মুভি রিভিউ: সীতা রামম
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে একটি মুভি রিভিউ শেয়ার করে নেবো। এই মুভিটির নাম হলো "সীতা রামম"। এই কাহিনীটি সাধারণত কাশ্মীর বোর্ডার আর পাকিস্তান বর্ডারের মধ্যে একটি কাহিনী অবলম্বনে তৈরি। তাহলে দেখা যাক, কাহিনীটি কিভাবে কি হয়।
✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠
এই কাহিনীটি সাধারণত শুরু হয় ইন্ডিয়ান একজন আর্মি অফিসার আর পাকিস্তানের একজন আর্মি অফিসারের বন্ধুত্বের মাধ্যমে। তবে এই বন্ধুত্বের পিছনে অনেক বড়ো একটা রহস্য আছে আর সেটা পরে বলবো। এখন পাকিস্তানের আফরীন নামের একটি মেয়েকে তার এই আর্মি দাদু ইন্ডিয়ান সেই অফিসারের একটা চিঠি যেটা ২০ বছর আগের আর সেটা ইন্ডিয়ায় সীতা নামের একটি মেয়েকে দেওয়ার দায়িত্ব দিয়ে যায়, কারণ তার দাদু মারা গিয়েছে, ফলে এই চিঠি পৌঁছানোর একমাত্র দায়িত্ব তাকেই দিতে বলে। এখন আফরীন মেয়েটি এই বিষয়ে খামখেয়ালিপনা শুরু করতে লাগে এবং যেতেই চায় না ইন্ডিয়ায়। আর তার আবার ইন্ডিয়ার উপর অনেক রাগও আছে। এখন বাধ্য হয় যেতে ইন্ডিয়ায়। কিন্তু ইন্ডিয়ায় গিয়ে এই সীতা নামের কাউকেই খুঁজে পায় না।
কারণ এখান থেকে সেই ২০ বছর আগের কথা কতোজনেই বা মনে রাখবে। এই চিঠি নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে আর কোনো উপায় খুঁজেই পায় না, আবার এই চিঠি না দিয়ে সে পাকিস্তানে যেতেও পারবে না। এখন এই সীতা এর বিষয়ে একমাত্র আর্মি অফিসার ছাড়া আর কেউ জানবে না। অনেকভাবে সেই সময়ের অবসরপ্রাপ্ত একজন আর্মি অফিসারকে খুঁজে বের করে এবং তার থেকে কিছু ইনফরমেশন পায়। আর তাই নিয়ে তারা খোঁজ লাগাতে লাগে। তবে রামের বন্ধু বিষ্ণু এই বিষয়ে সব থেকে বেশি জানতো। আর বিষ্ণুও খোঁজ পেয়ে যায় যে, পাকিস্তান থেকে কোনো একটা মেয়ে এসে এইসব খোঁজ খবর নিচ্ছে, আর গুপ্তচর ভেবেছিলো। কিন্তু পরে এই মেয়ের বিষয়ে সমস্ত ইনফরমেশন পেয়ে তাকে খুঁজে বের করে এবং তাকে সমস্ত বিষয় খুলে বলে।
আসলে এই রাম নামের আর্মি অফিসারের সাথে সীতার কিভাবে কানেক্শন সেটা একমাত্র বিষ্ণু বিস্তারিত জানতো। রামের সাথে সীতার কাশ্মীরে একটা দুর্ঘটনা প্রবন সময়ে দেখা হয় এবং সেখান থেকে তাদের মধ্যে পরিচয় হয় আর তাদের মধ্যে একটা সম্পর্কও হয়। তবে সীতা একজন প্রিন্স ছিল আর সেই মতে কোনো সাধারণ নাগরিকের সাথে তার সম্পর্ক মেনে নেবে না কেউ, তাই সে প্রথমে বিয়ে থেকে পিছিয়ে যায়, কিন্তু রামের প্রতি সীতার ভালোবাসা ছিল গভীর আর সে সমস্ত কিছু ছেড়ে কাশ্মীরে চলে যায় রামের কাছে। একদিন পাকিস্তানে একটা অপারেশন এর ডেট পড়ে আর সেখানে রাম আর বিষ্ণু যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সেখানে হামলা করে জঙ্গিদের ধংস করে, কিন্তু একটা ছোট মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে পাকিস্তানী আর্মিদের কাছে ধরা পড়ে যায় আর তাদের দুইজনের ধরে আটকে রাখে।
মানে তাদের সাথে একটা জঘন্য পরিস্থিতি তৈরি হয় সেখানে। সেখানে পাকিস্তানের আবু তারিক নামের একজনের সাথে রামের একটা বন্ধুত্ব হয় আর তাদের দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যও অনেক প্রচেষ্টা চালাতে থাকে। একসময়ে তাদের দুইজনকেই ছাড়ানোর প্ল্যান সফল হয়, কিন্তু তাদের হেড কোয়াটার থেকে নির্দেশ আসে যে, যেকোনো একজনকে ছাড়া যাবে। এখন রাম না গিয়ে বিষ্ণুকে পাঠিয়ে দেয়। আর রামের মাথায় দেশদ্রোহীর ছাপ লাগে যে সে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। কিন্তু সেটা কেউ জানছে না যে সে পাকিস্তানে জেলে আটকা পড়ে আছে। অবশেষে আবু তারিক তাকে আর বাঁচাতে পারেনি, তার ফাঁসির কার্যকর ধার্য করে পাকিস্তানী কোর্ট।
মূলত এই আফরীন নামের যে মেয়েটি ছিল সে আসলে আবু তারিকের নাতনি ছিল না। রাম যে মেয়েটিকে বাঁচানোর জন্য ধরা পড়েছিল সেই মেয়েটিই হলো এই আফরীন। এই সমস্ত তথ্য বিষ্ণু তাকে যখন জানায়, তখন সে নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারছিলো না, কারণ যাদের ঘৃণা করতো, সেই তাকে একসময় বাঁচিয়েছে। আর আবু তারিক রামের শেষ চিঠি আফরীনকে পাঠাতে বলে, কারণ রাম তার কাছে দিয়ে বলেছিলো যেন সে এই চিঠিটা সীতার কাছে পৌঁছিয়ে দেয়। আর সীতা যেহেতু কাশ্মীরে থাকতো, তাই এই খবরটা আর কেউ জানতো না বিষ্ণু ছাড়া। পরে আফরীন সবকিছু শোনার পরে এই চিঠিটা নিয়ে তার কাছে পৌঁছিয়ে দেয় আর তাতে সবকিছু লিখে দেয়। আসলে সীতা প্রিন্স নূর জাহান ছিল সেটা সে পরে জানতে পারে আর সেটা জানিয়ে যায় চিঠিতে। এরপর সেই চিঠি নিয়ে হেড কোয়াটার-এ দেখালে, তার সম্মান স্বরূপ উপাধি সীতার হাতে অর্পণ করে দেয়, যেটা তার জন্য একটা গর্বের বিষয় ছিল। আর তার দেশদ্রোহী বিষয়টাও দেশের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়।
✠ব্যক্তিগত রেটিং:✠
৮.৯/১০
✠ট্রেইলার লিঙ্ক:✠
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সীতা রামম মুভিটি অনেক সুন্দর একটি প্রেক্ষাপট নিয়ে সাজানো হয়েছে। দুলকার সালমানের অনেক মুভি আমি দেখেছি। অনেক সুন্দর আর বেশি অংশ রোমান্টিক মুভি করে। আজকের মুভিটা মূলত সীতা রামমকে কেন্দ্র করেই নিমার্ণ করা হয়েছে। আজকের মুভিতে দুইদিকে বেশি ফোকাস করেছে। এক হলো আফরীনের মনের অবস্থা ও বিশ্বাস আর দুই হলো কোন কিছু না জেনে কাউকে অপবাদ বা দুষারোপ করা। রাম সীতাকে এত ভালোবেশে বিয়ে করেও তাকে ছেড়ে দেশের পক্ষ থেকে অভিযানের জন্য ডাক আসলে নতুন বউ রেখে সাথে সাথে চলে যায়। এখানে মরনপন অভিযানে করে তারা জয় হলেও আফরীনের জন্য রাম আর বিষ্ণু আটকে যায়। এখানে রাম আবার বন্ধুত্বের বড় পরিচয় রেখেছে। নিজের মৃত্যু জেনেও বিষ্ণুকে দেশে যেতে বলেছে। আর তার ফাসিঁ হলেও নিজের বউয়ের কাছে শেষ চিঠি লিখে দিয়ে গেছে। সব কিছু জানার পরে আফরীনের ভুল ভেঙ্গেছে,দেশের মানুষের,রামের ডিপার্টমেন্টের ভুল ভেঙ্গেছে। সে মরেও বীর হয়ে সবার অন্তরে বেঁচে আছে। আর একটি নিয়ম হলো পূর্ব পুরুষের কোন অসিয়ত বা ওয়াদা থাকলে সেটা পালন করা উচিত। সেটার মধ্যে অবশ্যই কোন গুরুত্বপূর্ণ কিছু থাকতে পারে। যেটা আফরীন অনিচ্ছা সত্বেও করেছে। আর এর মাধ্যমে তার নতুন পরিচয় এবং ভুল ভেঙ্গেছে। সব মিলিয়ে দারুন একটি মুভি হয়েছে। ধন্যবাদ।
দাদা মাঝে মাঝে মুভি দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে যদিও মুড়ি আমি তেমন দেখি না। তবে মুভি দেখলে আমার খুবই ভালো লাগে। আপনার শেয়ার করা মুভিটি এখনো আমার দেখা হয়নি। আশা করছি মুভিটি দেখব। তবে আপনার পোস্টের মাধ্যমে মুভি টির বিস্তারিত বিষয়ে জানতে পেরে দেখার আরো আগ্রহী বেড়ে গেল। ধন্যবাদ দাদা পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
বাহ্! চমৎকার একটি মুভির রিভিউ শেয়ার করেছেন দাদা। এই ধরনের মুভিগুলো দেখতে আসলেই খুব ভালো লাগে। আসলে বেশিরভাগ ইন্ডিয়ানরা পাকিস্তানিদেরকে মন থেকে পছন্দ করে না,আবার বেশিরভাগ পাকিস্তানিরা ইন্ডিয়ানদেরকে মন থেকে পছন্দ করে না। আফরীন নামের পাকিস্তানি মেয়েটির বেলায়ও এমনটা ঘটেছে। তাইতো আফরীন ইন্ডিয়াতে যেতে চায়নি চিঠি পৌঁছে দিতে। সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো ধনী গরীব ভেদাভেদ করে না। তাইতো সীতা অবশেষে রামকে বিয়ে করে নেয়। কিন্তু রাম এবং বিষ্ণু দেশের জন্য অপারেশনে গিয়ে, সফল হওয়ার পরেও আফরীনকে বাচাঁনোর জন্য ধরা পড়ে যায় পাকিস্তানী আর্মিদের কাছে। একজন আর্মি আসলেই একটি দেশের মূল্যবান সম্পদ। রাম আসলেই মহান ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তাইতো নিজের জীবনের মায়া না করে বিষ্ণুকে মুক্ত করে দেয়। অবশেষে আফরীন চিঠিটা সীতার হাতে পৌঁছে দেওয়ার পর,সীতা রামকে দোষমুক্ত করতে সক্ষম হয়। সীতার জন্য সত্যিই খারাপ লাগলো। কারণ রামকে হারিয়ে ফেললো জীবন থেকে। তবে সীতা অবশ্যই গর্ব করতে পারবে রামের এই অনন্য কীর্তির জন্য। যাইহোক এতো চমৎকার একটি মুভির রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
যদিও এই মুভি টি আগে দেখা হয়নি , তবে আপনার রিভিউ পরে বেশ ভালোই লাগলো দাদা ৷ মুভির গল্পটা বেশ চমৎকার ৷ খুবই সুন্দর ভাবে মুভিটি রিভিউ করেছন ৷ একদিন সময় করে এই মুভিটি দেখেই নিবো ৷ আপনার রিভিউ পড়ে সীতা রাম মুভি টি দেখার আগ্রহ জাগলো ৷ অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে , এতো সুন্দর ভাবে মুভিটি রিভিউ করার জন্য ৷
দাদা আপনি আজকে এত সুন্দর একটা মুভির রিভিউ শেয়ার করেছেন দেখে, আমার কাছে সম্পূর্ণ মুভিটার রিভিউ পোস্ট পড়তে খুবই ভালো লেগেছে। আমার কাছে মুভি দেখতে অসম্ভব ভালো লাগে। তবে এখন ব্যস্ততার কারণে খুব একটা দেখতে পারিনা। তবুও আমি সময় পেলে চেষ্টা করি মুভি দেখার জন্য। সীতা রামম এই মুখটা কিন্তু সত্যি খুব সুন্দর ছিল। আর এই মুভিটার রিভিউ আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আবু তারকের নাতনি তো দেখছি আফরিন ছিল না অন্যকেও ছিল। আর শেষ চিঠিটা নিয়ে অনেক কিছুই হয়েছে। বিষ্ণু ছাড়া দেখছি তাদের এই বিষয়টা আর অন্য কেউই জানতো না। এরকম একটা বিষয় কিন্তু আসলেই গর্বের ব্যাপার। চিঠি দেখে সীতার কাছে সম্মানের সাথে এটা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। আর তার দেশদ্রোহী বিষয়টাও সবার মাঝে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, এ বিষয়টা আরো বেশি দারুন লেগেছে আমার কাছে। মুভিটা কিন্তু আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। সময় পেলে আমি এই মুভিটা দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব দাদা।
দাদা আপনার মুভিগুলোর রিভিউ আমি সব সময় পছন্দ করি। কারণ মুভি আর দেখাই লাগেনা আপনার মুভিগুলোর রিভিউ পড়লে। পুরো কাহিনীটা এমনিতেই জেনে নেওয়া যায় খুব ভালোভাবে রিভিউ করার পর। তাই আমি সব সময় আপনার মুভিগুলোর রিভিউ পোস্ট করার চেষ্টা করি। যেহেতু আমার মুভি খুব একটা দেখা হয় না তাই রিভিউ পড়লে ভালো লাগে। সম্মান স্বরূপ উপাধি তার হাতে চিঠিটা অর্পণ করে দিয়েছিল এই বিষয়টা সুন্দর ছিল কিন্তু। আর আফরিন বাবু তারেকের নাতনি ছিল না। বাবু তারিকের নাতনি তো আরেকজন ছিল। হয়ত ভুলবশত আফরিনকে মনে করেছিল বাবু তারেকের নাতনি। আসলে এসব কিছু জানার পর এরকম ভাবে কেউই একেবারে বিশ্বাস করতে পারেনা বিষয়গুলো। তাকে কিন্তু একসময় ও বাঁচিয়েছিল, আর সে উল্টো তাকে ঘৃণা করত। তবে সে নিজের এই ভুলটা বুঝতে পেরেছিল। মুভিটার কাহিনী আমার অনেক ভালো লেগেছে দাদা।