কচুরমুখী দিয়ে কাতলা মাছের ঝোল রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটি রেসিপি শেয়ার করে নেবো। গতকাল আমি কাতলা মাছের রেসিপি তৈরি করেছিলাম। আজকে কাতলা মাছটি কচুরমুখী দিয়ে রান্না করেছি। কচুরমুখী দিয়ে কাতলা মাছ খেতে অনেক ভালো লাগে, আমি বাড়িতে কচুরমুখী থাকলে বেশিরভাগ সময় এইটা দিয়েই তরকারি রান্না করি কাতলা বা অন্য কোনো বড়ো মাছ। গতকাল এমনিতে বাজারঘাট করা ছিল না একদমই, ফ্রিজে কাতলা মাছের টুকরো আর বাইরে এই কচুরমুখী পড়ে ছিল, তাই এইটা দিয়েই চালিয়ে দিয়েছিলাম। আর শরীরটাও ভালো লাগছে না, ঠান্ডা লেগে মাথা ব্যাথা করছে রাত থেকে। রান্নাটা গতকাল সন্ধ্যার দিকে করে রেখেছিলাম বলে পারা নাহলে আজকে আর রান্নার ধারে যাওয়ার মতো অবস্থায় নেই, মাথাটা ভীষণ ধরেছে । যাইহোক এই কচুরমুখী দিয়ে কাতলা মাছের রেসিপিটা খেতে ভালো সুস্বাদু হয়েছিল। কচুরমুখীর তরকারি যখন এঁটে যায় সেইটা আঠালো অবস্থায় খেতে আরো ভালো লাগে কিন্তু সকাল থেকে খেতে পারলাম না আর। যাইহোক এখন আর বেশিকিছু লিখতে ভালো লাগছে না, সারাদিন শুয়ে থাকার পরে এখন উঠে পোস্টটা করতে পারলাম। এখন রেসিপিটার মূল বিষয়ের দিকে চলে যাবো।


❂প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:❂

✦উপকরণ
পরিমাণ✦
কাতলা মাছ
৩০০ গ্রাম
কচুরমুখী
পরিমাণমতো
কাঁচা লঙ্কা
১২ টি
রসুন
১ টি
লঙ্কার গুঁড়ো
১ চামচ
জিরা
পরিমাণমতো
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৪ চামচ
হলুদ
৪ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১ চামচ


কাতলা মাছ, কচুরমুখী, কাঁচা লঙ্কা


রসুন, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


❦এখন রেসিপিটা যেভাবে তৈরি করলাম---


ꕥপ্রস্তুত প্রণালী:ꕥ


➤কাতলা মাছটির আঁশ ছাড়িয়ে কেটে কয়েকটা পিচ বের করে নিয়েছিলাম এবং জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম। এরপর কচুরমুখীগুলোর খোসা ছাড়িয়ে নেওয়ার পরে কেটে নিয়েছিলাম এবং জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম।

➤কাঁচা লঙ্কাগুলোকে সব কেটে নিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম। এরপর রসুনের খোসা ছাড়িয়ে নেওয়ার পরে কোয়াগুলো আলাদা করে নিয়েছিলাম।

➤কাতলা মাছের পিচগুলোতে ২ চামচ লবন আর ১ চামচ হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর গায়ে ভালোভাবে হাত দিয়ে মাখিয়ে দিয়েছিলাম।

➤মাছের পিচগুলো সব ভালোভাবে প্যানে করে ভেজে নিয়েছিলাম।

➤কচুরমুখীগুলো ভালোভাবে ভেজে নিয়েছিলাম এবং অন্য পাশের চুলায় এক কেটলি জল গরম করতে দিয়েছিলাম।

➤কড়াইটিতে পরিমাণমতো সরিষার তেল দেওয়ার পরে জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর জিরা হালকা ভাজা মতো হলে তাতে রসুনের কোয়াগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤রসুনের কোয়া ভাজা মতো হয়ে আসলে আমি তাতে ভেজে রাখা কচুরমুখীগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে কাঁচা লঙ্কা আর স্বাদ মতো লবন, হলুদ আর লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤মশলাগুলো ভালো করে মিক্স করে নিয়েছিলাম এবং পরে তাতে গরম করে রাখা জলটা দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤তরকারিটা অল্প কিছুক্ষন ফুটিয়ে নিয়ে কচুরমুখীগুলো ভালো করে সিদ্ধ মতো করে নিয়েছিলাম। এরপর সিদ্ধ হয়ে আসলে তাতে ভেজে রাখা মাছের পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤মাছ দেওয়ার পরে কিছু কচুরমুখীর পিচ হাতা দিয়ে একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম এবং গলিয়ে আঠালো মতো করে নিয়েছিলাম।

➤গলিয়ে রাখা কচুরমুখীর আঠালো অংশটা তরকারিতে আবার দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারির সাথে ভালোভাবে মিশে যাওয়ার পরে মিডিয়াম আঁচে করে দিয়েছিলাম চুলাটি এবং তরকারি ভালোমতো হয়ে আসা পর্যন্ত দেরি করেছিলাম ৫ মিনিটের মতো।

➤কচুরমুখী দিয়ে কাতলা মাছের একটা সুস্বাদু তরকারি তৈরি হয়ে গেলে আমি জ্বাল নিভিয়ে দিয়েছিলাম এবং অল্প কিছুক্ষন পরে তরকারিতে আমি জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

কচুরমুখীর আঠালো তরকারি খেতে সত্যিই অনেক সুস্বাদু এবং মজাদার লাগে।কচুরমুখীর সাথে কাতলা মাছ রান্না খেতে আরও বেশি মজাদার লাগে। আপনার রন্ধন প্রক্রিয়া গুলো পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। অতি লোভনীয় একটি রেসিপি পোস্ট উপহার দেয়ার জন্য প্রিয় দাদা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

দাদা হঠাৎ এই ঝুম বৃষ্টি কারণে চারদিকে খুব অসুস্থতা বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের এখানেও অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আপনার জন্য সুস্থতা কামনা করছি দাদা। কাতলা মাছ দিয়ে আপনি খুব সুন্দর করে কচুর মুখি ঝোল রেসিপি করেছেন।দেখেই মনে হচ্ছে খুবই সুস্বাদু হয়েছে।আমি কচুর মুখি কখনো ভেজে রান্না করিনি।মনে হয় ভেজে রান্না করলে ভালই হয়।

 2 years ago 

ভাইয়া আসলে আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে বলে ঘরে ঘরে মানুষ অসুস্থ হচ্ছে। আপনার সুস্থতা কামনা করছি। যাই হোক আপনার আজকের রেসিপিটা কিন্তু দারুন হয়েছে। আপনার মত কচুর মুখী খেতে আমার খুব ভালো লাগে। কচি মুখে যে কোন মাছ দিয়ে রান্না করলে খুবই সুস্বাদু লাগে। আর আপনি তো খুব বড় কাতলা মাছ দিয়ে রান্না করেছেন। দেখতে খুবই লোভনীয় হয়েছে। কালার দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে কতটা মজা হয়েছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

দাদা যেহেতু আপনার ঠান্ডা লেগেছে তারজন্য আদা,এলাচ, দারচিনি এগুলো মিলিয়ে কড়া করে এক কাপ চা ঘুমানোর আগে খেয়ে নেবেন। আশা করি অনেক ভালো লাগবে। আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য এমন হচ্ছে। দু'দিন আগে মাত্র আমার ছেলেও এই ঠান্ডা জ্বর থেকে সুস্থ হয়ে উঠলো।যাই হোক আপনার মতো আমার কাছেও কচুর মুখি দিয়ে বড় মাছ রান্না করে খেতে খুবই ভালো লাগে। কাতলা মাছ দিয়ে কখনো এই রেসিপি খাওয়া হয়নি। তাই এর স্বাদ বলতে পারছিনা।কিন্তু আপনি অসুস্থ শরীর নিয়ে এত কষ্ট করে যেহেতু রান্না করেছেন তার মানে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছিল। আপনার রেসিপির কালারই তা বলে দিচ্ছে। কচুরমুখির আঠালো ভাবই তরকারির স্বাদ নিয়ে আসে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল যাতে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যান।

 2 years ago 

মাথা ব্যাথা করলে খুবই খারাপ লাগে। তখন কোন কিছুতেই আর ভালো লাগেনা। দাদা আপনি যেনো তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন এই কামনা করি। দাদা আপনি আপনার অসুস্থ শরীর নিয়েও এই রেসিপি তৈরি করেছেন এবং শেয়ার করেছেন দেখে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো। আপনার রেসিপিগুলো যতই দেখি ততই অনুপ্রেরণা পাই দাদা। আপনি আপনার অসুস্থতার মাঝেও মজার একটি রেসিপি তৈরি করে শেয়ার করেছেন। কাতলা মাছ খেতে আমি অনেক পছন্দ করি। কাতলা মাছের সাথে কচুরমুখী রান্না করলে বেশ জমে যায়। আর কচুরমুখীর তরকারি দিয়ে ভাত খেতে আমার খুবই ভালো লাগে। কারণ কচুরমুখীর যে পিচ্ছিল ভাব তা দিয়ে ভাত খেতে ভীষণ ভালো লাগে আমার। কাতলা মাছ ও কচুরমুখী দিয়ে খুবই মজার একটি রেসিপি তৈরি করে শেয়ার করেছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। ♥️♥️♥️

 2 years ago 

পঞ্চমুখী তরকারি আমার বেশ ভালো লাগে মাঝে মাঝে আমাদের বাসায় রান্না করা হয়ে থাকে, সাথে অবশ্য মাছ থাকে তবে কি মাছ সেটা আমি জানিনা কারন মাছ সম্পর্কে আমার তেমন ধারণা নেই, তবে কাতলা মাছ আমারও ভালোলাগে দুটোর কম্বিনেশনে বেশ চমৎকার একটি রেসিপি তৈরি করেছেন।
একটু সাবধানে থাকবেন এখন অনেকেরই ঠান্ডা লাগছে , আমারও কিছুদিন আগে ঠান্ডা লেগেছে জ্বর মাথাব্যথা কোন কিছুই ভালো লাগছিলো না।

 2 years ago 

প্রথমেই আপনার সুস্থতা কামনা করছি 🤲
আসলে আবহাওয়া ভীষণ খারাপ আর প্রায় মানুষ এই একই সমস্যায় ভুগছে। আমার পরিবারের বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

দাদা কচুরমুখী দিয়ে কাতলা মাছ চমৎকার রেঁধেছেন। এই তরকারিটি নিঃসন্দেহে সুস্বাদু হয়েছে 😋। আমি আজ বাজার থেকে কচুরমুখী এনেছি দেখি আগামীকাল কিছু তৈরি করতে পারি কিনা।।।
রান্না কিন্তু লা জবাব হয়েছে 👌

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🤗

 2 years ago 

ভাগ্যিস বাসায় কাতলা মাছ আর কচুর মুখী ছিল তা না হলে কি রান্না করতেন । আর আগে থেকে রান্না না করলে তো পরের দিন মাথা ব্যথার জন্য রান্নাই করতে পারতেন না। মাথাব্যথা নিশ্চয়ই এতক্ষণে ভালো হয়ে গিয়েছে। আর কচুর মুখী এমনিতেই পিছলা হয়। তরকারি রান্নার পর আরো বেশি পিচ্ছিল হয়ে যায়। যার ফলে খেতে খুবই সুবিধা হয়। আপনার রেসিপি যে সুস্বাদু হয়েছে তা কালার দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তাছাড়া কচুর মুখী যে চটকে তরকারির মধ্যে দিয়েছেন এর ফলে আরও মজা হয়েছে বোঝাই যাচ্ছে।

 2 years ago 

আর শরীরটাও ভালো লাগছে না, ঠান্ডা লেগে মাথা ব্যাথা করছে রাত থেকে।

দাদা আপনার সুস্থতা কামনা করছি। এই সময় আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে তাই সবাই অসুস্থ হচ্ছে। তারপরেও সাবধানে থাকবেন দাদা। আপনার সুস্থতা কামনা করছি দাদা। বাঙ্গালীদের পছন্দের খাবারের মধ্যে কাতলা মাছের নাম সবার উপরে। কাতলা মাছ ভুনা করে খেতে যেমন ভালো লাগে তেমনি কাতলা মাছ দিয়ে সবজি রান্না করলেও খেতে ভালো লাগে। আর কচুরমুখী এমন একটি সবজি যেই সবজি দিয়ে মাছ রান্না করলে খেতে খুবই ভালো লাগে। কচুরমুখীর আঠালো ভাব তরকারিটা খেতে আরো বেশি মজার করে। কাতলা মাছ ও কচুরমুখীর সমন্বয়ে মজার রেসিপি তৈরির পদ্ধতি সকলের মাঝে তুলে ধরেছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59401.87
ETH 2615.39
USDT 1.00
SBD 2.40