ভারাক্রান্ত মন | বড্ড খারাপ লাগছে
মানুষকে বাহির থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই, কার ভিতরে কি চলছে, সবাই কত সুনিপুণ ভাবে অভিনয় করে নিজেকে পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নেয়। হুটহাট করে যখন কোন ঘটনা ঘটে যায়, তখনই আসলে মানুষের অভিনয় করার ব্যাপার গুলো প্রকাশ্যে চলে আসে।
এমনিতেই অনেকগুলো কাজ গত রাত থেকে জমে আছে, কিছুতেই যেন কাজে মনোযোগ দিতে পারছিলাম না। আচমকা এক বার্তা পেয়ে সব যেন আমার কাছে এলোমেলো লাগছিল। পরিচিত এক ব্যাচমেটের কাছ থেকে খবর পেলাম, রুম্পা আর নেই। অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবনে ওর মৃত্যু হয়েছে।
ইন্টার্নশিপে থাকার সময়েই অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর সুজনের সঙ্গে তার ভাবের আদান প্রদান হয়। অবশেষে তা বিয়েতে গড়িয়ে যায়, পরবর্তীতে তাদের দীর্ঘ সময়ের দাম্পত্য জীবনে এক কন্যা সন্তান পৃথিবীতে আসে। বেশ ভালোভাবেই চলছিল তাদের সংসার। ৩৮ বিসিএসে সরকারি চাকরিতে স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগ হয় রুম্পার। আর সুজন ভাই থেকে যায় আমাদের মেডিকেলেই। সুজন ভাইকে কখনোই তেমনটা আমি স্যার হিসেবে ডাকিনি, হাজারো হলেও বান্ধবীর জামাই সেই হিসেবে দুলাভাই ডাকতাম।
যদিও প্রফেশন ইস্তফা দেওয়ার পর থেকে তেমনটা কারো সঙ্গেই যোগাযোগ হতো না, অনেকটা ইচ্ছে করেই নিজেকে আড়াল করে রাখতাম। তবে গোপনে গোপনে চেষ্টা করতাম সকলের খবর নেওয়ার জন্য, খবরগুলো পেয়েও যেতাম।
মানুষ বদলায়, কারণে-অকারণে। তবে সুজন ভাই আর রুম্পার মাঝে ঠিক কি ঘটেছিল, তা আসলে উপর থেকে কোন ভাবেই আন্দাজ করা যাচ্ছিল না। তবে ঘটনার প্রেক্ষিতে কিছু কথা তো বলাই যায়। শেষ দু বছর ধরে রুম্পা একাই থাকতো, ছোট্ট মেয়েটাকে সঙ্গে করে নিয়ে সরকারি হসপিটালের কোয়ার্টারে। যেহেতু দুজনের কর্মস্থলের মাঝে বেশ ভালই দূরত্ব ছিল, তাই রুম্পার যে জায়গাতে চাকরি ছিল সেখানেই সে অবস্থান করতো।
আর সুজন ভাই ছিল আমাদের মেডিকেল কলেজের আশেপাশেই। এমনিতেই অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, তার ভিতরে দেখতে শুনতেও ভালো। নির্ঘাত হয়তো আবারো মেডিকেলে কোন নারীঘটিত বিষয়ে গোলমাল পাকিয়ে ফেলেছে। পুরুষ মানুষের মন তো, ভিন্ন লিঙ্গের প্রতি দুর্বলতা অনেক বেশ প্রবল। তার ভিতরে কলেজের উঠতি বয়সী মেয়েগুলোর অযথা ন্যাকামি তো আছেই।
রুম্পার ময়না তদন্তের আগে যা প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা গিয়েছে, তা হচ্ছে অতিরিক্ত মানসিক ব্যাধিতে সে দীর্ঘদিন থেকে ভুগছিল। শুনেছিলাম, তাদের সাংসারিক ঝামেলা নাকি কয়েক বছর থেকেই হচ্ছিল। মাঝে নাকি তারা অনেকটাই নিজেদের ভিতরে দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছিল। তবে সেটা কি কারণে তা জানা যায়নি। পরে নাকি দুই পরিবারের মাধ্যমেই আবারো তারা একত্রিত হয়েছিল। বাহ্যিক দৃষ্টিতে তেমনটা কোন কিছুর অভাব ছিল না, দুজনেই বেশ ভালো চাকরি করতো। তাছাড়া ব্যক্তি জীবনে ডাক্তারি প্র্যাকটিস তো ছিলই। এ শহরে গাড়ি-বাড়ি অতিরিক্ত জমাজমি সবই ছিল, তবে ভিতরে ভিতরে যে রুম্পা বিরহের অনলে পুড়ছিল তা কিন্তু কেউ জানতো না।
বাঙালি মেয়েরা এখনো সেই গৎবাঁধা নিয়ম থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। যার কারণে এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো ঘটেই যাচ্ছে। আরে ভাই, তোর জামাইয়ের যদি সমস্যা থেকেই থাকে, তাহলে তুই তাকে বাদ দে, কি দরকার তার সঙ্গে এতো ঝুলে থেকে নিজের জীবনকে বিষিয়ে তোলার। জীবনে চাইলে অনেকের জন্যই বাঁচা যায়, শুধু এক জামাইকে কেন্দ্র করে না।
তাছাড়া এই পুরুষ মানুষগুলো, এদের কথা আর কি বলবো। রুম্পার মত মেয়েদের দুর্বলতার জায়গায় নিজের অবস্থান শক্ত করে, অবশেষে রূপ বদলে ফেলে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
আপনার সঙ্গে আমিও একমত ভাইয়া। জীবন কি এত ছোটই নাকি যে একজনের জন্য জীবন শেষ করে দিতে হবে। যেখানে তার একটি মেয়ে ছিল। নিজে সরকারি চাকরি করে। তার তো আর্থিক দিক দিয়ে কোন সমস্যা ছিল না। তাহলে এই ছেলের জন্য জীবন দেওয়ার কি হলো। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষ এতটাই মানসিক অশান্তিতে ভোগে যে নিজের জীবন শেষ করে দিতেও একবার ও ভাবে না। ছোট বাচ্চাটির জন্য খারাপ লাগছে শুনে।
আসলে এটা ঠিক আপু, ওর বাচ্চার জন্য আমারও খুব খারাপ লাগছে। ব্যাপারটা ভীষণ জটিলতা সম্পন্ন।
খবরটা শুনে অনেক খারাপ লাগলো। একজন প্রতিষ্ঠিত নারীর কখনোই উচিত হয়নি আত্মহত্যা করা। আসলেই জীবনটা অনেক দামি। কোনো একজন ব্যক্তির জন্য কখনোই জীবন ত্যাগ করা উচিত না।
তবে কেউই ইচ্ছে করে আত্মহত্যা করতে চায় না। হয়তো তার মানসিক অশান্তি এতটাই ছিলো যে সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে।
যত অশান্তিই হোক না কেন, সুইসাইড কোন সমাধান না।
একদম ঠিক বলছেন বাঙালি নারী বলে কথা তারা আসলে সংসারের মায়াজাল থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। তারা শত স্টাবলিস্ট হলেও নিজেদের জায়গাগুলো কাউকে ছেড়ে দিতে চাই না। সম্মানের একটি বিষয় থাকে মানসিক একটি প্রশান্তি থাকে। যেহেতু সংসার হয়ে গেল বাচ্চা আছে তাদের আর বাইরের চিন্তাভাবনা করা উচিত না। যেহেতু রুম্পার হাজব্যান্ড মেডিকেলে চাকরি করতো সেখানে অবশ্যই ভিন্ন নারীর প্রেমে নিমজ্জিত ছিলো। এই সমস্যার কারণে এমন ঘটনা ঘটলো আমার যতটুকু মনে হচ্ছে। জীবনটা এমনই আসলেই যতই চাকরি করি না কেন যতই ভালোভাবে থাকি না কেন মানসিক শান্তি না থাকলে কিছু ভালো লাগেনা।
দিনশেষে মানসিক প্রশান্তি মুখ্য বিষয়, এটা যেমন ঠিক। তবে সুইসাইড কোন সমাধান হতে পারে না আপু।
আসলে আমরা যতই বলি না কেনো, সবার মন একরকম না এবং সবাই সবকিছু করতে পারে না। রুম্পা আপু সুজন ভাইকে এতটাই ভালোবেসেছিল যে,সুজন ভাইয়ের এমন পরিবর্তন কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি। তাইতো নিজের জীবনটা এভাবে শেষ করে দিয়েছে। যদিও রুম্পা আপুর এমনটা করা মোটেই উচিত হয়নি। কারণ উনার বাঁচার দরকার ছিলো উনার ছোট্ট মেয়েটার জন্য। আর সুজন ভাইয়ের মতো এমন জঘন্য মন-মানসিকতার মানুষকে নিয়ে কিছুই বলার নেই। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এরকম ভন্ড সুজনদের আইনের আয়ত্তে নিয়ে আসা উচিত। মেয়েটাকে বড্ড মানসিক টর্চারে রেখেছিল।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া বাহিরে থেকে দেখে একদমই বোঝার উপায় নেই কার ভিতরে কি চলছে, সবাই ভিতরের কষ্ট গুলো লুকিয়ে খুব সুন্দর ভাবে ভালো থাকার অভিনয় করে যাচ্ছে। কিন্তু যখন সেই কষ্ট গুলো তীব্র হয়ে যায় তখন প্রকাশ না করে পারেনা। আপনার বান্ধবী রুম্পার অবস্থাও তাই হয়েছে। একটা মেয়ে যখন দেখে তার আর সামনে পা বাড়ানোর মতো শক্তি নেই, তখনই তার সুন্দর জীবন ত্যাগ করে। হয়তো রুম্পার জীবনে কোনো কিছুর অভাব ছিল না,তবে সে যাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে তার কাছ থেকে হয়তো এমটা আশা করেনি। ভালো মেয়েরা চিন্তা করে জীবনে একবারই বিয়ে হয় আর সন্তান হয়ে গেলে তাকে ছাড়া কখনও সম্ভব নয়। সেই দুর্বল জায়গাই কিছু কাপুরুষ রয়েছেন যারা বেছে নেয় আর নিরুপায় হয়ে রুম্পার মতো মেয়েরা এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়। সত্যি এই পৃথিবীর মানুষ গুলো কতটা নিষ্ঠুর ও অসহায়।
জীবনে আরও বাস্তবিক হতে হয় আপু, রুম্পার সঙ্গে যেটা ঘটেছে সেটা সত্যিই দুঃখজনক। তবে এ থেকে সবার সচেতন হওয়া উচিত।
গতকাল সম্ভবত এমন একটা নিউজ আমার ফেসবুক নিউজফিডে এসেছিল। ব্যাপার টা খুবই দুঃখজনক। কথাটা ঠিকই বলেছেন মানুষ বদলায় কারণে অকারণে হাহা। মানুষের পরিবর্তন আশপাশের মানুষের উপর অনেক প্রভাব ফেলে। এইরকম ঘটনা নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না ভাই।
ব্যাপারটা সত্যিই আমাকে অনেক আহত করেছে, সুইসাইড কোন সমাধান হতে পারে না।
এই কথাটা মানতে পারলাম না ভাই, জাতি-ধর্ম-বর্ণ এই তিনটি বিষয় আমাদের সমাজকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে। তাই চাইলেও একজন পুরুষের যেমন একাধিক নারীর সাথে সম্পর্ক কোন নারী মানতে পারে না ঠিক তেমনি একজন নারীর সাথেও একাধিক পুরুষের সম্পর্ক কোন পুরুষ নামক স্বামী মানতে পারে না। আমাদের সমাজে স্ত্রীর জন্য স্বামীর জীবন আর স্বামীর জন্য স্ত্রীর জীবন উৎসর্গ করার হাজারও ঘটনা স্বাক্ষী আছে।