মজলিস | মেজবান
সম্ভবত গত দুদিন আগে লিখেছিলাম যে আমাদের গ্রামে এক পরিচিত কাকু মারা গিয়েছে, মূলত মানুষ মারা যাওয়ার পরে আমাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সেই মৃত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে গ্রামের সকল মানুষ কিংবা আত্মীয় স্বজনদের জন্য বিশাল আয়োজনে রান্না করে খাওয়ানো হয়।
যদিও ধর্মীয় রীতিনীতি বিষয়ে আমার জ্ঞান খুবই স্বল্প, তাই সব জায়গা থেকেই ইতিবাচক ব্যাপার খুঁজে নেওয়ার চেষ্টাটুকুই শুধুমাত্র আমি করে থাকি,এর বাইরে আর কিছু না।
গতরাতে গিয়েছিলাম সেই রান্নার আয়োজন স্বচক্ষে দেখার জন্য। পরের দিন ভোরবেলা গ্রামের সবাইকে খেতে দেওয়া হবে আর আগের দিন সারারাত ধরে চলবে এই রান্না। হয়তো বুঝতেই পারছেন, কি রকম তাহলে আয়োজন চলছে। আমি ঘুরে ঘুরে দেখার চেষ্টা করছিলাম পুরো আয়োজনটা।
সবাই পরিচিত মানুষ, কেউ তরকারি রান্না নিয়ে ব্যস্ত কেউবা আবার ভাত রান্না নিয়ে। এই যে এত বড় একটা আয়োজন চলছে, সেখানে কিন্তু গ্রামবাসী সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। এই ব্যাপারটাই আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আপনাদের এলাকায় এমন আয়োজন কে, আপনারা আঞ্চলিক ভাষায় কি বলে থাকেন তা আমি জানিনা, তবে আমাদের এলাকায় এই আয়োজনকে মজলিস বা মেজবান বলে।
অনেকটা ক্লান্তিহীন ভাবেই সারারাত ধরে চলবে এই রান্নার কর্মযজ্ঞ, তারপর ভোর হওয়ার সাথে সাথেই সকল গ্রামবাসী একত্রে চলে আসবে এবং রাস্তার দুপাশ ধরে থালা বাটি নিয়ে বসে যাবে। বলতে গেলে যতদূর আপনার চোখ যাবে, ততদূর শুধু লোক আর লোক।
খাবারের তালিকা খুবই স্বল্প, সাদা ভাত আর আলুর ডাল। এই যে ভোরবেলা সবাই ঘুম থেকে উঠে একত্রে বসে গরম গরম সাদা ভাত আর আলুর ডাল খাবে, এর ভিতরেই যেন অনেকটা আত্মতৃপ্তি কাজ করবে সকলের মাঝে।
সব মিলিয়ে যদি বলতেই হয়, তাহলে আমার দৃষ্টিতে মনে হয়েছে, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কিছুটা হলেও সকলের ভিতরে সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধন আরো দৃঢ় হবে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আমাদের এলাকায়ও এর প্রচলণ আছে। তবে আগের তুলনায় এখন অনেক কমে গিয়েছে। তবে সত্যি বলতে এমন একটা আয়োজনে গ্রামের সকলের যে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এটা দেখলে ভালো লাগে।
তার মানে বুঝতে পারলাম, এমনটা আসলে অনেক জায়গাতেই হয়ে থাকে।
আপন মানুষ মারা যাওয়ার পর বাড়িতে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এই বিষয়টা কেন জানি আমি মেনে নিতে পারি না। প্রিয়জন হারানোর কষ্টে যখন পুরো পরিবার দিন কাটায় তখন এরকম একটা অনুষ্ঠান কেমন জানি বেমানান লাগে। যাইহোক মাঝেমাঝে সমাজের রীতিনীতি হয়তো এভাবেই মেনে নিতে হয়।
পৃথিবীটাই বিচিত্র আর বিচিত্র সব নিয়মকানুন।
এ ধরনের আয়োজন আমাদের এখানেও করা হয়।এতে করে সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহন আমার খুব ভালো লাগে।তবে আমাদের এখানে বিরিয়ানি কিংবা মোরগ পোলাও করা হয়।বেশীর ভাগ সময় প্যাকেট বিতরন করা হয়।এতে সবার সাথে ভাবের আদান-প্রদান হয়।
বাহ আপনাদের ওদিকে হয় তাহলে, বুঝতে পারলাম।
আমাদের এখানে কেউ মারা গেলে চারদিনের দিন এবং ৪০তম দিনে আয়োজন করে প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজন এবং পরিচিত মানুষদের খাওয়ানো হয়ে থাকে। তবে বেশিরভাগ পরিবারই বিরিয়ানি রান্না করে খাইয়ে থাকে সবাইকে। গত শুক্রবার সকালে আমার বন্ধুর বাবা মারা গিয়েছে এবং সোমবার দুপুরে ৩০০ জনের আয়োজন করা হয়েছিল এবং আমরা তাদের বাসায় গিয়েছিলাম খাওয়া দাওয়া করতে। যদিও এই ধরনের আয়োজনে আমি একেবারেই যেতে চাই না। কারণ আমার কাছে মনে হয়, এই ধরনের আয়োজন শুধুমাত্র যারা এতিম এবং একেবারেই গরীব, মানে তিনবেলা ঠিকমতো খাবার খেতে পায় না, তাদের জন্য করা উচিত। তবে কাছের কেউ যেতে বললে নিষেধ করতে পারি না বলে, শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে যেতে হয় মাঝেমধ্যে। যাইহোক মোজাম কাকুর পরিবার দারুণ আয়োজন করেছে। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আমিও অনেকটা ভাই জানার আগ্রহ থেকেই গিয়েছিলাম।
আমাদের এলাকায় এই আয়োজনটাকে খাওয়া দাওয়াই বলে, অন্য কিছু বলে কিনা সেটা আমার জানা নেই। যদিও খাবারের আয়োজনটা খুবই সামান্য, তবে সমস্ত গ্রামবাসী খাবে তার মানে তো অনেক রান্না করার ব্যাপার রয়েছে। যাইহোক, গ্রাম বাংলার এরকম খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন অনেকদিন পরে দেখলাম দাদা।
হুম এটা সত্য, এই আয়োজন আমাদের এইদিকে অনেক বড় পরিসরে হয়ে থাকে।