"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ৪৭ ||ডাই কন্টেস্ট: কাগজ দিয়ে ওয়ালমেট তৈরি
হ্যালো বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আমি নিউজ পেপার দিয়ে অনেক সুন্দর একটি ওয়ালমেট তৈরি করেছি। তবে সব কিছু বলার আগে প্রথমেই আমাদের স্বাগতা আপুকে জানাই অনেক ধন্যবাদ আমাদের মাঝে এত সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য। নতুন করে আর কিছুই বলার নেই, আমার বাংলা ব্লগের প্রতিযোগিতা মানেই অসাধারণ কিছু।
সেই প্রথম থেকেই প্রতিযোগিতা দেখলে আলাদা একটা অনুভূতি কাজ করে। এমনকি সকল ধরনের পরিশ্রমের কাজ গুলো করতেও কোন বাধা নেই আমাদের। বিশেষ করে আমি তো যেকোনো কাজ করতে হলে সেটা অবশ্যই সময় নিয়ে পরিশ্রমের সাথে করার চেষ্টা করি। তাই জন্য এবারের প্রতিযোগিতার বিষয়টা ভীষণ ভালো লাগলো। আমি আসলে নতুন ধরনের অভিজ্ঞতা দিয়ে কিছু করার চেষ্টা করছিলাম। তবে যেই কাজটা করবো বলে ভেবেছি আসলেই অনেক কঠিন কাজ। কিন্তু তারপরেও আমি ভেবে নিয়েছি এটাই করব। আমি মূলত নিউজ পেপার দিয়ে ওয়ালমেট তৈরি করার কথা চিন্তা করেছিলাম।
আসলে এই কাজটা একদিনে করা সম্ভব ছিল না। আমি মূলত একটু একটু করে তৈরি করেছিলাম। তিন দিন সময় নিয়ে আস্তে আস্তে পুরো ওয়ালমেট তৈরি করা শেষ করলাম। তবে এত পরিশ্রমের পরেও যখন ওয়ালমেট দেখতে সুন্দর হয়েছে এটাই আমার ভিষন ভালো লেগেছে। আমি মনে করি আমার কাজের সার্থকতা পেয়েছি। আশা করি আপনাদেরও ভালো লাগবে আমার তৈরি করা ওয়ালমেট।
যে ভাবনা সেইভাবে কাজ শুরু করলাম। আজকের এই ডাই করতে আমার কি কি উপকরণ লাগলো এবং কিভাবে আমি এই ডাই তৈরি করলাম তার ধাপে ধাপে বর্ণনা করে আপনাদের সাথে এই সম্প্রদায়ে ভাগ করে নিলাম। আশা করি আমার আজকের ডাই পোস্ট আপনাদের ভালো লাগবে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
• নিউজপেপার
• কাঁচি
• গাম
• পেন্সিল
• স্কেল
• এক্রোলিক কালার
• পুঁতি
প্রয়োজনীয় বিবরণ :
ধাপ - ১ :
প্রথমে আমি একটি নিউজ পেপার নিলাম। এরপর সমানভাবে মেপে কতগুলো কাগজ কেটে নিলাম।
ধাপ - ২ :
এরপরে একটা কাগজ চিকন করে মুড়িয়ে মুড়িয়ে এরপর গাম দিয়ে জোড়া লাগিয়ে একটা কাঠি তৈরি করে নিলাম।
ধাপ - ৩ :
এভাবে আমি প্রায় অনেকগুলো কাঠি তৈরি করে নিলাম। এটা তৈরি করতে প্রায় বেশি পরিমাণে কাঠি লাগবে।
ধাপ - ৪ :
এরপরে আমি একটা প্লাস্টিকের গোল ঢাকনা নিলাম। এরপরে কাগজের কাঠির একটা পেছনে একটা জোড়া লাগিয়ে এরপরে গোল করে গাম দিয়ে জোড়া লাগিয়ে নিলাম।
ধাপ - ৫ :
এভাবে একটা সাথে একটা জোড়া লাগিয়ে আস্তে আস্তে অনেকগুলো কাঠি গোল করে জোড়া লাগিয়ে নিলাম। এভাবে একটু মোটা করে গোল করে নিলাম।
ধাপ - ৬ :
এরপরে একটা কাঠি কে মোটা একটা মার্কারের মধ্যে একদিক থেকে গোল করে পেঁচিয়ে গাম দিয়ে জোড়া লাগিয়ে নিলাম।
ধাপ - ৭ :
এরপরে অপর পাশ থেকে পেঁচিয়ে একটা এস অক্ষরের মতো ডিজাইন করে নিলাম।
ধাপ - ৮ :
এরপরে আমি একই রকম ভাবে অনেকগুলো তৈরি করে নিলাম।
ধাপ - ৯ :
এরপরে গোল অংশটার বাহিরের অংশে আমি এই ডিজাইনটার একটা একটা করে জোড়া লাগিয়ে নিলাম। এভাবে বাইরের অংশটা জোড়া লাগিয়ে নিয়েছি।
ধাপ - ১০ :
এরপরে আমি আবারও অনেকগুলো কাঠি নিলাম। এগুলোকে একটার সাথে একটা জোড়া লাগিয়ে একটু লম্বা করে নিয়েছি।
ধাপ - ১১ :
এরপরে একটু গোল করে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে অর্ধেকটার মতো করে গোল করে নিলাম।
ধাপ - ১২ :
এভাবে আমি অনেকগুলো গোল করে পেঁচিয়ে তৈরি করে নিলাম।
ধাপ - ১৩ :
এরপরে আমি গোল করা অংশগুলো একটার সাথে একটা জোড়া লাগিয়ে গাছের ডালের মতো তৈরি করে নিলাম। এভাবে প্রায় চার-পাঁচটা তৈরি করে নিয়েছি।
ধাপ - ১৪ :
এরপরে আবারও গোল অংশটার বাহিরের অংশে চিকন কাঠিটা জোড়া লাগিয়ে দিলাম।
ধাপ - ১৫ :
এভাবে একা সাথে একটা ঘাম লাগিয়ে পেঁচিয়ে পেচিয়ে গোল করে নিলাম।
ধাপ - ১৬ :
এরপরে তৈরি করা গাছের ডাল গুলো বৃত্তের মাঝখানের অংশে একটা একটা করে জোড়া লাগিয়ে গাছের মতো তৈরি করে নিবো।
ধাপ - ১৭ :
এবারের ঠিক নিচের অংশে গাছের শিকড় গুলো পাকা করে একটু জোড়া লাগিয়ে নিলাম।
ধাপ - ১৮ :
এরপর আমি সাদা রং দিয়ে মাঝখানের গোল গোল অংশ গুলো সাদা রং করে নিলাম।
ধাপ - ১৯ :
এরপরের ভেতরের গোল অংশটা আর বাহিরের গোল অংশটাকে কালো রং দিয়ে রং করে নিলাম।
ধাপ - ২০ :
এরপরে আমি নীল এবং আকাশি রং দিয়ে ভেতরের গাছটাকে রং করে নিলাম।
ধাপ - ২১ :
এরপরে গাছের ভেতরের অংশগুলোতে সাদা পুঁতি লাগিয়ে নিলাম একটা একটা করে।
ধাপ - ২২ :
এরপরে বাহিরের গোল গোল অংশ গুলোর মধ্যে কমলা এবং হলুদ রং দিয়ে রং করে নিলাম।
ধাপ - ২৩ :
এরপর বাহিরের অংশটার মধ্যে সাদা পুঁতি দিয়ে লাগিয়ে নিলাম একটা একটা করে।
শেষ ধাপ :
এভাবে আমি পুরো পোস্ট করা শেষ করি। আশা করি আমার আজকের ডাই পোস্ট আপনাদের ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আবারও দেখা হবে নতুন কিছু নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ডাই |
---|---|
ডিভাইস | Redmi note 9 |
ফটোগ্রাফার | @tasonya |
লোকেশন | ফেনী |
আমার পরিচয়
আমার নাম তাসলিমা আক্তার সনিয়া। আমি বাংলাদেশী। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বলে আমি অনেক গর্বিত। আমি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অনার্স ফাইনাল ইয়ারের একজন ছাত্রী। আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কোন ধরনের পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। যখনই অবসর সময় পায় আমি ছবি আঁকতে বসে পড়ি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার চেষ্টা করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করতে পছন্দ করি। রান্না করতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। আমি যখনই সময় পাই আমার পরিবারের সবাইকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাওয়াই। আমি সব সময় নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।
🎀 ধন্যবাদ সবাইকে 🎀 |
---|
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
আপু আপনার কার্যক্রম দেখতে দেখতে যেন ঘুমিয়ে গেছিলাম। আপনি যে এত কিছু মাথায় রেখেছেন কিভাবে এটাই বড় ভাববার বিষয়। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কয়েকবার করে দেখার চেষ্টা করলাম। আমার তো বুঝে আসছে না কিভাবে সম্ভব। অনেক সুন্দর একটি কারু কাজ করে দেখিয়েছেন।
প্রসংসা করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার বুদ্ধির প্রশংসা করতে হয় আপু।নিউজ পেপার দিয়েও যে কুয়েলিং করে এত সুন্দর ওয়ালমেট তৈরি করা যায় এটা আমার জানা ছিল না। অসাধারণ একটি ডাই প্রজেক্ট প্রস্তুত করেছেন আপনি। এই ডাই গুলো তৈরি করা অনেক কঠিন সেজন্যইতো আপনার তিনদিন সময় লেগেছে আপু। নিউজপেপার দিয়ে ওয়ালমেট তৈরি করে রং করার পর দেখতে আরো বেশি আকর্ষণীয় লাগছে। চমৎকার এই ওয়ালমেট দিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা । আশা করি এবারের প্রতিযোগিতায় খুব ভালো একটা অবস্থান পাবেন৷
আসলে অনেক বেশি সময় লেগেছিল এটা তৈরি করতে। সুন্দর একটা মন্তব্য পেয়ে অনেক ভালো লাগলো।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অসাধারণ একটা ডাই প্রজেক্ট প্রস্তুত করেছেন আপনি। দেখে চোখ সরানো যাচ্ছে না। বিশেষ করে কালারটা খুবই ফুটে উঠেছে। প্রতিটা ধাপ সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন যা বুঝতে অনেক সুবিধা হয়েছে। এত সুন্দর একটা ডাই প্রজেক্ট আমাদের সবার মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
উপস্থাপনটা সুন্দর করে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম, যেন যে কেউ চাইলে তৈরি করতে পারে।
আল্লাহরে আমি তো পাগল হয়ে গেলাম। কেউ আমারে ধর। এত আকর্ষনীয় জিনিস দেখে তো মাথা ঘুরে গেল। আরে আপু এই না হলে আপনি। প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করবো তো করবো তাতে কি, একেবারে সবচেয়ে ভালো জিনিস দিয়েই তাক লাগিয়ে দিবো। ইস আমার যদি আপনার মত এমন একটি বোন থাকতো তাহলে তো আমিই সেরা হতাম। আপু সত্যি বলছি দারুন ছিল আপনার আজকের ওয়াল মেট। প্রতিযোগিতা শেষে আমাকে পাঠিয়ে দিয়েন। ঠিক আছে আপু?
সত্যি আপু আপনি যদি আশেপাশে থাকতেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে এখনই দিয়ে দিতাম। তবে ইচ্ছা আছে যদি কখনো আপনার সাথে দেখা হয়, তাহলে আমার হাতে তৈরি করা কিছু একটা আপনাকে গিফট করবো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
লাগবেনা আপু আপনার কথাতে আমি ধন্য।
খুবই সুন্দর একটি ওয়ালমেট তৈরির মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। আসলে যে কোন জিনিসই সুন্দর করে নিখুঁতভাবে বানাতে হলে একটু সময় লাগবে। আপনার তিনদিন সময় লেগেছে এই ওয়ালমেট তৈরি করতে তবে সত্যি বলতে খুবই ভালো লেগেছে আপনার তৈরি ওয়ালমেট টি। প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। তবে আমার কাছে রং করার আগের ধারটি খুবই ভালো লেগেছে সেখানে ওয়ালমেটটি আরো অন্যরকম একটি সুন্দর লাগছে। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি ওয়ালমেট তৈরির মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য।
ঠিক বলেছেন নিখুঁত ভাবে তৈরি করলে অনেক বেশি সময় লাগে।
খুব সুন্দরভাবে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করলেন।কাজটি করতে ব্যাপক সময় লেগেছে যেহেতু আপনার সময় লেগেছে এবং কাজটির প্রশংসা করতেই হয় আমার মনে হচ্ছে এই কাজটির জন্য আপনি ভালো কিছু আশা করছেন। আমার কাছেও প্রতিযোগিতা দেখলে আলাদা একটা অনুভূতি কাজ করে। ভীষণ ভালো লাগে। পরিশ্রম যেটাই হোক এটাতে অংশগ্রহণ করতে একটা ভালো লাগা কাজ করে। আপনি দারুন দক্ষতায় সম্পন্ন করেছেন। কালার কম্বিনেশন অনেক সুন্দর ছিল। প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর করে উপস্থাপনা করেছেন। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
প্রশংসামূলক মন্তব্যটা পেয়ে ভালো লাগলো। প্রতিযোগিতা দেখলে অংশ গ্রহণ না করে থাকতে পারিনা। তাইতো প্রতিযোগিতা দেওয়ার পরে অংশগ্রহণ করার জন্য লেগে পড়ি।
এই কাজগুলো করা অনেকটা কঠিন। তাইতো আপনার তিনদিন সময় লেগেছে। আসলে এই কাজগুলো দেখতে সহজ মনে হলেও করতে গেলে বোঝা যায় কতটা কঠিন। আপু আপনি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অনেক সুন্দর হয়েছে আপনার তৈরি ওয়ালমেট।
ঠিক বলেছেন এই কাজগুলো করা অনেক কঠিন। যার কারণে তিনদিন সময় লেগেছিল আমার।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আপনার কাজগুলো সবসময় ভিন্ন রকমের হয়। তিনদিন সময় নিয়ে দারুণ একটি ওয়ালমেট বানিয়েছেন আপু। আপনার কাজের প্রশংসা করতেই হয়। এ কাজগুলো একটু পরিশ্রমের কাজ, তবে কাজটা শেষ করতে পারলে স্বার্থক হয়। যাক, ফাইনালি অনেক সুন্দর করে শেষ করেছেন আপু । ভালো ছিল 🌼👌
ঠিক বলেছেন শেষ করতে পারলেই সার্থক।