লাইফস্টাইলঃ ভালোবাসার উপহার।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, আশাকরি সবাই ভালো আছেন? সবাই ভালো থাকুন এই প্রত্যাশা করি সবসময়। আমিও ভালো আছি।আজ ২৬শে বৈশাখ, গ্রীষ্মকাল,১৪৩১বঙ্গাব্দ। ৯ই মে,২০২৪ খ্রীস্টাব্দ।
উপহার ভালোবাসার প্রতীক। তা যেমনই হোক না কেন। কেই যখন কাউকে উপহার দেয় তখন তা ভালবেসেই দেয়। উপহারের সাথে সাথে ভালবাসার প্রকাশও ঘটে। আজ আমি আপনাদের সেই ভালোবাসার কথাই শেয়ার করব।
ঈদ গ্রামের বাড়িতে করেছি। সেটা আপনারা অনেকেই জানেন যারা আমার পোস্ট নিয়মিত পড়েন। এবারের ঈদ আমার ঢাকাতেই করতে হতো যদি না রোজা ৩০টা হত। আত তার কারন ট্রেনের টিকেট না পাওয়া। আমার আবার মোশন সিকনেস আছে তাই গাড়ী অথবা বাস জার্নি করতে পারি না।অবশেষে রোজা ৩০টি হল , আর আমার বাড়ীতে ঈদ করাও হলো।
ঈদ করে ঢাকায় ফেরার পথে আমরা আক্কেলপুরের জাফরপুর গিয়েছিলাম দেওরের বাসায়। সেই পোস্টও আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম।একদিন এক রাত ছিলাম। গ্রামটি বেশ সুন্দর । প্রচুর খেজুর ও তাল গাছে ঘেরা গ্রাম। অন্যান্য গাছ -গাছালীও আছে। আর মাঠের পর মাঠ ধান ক্ষেত। বেশ ভালো লেগেছিল গ্রামটি। এখনও সেখানে মাটির তৈরি বাড়ি দেখা যায়। সুন্দর সুন্দর মাটির একতলা ও দ্বিতল বাড়ি। বোঝাই যায় না এগুলো মাটির তৈরি। তবে শহরের ছোঁয়া লেগেছে।সেখানে গড়ে উঠেছে পাকা দালান। আমার দেওর জানালো, এখানকার প্রতিটি ঘরের কেউ না কেউ বিদেশে থাকেন। আর তাই তারা পাকা বাড়ি করছে। গ্রামের সৌন্দর্য দিন দিন কমে যাচ্ছে। এক সময় হয়তো আর কাঁচা বাড়ি ঘর দেখা যাবে না।
জাফরপুর থেকে শান্তাহারের দূরুত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটারের মত। শান্তাহার রেলওয়ে জংশন, সেখান থেকেই আমরা ট্রেনে উঠে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিবো। সকাল ৯ টায় ট্রেন। সকাল ৮ টার দিকে যখন ট্রেন ধরার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখন আমার জা আমার হাতে খেজুরের নালী গুড়,ফ্রোজেন তালের রস ও হাত বানানো আলুর চিপসের একটা প্যাকেট ধরিয়ে দিল। জানতে চাইতেই বলল এতো কম সময় থাকলেন যে কিছুই করে খাওয়াতে পারলাম না। আর এগুলোত আপনার খুব পছন্দ তাই দিলাম। বাসায় নিয়ে খাবেন। আর আমার পছন্দের উপহার পেয়ে আমিও খুশি মনে নিয়ে নিলাম। আমি বেশ খুশি হলাম এই ভেবে যে আমার জা আমার পছন্দের কথা মনে রেখেছে। এখনতো তাল আর খেজুরের সিজন না তাই জিনিসগুলো পেয়ে আরও বেশি ভাল লাগলো। পাকা তালের রস হওয়াতে বেশ ঘ্রান যা আমরা ঢাকা শহরে পাই না। একদিন পিঠা ও পায়েস করবো এই তালের রস ও খেজুর গুড় দিয়ে। অবশ্যই আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। দেবর-জা এর কাছে বিদায় নিয়ে ভালোবাসার উপহার সাথে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম আমরা। যথাসময়ে ষ্টেশনে এসো শুনি ট্রেন ২ ঘন্টা লেট। কি আর করা- ট্রেনের জন্য অপেক্ষা।
অপেক্ষার পালা শেষে ট্রেন আসলো। আমরা ট্রেনে বসে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। নিরাপদে ঢাকায় পৌঁছেছি সেদিন একরাশ ভালোবাসা নিয়ে। আজ এই পর্যন্তই বন্ধুরা, পরিবর্তিত আবহাওয়ার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিন। নিরাপদে থাকুন-সুস্থ্য থাকুন। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগ নিয়ে।
পোস্ট বিবরণ
পোস্ট | লাইফস্টাইল |
---|---|
পোস্ট তৈরি | selina 75 |
ডিভাইস | Redmi Note A5 |
তারিখ | ৯ই মে,২০২৪ |
লোকেশন | ঢাকা |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে আপু ভালোবাসার উপহার পেতে সবারি অনেক ভালো লাগে। উপহার তো উপহারি।সত্যিই আপু কেউ যদি ভালোবেসে কিছু দেয় সেটা ভালো মনে গ্রহণ করার মধ্যে অনেক আনন্দ লুকিয়ে আছে। আসলে তালের বা খেজুরের রস টাটকা গুলো বর্তমান পাওয়া মুশকিল। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমি বেশ খুশি হয়েছি উপহারগুলো পেয়ে। আমার পছন্দের জিনিস সবগুলো। ধন্যবাদ আপু।
শান্তাহার থেকে ট্রেনে উঠে বাসায় পৌঁছানো পর্যন্ত ফ্রোজেন তালের রস ভালো ছিলো জেনে ভীষণ ভালো লাগলো আপু। আমার শ্বাশুড়িও একবার পাকা কাঁঠালের রস এভাবে ফ্রোজেন করে দিয়েছিলেন। তবে আমাদের বাস জ্যামে দীর্ঘক্ষণ আটকে পড়ায় পথের মাঝেই খেয়ে নিয়েছি। ঢাকায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে নষ্ট হয়ে যেত নইলে। আর হাতে তৈরি আলুর চিপস দেখে আমার দাদীর কথা মনে পড়ে গেল! উনিও সবসময় আমার জিন্য পাঠাতেন এটা! এমনি তো বটেই, ভাতের সাথেও এই পাপড় গুলো খেতে বেশ মজা লাগে! আসলেই, আপনার এমন ছোটখাটো ভালো লাগার কথা মনে রেখে আপনার জা যে এই জিনিসগুলো গুছিয়ে দিয়েছে, এগুলো খাটি ভালোবাসা ছাড়া কিছুই নয়! এমনিতে জামাকাপড় বা নামীদামী উপহার তো টাকা হলেই কিনতে পাওয়া যায়, তবে সেগুলো পাওয়ার চেয়েও এই উপহার গুলো পাওয়ার অনুভূতি নিশ্চয়ই ভিন্ন! ভীষণ ভালো লাগলো।
ঠিক বলেছেন আপু নামীদামী উপহার টাকা হলেই পাওয়া যায় । কিন্তু এই উপহার টাকার সাথে তুলনা করা যায় না। কস্ট করে বানানো জিনিসগুলো আমি পছন্দ করি বলেই দিয়েছে।তা ভালোবাসা ছাড়া আর কি হতে পারে। যা বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না। মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
https://twitter.com/selina_akh/status/1790418126301200878