পৃথিবীটা কি শুধুই মানুষের নাকি সবার।
গত কয়েকদিন থেকে একটা বিষয় আমাকে প্রচুর ভাবিয়েছে, কেননা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমার এক বাল্যবন্ধুর কুকুরের প্রতি ভালোবাসা দেখে আমি বেশ অভিভূত হয়ে গিয়েছি।
ব্যাপারটা সম্পর্কে আমি একটু বলার চেষ্টা করছি মানে আমার সেই বন্ধুর, রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো কুকুরের প্রতি হঠাৎই তার বেশ ভালো দুর্বলতা তৈরি হয়ে যায়। বিশেষ করে করানোকালীন সময় থেকে। যখন খুব কঠিন ভাবে লকডাউন চলছিল, সেই সময়ই পথে ঘুরে বেড়ানো এক কুকুর তাদের বাড়িতে আশ্রয় নেয়, সেই লকডাউনের পুরো কঠিন সময়টা তার সেই কুকুরের সঙ্গেই কাটে।
সে নিজের থেকে, কুকুরটা কে ভ্যাকসিন দেওয়া এবং কুকুরটার পুরো যত্নাদির ব্যাপারে ভীষণ সচেতন ছিল। লকডাউনের কঠিন সময়ে যখন কেউ কারো সঙ্গে দেখা করতো না কিংবা সবাই তখন আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গিয়েছিল, সেইসময় আমার বন্ধুর সময় কেটেছিল প্রতিনিয়ত কুকুরটির সঙ্গে। যদিও বোবা প্রাণী, তারপরেও তাদের ভিতরে এতটাই গভীর সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল যে, তারা একটু হলেও একে অপরকে বুঝতো।
কুকুরটিও তাদের বাড়ি ছাড়া অন্য কোথাও যেত না এবং কুকুরটির প্রতি, বন্ধুর বাড়ির সব লোকজনের বেশ ভালোই মায়া জন্মে গিয়েছিল। যদি সময় গুলো এভাবেই চলছিল, তবে আমার বন্ধুর এই কুকুর লালন পালনের ব্যাপারটা তাদের প্রতিবেশীরা খুব একটা ভালো চোখে নেয় নি বরং বিভিন্ন রকম ভাবে সেই কুকুরকে শারীরিকভাবে নির্যাতন পর্যন্ত করেছিল, তার বাড়ির আশেপাশের লোকজন।
আমার বন্ধু একটা সময়ের পড়ে গিয়ে, ব্যাপারটা নিয়ে বেশ ভালই উদ্বিগ্ন ছিল। কেননা সে ভাবতো হয়তো তার প্রতিবেশীরা, যেকোনো অমানবিক কাজ তার অবর্তমানে করে ফেলতে পারে।
বেশ কিছুদিন আগের কথা, কিছু ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় কাজে আমার বন্ধু ঢাকা গিয়েছিল এবং ফিরে এসে দেখে, তার কুকুরটি তাদের বাড়িতে নেই। এই অবস্থা দেখে, বন্ধু প্রায় পাগল হওয়ার মতো উপক্রম হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু সে যখন নিজেকে স্থির করার চেষ্টা করল এবং বিষয়টা নিয়ে গভীরভাবে ভাবার চেষ্টা করল এবং আশেপাশে ভালো করে খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করল, তখন দেখল তার কুকুরটিকে কে বা কারা জানি মাথায় শক্ত কিছু দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলেছে এবং তাদের বাড়ির পিছনে পুকুরের উপরের শিমুল গাছটার নিচে কুকুরের মৃতদেহটা ফেলে রেখে গিয়েছে।
কুকুরের মৃতদেহটা দেখার পর থেকে, আমার বন্ধু যেন অনেকটাই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে এবং কোন ভাবেই যেন সে নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারছে না। আসলে এত জঘন্য কাজ করেছে তার আশেপাশের লোকজন, সে যেন অনেকেটাই বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। সে অনুমান করতে পারছে, কে বা কারা কাজটি করেছে। তবে তার কাছে কোন প্রমাণ নেই।
আচ্ছা এমন ঘটনা কি, শুধু আমার বন্ধুর কুকুরের সঙ্গেই ঘটেছে, নাকি আমাদের আশেপাশে প্রায়ই এইসব বোবা নিরীহ প্রাণী গুলোর উপর এমন অমানবিক কাজগুলো হয় ! এই প্রশ্ন আমি, আপনাদের কাছেই রেখে গেলাম?
সত্য কথা বলতে গেলে কি, পৃথিবীটা কিন্তু শুধুমাত্র মানুষের একার না বরং জীবজন্তু পশুপাখি সবার। এখানে আমার-আপনার যেমন বেঁচে থাকার অধিকার আছে, তেমনটা ওদেরও। কেননা ওরাও প্রকৃতির অংশ।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1738851278514745824?t=f5ZXmTcCKM_N_xjHwqzuGg&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
কুকুর বিশ্বস্ত একটি পোষা প্রাণী।গ্রামের প্রতি বাড়িতেই প্রায় কুকুর পোষে বাড়ি পাহারা দেয়ার জন্য। কারণ চোরের উপস্থিত বুঝলে আক্রমণ করে কুকুর চোরকে। তবে যারা কুকুর মেরে ফেলেছে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য অবশ্যই আছে।আপনার বন্ধুর কুকুরের প্রতি প্রেম দেখে একটি উক্তি মনে পড়লো জীবে যেজন্য করে প্রেম সে সেবিছে ইশ্বর। আসলেই জীবনে সেবা করলে ইশ্বরের সেবা করা হয়।আপনার বন্ধুর জন্য খারাপ লাগছে।সৃষ্টিকর্তা ওনাকে ধৈর্য ধারন করার ক্ষমতা দিক।
আমার চোখের সামনে কখনো এরকম হয়নি তবে আমিও অনেক শুনেছি মানুষ কুকুরকে আঘাত করে মেরে ফেলে, বোবা একটা প্রাণী হয়তো আমার ভালো নাই লাগতে পারে তাই বলে মেরে ফেলতে কেন হবে।
তাকে একটা রুটি বিস্কিট কিনে দেবো, না পারলে তাড়িয়ে দিব তাই বলে আক্রমণ করতে হবে মেরে ফেলতে হবে এটা কখনোই কাম্য নয়, মনুষত্ববোধ না থাকলে মানুষ এমনটা করতে পারে।
মনুষত্ববোধ থাকা খুবই জরুরি, দিন যত যাচ্ছে ততই মনুষত্ববোধ হারিয়ে যাচ্ছে মানুষের।
একমাত্র কুকুরই সবচেয়ে বিশ্বস্ত প্রাণী যেকিনা একবার খেলে পরের বার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে! কিন্তু কিছু মানুষ কুকুরকে দেখলেই ধু ধু করে তাড়িয়ে দেয়! কুকুর তো কারো ক্ষতি করেনি তবে কেনইবা এমন হলো! আমাদের কুকুরটাও সাথেও এমন হয়েছিল! দাদা শখ করে কুকুরটা এনেছিল কিন্তু কিছু মানুষ তাকে আর বাচঁতে দেয়নি। পেটে এমনভাবে আঘাত করে, ভুড়ি বের হয়ে গিয়ে মারা গিয়েছিল! পৃথিবীটা যে শুধু মানুষের জন্য না সেটা অনেকেই ভুলে যায়
আপনার ব্যাপারটা জেনেও অনেকটা খারাপ লাগলো ভাই।
ভাই আমাদের সমাজের কিছু কিছু মানুষ তো মানুষকে খুন করতে ও দ্বিধাবোধ করে না,আর কুকুর বিড়াল তো অনায়াসে মেরে ফেলতে পারে। জীব হত্যা যে মহাপাপ, সেটা যেন তারা জেনে ও না জানার ভান করে থাকে। এমন জঘন্য কাজের জন্য তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। বর্তমান যুগে কিছু কিছু মানুষের চেয়ে ও কুকুর ভালো। কারণ কুকুর প্রভু ভক্ত হয় সবসময়। যাইহোক সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলেই সকলের সুবুদ্ধি উদয় হওয়া খুবই জরুরি, বর্তমান সময়ে, পারিপার্শ্বিক অবস্থাতে।
ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে আমার মায়ের বাসার বিড়ালের কথা মনে পড়ে গেল। আমার মা বিড়াল পোষে আর পাশের ফ্লাটের মানুষ তা ভালো চোখে দেখেনি। এই নিয়ে তাদের সাথে একবার অনেক কথা কাটাকাটি হয়। একদিন মা যখন গ্ৰামের বাড়ি গিয়েছে তখন থেকে বিড়াল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আমরা নিশ্চিত তাঁরাই মেরে ফেলেছে। কারণ ঝগড়া হওয়ার সময় বলেছিলো আরেক দিন আসলে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলবে। আমার মা তখন খুব কষ্ট পেয়েছিলো। আপনার বন্ধুর কুকুরের সাথেও একই ঘটনা ঘটেছে আর যে প্রাণী পোষে সে বুঝে সেই প্রাণী হারিয়ে গেলে কতটা কষ্ট হয়। ঠিক বলেছেন ভাইয়া এই পৃথিবী মানুষের একার নয়। এখানে মানুষের যেমন অধিকার রয়েছে তেমনি জীবজন্তুরও অধিকার রয়েছে। তারাও এই প্রকৃতির একটি অংশ।
আপু, আপনার মায়ের পোষা বিড়ালের সঙ্গেও যে এমন ঘটনা ঘটেছিল, এটা জেনে বেশ ব্যথিত হলাম।