বাড়িওয়ালির পাঠানো ইফতার
|| আজ ২০ মার্চ, ২০২৪ || রোজ: বুধবার ||
হ্যাল্লো বন্ধুরা
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদে যেমন আছি, ভালো আছি। আসলে ভালো নেই, কথাটা বলতেও কেমন জানি ভালো লাগে না। কিছুটা অস্থির সময় যাচ্ছে বটে। তবে ভালোয়-মন্দেই মিলিয়েই তো জীবন। ভালো সময় যেমন থাকবে, পাশাপাশি মাঝে মধ্যে অস্থিরতাও থাকবে, এটাই প্রকৃতির নিয়ম। যেহেতু মন কিছুটা অস্থির , তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে আজ আনন্দের কিছু শেয়ার করা যাক।
কয়েক দিন আগে, ১৭ মার্চ ছিল সাধারণ ছুটির দিন। আমি আর বরমশাই দুজনেই বাসায়। অলস দুপুর। দুপুর ৩ টের কিছুক্ষণ পরে দরজায় টোকা পরলো। দরজা খুলে দেখে আমাদের বিল্ডিংয়ের কেয়ার টেকার কাকা এসেছেন আমরা বাসায় আছি কিনা খোঁজ নিতে। খোঁজ নিয়ে চলে গেলেন। তার ঠিক দেড় ঘন্টা পরে, আবারক দরজায় টোকা। খুলে দেখি এবারও কাকা। তবে এবারে হাতে বেশ কিছু জিনিস সহ এসেছেন। বেশ কয়েকটা বাটিতে ইফতারের আয়োজন সাজানো।বললেন, বাড়িওয়ালি পাঠিয়েছেন। অর্থাৎ আমাদের বাড়িওয়ালি সকলের জন্য আজকে ইফতার পাঠাচ্ছেন 😍😍।
দেখে শুনে আমার তো ভীষণ মন ভালো হয়ে গেলো। কারণ, এখন ঢাকা শহরে আসলে কেই বা প্রতিবেশীর খোঁজ খবর রাখেন! এমনটা দেখতাম ছোট বেলায়!আমার ছোটবেলাটা কেটেছে ঢাকার মিরপুর-১৪ পুলিশ কোয়ার্টারে। সরকারি কোয়ার্টার, বিশাল বড় বিল্ডিং। ওখানে রমজানের সময় দেখতাম বেশ কয়েকদিন আমাদের বাসায় বিভিন্ন বাসায় আন্টিরা খাবার পাঠাতেন। যদিও মা নিজেও বাসায় ছোলা, পিয়াজুর ব্যবস্থা করতেন মাঝে মাঝেই। আর বাকি কিছু কিছু আইটেম কিনেই বাসায় ইফতার করতাম আমরাও। তবুও আন্টিরা কিছু পাঠালে বেশ খুশী খুশী লাগতো সেদিন! যেন স্পেশাল কিছু একটা মেশানো থাকতো সেই পাঠানো খাবারে,, এখন বুঝি, সেটা ভালোবাসা!
একমুহূর্তের জন্য যেন আমার শৈশবের দিনে চলে গিয়েছিলাম। পরে দেখি বাড়িওয়ালি আপু আমাদের জন্য বেশ কয়েক রকমের ফল পাঠিয়েছেন। তারমধ্যে ছিলো আনারস, আপেল, মাল্টা, খেজুর, কলা। এছাড়াও পেয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, ছোলা, শশা আর জিলাপি পাঠিয়েছেন। জিলাপি ছাড়া ভাজা আইটেম সবগুলোই নাকি তার বাসায় তৈরি!এটা শুনে আসলে বেশি আনন্দ হচ্ছিলো! আর তাছাড়াও, যেহেতু বেশিভাগ রোজাতেই ইফতারির সময়টা একাই কাটে, তাই এবছর এর আগে ইফতারি করাও হয় নি আমার। তো বছরের প্রথম ইফতার এভাবে সারপ্রাইজ পেয়ে ভীষণ ভালো লাগছিলো। তাই তো মুড়ি দিয়ে মাখিয়ে মজা করে দুজনে মিলে খেয়ে বাড়িওয়ালি আপুর জন্য দোয়াও করে দিসি। আসলে ঢাকার অনেক বাড়িওয়ালার চেয়ে আমাদের বাড়িওয়ালা বেশ ভালো। কোন এক্সট্রা ঝামেলা তো নাই। উপরন্তু এভাবে মাঝে মাঝেই সারপ্রাইজ দেন। যেমন আগের বছর আমের সীজনে আমাদের বিল্ডিং এর ছাদের আম গাছ থেকে সকলকে আম পাঠিয়েছিলেন! সেদিনও বেশ অবাক ই হয়েছিলাম।
তো আমার আজকের পোষ্ট এ পর্যন্তই ছিল।
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে 🌼 ধন্যবাদ 🌼
আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। জি ঢাকা শহর এখন কেউ কারো খোঁজ রাখে না। তবে আপনাদের বাড়িওয়ালি ইফতার পাঠিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। আসলে রমজান মাসে এভাবে ইফতার ভাগাভাগি করে খেতে ভীষণ ভালোলাগে। অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
আসলেই প্রতিবেশীদের খোঁজ খবর তো এখন কেউ রাখে না। তাই উনার বানানো ইফতার পেয়ে আমরাও ভীষণ খুশি হয়ে গিয়েছিলাম ।
আমরা যে বাসায় আগে ভাড়া থাকমতাম সেই বাড়িওয়ালা ও অনেক ভালো ছিল।গ্রামের বাড়ির জিনিস, ছাদের গাছের জিনিস, পুকুর এর মাছ তাদের বাসায় কোন অনুষ্ঠান হলে আমাদের জন্য আলাদা করে খাবার তৈরি করে দেওয়া। এছাড়া আর যারা ভাড়াটিয়া ছিল তারাও দিত। বিশেষ করে নাফিসা নামে একটা আপু ছিল।ইফতারে অনেক নতুন নতুন খাবার বানাতো আর আমায় দিত। ধন্যবাদ আপু আপনাকে।
বাহ! আপনার ও দারুণ অভিজ্ঞতা জেনে ভালো লাগলো।
আসলে আপু নিজেরা যতই কিছু তৈরি করি না কেন তারপর কেউ কিছু দিলে সত্যি ভালো লাগে। আর রোজার ভিতরে ইফতারি খাওয়ানো অনেক সওয়াবের কাজ।তারপর আপনাদের বাড়িওয়ালা আপু নিজ হাতে অনেক কিছু তৈরি করেছেন। ধন্যবাদ আপু পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জি আপু অন্যের থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে কিছু পেলে ভীষণ আনন্দই লাগে।
পিয়াজু ও জিলাপি গুলো দেখে লোভ সামলানো মুশকিল, হাহাহা।।। বাড়িওয়ালা আপনার জন্য ইফতার দিয়েছেন এই বিষয়টা আমাদের মাঝে শেয়ার করে আমাদেরকেও আপনার খুশির অন্তর্ভুক্ত করে নিলেন এই বিষয়টা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এ কারণেই তো বলে শেয়ার করলে আনন্দ বাড়ে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই দারুন একটি মন্তব্য করার জন্য।
রোজার সময় মানে ইফতারির আয়োজন, আর তার মধ্যে ছোলা অন্যতম একটি ইফতারের অংশ। এই সময়ে খেজুরসহ ছোলা ইফতারি হিসেবে বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে এ কথা সত্য ঢাকা শহরে কেউ কারো খবর রাখে না,কে খেলো আর না খেলো। তবে আপনাদের বাড়িওয়ালী ইফতারী পাঠিয়েছি দেখে ভালো লাগলো, সত্যি উনি অনেক ভালো মানুষ।
জি ভাই। উনি অন্যান্য বাড়িওয়ালার তুলনায় বেশ ভালো। মানতেই হবে।আপনার মতামত জানানোর জন্য ধন্যবাদ।
সত্যি আপু অনেক বাড়িওয়ালা আছেন ইফতারের সময় সবাইকে ইফতারি পাঠায়। তবে আমাদের এখানেও আছে। বিশেষ করে গ্রামের মধ্যে এ রেওয়াজটা অনেক বেশি দেখা যায়। ভালো লাগে একে অপরের জন্য ভালবেসে খাবার গুলো পাঠালে খেতে। অলস দুপুরে তো বেশ ভালোই হলো তাহলে। এমন রেডিমেড খাবার খেতে পারলে বেশ ভালই লাগে নিজে না করে হি হি হি। খাবার গুলো দেখেই তো মনে হচ্ছে খুবই সুস্বাদু ছিল।
সেইটাই আপু। এমন রোজার দিনে একে অন্যের বাসায় ইফতারি পাঠালে সেটা দুই পক্ষের জন্যই বোধ হয় ভালোলাগার সৃষ্টি করে।
আসলে বাড়িওয়ালা যদি ভালো হয় তাহলে সেই বাড়িতে ভাড়া থেকে মজা আছে। আপনাদের বাংলাদেশের এই ইফতার দেওয়ার সিস্টেমটা আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। একজন আরেকজনের বাড়িতে কি সুন্দর করে ইফতার দিয়ে আসে। আমাদের এখানে অবশ্য এরকম কোন ব্যবস্থা নেই। যাই হোক, আপনি বছরের প্রথম ইফতার পেয়ে যথেষ্ট খুশি হয়েছেন, সেটা পোস্ট পড়ে বুঝতে পারছি দিদি। আর এত খাবার দেখে তো আমার নিজেরও লোভ লাগছে🤤।
আসলেই বাড়িওয়ালা ভালো হলে সেই বাসায় ভাড়া থেকে অনেক আরাম। আমাদের ও তাই। কোন এক্সট্রা ঝামেলা না অযারা নাই বাড়িওয়ালার।
এরকম বাড়িওয়ালা বা বাড়িওয়ালি কিন্তু খুব কমই পাওয়া যায় দিদি। আপনি এই দিক থেকে অনেক লাকি, সেটা বলতেই হবে।