কচুরমুখী এবং বরবটি দিয়ে গলদা চিংড়ির সুস্বাদু রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগlast year
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে আমি একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। এই রেসিপিটা করেছিলাম গলদা চিংড়ির। তবে এটি নন সিজনের সবজি দিয়ে করেছিলাম অর্থাৎ বরবটি আর সাথে কচুরমুখী দিয়ে করেছিলাম। বরবটি আসলে শীতকাল এর পরে আর খাওয়া হয়নি, অনেকদিন পরে বাজারে দেখে খাওয়ার ইচ্ছা হলো খুব তাই দিয়ে এই তরকারিটা করা। তবে এই বরবটিগুলো কিনেছিলাম দুই জাতের, দেখলে দেখতে পাবেন দুই কালারের আছে, যদিও সব হাইব্রিট এইগুলো। লাল কালারের বরবটিগুলো আসলে ভাজা করে আগে থেকে সব খাওয়া হয়ে গেছিলো, এই সাদাগুলো দিয়ে বাকিটা তরকারিতে লাগিয়ে দিলাম। বরবটি যে সিজনেই খাওয়া হোক না কেন, আমার কাছে অনেক সুস্বাদু লাগে, বিশেষ করে ভাজা বা ভর্তা মতো করে খেতে। আমি এই সবজিগুলো ভর্তা করে খেতে অনেক বেশি পছন্দ করি, আর এমনিতেও অনেক স্বাদের লাগে। তবে এখন গরমের সময়ে ভর্তা করে খেতে বেশি ভালো লাগবে না, যতটা শীতের সময়ে উপভোগ করা যায়। তবে ভাজাটা অনেক টেস্টি লাগবে এখনো। আর এই বরবটির তরকারি কচুরমুখীর সাথে যদি নিরামিষ মতোও করে খাওয়া যায় তাহলেও খুব ভালো লাগবে খেতে, এইগুলো আসলে আমার খেয়ে খেয়ে আগে টেস্ট করা হয়ে গেছে এইজন্য বলছি আর কি। তাছাড়া এই তরকারিটা অনেক স্বাদের হয়েছিল, কারণ গলদা চিংড়িটাও সুস্বাদু আর সাথে সবজিটাও নন সিজন হিসেবে অনেকদিন বাদে আরো বেশি মজেছিলো যেন তরকারিটা। যাইহোক, এখন এই তরকারিটার মূল বিষয়ের দিকে চলে যাবো।


☫প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☫

✦উপকরণ
পরিমাণ✦
গলদা চিংড়ি
৫০০ গ্রাম
বরবটি
৫০০ গ্রাম
কচুরমুখী
পরিমাণমতো
রসুন
১ টি
কাঁচা লঙ্কা
পরিমাণমতো
লঙ্কার গুঁড়ো
১.৫ চামচ
পাঁচফোড়ন
২ চামচ
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৫ চামচ
হলুদ
৪.৫ চামচ
জিরা গুঁড়ো
২ চামচ


গলদা চিংড়ি, বরবটি, কচুরমুখী, রসুন


কাঁচা লঙ্কা, লঙ্কার গুঁড়ো, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


დএখন রেসিপিটা যেভাবে প্রস্তুত করলাম---


✠প্রস্তুত প্রণালী:✠


➤কচুরমুখীগুলোর খোসা প্রথমে ভালোভাবে ছালিয়ে নিয়ে পরে কাটার পরে ধুয়ে রেখেছিলাম। এরপর বরবটিগুলোও কেটে নেওয়ার পরে ধুয়ে রেখেছিলাম।

➤রসুনের থেকে কোয়াগুলো ছাড়িয়ে নিয়ে খোসা ছালিয়ে রেখেছিলাম। এরপর লঙ্কাগুলো কেটে নেওয়ার পরে ধুয়ে রেখেছিলাম।

➤ধুয়ে রাখা গলদা চিংড়িগুলোতে ১.৫ চামচ করে লবন আর হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে চিংড়িগুলোর গায়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।

➤একটি কড়াই চুলার উপরে বসিয়ে তাতে সরিষা তেল অল্প করে দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর গরম হলে পরে তাতে গলদা চিংড়ির পিসগুলো অল্প করে দিয়ে দিয়ে সবগুলো ভালোভাবে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤চিংড়ি ভাজার পরে কড়াইতে আরেকটু তেল দিয়ে তাতে কচুরমুখীর পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং ভালোভাবে ভাজা মতো হয়ে আসলে পরে তুলে নিয়েছিলাম।

➤কচুরমুখী ভাজার পরে কড়াইতে আরেকবার তেল দিয়ে পাঁচফোড়ন দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে রসুনের পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤রসুনটা হালকা ভাজা হয়ে আসলেই তাতে ভেজে রাখা কচুরমুখীর পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে বরবটি দিয়ে দিয়েছিলাম এবং সাথে লঙ্কাগুলোও দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤লঙ্কা দেওয়ার পরে তাতে স্বাদ মতো আরেকবার লবন, হলুদ এবং দেড় চামচের মতো লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর সব উপাদানের সাথে ভালোভাবে উল্টেপাল্টে মিশিয়ে নিয়েছিলাম।

➤মিশিয়ে নেওয়ার পরে তাতে জল দিয়ে দিয়েছিলাম এবং জলটা ভালোভাবে ফুটিয়ে নিয়েছিলাম।

➤কচুরমুখী ভালোভাবে সেদ্ধ হয়ে গেলে কিছুটা তুলে নিয়ে ভালোভাবে গলিয়ে নিয়েছিলাম তরকারিটা দ্রুত ঘন করার জন্য।

➤গলিয়ে নেওয়ার কিছুক্ষন পরে তরকারিতে গলদা চিংড়ি দিয়ে দিয়েছিলাম এবং কিছু সময় আবার ফুটিয়ে নেওয়ার পরে তাতে গলানো কচুরমুখী দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা আর কিছুক্ষন জ্বাল দিয়ে নিয়েছিলাম ঘন হয়ে আসার জন্য।

➤তরকারিটা ঘন হয়ে আসলেই জ্বাল নিভিয়ে দিয়েছিলাম আর একটু ঝোল ঝোল মতো রেখেছিলাম। এরপর তাতে জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়ে একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 last year 

দাদা এখন তো সবজির আর কোন সিজন আর লাগে না। সব সিজনে সবকিছু পাওয়া যায়। কিন্তু কথা হল চিংড়ি মাছ দিয়ে কচুর ছড়া রান্না করতে দেখলেও বরবটি দিয়ে তো কখনো রান্না করতে দেখিনি দাদা। এতো দেখছি একটি ইউনিক রেসিপি। আবার আপনি এত সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন দেখেই তো মন ভরে গেল। খেতে পারলে হয়তো স্বাদ বুঝা যেত।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

একদম ঠিক কথা বলেছেন দাদা বরবটি সবজিটা আমার কাছে ভর্তা করে খেতেই বেশি ভালো লাগে। শীতকাল আসলেই আমি বরবটির ভর্তাটা বেশি খেয়ে থাকি। গরম ভাতের সাথে খেতে বেশ ভালো লাগে। তবে আপনি নন-সিজনে বরবটি এবং কচুর মুখী রান্না করেছেন দেখে ভালো লাগলো। আসলে কচুর মুখি সেই শীতকালে খেয়েছি এখন আর খাওয়া হয়নি। তাই জন্য আপনার পোষ্টের মাধ্যমে দেখে ভালো লাগলো। আর দুই কালারের বরবটি দেখে আরো ভালো লাগলো। আসলে আমরা যেই সবজিটা অনেকদিন আগে খেয়ে থাকি তার চোখের সামনে পড়লে কিনে নিয়ে থাকি। সবজি রান্না করলে কিন্তু বেশ ভালোই লাগে খেতে। আসলে এইসব সবজিগুলো চিংড়ি মাছ দিয়ে রান্না করলেই বেশি ভালো লাগে। আমি নিজেও চিংড়ি মাছ রান্না করলে বেশি পছন্দ করি। দাদা আপনার আজকের রেসিপিটাও অসাধারণ হয়েছে।

 last year 

চিংড়ি মাছ দিয়ে যে রেসিপি রান্না করা হোক না কেন খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আর চিংড়ি মাছ দিয়ে কচুর মুখী রান্না করলে তো কথাই নেই। তবে আপনার মতো এভাবে বরবটি এবং কচুর মুখী দিয়ে চিংড়ি মাছ রান্না করে কখনো খাওয়া হয়নি। আপনার রেসিপির কালার দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। এভাবে আমি একদিন ট্রাই করে দেখব। ধন্যবাদ আপনাকে দাদা সুস্বাদু ও মজাদার একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য

 last year 

দাদা আপনি বেশ অভিজ্ঞ খাবার দাবারে।আপনার বলার কথার সাথে আমিও একমত।এই সবজি ভাজি বা ভর্তাতেই খুব ভালো লাগে।আপনি আজ গলদা চিংড়ি কচুমুখি আর বরবটি দিয়ে রান্না করলেন।খেতে ভীষণ মজার হয়েছিল তা রেসিপি দেখেই বেশ বুঝতে পারছি। আর তাছাড়া আপনি কচুমুখি ও ভেজে নিলেন।এজন্য এর টেস্ট বহুগুন বৃদ্ধি পেলো।মজার এই রেসিপিটি ধাপে ধাপে আপনি শেয়ার করলেন। খুব ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা মজার মজার রেসিপি শেয়ার করার জন্য। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

 last year 

কচুরমুখী এবং বরবটি দিয়ে গলদা চিংড়ির সুস্বাদু রেসিপি দেখেই খেতে ইচ্ছা করছে। আপনি খুবই মজাদার রেসিপি তৈরি করেছেন দাদা। আপনার রেসিপির পরিবেশন আমার খুবই ভালো লাগেছে। এত মজাদার রেসিপি ধাপে ধাপে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

লাল রঙের বরবটি কখনো খেয়েছি কিনা মনে পড়ছে না। তবে সাদাগুলো প্রচুর পরিমাণে খাওয়া হয়েছে। তবে কাকতালীয়ভাবে আজকে আমি বরবটির ভর্তা তৈরি করেছি। কচু মুখী এবং বরবটি আলাদা রান্না করে খেয়েছি কখনো একসাথে খাইনি। ভাই আপনার পোস্টের মাধ্যমে আজকে নতুন রেসিপি শিখে নিলাম।

 last year 

কচুরমুখী এবং বরবটি দিয়ে গলদা চিংড়ির সুস্বাদু রেসিপি দেখে সুস্বাদু মনে হচ্ছে তাই খেতে ইচ্ছা করছে। আপনার রেসিপি পরিবেশন আমার খুবি ভালো লেগেছে। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ দাদা।

 last year 

জি দাদা আপনি ঠিকই বলেছেন বরবটি দুই রকমে দেখা যায়। একটি সবুজ জাতের আরেকটি লাল কালারের হয়ে থাকে। তবে বরবটি গুলো খেতে বেশ দারুন লাগে। আপনি আজকের কচুরমুখী এবং বরবটি দিয়ে গলদা চিংড়ি রান্না করেছেন। আসলে চিংড়ি মাছ যে কোন সবজিতে রান্না করলে খেতে দারুন লাগে। আপনি যেভাবে রান্না করেছেন তা দেখে বুঝতে পারছি এটা অনেক সুস্বাদু হয়েছে। রান্নার প্রক্রিয়ার প্রত্যেকটা ধাপ আপনি খুবই চমৎকার ভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

দাদা আপনার রেসিপি সব সময় আনকমন হয়। আপনি প্রায় সময় নন সিজন সবজি দিয়ে রেসিপি তৈরী করে থাকেন। আজকে দেখলাম বরবটি, কচুরমুখী আর গলদা চিংড়ি মিশ্রন করে তরকারি রান্না করেছেন। কাচাঁ লংঙ্কা দেওয়ার পরে আবার শুকনা লঙ্কার গুঁড়ো দিয়েছেন দেড় চামচ। আমি যে কোন একটি লঙ্কা দেয়। হয়তো গুঁড়ো আর না হয় কাচাঁ লংঙ্কা। দুইটা এক সাথ দিয়ে ঝালে খেতেই পারবো না। চিংড়ি মাছ গুলো খুবই লোভনীয় ছিল। ধন্যবাদ দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66740.62
ETH 3336.11
USDT 1.00
SBD 2.72