ঢেঁড়শ আর গলদা চিংড়ির সুস্বাদু রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগlast year
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটি রেসিপি শেয়ার করে নেবো। এই রেসিপিটা হলো গলদা চিংড়ির, এটি ঢেঁড়শ দিয়ে রান্না করেছিলাম। ঢেঁড়শ খুবই মজাদার একটি সবজি। এই সবজিটা যেকোনো তরকারিতেই ভালো লাগে, নালা জাতীয় খেতেও বেশ মজার লাগে খাওয়ার সময়। ঢেঁড়শটা আমার কাছে ভর্তা আর ভাজিতে আরো বেশি ভালো লাগে। ঢেঁড়শের অনেক উপকারিতা আছে, যেমন দেখা যায় আমরা অনেক সময় পাকা ঢেঁড়শ অর্থাৎ যেগুলোর ভিতরে একটু আঁশ মতো হয়ে গেছে সেগুলো খেতে চাইনা, আমি নিজেও খেতে চাইনা, কারণ আঁশটা চিবানোর সময় তেমন মজা আসে না। কিন্তু এই আঁশেও একধরণের উপকারিতা আছে যা আমাদের রক্তের দিকেও কোলেস্টেরল এর সঠিক মাত্রাকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে বিভিন্ন ধরণের ক্যারোটিন আর ভিটামিন থাকে যা বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফলে ঢেঁড়শ অনেক পুষ্টিকর একটি সবজি। যেমন বলা যায় এতে উপকারিতারও কমতি নেই আবার স্বাদের দিক থেকে বললেও অনেক টেস্টি। কাঁচা ঢেঁড়শ কেউ খেয়েছেন কিনা জানিনা, ঢেঁড়শ একদম যেগুলো কচি সেগুলো কাঁচা খাওয়া যায়, কিন্তু সেটা সদ্য গাছের থেকে তুলে খেলে ভালো লাগবে, কারণ আমি একসময় খেয়েছি, বেশ ভালো লাগে। যাইহোক, গলদা চিংড়ি দিয়ে ঢেঁড়শের এই রেসিপিটার মূল উপকরণের দিকে চলে যাবো।


❂প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:❂

❣উপকরণ
পরিমাণ❣
গলদা চিংড়ি
৫০০ গ্রাম
ঢেঁড়শ
৩০০ গ্রাম
আলু
৪ টি
পেঁয়াজ
২ টি
কাঁচা লঙ্কা
১২ টি
গোটা জিরা
১ চামচ
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৫ চামচ
হলুদ
৪.৫ চামচ
জিরা গুঁড়ো
২ চামচ


ঢেঁড়শ, আলু, পেঁয়াজ


কাঁচা লঙ্কা, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


დএখন রেসিপিটির ধাপগুলো নিচের দিকে তুলে ধরবো----


☬প্রস্তুত প্রণালী:☬


❖গলদা চিংড়িগুলো ফ্রিজ থেকে বের করে জলে কিছুক্ষন ভিজিয়ে রেখে ছাড়িয়ে নিয়ে একবার নেড়েচেড়ে ধুয়ে তুলে রেখেছিলাম।

❖আলুগুলোর খোসা ভালোভাবে ছালিয়ে নিয়ে ছোট পিস করার পরে ধুয়ে রেখেছিলাম। এরপর ঢেঁড়শগুলো একটু লম্বা লম্বা মতো রেখে কেটে নিয়ে পরে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

❖পেঁয়াজ দুটির খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে রেখেছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কাগুলো কেটে নেওয়ার পরে ধুয়ে রেখেছিলাম।

❖গলদা চিংড়ির পিসগুলোতে লবন আর হলুদ দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে রেখেছিলাম।

❖কড়াইতে তেল দিয়ে গরম করার পরে গলদা চিংড়িগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালোভাবে ভাজা হয়ে গেলে তুলে রেখেছিলাম।

❖গলদা চিংড়ি ভাজার পরে কড়াইতে আরেকটু তেল দিয়ে তাতে আলুর পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর আলু ভাজা হয়ে গেলে তুলে নিয়েছিলাম।

❖আলু ভাজার পরে কড়াইতে আরেকটু তেল দিয়ে পেঁয়াজ দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পেঁয়াজ ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

❖পেঁয়াজ ভাজা হয়ে গেলে কড়াইতে আরেকটু তেল দিয়ে গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম। জিরা হালকা ভাজা হয়ে আসলে তাতে ঢেঁড়শ দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖ঢেঁড়শ দেওয়ার পরে তাতে ভাজা আলুর পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে সেই সাথে লঙ্কা আর ভেজে রাখা গলদা চিংড়ির পিসগুলোও দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖গলদা চিংড়ি দেওয়ার পরে তাতে স্বাদ মতো লবন আর হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে ভেজে রাখা পেঁয়াজ দিয়ে দিয়েছিলাম এবং সব উপাদানগুলো মশলা সহ উল্টেপাল্টে মিক্স করে নিয়েছিলাম।

❖মিক্স করার পরে তাতে পরিমাণমতো জল দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর ভালোভাবে ফুটিয়ে সব সেদ্ধ করে নিয়েছিলাম।

❖সেদ্ধ আলুর পিস কিছু তুলে গলিয়ে রেখেছিলাম।

❖আলু গলিয়ে নেওয়ার পরে তরকারি আরেকটু ফুটিয়ে তাতে আলুটা পুনরায় আবার দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖আলু তরকারির সাথে মিশিয়ে দেওয়ার পরে তাতে চামচখানিক জিরার গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা আরো কিছুক্ষন জ্বাল দিয়ে নিয়েছিলাম ভালোভাবে হয়ে আসার জন্য।

❖ঝোলটা ঘন হয়ে আসলে আর সেই সাথে ঝোলটা সামান্য মেরে দিয়ে নামিয়ে নিয়েছিলাম। তরকারিটা পরিবেশনের সময় আরেকবার তাতে জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়ে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 last year 

দাদা আজকে আপনার গলদা চিংড়ি রেসিপি দেখে যেন খেতে ইচ্ছা করছে। ঢেঁড়স দিয়ে আপনি এই মজাদার রেসিপি তৈরি করেছেন। আসলে ঢেঁরস ভাজি খেতে আমার খুবই ভালো লাগে আর গলদা চিংড়িতে হলে তো কথা নেই। গলদা চিংড়ি আমার খুবই প্রিয়। আমি কিছুদিন আগে এই হলদা চিংড়ির ভুনা রেসিপি তৈরি করেছিলাম। আজকে আপনার ঢেঁরসের এবং গলদা চিংড়ি সুস্বাদু রেসিপি দেখেই যেন খেতে ইচ্ছা করছে। এত মজাদার রেসিপি ধাপে ধাপে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

 last year 

দাদা আজ দারুন মজার রেসিপি শেয়ার করেছেন। চিংড়ি মাছ খুব পছন্দ আমার।আর আপনি ঢেঁড়শের বেশকিছু উপকারিতা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। জেনে ভালো লাগলো। কচি ঢেঁড়শ কাঁচা আসলে খাওয়া হয়নি।নিজের গাছের হলে ট্রাই করতাম খাওয়ার।যাই হোক আপনার রেসিপিটি আমার খুব ভালো লেগেছে। যেকোনো মাছে অরুচি হলেও চিংড়ি মাছে আমার কোন অরুচি নেই।খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ দাদা মজার এই রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

আসলে দাদা, পাকা ঢেঁড়শ গুলোর উপকারিতা এত বেশি এটা আগে কখনো জানাই ছিল না। পাকা ঢেঁড়শ কখনো খাওয়া হয়নি। আসলে অনেক আঁশ থাকে এর মধ্যে, আর স্বাদ পাওয়া যায় না রান্না করলে। তাই খেতে ভালো লাগে না। ঢেঁড়শ রান্না অনেকবার খাওয়া হয়েছে। তবে এভাবে চিংড়ি মাছ দিয়ে রান্না করে কখনো খাওয়া হয়নি আমার। আপনি খুবই লোভনীয় একটা রেসিপি তৈরি করেছেন আজকে। গলদা চিংড়ি এবং ঢেঁড়শের এরকম সুস্বাদু রেসিপি দেখে আমার তো খুবই লোভ লেগে গিয়েছে। আপনি সব সময় অনেক মজাদার রেসিপি তৈরি করে থাকেন। আপনার এই রেসিপি পোষ্টের মাধ্যমে খুবই মজাদার এবং সুস্বাদু একটা রেসিপি শিখে নিতে পেরেছি। দেখে বুঝতে পারছি অনেক মজা করে খেয়েছিলেন রেসিপিটা। সব মিলিয়ে আপনার রেসিপিটা খুব ভালো লাগলো দাদা।

 last year 

দাদা লোভ লাগিয়ে দিলেন মজাদার রেসিপি দেখিয়ে। গলদা চিংড়ি আমার অনেক বেশি পছন্দের। গলদা চিংড়ি দিয়ে যেকোনো রেসিপি তৈরি করলে খেতে ভীষণ ভালো লাগে। আপনি ঢেঁড়স দিয়ে গলদা চিংড়ির রেসিপি তৈরি করেছেন। পাকা ঢেঁড়সের এরকম উপকারিতার কথা আগে জানতাম না। আপনার মাধ্যমে জেনে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আপনার তৈরি মজাদার এবং লোভনীয় রেসিপি গুলো দেখলে আমার তো ইচ্ছে করে খেয়ে নিতে। রেসিপিটার কালার কম্বিনেশনটা খুবই সুন্দর এসেছে। ঢেঁড়স অনেকদিন ধরে খাওয়া হয় না তাই ভাবছি বাজার থেকে কিনে নিয়ে আসব। আর সাথে গলদা চিংড়ি নিয়ে এসে এভাবেই রেসিপিটা তৈরি করব। এই রেসিপির টেস্ট তো একবার করতেই হয়।

 last year 

কাঁচা ঢেঁড়শ খাওয়া যায় এটা আজকে প্রথম জানতে পারলাম দাদা😅। ঢেঁড়শ যেভাবেই রান্না করা হোক না কেন খেতে অনেক ভালো লাগে। ঢেঁড়শ ভর্তা গরম ভাতের সাথে খেতে বেশ ভালো লাগে। আর ঢেঁড়শ ভাজি করলেও খেতে বেশ মজার হয়। ঢেঁড়শ তরকারি দিয়ে ভাত খেলে মনে হয় যেন খুব দ্রুতই খাওয়া হয়ে যায়। চিংড়ি মাছের সাথে ঢেঁড়শ রান্না করলে খেতে আরো বেশি মজার হয়। একদিকে চিংড়ি মাছ অন্যদিকে পছন্দের সবজি ঢেঁড়শ দুটো মিলেমিশে দারুন একটি রেসিপি তৈরি করেছেন দাদা। মন চাচ্ছে এখনই তৈরি করে ফেলি। তবে দুঃখ একটাই বাসায় চিংড়ি মাছ নাই। কিছু চিংড়ি মাছ বাংলাদেশে পার্সেল করে পাঠিয়ে দিয়েন দাদা। আপনার তো আবার চিংড়ি মাছের খনি আছে মনে হয় 🤭🤭।

 last year 

দাদা আপনার মতো আমারও কিন্তু ঢেঁড়স খুব পছন্দের সবজি।ঢেঁড়স যেই ভাবে রান্না করে না কেনও খেতে কিন্তু দারুণ লাগে দাদা।আর ঢেঁড়স এর যেই পরিমাণে উপকারীতা রয়েছে বলে শেষ হবে না। দাদা আপনি আলু ও ঢেঁড়স দিয়ে গলদা চিংড়ি রেসিপি তৈরি করেছেন।তবে দাদা আলু এভাবে গলিয়ে কখনো রান্না করে খাওয়া হয়নি। একদিন আপনার এই রেসিপি অবশ্যই তৈরি করে খেয়ে দেখবো। দেখে দারুণ লাগছে কালার।খেতে মনে হয় অনেক সুস্বাদু হয়েছিল। অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল দাদা।আর একটা কথা দাদা।আপনার থেকে আমার রেসিপি তৈরি শিখেে নিতে হবে।

 last year 

দাদা চিংড়ির একটি দুর্দান্ত রেসিপি শেয়ার করেছেন আজ আপনি। ঢেঁড়শ দিয়ে এভাবে চিংড়ি খাওয়া হয়নি কখনও। আপনার রেসিপি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজা করেই খেয়েছিলেন।একদিন বাসায় ট্রাই করে দেখবো রেসিপিটি।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

সবজির মধ্যে ঢেঁড়স এবং মাছের মধ্যে গলদা চিংড়ি খেতে আমি খুবই পছন্দ করি। ঢেঁড়স ও গলদা চিংড়ির সমন্বয়ে চমৎকার একটি রেসিপি তৈরির প্রক্রিয়াটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আপনার এই রেসিপি তৈরিতে সিদ্ধ আলু গলিয়ে ব্যবহার করার কারণে নিশ্চয়ই রেসিপিটি খেতে আরো বেশি সুস্বাদু লেগেছিল।

 last year 

অও, খুব সুন্দর একটি রেসিপি।গলদা চিংড়ি আমার যেমন পছন্দের তেমনি ঢেঁড়শও।ঢেঁড়শ ভর্তা খেতে আমার দুর্দান্ত লাগে।আর ঝোলে খুব কমই খাওয়া হয় ছোট মাছ কিংবা চিংড়ি দিয়ে।তবে গলদা চিংড়ি দিয়ে কখনো এভাবে খাওয়া হয় নি।আপনার রেসিপিটি সুস্বাদু হয়েছে সেটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।আমার তো আপনার লেখা পড়ে ছোটবেলায় কচি ঢেঁড়শ খাওয়ার কথা মনে পড়ে গেল।প্রত্যেকটি ধাপ সুন্দর ছিল।তবে দাদা গলদা চিংড়ি ফ্রিজে রাখার পর ও ঘিলু জল হয়ে যায়নি তো!ধন্যবাদ আপনাকে, ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.17
JST 0.031
BTC 88506.38
ETH 3332.66
USDT 1.00
SBD 2.94