"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা-৫৪ || আমার বাংলা ব্লগের লোগো ডিজাইন এবং ফুলের নকশী পিঠার রেসিপি।
হ্যালো বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম। আজকে আমি আপনাদের সামনে অনেক সুন্দর একটা রেসিপি নিয়ে এসেছি। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব নকশী পিঠা রেসিপি। এবারের রেসিপি প্রতিযোগিতার জন্য আমাদের সিয়াম ভাইয়াকে জানাই অনেক অনেক ধন্যবাদ। সত্যি বলতে যখন প্রতিযোগিতা দেখেছিলাম, তখনই আমার ভীষণ ভালো লেগেছিল। কারণ আমি আসলে কখনোই নকশি পিঠা তৈরি করেনি।
এমনিতে নকশি পিঠার কথা অনেক শুনেছি এবং দেখেছি। কিন্তু নিজের কখনোই তৈরি করা হয়নি। তাই জন্য ভাবলাম এবারে আবারো নতুন একটা অভিজ্ঞতা নিতে পারব। তবে কিভাবে ডিজাইন করব সেটাও বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ করে আইডিয়া আসলো আমার বাংলা ব্লগের লোগো ডিজাইন পিঠা তৈরি করব। কিভাবে কি করব সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। তারপরেও পিঠা তৈরি করতে নেমে পড়লাম। এখানে আমি কিছু পিঠা ভাপে তৈরি করেছি। আবার কয়েকটা পিঠা আমি বিভিন্ন ডিজাইন করে , ভেজে তারপর গুড়ের শিরায় দিয়েছি।
আসলে যেহেতু লোগো ডিজাইনের পিঠার মধ্যে কালার দিয়েছিলাম তাই জন্য সেগুলো ভাপে দিয়ে তারপর তৈরি করলাম। না হলে কালারগুলো আবার নষ্ট হয়ে যাবে। তবে দুই রকমের পিঠার স্বাদ নিতে পেরেছিলাম। আমার কাছে আবার ভাপে দেওয়া পিঠাগুলো খেতে বেশি ভালো লাগে। কারন আমি মিষ্টি একটু কম পছন্দ করি। তবে নকশাগুলো আসলে পারফেক্ট ভাবে করার চেষ্টা করেছিলাম। জানিনা কি রকম হয়েছে। তবে পিঠা রেসিপি গুলো ইফতারিতে বেশ ভালোই জমজমাট হয়েছিল। যদিও এই পিঠাগুলো তৈরি করা একটু বেশি কষ্টকর। তবে সবাই মিলে বেশ ভালোই আনন্দ করে খেয়েছিলাম। আশা করি আমার তৈরি করা পিঠাগুলো আপনাদের ও ভালো লাগবে।
তো চলুন,
এই রেসিপিটি তৈরি করতে আমার কি কি উপকরণ লাগলো এবং আমি পুরো রেসিপি কিভাবে তৈরি করলাম তার বর্ণনা নিচে প্রতিটা ধাপে উপস্থাপন করলাম। আশা করি আমার আজকের রেসিপি আপনাদের ভালো লাগবে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ :
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
চালের গুড়া | ২ কাপ |
আটা | ১/২ কাপ |
খেজুরের গুড় | ১ কাপ |
চিনি | হাফ কেজি |
ফুড কালার | ২ টা |
লবন | পরিমাণমতো |
তেল | পরিমাণমতো |
রান্নার বিবরণ :
ধাপ - ১ :
প্রথমে আমি চালের গুড়া এবং আটা একসাথে মিশিয়ে নিলাম। এরপর চুলায় একটি ফ্রাইপ্যান বসিয়ে এগুলোকে একটু নেড়েচেড়ে টেলে নিলাম। চালের গুড়া টেলে নিলে পিঠা গুলো অনেক মুচমুচে হয়। এরপর একটি বাটিতে নিয়ে নিলাম।
ধাপ - ২ :
এরপরে আমি একটি পাতিল এর মধ্যে পানি দিয়ে ফুটিয়ে নিলাম।
ধাপ - ৩ :
এরপরে আমি চালের গুড়া এবং আটার মিশ্রণের সাথে সামান্য পরিমাণে লবণ এবং চিনি মিশিয়ে নিলাম। এরপরে ফুটন্ত পানি ঢেলে নিলাম।
ধাপ - ৪ :
এরপর নেড়ে ছেড়ে হাত দিয়ে মেখে একটা ডো তৈরি করে নিলাম।
ধাপ - ৫ :
এরপর আমি এই ডোটাকে তিন ভাগে ভাগ করে নিলাম। একটা অংশে আমি সবুজ রঙের ফুড কালার দিয়ে মিশিয়ে নিলাম। একটা অংশে হালকা সবুজ এবং একটা অংশে গাড়ো সবুজ দিয়ে দিলাম।
ধাপ - ৬ :
এরপর আমি আর একটা ডো এর মধ্যে কমলা রঙের ফুড কালার মিশিয়ে নিলাম।
ধাপ - ৭ :
এরপর আমি হালকা সবুজ ডোটা নিয়ে একটা রুটির মত বেলে নিলাম।
ধাপ - ৮ :
এরপরের ভেতরের অংশে টুথপিক দিয়ে ডিজাইন করে নিলাম এবং চারপাশে গাঢ়ো সবুজ কালার দিয়ে ডিজাইন করে নিলাম।
ধাপ - ৯ :
এরপর আমি আবারো একটা রুটি তৈরি করে তার ওপরে পাতার ডিজাইন করে নিলাম। একই ডিজাইনের কয়েকটা পাতা তৈরি করে নিলাম।
ধাপ - ১০ :
এরপর আমি কমলা রঙের ডোটাকে রুটি বেলে এরপর এর উপরে অ লিখে কেটে নিলাম।
ধাপ - ১১ :
এরপর আমি কমলা রঙের ডোটাকে রুটি বেলে এরপর এর উপরে ক লিখে কেটে নিলাম।
ধাপ - ১২ :
এরপর আমি একটা নৌকার ডিজাইন করেও উপরের অংশে ফুলের ডিজাইন করে নিলাম।
ধাপ - ১৩ :
এরপরে আমি সবুজ রঙের ডো থেকে গোল করে রাউন্ড একটা ফুলের ডিজাইন করে নিলাম।
ধাপ - ১৪ :
এরপরে আমি সাদা রংয়ের ডো থেকে রুটি বেলে আ লিখে কেটে নিলাম। এরপরে একই রকম ভাবে আমি সাদা রংয়ের ডো থেকে রুটি বেলে খ লিখে কেটে নিলাম।
ধাপ - ১৫ :
এরপর আমি আবারো সাদা রংয়ের একটা রুটি বেলে এরপরে এরমধ্যে পাতার ফুলের ডিজাইন করে নিলাম।
ধাপ - ১৬ :
এরপর আমি আবারো সাদা রংয়ের একটা রুটি বেলে এরপরে এরমধ্যে গোল করে একটা ফুলের ডিজাইন করে নিলাম।
ধাপ - ১৭ :
এভাবে আমি প্রায় সবগুলো পিঠা তৈরি করে নিলাম।
ধাপ - ১৮ :
এরপর আমি চুলায় একটি কড়াই বসিয়ে দিলাম। এরমধ্যে আমি পরিমান মত তেল দিয়ে দিলাম। গরম হয়ে গেলে এর মধ্যে সাদা রঙের পিঠাগুলো দিয়ে ভেজে নিব। এভাবে আমি সবগুলো পিঠা এখান থেকে ভেজে নিব।
ধাপ - ১৯ :
এরপরে আমি খেজুরের গুড় একদম কুচি কুচি করে কেটে নিয়েছি।
ধাপ - ২০ :
এরপর আমি একটা চুলায় বসিয়ে সামান্য পরিমাণে পানি দিয়ে ফুটিয়ে নিব। এভাবে আমি সিরা তৈরি করে নিব।
ধাপ - ২১ :
এরপর ভেজে নেওয়ার পিঠাগুলো একটা একটা করে সিরায় দিয়ে নেড়েছেড়ে উঠিয়ে নিবো।
ধাপ - ২২ :
এরপর আমি একটা পাতিল এর মধ্যে পানি ফুটিয়ে নিলাম। এর উপরে আমি একটা পাতলা ওড়না দিয়ে কালারফুল পিঠাগুলো ভাপে দিয়ে দিলাম। এভাবে পিঠাগুলো তৈরি করে নিলাম।
ধাপ - ২৩ :
এরপর বড় এবং গোল পিঠাটাকেও ভাপে দিয়ে তৈরি করে নিলাম।
শেষ ধাপ :
এরপর ডেকোরেশন করে পরিবেশন করলাম। আশা করি আমার আজকের রেসিপি আপনাদের ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আবারও দেখা হবে নতুন কিছু নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | রেসিপি |
---|---|
ডিভাইস | Samsung Galaxy S23 Ultra |
ফটোগ্রাফার | @tasonya |
লোকেশন | ফেনী |
আমার পরিচয়
আমার নাম তাসলিমা আক্তার সনিয়া। আমি বাংলাদেশী। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বলে আমি অনেক গর্বিত। আমি গ্রেজুয়েশন কমপ্লিট করেছি। আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কোন ধরনের পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। যখনই অবসর সময় পায় আমি ছবি আঁকতে বসে পড়ি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার চেষ্টা করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করতে পছন্দ করি। রান্না করতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। আমি যখনই সময় পাই আমার পরিবারের সবাইকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাওয়াই। আমি সব সময় নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।
🎀 ধন্যবাদ সবাইকে 🎀 |
---|
আপনার এই ইউনিক ইউনিক আইডিয়া দেখে সত্যি নিজের কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে সেই সাথে রীতিমতো অবাক হয়ে যায় যে এত চমৎকার ইউনিক আইডিয়া আপনার মাথা থেকে আসে কিভাবে। আমার বাংলা ব্লগ এর লোগো দিয়ে ফুলের নকশী পিঠা তৈরি করে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন, দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক বেশি সুস্বাদু ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে চমৎকারভাবে শেয়ার করার জন্য।
আমার ইউনিক আইডিয়া দেখলে আপনার কাছে ভালো লাগে এবং আপনি অবাক হয়ে যান শুনে ভালো লেগেছে। আসলে বিভিন্ন ইউনিক আইডিয়া থেকে আমি প্রত্যেকটা কাজ করার চেষ্টা করি।
https://twitter.com/TASonya5/status/1769935651208827043?t=fhH0h1xAqkDZEp7zbSpHNQ&s=19
প্রথমে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের এই সুন্দর পিঠা রেসিপি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। আপু আপনাদের ট্যালেন্ট দেখলে জাস্ট তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে। আমার বাংলা ব্লগের লোগোর ডিজাইনে পিঠা তৈরি করেছেন দেখতে বেশ চমৎকার লাগছে। প্রতিটি ধাপ অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার কাছে ইউনিক কোন কিছু নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে ভালো লাগে। চেষ্টা করেছি এবারের প্রতিযোগিতায় ভিন্ন ভাবে পিঠা তৈরি করার।
আপু আপনি তো আমাদের মাঝে আজকে একদম ইউনিক একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন। নকশী পিঠার এই রেসিপিটি আমার মনে হয় না এর আগে কারো পোস্টে দেখেছি। অবশ্যই আপনি প্রশংসার দাবিদার এবং আমি আশাবাদী আপনি অবশ্যই প্রতিযোগিতা থেকে পুরস্কার লাভ করবেন। নকশী পিঠার রেসিপি এবং আমার বাংলা ব্লগ এর লোগো ডিজাইন সত্যি বলতে একদম অসাধারণ হয়েছে আপু। সাথে প্রত্যেকটি ধাপকে আপনি খুবই সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। আপনার জন্য শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা দুটাই রইল আপু।
আমার বাংলা ব্লগের লোগো ডিজাইন করার চেষ্টা করলাম। আর আপনি আমার পিঠা দেখে প্রশংসামূলক মন্তব্য করেছেন দেখে ভালো লাগলো। আসলে প্রতিযোগিতায় পুরস্কার লাভ করার আশায় কখনো অংশগ্রহণ করি না। ভালোলাগা থেকেই অংশগ্রহণ করি।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে প্রথমে ধন্যবাদ জানাই। বাংলা ব্লগের লোগো ডিজাইনের নকশি পিঠা দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। পরিবেশন টাও বেশ দুর্দান্ত ছিল। দেখে বোঝা যাচ্ছে তৈরি করতে অনেক সময় লেগেছে। তৈরি করার ধাপ গুলো গুছিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
হ্যাঁ আপু এই পিঠাগুলো তৈরি করতে তো প্রচুর সময় লেগেছে।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। আশা করেছিলাম আপনি ইউনিকে একটি রেসিপি শেয়ার করবেন। আর তাই হলো। আপনি দারুন একটি ইউনিক রেসিপি শেয়ার করলেন। আমার বাংলা ব্লকের লোগো ডিজাইন এর নকশি পিঠা রেসিপি। এত সুন্দর এবং ইউনিক একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
চেষ্টা করেছি ইউনিক পিঠা তৈরি করে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। আমার অংশগ্রহণ দেখে ভালো লেগেছে শুনে খুশি হলাম।
আপু সব সময়ই দেখি যে ফাটাফাটি কোন কিছু না নিয়ে আপনি প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেন না। আজও তো দেখছি বেশ দারুন একটি নকশি পিঠার রেসিপি নিয়ে চলে আসলেন। আশা করি ভালো একটি পজিশন পাবেন। বেশ দারুন ছিল আপু। এক কথায় অসাধারন।
আসলে কখনো ভালো একটা পজিশনে আসার জন্য অংশগ্রহণ করা হয় না। চেষ্টা করি ভালোলাগা থেকে অংশগ্রহণ করার। বিশেষ করে আপনাদের কাছ থেকে উৎসাহমূলক মন্তব্য গুলো পেলে ভালো লাগে।
আমার বাংলা ব্লগের লোগো ডিজাইন দিয়ে ফুলের নকশী পিঠা তৈরি করেছেন আপু যেটা দেখতে আকর্ষণীয় লাগছে অনেক।আপনার আইডিয়ার প্রশংসা করতে হয় আসলেই দারুন এবং ইউনিক ছিল আপনার পিঠার পোস্টটি।শুভকামনা আপনার জন্য।ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আপনি আমার পিঠা তৈরি করার আইডিয়া দেখে এত প্রশংসা করেছেন দেখে ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনাদের মাথায় সব সময় ভালো চিন্তাভাবনা ঘুরপাক খায়। প্রতিযোগিতায় এমনভাবে অংশগ্রহণ করেন শুধু তাকিয়ে থাকতে মন চায়। নকশি পিঠার রেসিপি তৈরি করেছেন বিভিন্ন ধরনের ফুল পিঠা তারপর আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির লোগো ডিজাইন অসম্ভব সুন্দর ছিল। যেমন কাজ তেমন উপস্থাপনা সব মিলিয়ে শতভাগ প্রচেষ্টার সফলতা। ভালো লাগলো আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আমার অংশগ্রহণ এমনভাবে করার চেষ্টা করি যেন আপনারা মুগ্ধ হন। এবং আপনাদের কাছে ভালো লাগে। আপনাদের উৎসাহমূলক মন্তব্যের কারণেই এই কাজগুলো করার অনুপ্রেরণা পেয়েছি।