চাল কুমড়োর ঘন্ট রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। এই রেসিপিটা আমি গতদিন দুপুরের দিকে তৈরি করেছিলাম। ওইদিন চাল কুমড়ো আর কাঁকড়া দিয়ে একটা ঘন্ট মতো রেসিপি তৈরি করেছিলাম। চাল কুমড়ো বিভিন্ন রকমের সাইজ এর হয়ে থাকে, যেমন কোনটা গোল আবার কোনটা লম্বা। চাল কুমড়ো একটি উপকারী সবজি, এর নানা পুষ্টিগুণ রয়েছে। চাল কুমড়োর সাথে সাথে তার এর কচি কচি পাতাগুলো আর ডগাও রান্না করে খাওয়া যায়, আর এই দুটির রস অনেক উপকারী কাজে আসে আমাদের শরীরে। চাল কুমড়ো আমাদের পেটের বিভিন্ন ধরণের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াকে ধংস করতে সাহায্য করে। এছাড়া আমাদের অনেক সময় এসিডিটির সমস্যা হয়ে থাকে যেগুলোর ক্ষেত্রেও এই চাল কুমড়ো অনেক উপকার আসে, কারণ চাল কুমড়ো পেটের ভিতরকে ঠান্ডা রাখে আর এর ফলে এসিডিটির সমস্যাটাও চলে যায়। চাল কুমড়োর মতো সবজি মাঝেমধ্যে আমাদের শরীরের কথা চিন্তা করে খাওয়া উচিত কিন্তু আসলে মুখে বললেও সেটা হয়ে ওঠে না, আজকাল করতে করতে সময়টাই শুধু চলে যায়। এই চাল কুমড়োটাও এনে ফ্রিজে ফেলানো ছিল, আজকে খাবো, কালকে খাবো করতে করতে অনেকদিন হয়ে গেলো। আমিও অনেকদিন বাদে ছোট কাঁকড়া দিয়ে রান্না করে খেলাম। ছোট কাঁকড়া দিয়ে রান্না করে খেতে বেশ মজাদার লেগেছিলো। এই চাল কুমড়ো ঘন্ট বা ভাজা মতো করে খেতেও দারুন মজা লাগে। আর ঘন্ট রেসিপিও অনেকদিন বাদে করেছি, আর খেতেও ভালো হয়েছিল। যাইহোক এখন এই রেসিপিটির মূল বিষয়ের দিকে চলে যাবো।


☬প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☬

❣উপকরণ
পরিমাণ❣
পাতি কাঁকড়া
১০০ গ্রাম
চাল কুমড়ো
১ টি
পেঁয়াজ
৩ টি
কাঁচা লঙ্কা
৮ টি
কালো জিরা
পরিমাণমতো
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৪ চামচ
হলুদ গুঁড়ো
৪ চামচ


পাতি কাঁকড়া, চাল কুমড়ো, পেঁয়াজ, কাঁচা লঙ্কা


কালো জিরা, সরিষার তেল, লবন, হলুদ গুঁড়ো


✔এখন রেসিপিটা যেভাবে তৈরি করলাম---


❂প্রস্তুত প্রণালী:❂


➤সব কাঁকড়াগুলোর উপরের শক্ত খোলক আস্তে আস্তে তুলে নিয়েছিলাম। এরপর চাল কুমড়োটির খোসা ছালিয়ে নিয়ে কেটে নিয়েছিলাম এবং জল দিয়ে পরে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম।

➤পেঁয়াজ তিনটির খোসা ছাড়িয়ে নেওয়ার পরে কেটে নিয়েছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কাগুলো সব কেটে নেওয়ার পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

➤খোলক ছাড়ানো কাঁকড়াগুলোতে ১.৫ চামচ করে লবন আর হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর একটি প্যানে সরিষার তেল দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে তেলে হালকা করে জল দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤হালকা জল দেওয়ার পরে লবন-হলুদ দেওয়া কাঁকড়া তাতে দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর কাঁকড়াগুলো ভালোভাবে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤কাঁকড়া ভাজা হয়ে গেলে প্যানে আবারো সরিষার তেল দিয়ে তাতে কালো জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম। একটু ভাজা মতো হলে তাতে কেটে রাখা পেঁয়াজ ধুয়ে নিয়ে দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤পেঁয়াজটা ভালোমতো ভাজা করে নিয়েছিলাম। এরপর তাতে কেটে রাখা চাল কুমড়ো পুরোটা দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤চাল কুমড়ো দেওয়ার পরে তাতে ভেজে রাখা কাঁকড়া দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে কেটে-ধুয়ে রাখা কাঁচা লঙ্কাগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤লঙ্কা দেওয়ার পরে তাতে স্বাদ মতো লবন আর হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর চাল কুমড়োর সাথে সব কিছু উল্টেপাল্টে ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম।

➤মিক্স করার পরে একটু জল দিয়ে দিয়েছিলাম ( এক্ষেত্রে জল না দিলেও হয় )। এরপর চাল কুমড়ো ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে আসার জন্য জ্বালটা ফুল আঁচে দিয়ে কিছুক্ষন ঢেকে রেখে দিয়েছিলাম।

➤চাল কুমড়ো ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে আসলে ঢাকনা তুলে নিয়েছিলাম। তবে জলটা এখনো থাকায় জ্বালটা আরো কিছু সময় ফুল আঁচে দিয়ে রেখেছিলাম শুকনো শুকনো মতো হয়ে আসার জন্য।

➤জল কমে গিয়ে শুকনো শুকনো মতো হয়ে আসলে জ্বালটা একদম লো মিডিয়ামে দিয়ে রেখেছিলাম আর খুন্তি দিয়ে বার বার নাড়াচাড়া দিতে দিতে গলিয়ে নিয়ে অর্ধেক ঘন্ট মতো পর্যায়ে নিয়ে এসেছিলাম।

➤চাল কুমড়ো আরেকটু শুকনো শুকনো মতো পর্যায়ে এবং সম্পূর্ণ ঘন্ট মতো পর্যায়ে চলে আসলে আমি জ্বাল নিভিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

চাল কুমড়া আমারও খুবই প্রিয়, আর আজকে আপনি চাল কুমড়া দিয়ে মজাদার চিংড়ি মাছের রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার রেসিপির পরিবেশন আমার খুবই ভালো লেগেছে দাদা। আসলে চাল কুমড়ার ভাজি খেতে খুব মজাদার লাগে।আজকের রেসিপি দেখে অনেক সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আপনি খুবই সুন্দরভাবে ধাপে ধাপে রেসিপিটি পরিবেশন করলেন, দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুবই সুস্বাদু রেসিপি।এই রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

দাদা,চাল কুমড়োর ঘন্ট রেসিপিটি দারুণ হয়েছে।আর আপনি কাঁকড়া দিয়ে তৈরি করেছেন দেখে মনে পড়ে গেল পটলের রেসিপি কনটেস্টের কথা।তখন আমি কাঁকড়া পটলের চপ করেছিলাম,খেতেও ভালো লেগেছিল।তবে আজকের এই রেসিপিটি আমার কাছে একদমই নতুন।আমরা বেশিরভাগ সময় এই চালকুমড়োকে ডাল দিয়ে বা মাছ দিয়ে রান্না করে খাই।এর পাশাপাশি ভাজি হিসেবেও খাই।তবে এভাবে কখনো ঘন্ট তৈরি করার কথা মাথায়ও আসেনি।ভালো লাগলো রেসিপিটি। আর সর্বশেষ পরিবেশনটা দেখে মুখে পানি এসে গেল।

 2 years ago 

এখন শীতকাল আসছে আর চপ এর মতো বিভিন্ন ভাজি চলবে। আমিও পটলের চপ একদিন ট্রাই করবো দেখি সময় পেলে।

তবে এইটা ঠিক বলেছেন, চাল কুমড়ো ডাল দিয়ে রান্না করে খেতেও নাকি ভালো লাগে শুনেছি কিন্তু আমি খাইনি এখনো। একদিন করবো তাহলে ডাল দিয়ে দেখি।

 2 years ago 

সত্যি বলেছেন দাদা চাল কুমড়ো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কিন্তু এত যে উপকারী তা আজ আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম। চাল কুমড়া রান্না বা ভাজি আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। চাল কুমড়া চিংড়ি মাছ এবং ডাল দিয়ে রান্না করার খেয়েছি। তবে আপনার মত কাকড়া দিয়ে রান্না করে কখনো খাওয়া হয়নি। আপনার রেসিপিটি দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। সুস্বাদু একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপনি ঠিক বলছেন ভাইয়া চাল কুমড়া আমাদের শরীরে জন্য অনেক উপকারী।চাল কুমড়া কে বিভিন্ন ভাবে রেসিপি করে পাওয়া যায়।আপনি যেহেতু কাঁকড়া দিয়ে রান্না করেছেন চাল কুমড়া খেতে অনেক মজা হবে।ইউনিক একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন।

 2 years ago 

চাল কুমড়া ঘন্ট তো অনেক মজা লাগে তবে কাঁকড়া দিয়ে কখনো চাল কুমড়া ঘন্ট রেসিপি তৈরি করে খাওয়া হয়নি। আপনার এই রেসিপিতে পেঁয়াজের পরিমাণ একটু বেশি দিয়েছেন যার কারণে রেসিপিটির টেস্ট আরো বেশি হবে। এমন মজার একটি রেসিপি তৈরি করে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

যেকোনো ধরনের সবজি ফ্রিজে রাখার চেয়ে যদি টাটকা টাটকা খাওয়া হয় তাহলে খেতে অনেক সুস্বাদু এবং পুষ্টি পাওয়া যায়।। চাল কুমড়া আমারও খুব ফেভারেট মাঝে মাঝে সকালের নাস্তায় রুটির সাথে খাওয়া হয়।। মাঝে মাঝে আপনার কাকড়া দিয়ে প্রস্তুত করার রেসিপি গুলা দেখলে আমি আর লোভ সামলাতে পারি না।। বেশ কিছুদিন আগে রেস্টুরেন্টে গিয়ে একবার কাকড়া খেয়ে ও আসছি।। আপনার প্রস্তুত করা আজকের রেসিপিটি দেখে আবার লোভে পড়ে গেছি ইচ্ছে করতেছে খেতে বসে যাই নিয়ে।।

 2 years ago 

চাল কুমড়ো দিয়ে কাকড়া বেশ ইউনিক একটি রেসিপি দেখতে পেলাম দাদা। চালকুমড়ো আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী এটা একদম ঠিক দাদা।রেসিপি পরিবেশন টা খুব দারুন হয়েছে। খুব সুন্দর ভাবে রান্না ধাপগুলো উপস্থাপন করেছেন। রান্নার কালার দেখেই বোঝা যাচ্ছে খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছিল। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য দাদা।

 2 years ago 
ছোটো ছোট কাঁকড়া ভাজা খেতে ও খুব সুস্বাদু লাগে।অনেকটা চিংড়ি মাছের মতো।আল চাল কুমড়া আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। যেমন-চাল কুমড়া এন্টি মাইক্রোবিয়াল এজেন্ট হিসাবে পেট এবং অন্ত্রের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে। এটি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ইনফেকশন বা আলসার রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে। মসলাযুক্ত খাবার বা দীর্ঘদিনের জন্য উপবাসের কারণে পাকস্থলিতে তৈরি হওয়া এসিড দূর করতে সাহায্য করে।যাইহোক চাল কুমড়া দিয়ে কাঁকড়ার ঘন্ট রেসিপিটি দেখতে খুবই অসাধারণ লাগছে এবং খেতে ও নিশ্চয়ই খুব সুস্বাদু হয়েছিল। তবে এভাবে কখনও ঘন্ট করে খাওয়া হয়নি। তাই আপনার কাছ থেকে নতুন একটি রেসিপি তৈরি করা শিখে নিলাম দাদা।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা, এত সুস্বাদু ও মজাদার চাল কুমড়া দিয়ে কাঁকড়ার ঘন্ট রেসিপি তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
 2 years ago 

এটা আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন দাদা কুমড়ো আমাদের পেটের মধ্যে অবস্থিত বিভিন্ন ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া কে ধ্বংস করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আজকে আপনি আমাদের মাঝে কাঁকড়া দিয়ে মিষ্টি কুমড়ো রান্নার খুবই চমৎকার একটা পদ্ধতি শেয়ার করলেন দাদা। যদিও কোন সময় কাঁকড়া খাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি কিন্তু রেসিপিটা দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছিল।

 2 years ago 

বাড়িতে কখনও কাঁকড়া খাই নি। প্রথম কাঁকড়া খেয়েছি জানুয়ারি মাসে কাকদ্বীপে এক আত্মীয়ের বাড়ি গিয়ে। বেশ সুস্বাদু লেগেছিলো। আর চালকুমড়ো ঘন্ট সব সময়েই কালোজিরে ফোড়ন দিয়ে নিরামিই খাওয়া হয়েছে। এটা একদমই ইউনিক রেসিপি আমার কাছে। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

কাঁকড়া আমাদের মাঝে মাঝে খাওয়া হয় যদি বাড়ির দিকে কেউ বিক্রি করতে আসে। সবসময় কাঁকড়া ভালো হয় না বলে কেনাও হয় না। আমিও চাল কুমড়ো নিরামিষ খাই, তবে খুবই কম, মাছ-শাক না থাকলে।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.034
BTC 63935.74
ETH 2749.19
USDT 1.00
SBD 2.65