ঈদের ব্যস্ততম তিনটি দিন

in আমার বাংলা ব্লগ28 days ago

আসসালামু আলাইকুম



আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।




আজকে আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব ঈদের ব্যস্ততম দুই তিনটি দিনের অনুভূতি । ঈদের আগের দিন পরের দিন ও ঈদের দিন এই তিনটে দিন আমার জন্য অনেক কঠিনতম দিন গিয়েছে । এই তিনটে দিন একেবারে কাজ করতে করতে অবস্থা একেবারে কাহিল হয়ে গিয়েছিল । বিশেষ করে কাজের মেয়েটা না আসাতে কষ্ট যেন অনেক বেশি গুণ বেড়ে গিয়েছিল । তারপরে আবার ঈদের ঝামেলা ছিল তারপরে মেহমান খাওয়ানো সব কিছু মিলিয়ে একেবারে ঝামেলা পণ্য দুই তিনটি দিন আমি পার করেছি ।

20240619_002426.jpg


ঈদ আসলে এমনিতেই অনেক আনন্দ কাজ করে কিন্তু এখন আর আগের মত সেই আনন্দটা কাজ করে না । বিশেষ করে কাজকাম করতে করতে কখন যে দিনটা পার হয়ে যায় টেরই পাওয়া যায় না । ঈদের দিন যে একটু বাইরে বের হব সেটাও আর পরে ইচ্ছা করে না । আর আগেকার দিনে ঈদগুলো কতই আনন্দের ছিল । সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে গোসল খুলে ফ্রেশ হয়ে বাইরে বের হয়ে যেতাম ঘোরাফেরা করার জন্য । তারপর সেই সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতাম । এখনকার দিনে কাজ করতে করতে একেবারে কাহিল হয়ে যাওয়ার পরে ইচ্ছা করে না যে বাইরে কোথাও যাই । তারপরও সবকিছু মিলিয়ে ঈদটা কিন্তু ভালই কেটেছিল ।

20240618_002145.jpg


বিশেষ করে ঈদের আগের দিন ভেবেছিলাম কাজের মেয়েটাকে দিয়ে কিছু রেডি করে রাখবো । কিন্তু সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই দেখি তার মেসেজ সে ঈদের ছুটিতে আমাকে না বলেই বাড়িতে চলে গিয়েছে । সেটা দেখে তো একেবারে মাথায় আগুন ধরে গিয়েছিল । কারণ আমি আগে থেকে কিছু রেডি করে রাখিনি ভেবেছি আগের দিন সব কিছু রেডি করে রাখবো । এমনিতেই মেয়েটা বেশ কিছুদিন ছুটি কাটিয়েছে তাই ও বলেছিল যে এবার আর ঈদে বাড়িতে যাবে না । তাই আগের দিনের জন্য সব কিছু জমিয়ে রেখেছিলাম । কিন্তু হঠাৎ করে চলে যাওয়াতে আমার জন্য অনেক প্রেসার হয়ে গিয়েছিল । কারণ ঈদের আগের দিন অনেক কাটাকাটি ও সব কিছু গোছগাছের একটা ব্যাপার থাকে । সবকিছু মিলিয়ে সারাদিন আমাকে একা কাজ করতে হয়েছে । ছেলের বাবা যদি অনেকটা হেল্প করেছে তারপরও নিজের উপর দিয়ে অনেক প্রেসার গিয়েছে । সবকিছু কাটাকাটি করে রেডি করে রেখে আবার রাতের বেলা কিছু কিছু আইটেম রান্না করে রেখে দিয়েছিলাম । কারণ পরের দিন বাসায় অনেক গেস্ট খাবে । ঈদের দিন যদি একা হাতে একসাথে সবকিছু করতে যায় তাহলে পারব না তাই আগেই রেডি করে রাখতে হয়েছিল ।

20240619_002426.jpg

20240618_002147.jpg

দুই বাসার খাবারের আয়োজন


পরের দিন সকাল থেকে কাজকর্ম করতে শুরু করেছিলাম ।সবকিছু রেডি করে গোছগাছ করে তারপর আবার সন্ধ্যার দিকে কিছুটা রান্না করা রেডি করলাম যাতে গরম গরম সার্ভ করতে পারি । পরে পাশের বাসার ভাবীরা সবাই মিলে আমাদের বাসায় রাতে খাবার খেলো এবং আমরা সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া করলাম এবং গল্প গুজব আড্ডা দিতে দিতে অনেকটা রাত পার হয়ে গেল । এজন্য সেদিনের রাতে কোন রকম কাজকর্ম করলাম না । তারপরে দিনের বেলা আরও বেশি রান্না করতে হয়েছিল কারণ ছেলের বাবাকে রেখে আমরা ফরিদপুরে চলে আসব । কাজের মেয়েটা থাকবে না তার জন্য কিছু খাবার রেডি করে রেখে যেতে হয়েছে । এজন্য আমার অনেক বেশি প্রেসার গিয়েছে । বিশেষ করে ডাবল প্রেসার করতে হয়েছে । তারপরে আবার ঈদের পরের দিন সকাল বেলা উঠে অনেক বেশি থালাবাসন জমে গিয়েছিল সেগুলো আমি আর ছেলের বাবা দুজনে মিলে পরিষ্কার করেছি । তার জন্য আরো কিছু খাবার রান্না করে ফ্রিজে ঢুকিয়েছি যাতে খাবারের ঝামেলা তাকে করতে না হয় । সে বাইরের খাবার খেতে খুব একটা পছন্দ করে না । যার কারণে আমাকে খাবারগুলো রেডি করে রেখে আসতে হল । তারপর পরের দিন রাতের বেলা আবার পাশের বাসার ভাবিদের সাথে খাওয়া-দাওয়া এবং গল্প গুজব আড্ডা দিয়ে আমরা ঈদ শেষ করলাম । তারপরদিন সব কিছু কাজ করে রেখে বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম ।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

ফটোগ্রাফার@tauhida
ডিভাইসsamsung Galaxy s8 plus

ধন্যবাদ

@tauhida

আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি।

logo.gif

@tauhida

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png *** VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 27 days ago 

এ'তো দেখছি আপনার ঈদ নয় একটা যুদ্ধের সময় পার করেছেন। এত কাজ কিভাবে করলেন,আমি হলে তো কেউ খুঁজেই পেতো না। আমার আবার অতিরিক্ত কাজ দেখলে ঘুম চলে আসে। কিন্তু কিছুই করার নেই নিজের সংসার তো নিজেকেই সামলাতে হবে। আমার আবার ঈদে এত প্রেসার পড়ে না, কারণ শ্বশুর বাড়ি যাই আর শ্বাশুড়ি মা'ই সব করেন। তারজন্য এতটা কষ্ট হয় না। আপনার এত রান্নাবান্নার কথা শুনে আমার মাথা ঘুরাচ্ছে। টেবিল সাজানো দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনেক ধরনের আইটেম তৈরি করেছেন। তারপর আবার গ্ৰামে যাবেন বলে ভাইয়ার জন্য সব ধরনের খাবার রেডি করে রেখে গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনার যাত্রা শুভ হোক এই দোয়া রইল।

 26 days ago 

ঈদের সময় কাজের মানুষ না থাকলে তখন অনেক প্রেসার যদিও আপনার ভাই অনেক সাহায্য করেছে । তারপরও কষ্ট করে সবকিছু রেডি করতে হয়েছিল । আর বাবার বাসায় যাওয়া সেটা তো একটা আনন্দের ব্যাপার সে জন্য আনন্দে সবকিছু রেডি করেছিলাম । আপনারা তো গ্রামে ঈদ করতে পারেন আমাদের তো সেই সুযোগটাও নাই । কারণ বাবার বাসা সেটাও শহরে গ্রামে কখনো যাওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠে না।

 27 days ago 

আপু আপনাদের বাড়ির কাজের মেয়েটা না বলেই ঈদের আগে তার বাড়িতে চলে গেছে। আর এতে আপনার একা একা অনেক রান্নাবান্না করতে হয়েছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ঈদের মধ্যে একা এত রান্না বান্না করেছেন ।তারপরে আবার গ্রামে যাবেন এই জন্য ভাইয়ের জন্য খাবার রেডি করে রেখে গেছেন। সব মিলিয়ে ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছে ঈদে আপনি এবার অনেক ব্যস্ত ছিলেন। ঈদের ব্যস্ততম তিনটি দিন জানতে পেরে বেশ ভালই লাগলো। ধন্যবাদ আপু।

 26 days ago 

কষ্টটা একটু হয়েছিল তারপরে তো সবকিছু রেডি করতে হয়েছিল । আর গ্রামে কোনদিন আমাদের ঈদ করার সম্ভব হয় না । কারণ আমরা বাবার বাড়িতে যাই সেটাও শহরে আমাদের তো গ্রামে যাওয়ার সুযোগই হয় না ।

 22 days ago 

আসলেই আপু আগের দিনে ঈদে যতটা আনন্দ হতো এখনকার দিনে ঈদের সেই আনন্দটা একদমই হয় না ।ঈদ আসলেই কেমন যেন ভয় লাগে ।এত এত কাজ করার জন্য। যাই হোক আপনি টানা তিনদিন বেশ পরিশ্রম করেছেন আর কাজের মেয়েটা ফাঁকি দিয়েছে জেনে বেশ খারাপ লাগলো ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মজার মজার ঈদের খাবারের ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 66094.73
ETH 3446.09
USDT 1.00
SBD 2.66