সন্ধান

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

1000021710.jpg
source

অনেক নিঃসন্তান দম্পতি আছে, যারা একটি মাত্র সন্তানের জন্য কত কিছুই না করছে। সেই কবিরাজের অপচিকিৎসা থেকে শুরু করে, নানা রকম কুসংস্কার পর্যন্ত বিশ্বাস করছে কিংবা বহু পয়সা খরচ করে দেশ-বিদেশে গিয়ে বিভিন্ন রকম আধুনিক চিকিৎসা নিয়ে আসছে। শুধুমাত্র তাদের একটাই চাওয়া, তাদের সংসারে একটি সন্তান আসুক।

দিন দিন মানুষ যেন আর মানুষ নেই, সব একেকটা জানোয়ার হয়ে গিয়েছে। এদের কার্যক্রম এতটাই জঘন্য, যা কিনা জন্তু-জানোয়ার কে হার মানায়।

এ শহরটা তে এমনিতেই কেউ কারো খোঁজ রাখে না। কার জীবন কিভাবে চলছে কিংবা কে কোন সমস্যায় আছে, এসব জানার যেন কারোই কোন আগ্রহ নেই। দিন দিন সবাই যেন আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গিয়েছে, অনেকটা একা থাকতে পারলেই যেন সবাই বাঁচে। সমাজ বলে যে কিছু আছে, তা যেন আর এই কংক্রিটের শহরে বোঝার কোন উপায় নেই।

এতসবের মাঝেও পঙ্কজ বাবু তার বাল্যবন্ধু কে নিয়ে, রোজ সকালবেলা করে হাঁটতে যায় শহরের কিছুটা অদূরে । যেহেতু পঙ্কজ বাবু ডায়াবেটিসের রোগী, তাই শরীরচর্চা নিয়ে সে এখন ভীষণ যত্নশীল। আজ সকালেও গিয়েছিল গ্রামের দিকটায়।

তবে পথিমধ্যেই তার আজ ভিন্নরকম অভিজ্ঞতা হয়েছে। যেহেতু একদম খুব ভোরে তারা হাঁটতে যায় , তাই শহর থেকে বেরিয়েই প্রথম যে ব্রিজটা আছে, সেই জায়গাটাতেই বস্তায় মোড়ানো কিছু একটা থেকে ছোট বাচ্চার কান্নার আওয়াজ আসছিল।

পঙ্কজ বাবু ও তার বাল্যবন্ধু দুজনেই আশেপাশে তাকানোর চেষ্টা করছিল, তবে কাউকেই তারা দেখতে পাচ্ছিল না। নানা রকম প্রশ্ন তাদের মস্তিষ্কে ঘুরপাক করছিল। আজ আর তারা কোনভাবেই হাঁটতে পারছিল না। একটা অসহ্য যন্ত্রণা তাদেরকে ব্যথিত করে যাচ্ছিল।

অবশেষে স্থানীয় কিছু লোকজনের তারা শরণাপন্ন হয়েছিল, তারা যা দেখেছে সেটাই অন্য লোকদের বলার চেষ্টা করছিল। পরবর্তীতে সবাই যখন পুনরায় ঘটনাস্থলে আসে, তখন ইতিমধ্যেই আরো লোকজন জড়ো হয়ে গিয়েছিল। কে বা কারা এমন অমানবিক ঘটনা ঘটিয়েছে এই নিষ্পাপ শিশুটার সঙ্গে, তা কেউ বলতে পারছে না।

তবে এমন ঘটনার সঙ্গে যারা লিপ্ত, তারা কেউ মানুষের মধ্যেই পড়ে না। বাচ্চাটা যে সদ্য জন্মানো, তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, যদি লোকজনের চোখে বিষয়টি না পড়তো, তাহলে হয়তো ঘটনা অন্যদিকে মোড় খেত। অবশেষে সেই বাচ্চার স্থান হয়,সাময়িক সময়ের জন্য স্থানীয় হাসপাতালে। মূলত সেখানেই অক্সিজেন দিয়ে কিছুটা সময় রাখা হয়েছিল।

সন্ধ্যা বেলা যখন পঙ্কজ বাবুর সাথে আজ চা খেতে গিয়ে গল্প হচ্ছিল, তখন বিষয়টি তার মুখে শুনেছিলাম। এদিক থেকে শিশুটি অবশ্য কিছুটা ভাগ্যবান বলাই যায়, কেউ হয়তো তাকে জন্ম দিয়ে বহু অজুহাতে ফেলে রেখে চলে গিয়েছে আবার অন্য কেউ এসে তাকে নিজের করে নেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

1000020537.png

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

আপনি সত্যি বলেছেন ভাই বর্তমানে প্রতিটা মানুষ আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে একা একা থাকতে বেশি পছন্দ করে। সত্যি বলতে ভাই ঠিক এই সব কারণেই মাঝেমধ্যে নিজেদেরকে মানুষ বলে দাবী করতে কষ্ট হয়। একজন মা-বাবা কতটা নৃশংস হলে এ ধরনের জঘন্যতম কার্য করতে পারে। হয়তো এসব মা-বাবা গোপনে শিশুটিকে ফেলে দিয়ে গেছে ভেবেছে কেউ দেখেনি আসলেই কি তাই! অবশ্যই একজন দেখেছে আর একদিন এর বিচার ঠিকই হবে। মানুষের ভেতরের রূপটা আসলে কতটা ভয়ঙ্কর এ সকল কুকর্ম না দেখলে আসলে বোঝাই যেত না। শিশুটির জন্য সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা করছি যেন বড় হয়ে মানুষের মত মানুষ হয়। আমাদের সমাজের বাস্তবতা মূলক একটি পোস্ট তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

 2 months ago 

শিশুটির আগামী দিন সুন্দর হোক, এমনটাই আমিও প্রার্থনা করি আমার জায়গা থেকে।

 2 months ago 

হুম ভাই।

 2 months ago 

এমন অমানুষিক কাজ সমাজে প্রতিনিয়ত হচ্ছে। আমারও তাই মনে হয়, এরা মানুষের কাতারেই পরে না। নয়তো সদ্য জন্ম নেয়া একটা নিষ্পাপ শিশুকে কিভাবে ফেলে রেখে যায়? কেউ সন্তান পায় না, আর কেউ সন্তান জন্ম দিয়েও ফেলে রেখে যায়। মানুষ বড়ই অদ্ভূত। তবে বাচ্চাটিকে হসপিটালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে জেনে খুবই ভালো লাগলো।

 2 months ago 

এমন ঘটনা সত্যিই খুবই দুঃখজনক ভাই।

 2 months ago 

এটাই সৃষ্টিকর্তার একটা আজব খেলা। যার আছে সে কদর করতে জানে না। কিন্তু যার নেই সৃষ্টিকর্তা তাকে দেয় না। এমন অনেকেই আছে যারা তাদের সন্তান কে পৃথিবীতে আনতে চাই না। আবার আনলেও তাদের এভাবে ফেলে দেয়। এগুলো নিয়ে কিছু বলার নেই। যেখানে তাদের মানসিকতারই সমস্যা রয়েছে।

Posted using SteemPro Mobile

 2 months ago 

ব্যাপারটা আসলে আমাকে অনেকটাই ব্যথিত করেছে ভাই।

 2 months ago 

যারা এসব ঘৃণিত কাজ করে, তারা পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। ভাগ্যিস পঙ্কজ বাবু এবং তার বন্ধু মর্নিং ওয়াক করার সময় ব্যাপারটা খেয়াল করেছিল। নয়তোবা কি যে হতো বাচ্চাটির সঙ্গে, সেটা একমাত্র আল্লাহ তায়ালা ভালো জানেন। যেহেতু স্থানীয় হাসপাতালে বাচ্চাটির জায়গা হয়েছে সাময়িকভাবে, আশা করি কেউ দত্তক নিয়ে এই বাচ্চাটিকে লালন পালন করবে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 2 months ago 

ইতিমধ্যেই একজন দত্তক নিয়েছে বাচ্চাটিকে ভাই।

 2 months ago 

বাহ্! বেশ ভালো লাগলো ব্যাপারটা জেনে। দোয়া করি বাচ্চাটি যেনো সকলের আদরে বড় হয় এবং মানুষের মতো মানুষ হয়।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.11
JST 0.031
BTC 68960.63
ETH 3748.07
USDT 1.00
SBD 3.68