টমেটো দিয়ে সুস্বাদু কাতলা মাছের ঝোল ঝোল রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগlast year
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটি রেসিপি শেয়ার করে নেবো। এই রেসিপিটি কিছুদিন আগে করেছিলাম। রেসিপিটি বড়ো একটা কাতলা মাছ দিয়ে করেছিলাম, কিন্তু এতে তেমন কোনো সবজি দিয়ে রান্না করিনি, শুধু আলু আর টমেটো দিয়ে রান্না করেছিলাম। টমেটোটা আমি আসলে সবসময় এই কাতলা মাছের ক্ষেত্রে দেওয়ার চেষ্টা করি যদি হাতের কাছে থাকে, কারণ টক টক মতো একটু টমেটো দিতে পারলে কাতলা মাছের তরকারিটা আমার কাছে খেতে দারুন লাগে। এমনিতেও এই মাছ একটা বেশ সুস্বাদু মাছ হিসেবে পরিচিত, তাই একে যেভাবেই খাওয়া হোক না কেন ভালো লাগবেই। এই কাতলা মাছটিতে মোটামুটি ভালোই তেল হয়েছিল, আর তেল হলে এর পেটলির পিসগুলো কিন্তু ভেজে খেতে বেশ ভালো লাগে। আমি কিন্তু এই মাছটির শুধু দাগাগুলো রান্না করেছিলাম, বাকি পেটলির পিসগুলো ভাজা মতো করে খেয়েছিলাম। বেশ সুস্বাদু ছিল ভাজা খেতে। আর এখন বর্ষার সময়ে একটু মাছ ভাজা খেতে বেশি ভালো লাগে, আসলে এটা শুধু বর্ষার সময়ে বললে ভুল হবে, কারণ আমার কাছে অলটাইম ভালো লাগে হা হা। আর আলু দিলে এইসব মাছগুলো ভালো লাগে, কিন্তু আমি আলুর পরিবর্তে শুধু ঝোলই খেয়েছিলাম, কারণ আলু তেমন খাইনা যে । তবে যাইহোক, এখন আমি এই সুস্বাদু রেসিপিটার প্রধান পর্বের দিকে চলে যাবো।


✠প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:✠

✦উপকরণ
পরিমাণ✦
কাতলা মাছ
৬০০ গ্রাম
আলু
৮ পিস
টমেটো
২ পিস্
পেঁয়াজ
১ টি
রসুন
১ টি
কাঁচা লঙ্কা
১২ টি
লঙ্কার গুঁড়ো
১.৫ চামচ
গোটা জিরা
২ চামচ
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৫ চামচ
হলুদ
৪ চামচ
জিরা গুঁড়ো
২ চামচ


কাতলা মাছ, আলু, টমেটো, পেঁয়াজ, রসুন


কাঁচা লঙ্কা, লঙ্কার গুঁড়ো, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


დএখন রেসিপিটা যেভাবে প্রস্তুত করলাম---


☀প্রস্তুত প্রণালী:☀


❖আলুগুলোর থেকে প্রথমে খোসা ভালোভাবে ছালিয়ে নিয়েছিলাম এবং পরে মাঝারি পিস পিস করে নিয়ে জল দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে রেখেছিলাম।

❖টমেটো দুটিকে কেটে নিয়ে রেখেছিলাম। এরপর পেঁয়াজ এর খোসা ছালিয়ে কেটে নিয়েছিলাম এবং সেই সাথে রসুনের কোয়াগুলো থেকে খোসা ছালিয়ে রেখেছিলাম। কাঁচা লঙ্কাগুলোকেও কেটে নিয়ে ধুয়ে রেখেছিলাম।

❖কাতলা মাছের পিসগুলোকে ধুয়ে নিয়ে তাতে ২ চামচ করে লবন আর হলুদ দেওয়ার পরে প্রত্যেক পিসের গায়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।

❖একটি প্যান ধুয়ে চুলায় বসিয়ে দিয়ে তাতে পরে তেল দিয়ে গরম করে নিয়েছিলাম এবং তাতে মাছের পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। পিসগুলো ভালোভাবে ভেজে তুলে নিয়ে রেখেছিলাম।

❖আরেকটি কড়াইতে মাছ ভাজার সময়ে একটু তেল দিয়ে আলুর পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর আলুগুলো ভালোভাবে লাল লাল ভাজা হয়ে এলে তুলে নিয়েছিলাম।

❖আলু ভেজে তুলে নেওয়ার পরে তাতে সরিষার তেল দিয়ে গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে পেঁয়াজ আর রসুন দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖পেঁয়াজ-রসুন জিরার সাথে ভেজে নেওয়ার পরে তাতে টমেটোর পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖টমেটো দেওয়ার পরে তাতে একটু লবন দিয়ে উল্টেপাল্টে নিয়েছিলাম এবং কিছুক্ষন জ্বাল দিয়ে গলিয়ে নিয়েছিলাম।

❖এরপর তাতে ভেজে রাখা আলুর পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। সেই সাথে তাতে কাঁচা লঙ্কাগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং তাতে স্বাদ মতো লবন, হলুদ এবং লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖সব মশলা ভালোভাবে মিক্স করে নেওয়ার পরে তাতে জল দিয়ে দিয়েছিলাম।

❖জল দেওয়ার পরে কড়াইটি কিছুক্ষন ঢেকে আলুর পিসগুলো দ্রুত সেদ্ধ করে নিয়েছিলাম।

❖সেদ্ধ আলু অল্প কিছু তুলে নিয়ে ভালোভাবে গলিয়ে আঠালো করে নিয়েছিলাম।

❖আলু গলিয়ে নেওয়া হয়ে গেলে তাতে ভেজে রাখা কাতলা মাছের পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর কিছুক্ষন ফুটিয়ে নেওয়ার পরে তাতে গলিয়ে রাখা আলুটা দিয়ে এবং সাথে কিছুটা জিরা গুঁড়ো দিয়ে আরো কিছুক্ষন জ্বাল দিয়ে নিয়েছিলাম।

❖তরকারিটা ঘন হয়ে আসলে পরে আমি জ্বাল নিভিয়ে তাতে আরো ১ চামচের মতো জিরা গুঁড়ো দিয়ে একটি পাত্রে পরিবেশনের জন্য একটু তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 last year 

আপনার কাতলা মাছের ঝোল রেসিপির কালারটা জাস্ট অসাধারণ লাগছে দেখতে দাদা।রেসিপি দেখেই বোঝা যাচ্ছে খেতে খুব সুস্বাদু ছিল।আপনি রেসিপি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব সুন্দর করে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন,এটা দেখে অনেক ভালো লেগেছে।রেসিপি পরিবেশন দুর্দান্ত হয়েছে।ধন্যবাদ সুন্দর রেসিপি পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

বর্ষার সময়ে বাইরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হবে আর ভর্তা ভাতের সাথে মাছ ভাজা থাকবে আহ বলতেই যেন খেতে ইচ্ছে করছে। টমেটো দিয়ে মজাদার কাতলা মাছের রেসিপি তৈরি করে শেয়ার করেছেন। সবশেষে পরিবেশন করার সময় যে ফটোগ্রাফি টা করেছেন সেটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে মাছের রেসিপি অনেক সুস্বাদু হয়েছে আর ঝোলের কালার টাই বলে দিচ্ছে যে এটা সুস্বাদু রেসিপি।

 last year 

কাতলা মাছ আমার ভীষণ পছন্দের মাছ।আমি এ মাছ সব রকমের খেতেই ভীষণ পছন্দ করি।মজার মাছ এই কাতলা মাছ।আপনি আলু, টমেটো দিয়ে ঝোল করলেন।রেসিপিটি ভীষণ লোভনীয় হয়েছে। আপনি রান্নার ধাপগুলো খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। আমিও আলু খুব একটা খাই না।যত কম খেয়ে পারা যায় আর কি।ধন্যবাদ দাদা মজার এই কাতলা মাছের ঝোল রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

মাছ ভাজা খেতে আমারও অনেক ভালো লাগে।
কাতলা মাছ দিয়ে টমেটো রেসিপি অসাধারণ। টমেটো দিয়ে যেকোনো মাছ রান্না করে খেলে একটু টকটক লাগে এবং খেতেও খুব দারুন লাগে। রান্নার প্রসেসটা অনেক ভালো জানেন দাদা দেখছি। কারন আপনার রেসিপিগুলো সবসময় ইউনিক হয়। টমেটো দিয়ে কাতলা মাছের রেসিপির কালারটি বেশ দারুণ এসেছে এবং খেতে ও মনে হয় অনেক মজা হয়েছিল। সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ দাদা আপনাকে।

 last year 

দাদা এরকম মজাদার রেসিপি গুলো তৈরি করতে আমি যেমন খুব পছন্দ করি, তেমনি খেতে এবং দেখতেও খুব ভালো লাগে আমার কাছে। দাদা আমিও আপনার মত কাতলা মাছ রান্না করার সময় টমেটো দেওয়ার চেষ্টা করি। আমার কাছেও একটু টকটক হলে খেতে খুব ভালো লাগে। আমার পছন্দের একটা রেসিপি তৈরি করেছেন তাইতো আমি লোভ সামলাতে পারছি না দাদা। পরিবেশনটা দেখে আমার তো খেয়ে নিতে ইচ্ছে করছে। তবে সামনে থাকা মাছের মাথাটি দেখে একটু বেশি লোভ লেগে গিয়েছে। ইচ্ছে করছে এখনই এক প্লেট ভাত নিয়ে আসি এবং মাছের মাথাটা নিয়ে খেয়ে ফেলি। যাইহোক দাদা আপনি আলু দিয়ে এবং টমেটো দিয়ে এই কাতলা মাছের মজাদার রেসিপিটা তৈরি করেছেন দেখে খুব ভালো লেগেছে। এরকম ভাবে ঝোল ঝোল করে রান্না করলে অনেক বেশি ভালো হয় খেতে। আপনি রেসিপিটা তৈরি করার পদ্ধতি উপস্থাপনার মাধ্যমে অনেক সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন, যা দেখে যে কেউ কিন্তু এই রেসিপিটা খুব সহজে তৈরি করতে পারবে। দাদা মজাদার রেসিপি টা নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

বর্ষাকাল কিংবা গরমকাল সব ঋতুতেই মাছ ভাজা আমার ভীষণ প্রিয়। গরম ভাত আর সাথে যদি হয় এক টুকরো লেবু তাহলে মাছ ভাজা খেতে আরো বেশি ভালো লাগে। কাতলা মাছের তেল হলে খেতে আরো বেশি মজার হয়। বড় বড় কাতলা মাছের দাম সাধারণ মানুষের সাধ্যের বাহিরে চলে যাচ্ছে। মাছের দাম একেবারে আকাশ ছোঁয়া হয়ে গেছে। কাতলা মাছের যেকোন রেসিপি তৈরি করলে খেতে ভালো লাগে। বিশেষ করে আলু এবং টমেটো দিয়ে মাছ রান্না করলে খেতে অনেক ভালো লাগে। আর টমেটোর টক টক ফ্লেভার মাছের স্বাদ আরো বাড়িয়ে তুলে। আমার বাসায় বেশ কিছুদিন ধরে কাতলা মাছ আনা হচ্ছে না। আসলে বর্তমানে মাছের দাম এতটা বেড়েছে যে সাধারণ মানুষের ক্রয়-ক্ষমতার বাহিরে চলে গেছে। কাতলা মাছ ভাজা খেতে যেমন ভালো লাগে তেমনি আলু টমেটো দিয়ে হালকা ঝোল করলেও খেতে অনেক ভালো লাগে। দাদা আপনি খুবই মজার একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন। লোভনীয় একটি রেসিপি সবার মাঝে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 last year 

ঠিক বলেছেন দাদা মাছের তেল হলে এর পেটলির পিসগুলো ভেজে খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে। কাতলা মাছের মাথা বড় বলে আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। টমেটো দিয়ে মাছ ভুনা খেতে আমিও খুব পছন্দ করি তবে শীতের সময়ে টমেটোর রেসিপি বেশি ভালো লাগে। বর্ষার এই সময়ে ইলিশ মাছ ভাজা খেতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। আপনার উপস্থাপনা দেখতে লোভনীয় দেখাচ্ছে। আপনার রেসিপির কালার খুব সুন্দর এসেছে। ধন্যবাদ দাদা মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

 last year (edited)

দাদা টমেটোর সাথে যে কোন মাছই খেতে দারুন লাগে। আর সেখানে যদি কাতল মাছ হয় তাহলে তো আর কোন কথা চলবে না। আরেকটি বিষয় হলো যে কোন বড় মাছের পেটলির অংশটা খুবই সুস্বাদু লাগে। আমি কিছুদিন আগে একটি বড় বৃগেট মাছ এনেছিলাম তার পেটলিটাও খেতে দারুন লেগেছে। আজকে আপনার কাতল মাছের পেটলির কথা পড়ে মনে পড়লো। অন্যান্য দিন থেকে আজকের রেসিপির কালারটা উজ্জল হয়েছে। কাতল মাছের মাথা যেন আমাকে খাওয়া জন্য ডাকছে,হা হা হা। ধন্য্যবাদ দাদা।

 last year 

আসলেই মাছ ভাজি খাওয়ার মজাই আলাদা।আর সেটা যদি হয় কাতলা মাছ তাহলে তো কথাই নেই।আপনার রেসিপিটি সুন্দর হয়েছে।আমার তো আলু খেতে অনেক ভালো লাগে।আপনার রান্না করা আলুর পিচ দেখে মনে হচ্ছে এখনই একটি নিয়ে খেয়ে ফেলি,হি হি।কাতলা মাছ আসলেই অনেক টেস্টি ও ইয়াম্মি।ভালো লাগলো আপনার রেসিপিটি,ধন্যবাদ দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56949.15
ETH 2401.26
USDT 1.00
SBD 2.33