাইপ এর করিনা, কারণ ঝোল না হলে আমার খাওয়া হয় না। তবে এইটা করেছিলাম শুক্রবারে, আর ওইদিন আমি ছাড়া বাড়ির সবাই নিরামিষ, যদিও আমি মানিনা এই আর কি। তাই ওইদিন একার মতো করেছিলাম কিছুটা। ভুনা দিয়ে আসলে অনেক স্বাদের হয়েছিল খেতে বাইম মাছটা। যাইহোক, এই সুস্বাদু মাছের রেসিপিটা কিভাবে তৈরি করেছিলাম তার উপকরণসমূহ ধাপগুলো নিচের দিকে তুলে ধরবো এখন ।


✠প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:✠

❦উপকরণ
পরিমাণ❦
বাইম মাছ
৫০০ গ্রাম
আলু
৮ টি
পেঁয়াজ
১ টি
রসুন
১ টি
কাঁচা লঙ্কা
৭ টি
লঙ্কার গুঁড়ো
১/২ চামচ
গোটা জিরা
১ চামচ
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৪.৫ চামচ
হলুদ
৪ চামচ
জিরা গুঁড়ো
২ চামচ


আলু, পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচা লঙ্কা


লঙ্কার গুঁড়ো, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


✔এখন রেসিপিটি যেভাবে প্রস্তুত করলাম--


☀প্রস্তুত প্রণালী:☀


❖বাইম মাছগুলো ফ্রিজ থেকে বের করে গরম জল দিয়ে একবার ভালোভাবে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

❖আলুগুলোর খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে পিস করে নিয়েছিলাম এবং পরে ধুয়ে রেখেছিলাম। এরপর পেঁয়াজ এর খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে নিয়েছিলাম এবং সেই সাথে রসুনের কোয়াগুলো থেকে খোসা ছাড়িয়ে রেখেছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কাগুলো কেটে রেখেছিলাম।

❖বাইম মাছে লবন এবং হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর একটি প্যান-এ তেল দিয়ে চুলায় বসিয়ে গরম করে নিয়েছিলাম।

❖এরপর মাছগুলোর গায়ে লবন এবং হলুদ মাখিয়ে নেওয়ার পরে গরম তেলে ছেড়ে দিয়েছিলাম। মাছগুলো সব ভালোভাবে ভাজা করে নেওয়ার পরে তুলে রেখেছিলাম।

❖অন্য কড়াইয়ে একটু তেল দিয়ে তাতে আলুর পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর আলুগুলো ভাজা করে তুলে রেখেছিলাম।

❖আলু ভাজার পরে আরেকটু তেল দিয়ে তাতে পেঁয়াজ-রসুন দিয়ে ভালোভাবে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

❖এরপর কড়াইয়ে আরেকবার তেল দিয়ে গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম। জিরা ভাজা হয়ে এলে তাতে ভেজে রাখা আলুর পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖আলু দেওয়ার পরে তাতে পর পর ভেজে রাখা পেঁয়াজ-রসুন, কাঁচা লঙ্কা এবং স্বাদ মতো লবন, হলুদ, শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖মশলাগুলো আলুর সাথে মিশিয়ে নেওয়ার পরে জল দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖জল দেওয়ার পরে আলুগুলো ভালো করে সেদ্ধ হয়ে আসা পর্যন্ত ফুটিয়ে নিয়েছিলাম। এরপর আঁচটা কমিয়ে তাতে ভেজে রাখা বাইম মাছ দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖এরপর অল্প কিছু সেদ্ধ আলু তুলে নিয়েছিলাম এবং ভালোভাবে গলিয়ে আবার তরকারিতে দিয়ে মিশিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিতে একটু জিরা গুঁড়ো দিয়ে তরকারির ঝোলটা কমে আসা পর্যন্ত দেরি করেছিলাম।

❖তরকারির ঝোলটা কমিয়ে নেওয়ার পরে ভুনা মতো হয়ে আসলে নামিয়ে নিয়েছিলাম। এরপর তাতে আরেকটু জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়ে একটি পাত্রে পরিবেশনের জন্য তুলে নিয়েছিলাম।


রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 11 months ago 

দাদা আমরা এই মাছটাকে বাইম বলেই ডাকি।আর এই মাছ খেতে খুবই মজা। তবে আমার বাবার বাড়ির সবাই পছন্দ করলেও শ্বশুর বাড়ির কেউ পছন্দ করেনা।তবে আমার আব্বু আর আমার খুব প্রিয়।আর এই মাছটা ভুনা ভুনাই বেশি ভালো লাগে।এই মাছ ভেজে রান্না করিনা। এমনিতেই ভুনা করি।আপনি ভেজে রান্না করলেন। খেতে আরো বেশী মজার হলো।ছোট মাছগুলোকে তারা বাইম বলি।এটা খেতে ও দারুন মজার হয়।আপনার রেসিপি দেখে ভীষণ ভালো লাগলো দাদা।আপনি এই মাছ পছন্দ করেন জেনে আরো বেশি ভালো লাগলো। মজার এই রেসিপিটি ধাপে ধাপে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা।অনেক অনেক ভালো থাকবেন আশাকরি।

 11 months ago 

বাইম মাছ একমাত্র ভুনা খেতেই বেশি ভালো লাগে।আর আপনার রান্নার প্রক্রিয়া দাদা অনেকটা আমাদের মতোই ।বেশ মজা করেই খেয়েছেন মনে হচ্ছে রেসিপিটি।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 11 months ago 

দাদা আপনার এই বাইম মাছের রেসিপি দেখে আমার ছোটকালের কথা মনে পড়ে গেল। আমি বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ করে বড়শিতে ঠোকা মারলো, আমি টান দিতেই সাপের মত বড়শির সাথে উঠে চলে আসলো। আমি সাপ মনে করে ফেলে দিলাম দৌড়। যাই হোক দাদা আপনি বাইম মাছের সুস্বাদু ভুনা রেসিপি তৈরি করেছেন আপনার রেসিপিটি কিন্তু দারুণ হয়েছে। রান্নার ধাপ গুলো খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

দারুন একটি রেসিপি তৈরি করলেন দাদা। বাইম মাছ খেতে অনেক মজার একটি মাছ। তাছাড়া নদীর মাছ হলে আর তো কথায় নেই স্বাদে তুলনীয় হয়। আপনি ঠিক বলছেন বাইম মাছ ভুনা করে খেতে ভীষণ ভালো লাগে। তাছাড়া ঝোল করে খেতে এক প্রকারের মজা হয়। আপনি যেহেতু ঝোল পছন্দ করেন তাহলেই ঝোল করে রান্না করে খেতে বেশ মজা হবে। বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা যেহেতু নিরামিষ খাবে তাহলে সেই সুযোগ আপনি অনেক রেসিপি তৈরি করলেন। আলু দিয়ে বাইম মাছের রেসিপিটি খুবই লোভনীয় দেখাচ্ছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে রেসিপির উপস্থাপনা এবং পরিবেশনা দুটোই অসাধারণ ছিল।

 11 months ago 

দাদা বাইম মাছকে তোড়া মাছও বলে সেটা আজকে আপনার পোষ্ট পড়ে জানতে পারলাম। এই মাছটা ভাজি করে খেতেই বেশি সুস্বাদু লাগে। আপনাকে তো সব সময় ঝোল ঝোল দিয়ে রেসিপি করতে দেখি। ভুনা খুব কমই করেন। বাড়িতে সবার নিরামিশ থাকার কারনে আপনার জন্য সুবিদা হয়েছে। একাই সুস্বাদু বাইম মাছের ভুনা রেসিপিটা খেয়েছেন। ছোট বাইম মাছ গুলো আমারও খুবই প্রিয়। তবে আমি বড় বাইম গুলো তেমন খেতে পারি না। শুকনা শুকনা ভুনা করলে তখন খাওয়া যায়। আপনার আজকের ভুনাটা দারুন হয়েছে। ধন্যবাদ দাদা।

 11 months ago 

দাদা বাইন মাছ অনেক উপকারি এটা কিন্তু সত্য কথা। আজ বাইম মাছ অনেক সুস্বাদু হয়। আপনি আমার খুবই পছন্দের একটা মাছের রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার রেসিপি টা দেখে আমার তো খুবই লোভ লেগে গিয়েছে। এই ধরনের মজার মজার রেসিপি গুলো খেতে কম বেশি সবাই পছন্দ করে। বাইম মাছ রান্না করার সময় আমিও এই পদ্ধতিতে রান্না করে থাকি। আলু দিয়ে এভাবে ভুনার মত করে করলে অনেক বেশি সুস্বাদু হয়। দাদা আপনার এরকম লোভনীয় রেসিপি গুলো দেখলে আমার তো অনেক বেশি লোভ লেগে যায়। তেমনি আপনার আজকের রেসিপিটা দেখেও খুবই লোভ লেগে গিয়েছে। তবে এই মাছটাকে যে তোড়া মাছও বলে থাকে এটা আগে জানা ছিল না। আপনার মাধ্যমেই এই মাছের নতুন নামটা জানতে পারলাম। আপনি উপস্থাপনার মাধ্যমে এই রেসিপিটা অনেক সুন্দর করে সবার মাঝে ভাগ করে নিয়েছেন। আপনার উপস্থাপনা আমার কাছে সত্যি অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আর এমনিতেই আপনার উপস্থাপনা দেখে যে কেউ রেসিপিটা তৈরি করতে পারবে। ধন্যবাদ দাদা মজাদার রেসিপিটা ভাগ করে নেওয়ার জন্য।

 11 months ago 

দাদা আমার কাছে দেশি বাইম মাছ খেতে সব থেকে বেশি ভালো লাগে। দেশি মাছের রেসিপি তৈরি করলে তা একটু বেশি মজাদার হয়। আজকে বাইম মাছের সুস্বাদু ভুনা রেসিপি তৈরি করা হয়েছে দেখছি খুব মজাদার ভাবে। তরকারির মধ্যে ঝোল বেশি করে রাখা হলে তা খেতে আমার কাছেও অনেক ভালো লাগে। তবে আমি যে কোন মাছের ভুনা রেসিপি খেতে সবথেকে বেশি পছন্দ করি। তাইতো আপনার এই রেসিপিটা দেখে একটু বেশি ভালো লেগেছে আমার কাছে। এই মাছের স্বাদ অনেক বেশি হয়। আর উপকারিতা ও রয়েছে অনেক বেশি। এই মাছগুলোকে আমরা আমাদের এদিকে বাইম মাছ বলেই চিনি, তবে কখনো তোড়া মাছ বলে শুনি নাই। রেসিপিটা তৈরি করার পদ্ধতি আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আমার তো ইচ্ছে করছে যেভাবে পরিবেশন করেছেন এটা নিয়ে এক প্লেট ভাত এনে খেয়ে ফেলি। আপনার মাধ্যমে মজার মজার রেসিপি দেখতে পারি এটা আমার অনেক ভালো লাগে। পরবর্তীতেও নতুন একটা রেসিপি পাবো আশা করছি।

 11 months ago 

বাইম মাছ সাধারণত নদীতে বা বিলে বেশি পাওয়া যায়। আর এই দেশি মাছগুলোর টেস্ট অনেক বেশি। বাইম মাছের নতুন একটি নাম জানতে পেরে ভালো লাগলো দাদা। তোড়া মাছের নাম আজকে প্রথম জানলাম। বাইম মাছ যেভাবেই রান্না করা হোক না কেন খেতে অনেক ভালো লাগে। ঝাল ঝাল ভুনা করলে খেতে যেমন ভালো লাগে আলু দিয়ে ভুনা করলে তার থেকে বেশি ভালো লাগে খেতে। তারা বেগুন আলু দিয়ে রান্না করলো খেতে বেশ মজার হয়। এই মাছ গুলো কিছুদিন আগে আমিও রান্না করেছিলাম। খুবই ভালো লেগেছিল খেতে। একদম ঠিক বলেছেন দাদা ঝোল মত তরকারি না হলে খেতে ভালো লাগে না। এছাড়া বাইম মাছ যেকোন তরকারি দিয়ে রান্না করলেই খেতে অনেক ভালো লাগে। আর আলু দিয়ে রান্না করলে এই খাবারের স্বাদ দ্বিগুণ বেড়ে যায়। দাদা আপনার তৈরি করা রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে খেতে দারুণ হয়েছিল। মনে হচ্ছে গরম ভাতের সাথে খেতে দারুন লাগবে। আপনি অনেক সুন্দর করে এই রেসিপি তৈরি করে উপস্থাপন করেছেন এজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59887.64
ETH 2670.13
USDT 1.00
SBD 2.47